হবু বউয়ের শাড়ি 😉🤪 ।। বাকিটা ইতিহাস 😀
নমস্কার,,
বয়স টা বাড়তে বাড়তে মাথা টাকলা হয়ে প্রায় বৃদ্ধ হওয়ার পথে। জীবনে কতগুলো বসন্ত যে শেষ করলাম সেটা মাঝে মধ্যে নিজেই ভুলে যাই এক রকম। তবু মাথা থেকে দুষ্টুমি বুদ্ধি এতটুকুও কমে না কখনো। হিহিহিহি। আর সাথে যদি কয়েকটা বন্ধু থাকে তাহলে তো কথাই নেই একদম। ওখানে যেন শয়তানির কারখানা বসে যায়। তখন মনে হয় বড় হব টা আসলে কবে!! তবে এই আনন্দ গুলো আছে বলেই জীবনে বাঁচার মানে খুঁজে পাই। কিছুটা সময়ের জন্য হলেও মনে হয় যে আমি এখনো ফুরিয়ে যাই নি।
মারাত্মক গরম শুরু হয়ে গেছে কদিন হলোই। বৃষ্টি হবে হবে করছে কিন্তু হচ্ছে না। এতে করেই যেন আরো বেশি খারাপ অবস্থা তৈরি হয়ে গেছে। শহরের দিকে তিন বন্ধুর দেখা হওয়ার কথা বিকালের দিকে। সময়মত চলে গেলাম আমি। বাকি দুজনও চলে আসলো একটু আগে পরে করে। ফাজলামো শুরু হবে এটা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা একদমই। যত ধরনের থলের খবর থাকে এক এক করে বের হতে থাকে। সব কিছুই ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু গরম টা একদম সহ্য করা যাচ্ছিল না। হঠাৎ করেই একজন বলে উঠলো, চল পাশের ঐ একটা শো রুমে যাই। কয়েকদিন হলো নতুন উদ্বোধন হয়েছে। দেখেও আসি আর এসির বাতাস টাও খেয়ে আসি। এক শেয়াল হুক্কা হুয়া ধরলে বাকি গুলোর না ধরে তো কোন উপায় নেই। সোজা চলে গেলাম পাশের শো রুম টা তে।
বিশাল বড় একটা শোরুম। ছেলে মেয়ে সহ বাচ্চাদের সব ধরনের কাপড়চোপড় সেখানে আছে বলা যায়। যে যার মত জিনিস দেখতে শুরু করলো। আমার হঠাৎ করেই চোখ পরল শাড়ির দিকে। আসলে শাড়ি জিনিসটা ভীষণ পরিমাণে পছন্দ করি আমি। এক এক করে যখন দেখছিলাম, পাশ থেকে হঠাৎ একটা মেয়ে এসে বলছে,
"স্যার, আপনি কি ধরনের শাড়ি খুঁজছেন? নির্দিষ্ট কোন ক্যাটাগরি কি পছন্দ করা আছে?"
এটা আরেক বন্ধুর কানে পড়তেই দৌড়ে এসে বলছে, "আসলে ওর গার্লফ্রেন্ড দুই দিন ধরে রাগ করে আছে। ওদের বিয়েও ঠিক হয়ে গেছে। তো রাগারাগি করে কথা বলছে না। তার রাগ টা ভাঙ্গাতে হবে। তাই স্পেশাল কিছু চাই।"
কথাটা বলেই হালকা করে চোখ মেরে দিল আমার দিকে। আর পাশে দাড়িয়ে থাকা মেয়েটাও হাসছে। আমি ভাবলাম বলেই যখন দিয়েছে তাহলে একটু মজা করেই বের হই। 😅🤪
মেয়েটাকে বললাম, "আপু আপনি তো একটা মেয়ে। তাই কোন শাড়ি টা পেলে একটা মেয়ের রাগ ভাঙবে এটা নিশ্চয়ই আপনার ভালো জানার কথা। আমার এদিকে একদম কোন অভিজ্ঞতা নেই। তাই একটু হেল্প করলে ভালোই হয় ব্যাপারটা।"
আমাদের কথোপকথন হতে হতে পাশ থেকে আরও দুজন সেলসম্যান এসে দাঁড়িয়ে গেল, একজন ছেলে এবং একজন মেয়ে। সবাই মুচকি মুচকি হাসছে আর একের পর এক শাড়ি আমাকে দেখিয়ে যাচ্ছে। আর আমি নম্র ভদ্র ছেলের মত একের পর এক খুঁত ধরে যাচ্ছি। হিহিহিহি। শাড়ি সম্পর্কে জ্ঞ্যান না থাকলে তো বোকার মত এটাই করতে হবে।
কোনোটা ভালো লাগলে সেটার দাম অনেক বেশি। আবার অনেক শাড়ি আছে যেগুলোর দাম আকাশ ছোঁয়া কিন্তু দেখতে অতটা ভালো লাগছে না। মোটামুটি ৩০ মিনিট সময় এসব করতে করতে চলে গেছে। এবার ওখান থেকে বের হয়ে আসার একটা রাস্তা বের করতে হবে। ও হ্যাঁ তার আগে আরেকটা সেলসম্যান আমার জন্য দৌড়ে গিয়ে স্টক থেকে একটা স্পেশাল শাড়ি বের করে আমাকে দেখালো। তবুও যেন আমি খালি হাতে না আসি। হিহিহিহি,,।
যে শাড়িটার ছবি আপনারা দেখতে পাচ্ছেন এটাই সেই শাড়ি। দাম লেখা ছিল ৫৭০০ টাকা। আমি বলেই বসলাম, হ্যাঁ ভালো লাগছে মোটামুটি। কিন্তু নতুন শো রুমের কি কোন ডিসকাউন্ট আপনারা দেবেন না! উত্তরে ভদ্রতার সহিত আমাকে না জানিয়ে দিলেন তারা।
আমার আরেক বন্ধু কায়দা করে তখন বলল, আপনাদের শো রুম টা কতক্ষণ খোলা থাকবে? যদি নয়টা অবধি খোলা থাকে তবে আমরা পাশের রেস্টুরেন্ট থেকে খাওয়া দাওয়া করে এসে যাওয়ার পথে এটা নিয়ে যাব। পাশে দাড়িয়ে থাকা সেলসম্যান টা জানালো তারা সাড়ে নয়টা অবধি আছেন। আমরা নিশ্চিন্তে খাওয়া-দাওয়া সেরে আসতে পারি। আমরাও সেখান থেকে বেরোনোর একটা রাস্তা পেয়ে গেলাম। হিহিহিহি।
অবশেষে আমরা প্রায় ৪৫ মিনিট শো রুমের ভেতরে কাটিয়ে আসলাম। ঢুকলাম সামান্য একটু এসির বাতাস খেতে। আর কান্ড ঘটালাম আরেকটা। বাইরে বেরোতেই যেন গরমে শরীরে আগুন লেগে গেল। আমরা সবাই এটা বলে হাসাহাসি করছিলাম যে,
" এই আগুন গরমের না রে বন্ধু, এটা অভিশাপের আগুন,, যেই অভিশাপ আর দেড় ঘণ্টা পর ঐ তিনজন মিলে আমাদের দেবে।" 😉😅😊
তবুও ঠিক হওয়ার আগেই দেখছি হবু বউয়ের জন্য শাড়ি দেখতে চলে গিয়েছিলেন। হা হা হা। এসির বাতাস খাওয়ার জন্য গিয়েছিলেন, এসির বাতাস ঠিকই খেয়েছিলেন। কিন্তু ওখানে গিয়ে তো ফেঁসে গিয়েছিলেন বেশ বড়োসড়ো ভাবে। ভেবেছিলাম একটা দাওয়াত পাবো হয়তো আপনার বিয়ের জন্য। কিন্তু পরে সব কিছু বুঝতে পারলাম এটা ফেক টাইটেল ছিল। একটু খুশি হয়েছিলাম দেখে তবে আবার খারাপ লাগলো। বিষয়টা যদি সত্যি হতো সত্যি অনেক খুশি হতাম। আর বড়োসড়ো একটা বিয়ের দাওয়াতও পেতাম । হি হি হি। যাইহোক অনেক মজা লাগলো পড়ে বিষয়টা। বন্ধুরা মিলে একসাথে হলে সত্যি দুষ্টমি অনেক বেশি বেড়ে যায়।
সত্যি বলতে বন্ধুরা একসাথে হলে বয়সটা যেন আরো কমতে থাকে ভাই। হিহিহিহি। বেশ মজা করে এসেছি সে দিন। দোয়া করেন ভাই যেন ফাটা কপালেও তাড়াতাড়ি কোন অভাগী চলে আসে 🤪
চলে আসবে চলে আসবে খুব শীঘ্রই চলে আসবে। তখন প্যারা খেতে হবে অনেক , তার জন্য প্রস্তুতি নেন? 😁😂
দিল্লিকা লাড্ডু খেলেও পস্তাতে হবে, না খেলেও। তাই খেয়ে পস্তানোই তো ভালো ভাই 😍😍
হবু বউয়ের শাড়ি টাইটেল দেখে ছুটে আসলাম দাদার বিয়ে ঠিক হয়ে গেলো নাকি। পরে তো পোস্ট পরে চমৎকার একটা মজার ঘটনা জানতে পারলাম। শাড়িটা দেখতে ভীষণ সুন্দর ছিলো। যাক অবশেষে আপনার বন্ধু বুদ্ধিতে কাজ হলো। ভালোই সময় উপভোগ করছিলেন। তবে দাদা এসি ছেড়ে বাইরে বেড়িয়ে আসলে ভীষণ গরম লাগে। এধরনের ঘটনা গুলো মাঝে মধ্যে ঘটে যায়। ভালো ছিলো দাদা আপনার জন্য শুভ কামনা রইল ভালো থাকবেন।
আসলে মজা করেই এই পোস্ট টা করেছি ভাই। আপনার যে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম সত্যিই। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
আপনার টাইটেল পড়ে তো আমি একেবারে ভেবেই নিয়েছিলাম, হয়তো আপনার বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে ভাইয়া। আর হবু বউয়ের জন্য শাড়ি কিনতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পোস্ট পড়ে অনেক কিছুই বুঝতে পারলাম, আর আমি তো হাসতে হাসতে একেবারেই শেষ। একটু এসির বাতাস খাওয়ার জন্য শো রুমটাতে গিয়েছিলেন। আর আপনি যখন শাড়ি দেখছিলেন তখন উল্টো পেসে গিয়েছিলেন এবং অনেক মজার কান্ড ঘটিয়েছিলেন দেখছি। শেষ পর্যন্ত ৪৫ মিনিট সেখানে থাকার পরে খাওয়া-দাওয়ার নাম দিয়ে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন। আপনার বন্ধু শেষে যে বুদ্ধি করে কথাটা বলেছিল, তার জন্যই বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন, না হলে তো আরো পেসে যেতেন।
আসলে স্কুল লাইফের বন্ধু গুলো এক সাথে থাকলে বেশি বাদরামো হয়ে যায় আপু। আর ঐ দিনও ঠিক এটাই হয়েছে। হিহিহিহি। অনেক ধন্যবাদ আপু আপনাকে সবটা পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ভাই আপনার পোস্টের টাইটেল দেখে মনে হল আপনার বিয়ে ঠিক হয়েছে । তাই বলে তিন বন্ধু মিলে দোকানদারদের সঙ্গে এরকম ফাজলামি করবেন । হাসতে হাসতে পেট ব্যথা হয়ে গিয়েছে । লোকরা কি আশা নিয়েই না আপনাদেরকে শাড়িগুলো দেখিয়েছে । শেষমেষ কি করলেন ?তারা আপনাদের কি বকাটাই না দিয়েছে আমি তাই ভাবছি । বেশ মজার ছিল ধন্যবাদ।
কি আর করব আপু!! কোন রকমে বের হয়ে আমরা তো হাসতে হাসতে শেষ। সবাই এক সাথে খাওয়া দাওয়া করে বাড়ির দিকে দৌড় 😅😅। অনেক ধন্যবাদ আপু আপনাকে।
শেষ পর্যন্ত এই ছিল মনে। আমি তো পোস্টের টাইটেল দেখে খুশি হয়ে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম এবার হয়তো দাওয়াতটা পেয়েই যাব। শেষে কিনা ধোকা খেয়ে গেলাম ওই সেলসম্যানদের মতো। তবে যাই বলুন না কেন দুষ্টুমিটা কিন্তু বেশ জটিল হয়েছে ভাইয়া। আমি তো হাসতে হাসতে পুরাই শেষ। 😅😅😅
আমার বাশি এই জনমে বাজলে হয় আপু 😅। কপাল যেভাবে দিন দিন বড় হচ্ছে তাতে তো কষ্ট টাই বেড়ে যাচ্ছে শুধু। দোয়া করেন যেন সুখবর দিতে পারি তারাতারি 😉। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
হা হা হা,,,,,,
দারুন মজা পেলাম আপনার লেখাটি পড়ে। আপনারা বন্ধুরা তো দেখছি ভালই দুষ্টু, হি হি হি। একেবারে শোরুমের লোকগুলোকে শাড়ি দেখিয়ে দেখিয়ে নাজেহাল করে ছাড়লেন 🤣🤣🤣।
কথাটা মনে হচ্ছে ঠিক, হা হা হা।
সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে,, এই হনুমান গুলোর সাথে থাকতে থাকতে আমিও ঐ দিকেই চলে গেছি 🤪🤪। তবে ভীষণ ফাজলামো করে বের হয়েছি ঐ দিন এটা সত্যি।
বাপরে আমি তো ভেবেছিলাম যে আমার ছোড়দা মনে হয় শেষমেশ বিয়েটা করেই ফেলবে।কিন্তু তা আর কই হলো বন্ধুর গার্লফ্রেন্ড এর শাড়ি কিনতে গেছেন আরে ভাই এটা তো নিজের হবু বউ এর জন্য কিনলেই ভালো হতো তাই নয় কি!😁এখন শপিংমল গুলোতে গেলে মাথা ঘুরে যায় এত্তো এত্তো দাম বলে বসে যা দেখে কেনার স্বাধ মিটে যায়।আমি তো কোনকিছু কেনার সময় পছন্দ করি কিন্তু দাম আকাশপাতাল পার্থক্য থাকে তখন আস্তে করে মেয়েদের ইশারা করি তখন ওরা বলে মা এটা একদম ভালো না তুমি অন্য টা নাও।তখন মেয়ের পছন্দ হয়নি বলে কোনোরকমে ওখান থেকে বেড়িয়ে বাঁচি।😁 ছোড়দা আপনাদের পালানোর পদ্ধতি টাও বেশ ভালো ছিলো এখন থেকে এটাই ট্রাই করতে হবে। হা হা হা।🤣🤣যাইহোক সবমিলিয়ে বেশ ভালো লাগলো আজকে পোস্ট টি।আগামী তে যেনো আপনার হবু বউ এর শাড়ি দেখতে পাই সেই অপেক্ষায় রইলাম।ধন্যবাদ ছোড়দা।♥️
বড়দি আপনার একটু মিস হয়ে গেছে বোধ হয়,, ওটা আমার গার্ল ফ্রেন্ড বানিয়ে তারপর শাড়ি দেখতে নিয়েছিলাম মজা করে 😀। আর ভাইয়ের জন্য আশীর্বাদ করবেন যেন খুব তাড়াতাড়ি ভালো খবর দিতে পারি 😉। হিহিহিহি।
সত্যি কথা বলতে অনেক বন্ধুরা যখন একত্রে হয় তখন অনেক মজা করা যায়। আপনারা তো বেশ ভালোই আনন্দ করলেন এবং শোরুমে গেলেন অবশেষে শাড়ি ও দেখলেন। কিন্তু বাকিটা তো ইতিহাস করে বের হলেন শোরুম থেকে ফন্দি তো বেশ ভালোভাবে দিয়ে বের হয়ে আসলেন। কিন্তু শাড়িগুলো অনেক সুন্দর ছিল।
শাড়ি তো একটাই দেখিয়েছি আপু পোস্টে, আর আমারও বেশ ভালই লাগছিল ওটা। টাকা পকেটে থাকলে হয়তো সত্যি সত্যিই কিনে ফেলতাম। হিহিহিহি। অনেক ধন্যবাদ আপু।
ভেবেছিলাম সত্যি সত্যি এই বার সজীব ভাই বিয়ে করছেন। এ তো দেখছি সবাই মিলে এসির হাওয়া খেতে গেছে। হা হা হা... তবে বাইরে বের হওয়ার যে অভিনব কায়দাটা বললেন, এরকম অভিনব কায়দা আমি নিজেও মাঝে মধ্যে এপ্লাই করি।😂
আর বিয়ে ! কি এক কান্ড ঘটিয়েছি ভাই সেদিন! তবে মজা পেয়েছিলাম বেশ। হাহাহাহা,,, দুই ভাইয়ের অভ্যেস বেশ মিলে গেছে দেখা যায় 😊