জয় জগন্নাথ

আজ উল্টোরথ যাত্রা। শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেব মাসির বাড়ি থেকে নিজ গৃহে পৌঁছে গেছেন। বরাবরের মতো এবারও আমাদের পাড়ার জগন্নাথ মন্দিরে রথ যাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু এই করোনা মহামারীর কারণে সবকিছু সীমিত পরিসরে পালন করতে হয়েছে। সত্যি বলতে অনেকটা নিয়ম রক্ষা করাই ছিল উদ্দেশ্য।

বরাবরের মতো আজও রথযাত্রার দিন সকাল থেকে বিকেল অব্দি থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। দুপুর বেলা স্নান করে শুদ্ধ বস্ত্র পরিধান করে মাথায় ছাতা নিয়ে মন্দিরে চলে যাই প্রভু জগন্নাথ দেবকে প্রণাম করতে। মন্দিরে খুব কড়াকড়ি ব্যবস্থা ছিল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে। দেখলাম খুব সীমিত পরিসরে সব আয়োজন চলছে। প্রণাম সেরে কিছুক্ষণ বসে কীর্তন শুনলাম। মনটা একদম শান্ত হয়ে গেল। বসে বসে দেখছিলাম পূজোর আচার আচরণ।

মন্দিরে ঘণ্টা খানেক অবস্থান করার পর বাড়ির দিকে বেরোবো এই ভেবে রওনা দিলাম। মন্দিরের দরজা পেরোতেই সামনে চোখে পরলো জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উপলক্ষে ছোট ছোট দোকান নিয়ে মেলা বসেছে। ছোটবেলার কথা ভীষণ রকম ভাবে মনে পড়ে গেল। রথ মেলায় জিলিপি ,তিলের নাড়ু, কটকটি, নটকল আরো কত কিছু বাবার হাত ধরে কিনতাম। দিনগুলো আজও চোখের সামনে ভেসে উঠছিল বার বার।

করোনা যেন আমাদের হাতে পায়ে শিকল পরিয়ে দিয়েছে। রথের মেলার সেই সাজ সাজ রব আর নেই একদম। খুবই খারাপ লাগছিল ফাঁকা মাঠটা দেখে। যেই মাঠ পুরোটা জুড়ে মেলা লাগতো, বিকেল বেলা কানাই কানাই ভোরে উঠতো আজ সেখানে সহস্র শূন্যতা।

শ্রীশ্রী জগন্নাথ দেবের কাছে আজ একটাই প্রার্থনা সুস্থ করে দিক আমার এই পৃথিবীকে। ফিরে আসুক আবার আগের সেই কর্মচাঞ্চল্য। জীবন যেন তার গতি নিয়ে ছুটতে পারে আবার আগের মত।