মামা ভাগ্নের এক বিকেল

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার,,

অভ্র আমার একমাত্র ভাগ্নে। বয়স পাঁচ বছর। দুষ্টুমিতে একদম সেরা। মাথার বুদ্ধিটাও মন্দ না। ওকে বোকা বানানো বেশ কঠিন একটা কাজ। দুষ্টুমিতে সেরা হলেও অন্যান্য নানান কাজ যেমন গান করা, পড়াশোনা করা, ঢোল বাজানো , খেলাধুলা , ছবি আঁকা সবদিকে বেশ ভালোই নাক গলাতে পারে। হিহিহিহি। সত্যি বলতে আমি নিজেই মাঝেমধ্যে অবাক হয়ে যাই ওর এই কান্ডগুলো দেখে। এত অল্প বয়সে এত কিছু কি করে পারে নিজেও জানিনা। তবে আমার মনে হয় গান বাজনার যে ছোঁয়াটা ওর ভেতরে আছে, সেটা বোধ হয় আমার থেকে কিছুটা হলেও পেয়েছে।

IMG20230524175047.jpg
Location

মা বাবার একটাই নাতি, আবার আমার দিদির শ্বশুরবাড়ির দিক থেকেও একটাই নাতি, তাই কতটা আদরের সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না একদমই। বেশি আদর পেয়ে মাথায় উঠে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে অনেকটাই। মোটামুটি অনেকদিন পর অভ্র বেড়াতে এসেছে ওর মামার বাড়িতে। গল্প, গান-বাজনা, ছবি আঁকা, দুষ্টুমি সবকিছু করে সময়টা বেশ ভালই কাটছে।

সেদিন সকালবেলা দেখলাম রং পেন্সিলের জন্য বায়না ধরেছে ওর মায়ের কাছে। আসলে দিদি রং পেন্সিল গুলো আনতে ভুলে গেছে। আমাদের বাড়িতেও ছিল কিন্তু সেগুলো কোথায় যে হারিয়ে গেছে নিজেও জানিনা। তো আমি অভ্রকে বললাম, দুষ্টুমি রেখে যদি সুন্দর করে ছবি আঁকতে পারো আমার সামনে, তাহলে আজকে এখনই তোমাকে রং পেন্সিল কিনতে নিয়ে যাব।

IMG20230524123907.jpg
Location

IMG20230524124155.jpg
Location

IMG20230524124207.jpg
Location

আমার কথা শুনেই চটপট ছবি আঁকতে বসে গেল। মুহূর্তেই বেশ কয়েকটা ফলের ছবি , গ্রামের দৃশ্য একে ফেলল কলম দিয়ে। যা কথা সেই কাজ। আমিও ভাগ্নেকে নিয়ে বিকাল বেলা বেরিয়ে গেলাম রং পেন্সিল নিতে। ভাবলাম দুদিনই তো থাকবে আমাদের বাড়িতে, বেশি বড় বক্স কিনে লাভ নেই। ছোট দেখে কিছু একটা কিনে দেই। ওমা দোকানে গিয়ে দেখি আরেক কান্ড। ছেলের ছোট বক্স একটাও পছন্দ হয় না। যেই বড় বক্স টা বের করলো সাথে সাথে খুশিতে লাফিয়ে উঠলো। কি আর করা! ওটাই নিয়ে মামা ভাগ্নে হাঁটতে হাঁটতে চলে গেলাম খেলার মাঠের দিকে।

IMG20230524174151.jpg
Location

IMG20230524174204.jpg
Location

IMG20230524175830.jpg
Location

IMG20230525092354.jpg
Location

খেলার মাঠে কিছুটা সময় বসে বাচ্চাদের এবং বড়দের ফুটবল খেলা দেখলো অভ্র। আমাকে বলছে, মামা আমারও একটা বল খেলার বুট লাগবে। আমি তো শুনেই চমকে গেলাম। ছেলে এসবও বোঝে। হাসতে হাসতে বললাম, আরেক দিন কিনে দেব নি। তারপর বললাম, চলো কিছু খেতে খেতে বাড়ির দিকে হাটি। কিন্তু অভ্র জানালো কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না। আসলে জানে যে আমি ওকে চিপস্ কিনে দেব না। তাই ঐ জেদ টা করলো না। আমি এই চিপস্ একদম পছন্দ করি না। যাই হোক, একটু পর গুটি গুটি পায়ে আমরা বাড়ি থেকে রওনা হলাম এবং বাড়িতে পৌঁছে গেলাম। বাড়িতে ঢোকার সাথে সাথেই অভ্র রং পেন্সিল গুলো খুলে তার আঁকা ছবি গুলোতে রং করতে শুরু করলো। সত্যি বলতে আমরা সবাই বেশ খুশি হই ওর এসব কর্মকাণ্ডে। যতটা পারি আরো বেশি উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করি। দেখা যাক ভবিষ্যতে কতদূর যেতে পারে। ঈশ্বর সব সময় যেন অভ্রর সহায় হন।

Sort:  
 2 years ago 

মামা ভাগ্নের এক বিকেল দারুন সময়ই উপভোগ করেছেন। দাদা ভাগ্নে কিন্তু চমৎকার অংকন করতে পারে। দাদা এর পরে ভাগ্নের রং করা অংকন অবশ্যই শেয়ার করবেন আমরা সবাই মিলে দেখবো। ভাগ্নের জন্য শুভ কামনা রইল।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাই, ছোট থেকেই বেশ ভালো আর্ট করে ভাগ্নে। দোয়া করবেন ওর জন্য। অনেক ধন্যবাদ ভাই।

 2 years ago 

ভাইয়া,অভ্র দুটো পরিবার মিলে একমাত্র নাতি তাহলে সে মাথায় উঠে নাচবে না তো কে নাচবে?অভ্রর অনেকগুলো পারদর্শিতার কথা আপনার পোস্ট পড়ে জানতে পারলাম, সেই সাথে ওর আঁকা অংকন গুলো দেখে নিলাম। মামা ভাগ্নে মিলে রং পেন্সিল কিনতে গিয়ে বিকেল বেলায় খেলার মাঠে বেশ সুন্দর সময় উপভোগ করেছেন। আর সেই উপভোগ্য সময় টুকু খুব সুন্দর বর্ণনা করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই। আপনার ও আপনার ভাগ্নের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো।

 2 years ago 

হাহাহাহা, বেশ বলেছেন ভাই। দোয়া করবেন ভাই। ভাগ্নে যেন ভালো মানুষ হয়ে উঠতে পারে। অনেক ভালোবাসা রইলো।

 2 years ago 

মামা আর ভাগ্নে মিলে দারুন একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন দেখছি। আপনার ভাগ্নে দুষ্টুমিতে সেরা হলেও তার দারুন গুণ দেখছি। গান-বাজনার ছোঁয়াটা হয়তো সে আপনার থেকেই পেয়েছে। আপনাদের দিক থেকে এবং তাদের বাড়ির দিক থেকে দুই দিক থেকেই একমাত্র নাতি সে, তাই আদরের তো হবেই। মামার কাছ থেকে যখন কিনবে ,তখন ছোট রং পেন্সিল কেন কিনবে ?বড় তাই তো কিনবে, হা হা হা। আমিও এই সুযোগ পেলে ওর মতো একই কাজ করতাম।

 2 years ago 

কি আর বলি বলুন,, মামা হয়েও আরেক জ্বালা,, যত বায়না আছে সব মামার কাছে 🤪🤪 অবশ্য আমিও তাই করতাম হিহিহিহি। তবে এগুলো এক অন্যরকম মজা, অন্য রকম ভালো লাগা। ❤️

 2 years ago 

কে জানে ,এখনো এই অনুভূতিটা বুঝতে পারিনি। যখন কারো মামী হবো তখন হয়তো বুঝতে পারবো, হি হি হি।

 2 years ago 

হাহাহাহা,, দারুন বলেছেন কিন্তু 👌👌👌😉 আসলে সময় আর পরিস্থিতি আমাদের সব বুঝিয়ে দেয়।

 2 years ago 

একদমই তাই ,পরিস্থিতির চাপে পড়লে ঠিক বুঝে যাব 😂😂😂।

Coin Marketplace

STEEM 0.13
TRX 0.33
JST 0.034
BTC 111407.50
ETH 4286.74
SBD 0.84