ভ্রমন: রঙ্কিনী দেবীর মন্দির (পর্ব -০২)

in আমার বাংলা ব্লগlast year

বন্ধুরা,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি।

আজকের নতুন একটি ব্লগে সবাইকে স্বাগতম । আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে ভ্রমণ মূলক একটি পোস্টের দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করব। কয়েক মাস আগে রঙ্কিনী দেবীর মন্দির গেছিলাম বর্ণনাগুলো সেই জায়গা নিয়ে ।

20230224_114020.jpg

20230224_114140.jpg

20230224_113958.jpg
প্রথম পর্বের লিঙ্ক

আমার এক বন্ধু মা কালীর অনেক বড় ভক্ত ছিল। সে আমাদেরকে বেশি উৎসাহিত করেছিল সেখানে গিয়ে পুজো দেওয়ার জন্য। আমরা রীতিমতো পুজো সামগ্রীর একটি দোকান থেকে পুজোর সবকিছু কিনে লাইনে দাঁড়িয়ে পুজো দিয়েছিলাম। পুজো শেষ করে বাইরে আসার পরে আমাদের সবারই আগ্রহ হয় এই মন্দির সম্পর্কে বিস্তারিত সবকিছু জানার। আমাদের অটোচালক যেহেতু মাঝে মাঝেই এইখানে দর্শনার্থী নিয়ে আসে তাই তার মুখস্ত ছিল এখানের ইতিহাস। আমরা তার কাছে বসে এখানের ইতিহাস শোনা শুরু করি। তার কাছ থেকে আমরা যা জানতে পেরেছিলাম তা আমি নিজের ভাষায় বলছি।

20230224_114627.jpg

20230224_114608.jpg

এই মন্দিরের অনেক বড় ইতিহাস রয়েছে। পুরো ইতিহাস মাথায় না থাকলেও কিছু বিষয় মাথায় রয়েছে যেগুলো তোমাদের সাথে শেয়ার করছি। এই মন্দিরের ইতিহাস ৫০০ বছরেরও অনেক আগের। এই মন্দিরে আগে নরবলি দেওয়া হতো। যেটা বন্ধ হয়েছিল ৫০০ বছর আগেই। সেই নরবলি বন্ধ হওয়ার কারণ এক এক জনের কাছে একরকম শোনা যায়। তবে যে ঘটনাটি সবার মাঝে বহুল পরিচিত সেই ঘটনাটি আমাদের বলেছিল সেই অটোচালক। এই জায়গায় দুটি নরবলি দেওয়ার স্থান ছিল। একটি মন্দিরের মধ্যে আরেকটি মন্দির থেকে আরেকটু দূরে যেটা একটুখানি পাহাড়ে উঠে যেতে হয় । যে জায়গাটি ধোবি ঘাট নামে পরিচিত।পূর্বে এই ধোবি ঘাট নামক জায়গাটিতেই সব থেকে বেশি নরবলি দেওয়া হতো। নরবলি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পিছনের সেই ঘটনাটি বলছি। যাইহোক প্রায় পাঁচশো বছরেরও বেশি পূর্বের কথা। সেই সময় এক রাজা ছিল বিক্রম দেব নামে। তিনি ছিলেন ধলভঙ্গের রাজা। এই ধলভঙ্গের রাজাই এখানের রঙ্কিনী দেবীর মন্দির প্রতিষ্ঠিত করেছিল। এই মন্দিরের দেবীর পুজো দেওয়ার জন্য তিনি নরবলি দিয়ে থাকতেন।

20230224_114226.jpg

20230224_114224.jpg

রাজা বিক্রম দেব এর কন্যার নাম ছিল চিত্রলেখা। চিত্রলেখাও ছিল রঙ্কিনী দেবীর অনেক বড় ভক্ত ।প্রতিনিয়তই সে রঙ্কিনী দেবীর প্রার্থনা করে থাকতেন। এই রাজকন্যা চিত্রলেখা ছিলেন অসাধারণ সুন্দরী। রাজকন্যা সেই সময়কার গুজরাটের শোলাঙ্কি বংশের রাজকুমার ইন্দ্র সেনের প্রেমে পড়ে যায়। তাদের এই প্রেমের বিষয়টা জানাজানি হয়ে যায় এবং তাদের এই বিষয়টা রাজা বিক্রম দেবের লোকজন ধরে ফেলে। তাদের একসাথে ধরে ফেলার পরে শোলাঙ্কি বংশের রাজপুত্র ইন্দ্র সেনকে বলি দিয়ে এই কলঙ্ক মুছে ফেলার জন্য উত্তেজিত হয় রাজা বিক্রম দেব। ইন্দ্রসন কে পরবর্তী অমাবস্যার দিনে বলি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যা বিক্রম দেব স্থির করেছিলেন। এই বিষয়টা কোনভাবেই চিত্রলেখা মেনে নিতে পারছিল না । চিত্রলেখা ইন্দ্রসেনের প্রেমে এতটাই মগ্ন ছিল সে বারবার রঙ্কিনী দেবীর কাছে প্রার্থনা করতে থাকে এই নরবলি থেকে তার ভালোবাসার মানুষকে রক্ষা করার জন্য।

চলবে...

20230224_114229.jpg

পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীভ্রমণ
ডিভাইসSamsung Galaxy M31s
ফটোগ্রাফার@ronggin
লোকেশনরোহিনীবেরা, জাদুগোড়া ,জামশেদপুর , ঝাড়খণ্ড , ভারত।

রঙ্কিনী দেবীর মন্দির যাওয়া নিয়ে শেয়ার করা আজকের দ্বিতীয় পর্বের ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও। সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 56560.74
ETH 2390.02
USDT 1.00
SBD 2.34