ভ্রমন: মৌসুনি আইল্যান্ড (পর্ব- ০৫)
বন্ধুরা,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও বেশ ভালো আছি। |
---|
আজকের নতুন একটি ব্লগে প্রথমেই সবাইকে স্বাগতম জানাই। তোমরা সবাই জানো যে, বেশ কিছুদিন আগে আমি বন্ধুদের সাথে মৌসুনি আইল্যান্ড নামক একটি জায়গায় ঘুরতে গেছিলাম ।
এই নিয়ে অলরেডি তোমাদের সাথে পূর্বে চারটি পর্ব শেয়ার করেছি। আজকে আমি সবার সাথে পঞ্চমতম পর্বটি শেয়ার করতে যাচ্ছি।
নিজের সাথে নিজে সময় কাটাতে অনেকটাই ভালো লাগে আমার । যারা এই জিনিসটা উপভোগ করেছে তারাই সঠিকভাবে জানে এর মজা। সত্যি কথা বলতে আমি নিজের সাথে নিজে অনেকটা সময় অতিবাহিত করি । তাই যখন মৌসুনি আইল্যান্ড ঘুরতে গিয়ে একা একা আমি হেঁটে হেঁটে বেড়াচ্ছিলাম সমুদ্র সৈকতের একপাশ থেকে অন্য পাশে আমার মোটেও খারাপ লাগছিল না তখন। আমি এই বিষয়টাকে অনেক অনেক উপভোগ করছিলাম। এই মৌসুনি সমুদ্র সৈকতে বিশেষ করে বর্ষার সময়টাতে প্রচন্ড পরিমাণে সমুদ্রের স্রোত দেখা যায়। যার ফলে সমুদ্রের উপকূলে যে জায়গা গুলো রয়েছে সেগুলো অনেকটাই ভেঙ্গে যায় এই স্রোতের কারণে। জোয়ারের সময় সমুদ্রের উঁচু উঁচু ঢেউ দেখা যায় এইখানে, যে বিষয়টা আমি পরের দিন স্পষ্ট দেখতে পেয়েছিলাম এবং বুঝতে পেরেছিলাম।
আমাদের রিসোর্টের সামনে বরাবর যে সমুদ্র সৈকতের অংশটুকু ছিল সেই জায়গা থেকে আমি সামনের দিকে অনেকটা হেঁটে গেছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি মাটি খননের কাজ চলছে জেসিবি মেশিন দিয়ে। এই মেশিনগুলো দিয়ে ভাঙা উপকূলের মাটি ভরাট করা হয় এবং সেই সাথে বিভিন্ন ধরনের বাঁশ ও গাছের কাণ্ড এই উপকূলবর্তী এলাকাতে পুঁতে দেওয়া হয়। যার ফলে ভাঙ্গন কিছুটা হলেও রোধ করা যায়। জোয়ারের সময় এই কাজগুলো করা যায় না তাই ভাটার সময় এই জেসিবি মেশিন দিয়ে কাজগুলো করা হচ্ছিলো। আমি অনেকগুলো জেসিবি মেশিন দেখতে পেয়েছিলাম এই সমুদ্র সৈকতে থাকাকালীন সময়ে।
সমুদ্র সৈকতে গিয়ে আমার সব থেকে মজার একটা অভিজ্ঞতা হয়েছিল সেটা হলো মরা শঙ্খের খোলসের মধ্যে কাঁকড়া মাছ দেখা। আমি প্রথমে এই কাঁকড়া গুলোকে শঙ্খের খোলসের মধ্যে দেখে ভেবেছিলাম এগুলো অন্য কোন প্রকারের কাঁকড়া হবে যাদের উপরের আবরণ শঙ্খের খোলসের মত । তবে কিছুক্ষন পরেই আমার ভুলটা ভাঙ্গে যখন আমি আমার বন্ধুদের এটি দেখাতে নিয়ে যাই । তারা স্নান করায় ব্যস্ত ছিল সমুদ্রে। আমি তাদেরকে ডেকে জানায়, আমি অদ্ভুত এক প্রকারের কাঁকড়া পেয়েছি কিন্তু তারা এটি দেখে যখনই আমাকে মরা শঙ্খের খোলসের মধ্যে কাঁকড়াগুলোর লুকিয়ে থাকার বিষয়টি বলে তখন আমি আসল ঘটনাটা জানতে পারি। কাঁকড়াগুলো নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য এই কাজ করে। এই বিষয়টি আমি তখন জেনে বেশ অবাক হয়েছিলাম কারণ এই বিষয়টি তাদের কাছ থেকেই প্রথম আমি জানতে পেরেছিলাম। শঙ্খের খোলসে কাঁকড়া দেখতে বেশ সুন্দর লাগছিলো তাই আমি নিজের হাতে নিয়ে কিছু ফটোগ্রাফি করেছিলাম এটির। আমার বন্ধুরাও এটি হাতে নিয়েছিল সেই সময়ও আমি কিছু ফটোগ্রাফি করে নি। শঙ্খের খোলসে কাঁকড়া দেখা শেষ করে তারা স্নানের জন্য পুনরায় চলে যায় ।
বন্ধুরা চলে যাওয়ার পর এই কাঁকড়া নিয়ে বাচ্চাদের মতই একপ্রকার খেলা করছিলাম আমি। কাঁকড়ার অঙ্গভঙ্গি ক্যামেরাবন্দি করছিলাম। কিছু ভিডিও করেছিলাম যদিও আজকের ব্লগে সেই ভিডিও শেয়ার করলাম না আর। যাইহোক এই কাঁকড়া নিয়ে অনেকটা সময় কাটানোর পর আমি আবার আমার রিসোর্ট এর সামনের জায়গাটিতে চলে যাই । সেখানে গিয়ে বালির উপর কিছু নামের অক্ষরও লিখি । এভাবে টুকটাক করে আরো কিছুটা সময় সমুদ্র সৈকতে আমি কাটাই এবং বন্ধুরা স্নান করে কখন ফিরবে সেই অপেক্ষা করতে থাকি। তারা না ফেরা পর্যন্ত পরবর্তী প্ল্যান করা হচ্ছিল না সেইজন্য তাদের অপেক্ষায় থাকি আমি। সেই সময়টাতে অনেকটা দুপুর হয়ে গেছিল।
ক্যামেরা: স্যামসাং
মডেল: SM-M317F
ফটোগ্রাফার: @ronggin
অবস্থান: মৌসুনি আইল্যান্ড, ওয়েস্ট বেঙ্গল।
মৌসুনি আইল্যান্ডটা দেখতে বেশ সুন্দর।
আর সবথেকে দারুন লেগেছে মরা শঙ্খের ভেতরে কাঁকড়া দেখে। আমি এমনটা দেখিনি কখনো।
আর এধরনের পরিবেশে গেলে এমনিতেই মন ভালো হয়ে যায়।
এইখানে ঘুরতে গিয়ে শঙ্খের ভেতরে কাঁকড়া দেখার বিষয়টি আমার কাছেও অনেক বেশি ভালো লেগেছিল ভাই।
সমুদ্র আমার অনেক পছন্দের জায়গা। তবে এখন পযর্ন্ত সমুদ্র দর্শন হয়নি আমার। মৌসুনি আইল্যান্ড এর ভিডিও এর জন্য অপেক্ষায় থাকলাম ভাই। আপনার আজকের পোস্ট টা চমৎকার ছিল। ঐগুলো কে আমরা সামদ্রিক শামুক বলি। আপনার শেয়ার করা ফটোগ্রাফি গুলো চমৎকার ছিল। সবমিলিয়ে দারুণ ছিল আপনার পোস্ট টা। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে পোস্ট টা শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
ভাই সমুদ্র আপনার পছন্দের জায়গা হওয়া শর্তেও এতদিনে আপনার সমুদ্র দেখার সুযোগ হয়নি! এটা বেশ কষ্টের ব্যাপার ভাই। আপনি খুব তাড়াতাড়ি সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার একটা প্ল্যান করে ফেলেন ভাই।