ভ্রমন: মৌসুনি আইল্যান্ড (পর্ব- ০৪)

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago

বন্ধুরা,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও বেশ ভালো আছি।
আজকের নতুন একটি ব্লগে প্রথমেই সবাইকে স্বাগতম জানাই। তোমরা সবাই জানো যে, বেশ কিছুদিন আগে আমি বন্ধুদের সাথে মৌসুনি আইল্যান্ড নামক একটি জায়গায় ঘুরতে গেছিলাম । যদিও তাই নিয়ে অলরেডি তোমাদের সাথে তিনটি পর্ব শেয়ার করেছি। আজকে সবার সাথে চতুর্থতম পর্বটি শেয়ার করতে যাচ্ছি।

তৃতীয় পর্বের লিঙ্ক

20230731_114523.jpg

20230731_114542.jpg

অনেকক্ষণ ধরে ফাঁকা এই সমুদ্র সৈকতে হাঁটাহাঁটি করার পর আমি একটা বিষয় খেয়াল করি যে, হালকা হালকা করে বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশে মেঘ খুব একটা ছিল তা বলবো না, হালকা পাতলা ছিল। হঠাৎ করে এভাবে বৃষ্টি নামবে আমি বুঝতে পারিনি । যেহেতু আমার সেই মুহূর্তে ভেজার কোন ইচ্ছে ছিল না সেইজন্য আমি তাড়াতাড়ি করে আমাদের রিসোর্ট এর কাছাকাছি একটি জায়গায় চলে আসি। সেখানে বসার জায়গা ছিল এবং উপরে শেড দেওয়া ছিল এজন্য শরীরের বৃষ্টি আর লাগছিল না।

20230731_115142.jpg

20230731_115242.jpg

এই হালকা বৃষ্টির মধ্যেই জোরে জোরে মেঘ ডাকা শুরু হয়ে যায়। আমি মেঘ ডাকা জিনিসটা খুবই ভয় পাই । সত্যি কথা বলতে আমাকে জিজ্ঞেস করে, "তোমার লাইফের সবচেয়ে বড় ভয় কি?" তাহলে আমি চোখ বন্ধ করে এক সেকেন্ড না ভেবেই এর উত্তর দেব, মেঘ ডাকা এবং বজ্রপাত। এই উত্তরের পিছনে অনেক বড় গল্প আছে। সেই কথা আজকে আর শেয়ার করলাম না । যাই হোক মেঘ এর এরকম গর্জন শুনে আমি তাড়াতাড়ি করে আমার রিসোর্ট এর রুমে চলে যাই । ভেবেছিলাম শেডের নিচে বসে সমুদ্রের বৃষ্টি উপভোগ করব কিন্তু মেঘ ডাকার কারণে সেটা করতে পারছিলাম না আর। কিছু সময় পর মেঘ ডাকা এবং বৃষ্টি বন্ধ হলে আমি সেই শেডের নিচে পুনরায় এসে বসি। সেখানে গিয়ে দেখি দুটি বাচ্চা সেই শেডের নিচে বসে সমুদ্র সৈকতের সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করছে। ততক্ষণে সমুদ্র সৈকতও অনেকটা বড় হয়ে গেছিল জোয়ারের কারণে, অনেকটা চর জেগে উঠেছিল।

20230731_115217.jpg

20230731_115327.jpg

কিছুক্ষণ আগে বৃষ্টি হওয়ার কারণে ঠান্ডা ঠান্ডা হাওয়া বয়ে যাচ্ছিল। ওভারঅল অসাধারন একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল উপভোগ করার মতো। আমি সেই শেডের জায়গার ওইখানে বসে বাচ্চাদের সাথে গল্প করতে করতে সমুদ্র দেখি। তবে গল্প করার সময় কেউ কারোর ভাষা বুঝতে পারছিলাম না, যে যার মত করেই বলে যাচ্ছিলাম। এখানকার ভাষাটা শুদ্ধ বাংলা ভাষা ছিল না। এদের ভাষার মধ্যে আঞ্চলিকতা অনেক বেশি ছিল। সেজন্য স্পষ্ট বুঝতে পারছিলাম না আমি তাদের কথা। তাই অল্প সল্প কথা বলে পুনরায় যে যার মত বসে এই সমুদ্রের সৌন্দর্য দেখায় ব্যস্ত হয়ে পড়ি। কিছু সময় পর দূর থেকে আমার বন্ধুরা আমাকে ডাক দেয় তাদের ফটো তুলে দেওয়ার জন্য। যেহেতু তারা সমুদ্রে স্নান করছিল তাই তারা এই দৃশ্যকে ক্যামেরায় বন্দি করতে চেয়েছিল । এর আগে যখন তারা স্নান করছিল বৃষ্টির কারণে ফটো তোলার কোন সুযোগ ছিল না তাই তারা আমাকে এর আগে ডাকেনি । বৃষ্টি পুরোপুরি থেমে যাওয়ার পরেই ডেকেছিল।

20230731_115640.jpg

20230731_115651.jpg

যাইহোক তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে আমি তাদের কাছাকাছি গিয়ে তাদের কিছু ফটো তুলে দিয়েছিলাম ।তারপর পুনরায় আমি এই সমুদ্র সৈকতের উপর দিয়ে হাঁটাহাঁটি করে বেড়ায়। এই সমুদ্র সৈকতের কিছু কিছু জায়গায় অনেকটা গর্ত ছিল এবং সেখানে জল জমে ছিল। এই গুলো দেখে বোঝার কোন উপায় ছিল না যে ওইখানে অতটা গর্ত থাকতে পারে, পা দেওয়ার পরেই বোঝা যাচ্ছিল অনেকটা গর্ত! এরকম কয়েকবার ভুল করে আমি কিছুটা ভিজেও যাই। ওভারঅল আমি একা একাই মজা করে বেড়াচ্ছিলাম আর অন্যদিকে আমার বন্ধুরা স্নান করে সমুদ্রের মজা নিচ্ছিল। প্রথমে যখন সমুদ্র সৈকতে আমি হাঁটাহাঁটি করার জন্য গেছিলাম অন্য কাউকে আমরা দেখতে পাইনি কিন্তু বৃষ্টি থামার পর কিছু কিছু লোকের দেখা পেয়েছিলাম এই সমুদ্র সৈকতে।



ক্যামেরা: স্যামসাং
মডেল: SM-M317F
ফটোগ্রাফার: @ronggin
অবস্থান: মৌসুনি আইল্যান্ড, ওয়েস্ট বেঙ্গল।



বন্ধুরা , মৌসুনি আইল্যান্ড ভ্রমন নিয়ে আজকের শেয়ার করা চতুর্থ পর্বের ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানিও। সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে

Sort:  
 10 months ago (edited)

মেঘ ডাকা এবং বজ্রপাত নিয়ে আপনার ভয়ের কারণটি একদিন শুনতে চাই, আশা করি খুব দ্রুতই শেয়ার করবেন ‌। আমিও বজ্রপাত অনেক ভয় পাই কিন্তু ঘরের ভিতরে থেকে কতটা ভয় পাই না। বিচের ফটোগ্রাফি গুলো দেখেই বোঝা যাচ্ছে বিচের চারিপাশে ভীষণ গর্ত।

 10 months ago 

হ্যাঁ আপু বজ্রপাত নিয়ে আমার ভয়ের কারণটা অবশ্যই আপনাদের সাথে একদিন শেয়ার করব।

 10 months ago 

জায়গাটা দেখে মনে হচ্ছে বেশ নিরিবিলি। তবে এমন জায়গায় সময় কাটাতে খুব ভালো লাগে। সমুদ্রে গোসল করার সময় কেউ ছবি দিলে খুব ভালো হয়। কারণ এতো সুন্দর মুহূর্ত ক্যামেরা বন্দী না করলেই নয়। যাইহোক একা একা নিজের মতো হাঁটাহাঁটি করে বেশ ভালোই সময় কাটালেন। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুব ভালো লাগলো। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 10 months ago 

হ্যাঁ ভাই জায়গাটা অনেক বেশি নিরিবিলি ছিল। আমার শেয়ার করা ফটোগ্রাফি গুলো আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক খুশি হলাম ।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 66785.43
ETH 3494.10
USDT 1.00
SBD 2.83