শৈশবের স্মৃতিচারণ: সাইকেল চালানো শিখতে গিয়ে ( পর্ব -০২) শেষ পর্ব।

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago

বন্ধুরা,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও ভালো আছি।

শৈশবে সাইকেল চালানো শিখতে যাওয়া নিয়ে আজকের দ্বিতীয় অর্থাৎ শেষ পর্বে আরো কিছু কথা শেয়ার করবো এই ব্লগে।

bicycle-1296859_1280.png

ইমেজ সোর্স

প্রথম পর্বের লিঙ্ক

এই সময় সেই দেয়ালে আমার পা প্রচন্ড জোরে ঘষা খায় এবং অনেকটা পা কেটে যায়। সেই সময় অনেক রক্ত পড়ছিল, রক্ত পড়া বন্ধ করাই যাচ্ছিল না। সময়টা দুপুরের সময় ছিল আর গ্রামের ওই রাস্তায় কোনো লোক ছিল না ওই সময়টাতে। তাই রাস্তায় কারো সাহায্য না পেয়ে আমি কেটে যাওয়া অংশ চেপে ধরে কাছাকাছি একটা বাড়িতে গিয়ে সাহায্য নি তাদের। সেই সময় আমার কাকার সেই সাইকেলটা সেই দুর্ঘটনার জায়গায় পড়ে ছিল। যাই হোক সেই বাড়ি থেকে পরিষ্কার কিছু কাপড় পায়ে বেঁধে নি রক্ত পড়া বন্ধ করার জন্য। তারপর দুর্ঘটনার জায়গা থেকে সাইকেল নিয়ে বাড়িতে চলে আসি। বাড়ির সবাই অনেক বকা দিয়েছিল সাইকেল নিয়ে পড়ে গেছি এই কথা শুনে। তবে আমি সত্যিটা বলিনি বাড়ি, যে চোখ বন্ধ করে সাইকেল চালাতে গিয়ে এরকম অবস্থা হয়েছে।

পায়ের কাটা অনেকটাই ছিল। সেই জন্য বাড়ির লোকজন তাড়াতাড়ি করে আমাকে গ্রামের একটি ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় ভালো করে ব্যান্ডেজ করে দেওয়ার জন্য । সেখানে যাওয়ার পর সেই ডাক্তার আমাকে পায়ে ভালো করে ব্যান্ডেজ করে দেয় এবং হাতে একটি ইনজেকশন লাগাতে হবে বলে । আমি ছোটবেলায় ইনজেকশনে প্রচন্ড ভয় পেতাম। তারপরও নিতে হয়েছিল। সেই সময় আমি অনেক কান্নাকাটি করেছিলাম ইনজেকশন না নেওয়ার জন্য । তবে কোন কিছুতে মাপ হয়নি, ইনজেকশন আমাকে নিতে হয়েছিল ।

সাইকেল চালানো শিখতে গিয়ে নিজের দোষেই এরকম এক্সিডেন্ট ঘটেছিল আমার সাথে। এখনো আমার পায়ে সেই কাটা দাগ রয়েছে। এত বছর হয়ে গেছে কিন্তু কাটা দাগের চিহ্ন এখনো যায়নি। ছোটবেলায় অনেক দুষ্টুমি করেছি এবং সেই জন্য অনেক কিছু সাফারও করতে হয়েছে আমাকে। আর গ্রামের ছেলেরা এরকম ভাবেই বড় হয়। গ্রামের ছেলেদের দামাল ছেলে বলা হয় এই জন্য। সেই সময়টাতে কোন কিছু করতে ভয় লাগতো না । এখন এইসব বিষয়গুলো ভাবলে একটু ভয় ভয় লাগে , তবে সেই সময়টাতে এইসব কোন কিছুই কাজ করতো না। কোন কিছু করার ইচ্ছা হলে করেই দিতাম এরকম ব্যাপার ছিল।

যাই হোক, এই ছিল আমার সাইকেল চালানো শিখতে যাওয়ার ঘটনা । সাইকেল চালানো শেখা ভালো তবে চোখ বন্ধ করে আমার মত দুষ্টুমি করে সাইকেল চালানো উচিত নয় । এতে আরো বড় কোন দুর্ঘটনাও হতে পারতো। এই ঘটনার অনেক বছর হয়ে গেছে। পাঁচ দিন আগে আমার সাইকেলটা রুমের বাইরে ছিল , এটিকে উচু করে রুমের ভিতরে নেওয়ার সময় পায়ে একটু কেটে যায়। তারপরে শৈশবের এই ঘটনাটি মনে পড়ে যায়। তাই তোমাদের সাথে শেয়ার করলাম ঘটনা টি।

বন্ধুরা, শৈশবে সাইকেল চালানো শিখতে যাওয়া নিয়ে শেয়ার করা এই ব্লগটির শেষ পর্ব তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানিও। সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে

Sort:  
 7 months ago 

শৈশবের ঘটনা পড়লে সত্যি হাসি পায়। আসলে ভাইয়া শৈশবে আমরা যা করি তা এখন মন হলেই ভয় হয়। সত্যি ইনজেকশন নিলে ভয় লাগাটা স্বাভাবিক তবে আপনার ক্ষেত্রে ইনজেকশন নেওয়া জরুরি ছিল। যাক এখন পা কেটে ছোটবেলার কথা মনে করে দিয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 7 months ago 

হ্যাঁ আপু কোথাও বেশি কেটে গেলে এই ইনজেকশন দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। ভয় পেলেও জরুরী যে কাজ, সেই কাজ তো করাই লাগবে।

 7 months ago 

কথায় আছে,না ডুবলে কেউ সাতার শেখে না আর না পড়লে কেউ সাইকেল চালানো শেখে না। বেশি বড় দুর্ঘটনা যে হয়নি এটাই বড় কথা।আমি সাইকেল চালানো শিখতে গিয়ে এক লোকের গায়ের উপর সাইকেল নিয়ে পড়ে গেছিলাম।হাহাহা।কাটা দাগটা সারাজীবন আপনার এই স্মৃতি মনে করিয়ে দেবে।ভালই লাগল আপনার সাইকেল শেখার অভিজ্ঞতা পড়ে।ধন্যবাদ দাদা শৈশবের স্মৃতি শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 7 months ago 

হ্যাঁ ভাই, কাটা দাগ গুলো স্মৃতি হয়ে থাকে । এগুলো দেখলে সেই স্মৃতিগুলো সামনে ভেসে ওঠে। ভাই সাঁতার শিখতে গিয়ে ডুবে জলও খেয়েছি আর সাইকেল থেকে অনেক বার পড়েও গেছি । এই কারণে এই দুটি ব্যাপার খুব ভালোভাবে শিখে গেছিলাম সেই ছোটবেলাতেই।

 7 months ago 

সুন্দর একটি স্মৃতিচারণ করেছেন আজকে। আমারও সাইকেল চালানো নিয়ে বেশ সুন্দর ঘটনা রয়েছে। মনে ছিল না এগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করব কিন্তু আজকে আপনার এই পোষ্টের মধ্য দিয়ে মনে হয়ে গেল। যাই হোক আপনার ঘটনাটা পড়ে খুশি হলাম। আমিও শেয়ার করব একদিন এই বিষয়ে।

 7 months ago 

সাইকেল চালানো নিয়ে আপনার কি সুন্দর ঘটনা রয়েছে, সেটি অবশ্যই আমাদের সাথে খুব তাড়াতাড়ি শেয়ার করবেন ভাই। সেই ঘটনা জানার অপেক্ষায় রইলাম।

 7 months ago 

শৈশবের সাইকেল চালানোর সৃতিচারণ করেছেন বেশ ভালো লাগলো।আপনার পা কেটে অনেক রক্ত বের হয়েছে এটা জেনে খারাপ লাগলো কিন্তুুু যখন পড়লাম যে চোখ বন্ধ করে চালাতে গিয়ে এমন দূর্ঘটনার সমমুখী হয়েছিলেন তখন একটু হাসি পেলো।সব মিলিয়ে বেশ ভালো লাগলো পোস্ট টি ধন্যবাদ।

 7 months ago 

দিদি, চোখ বন্ধ করে সাইকেল চালানোর এই ঘটনাটি এখন ভাবলে আমার নিজের কাছেও হাসি পায়। অনেক বোকামির একটা কাজ ছিল এটি।

 7 months ago 

আজ থেকে সাত বছর আগে সাইকেল থেকেই পড়ে গিয়ে আমার হাত কেটে যায়। এখন পযর্ন্ত সেই দাগ মেটেনি। আপনার পা কেটে যাওয়ার কথাটা পড়ে মনে পড়ে গেল। সাইকেল চালাতে গিয়ে আপনার পা দেখছি বেশ ভালোভাবে যখম হয়। এটা বেশ দুঃখজনক। আর ছোটবেলা কেউই ইনজেকশন নিতে চাইতো না ভাই হা হা।

Posted using SteemPro Mobile

 7 months ago 

কাটা দাগ কখনো পরিপূর্ণভাবে মিটে যায় না ভাই। এই দাগ থেকেই যায় সারা জীবন ।

 7 months ago 

আপনি যে চোখ বন্ধ করে সাইকেল চালাতে গিয়ে এরকম এক্সিডেন্ট ঘটিয়েছেন আপনার পরিবারের জানার দরকার ছিল এরকম দুষ্টুমি করতে যেয়ে এত বড় একটি দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছিলেন। ইনজেকশন আরো কয়েকটা লাগানোর দরকার ছিল। তাছাড়া ছোটবেলায় মানুষের কি আর হিতাহিত জ্ঞান থাকে। তখন মাথায় যা আসে তাই করতে মন চায়। তারপরও ভাগ্য ভালো যে অল্পের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিল।

 7 months ago 

তাছাড়া ছোটবেলায় মানুষের কি আর হিতাহিত জ্ঞান থাকে। তখন মাথায় যা আসে তাই করতে মন চায়।

হ্যাঁ আপু একদম ঠিক কথা বলেছেন, তখন হিতাহিত জ্ঞান থাকলে তো এমন কাজ করতামই না। অল্প বয়সে যখন যা মাথায় আসে তাই করে ফেলে সবাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 60984.38
ETH 3379.71
USDT 1.00
SBD 2.47