শৈশবের স্মৃতিচারণ: তাল কুড়ানো (পর্ব-০২)

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

বন্ধুরা,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও বেশ ভালো আছি।
কিছুদিন আগে, তাল কুড়ানো নিয়ে শৈশবের একটি ঘটনার প্রথম পর্ব তোমাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম । আজ সেই ঘটনার দ্বিতীয় পর্বটি শেয়ার করব।

প্রথম পর্বের লিংক

trees-7107965_1280.jpg

ইমেজ সোর্স

আমার যে বন্ধুদের গ্রুপ ছিল তারা আমাদের গাছের তাল এসে কুড়াতো না। আমরা বন্ধুরা প্লান করে অন্য জায়গায় গিয়ে তাল কুড়িয়ে নিয়ে আসতাম। বাঁশ বাগানের মধ্যে আমাদের যে তালগাছটি ছিল সেই গাছের তালগুলো অনেক বড় বড় এবং কালো ধরনের হত। সেইজন্য এই তাল গুলোর ডিমান্ড সবার কাছে বেশি ছিল । পাড়ার সব ছেলেদের নজর আমাদের এই তাল গাছের উপর থাকতো। যাইহোক তালের মৌসুমে আমি অনেকগুলো তাল কুড়িয়ে পেলে সেইগুলো গ্রামের হাটে নিয়ে বিক্রিও করতাম অনেকবার।

হাটে বিক্রি করা বেশ ইন্টারেস্টিং কাজ তবে সবসময় এই কাজগুলো আমি করতে পারতাম না। আমার কুড়ানো তালগুলো বন্ধুদের কাছে দিয়ে দিতাম আর তারাই বিক্রি করে দিত । তাল বিক্রি করা টাকা থেকে কিছু অংশ তাদেরও দিতাম। তাল পাকার ভরা মৌসুমে এই কাজগুলো প্রায় সময় করা হতো। গ্রামে সবাই ঘুম থেকে বেশ সকালে উঠে পড়ে। আমিও সবার মত তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে যেতাম। প্রতিদিন চেষ্টা করতাম ভোরের দিকে ওঠার জন্য। এই ভোরের সময় তাল কুড়াতে গেলে বেশ তাল পাওয়া যেত। একবার বন্ধুদের নিয়ে প্ল্যান করি ভোরের সময় আমরা তাল কুড়াতে যাব। আমরা যে জায়গায় তাল কুড়াতে যাব বলে ঠিক করেছিলাম সেখানে প্রায় কুড়ি থেকে ত্রিশটি তাল গাছ একসাথে ছিল।

এই জায়গার আশেপাশে কোন বাড়িও ছিল না । এইখানে আমাদের গ্রামের একটি লোক শখ করে অনেক বছর আগে বেশ কিছু তালগাছ লাগিয়েছিল। তবে এইখানের তালগুলো মালিক সাধারণত পেত না । যে তালগুলো নিচে পড়তো, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন লোকজন এসে এই তালগুলো কুড়িয়ে নিয়ে যেত। আমরা বন্ধুরা মিলেও একবার এই জায়গাকে টার্গেট করি এবং টাইম ঠিক হয় ভরে যাওয়ার। ভোর বলতে ভোর চারটার দিকে। এত সকালে বাড়ি থেকে কি বলে বের হব তাই নিয়ে একটু ভাবনা চিন্তায় পড়ে গেছিলাম আমি। বন্ধুরা বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গেলে বাড়ির লোক কিছু বলবে না এবং বাড়ির লোক তখন বুঝতে পারবে হয়তো তাল কুড়ানোর জন্য যাচ্ছি এই ভেবে নিজের চিন্তা দূর করি। সেদিন বন্ধুদের সাথে বিকালের সময় প্ল্যান করে তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে আসি। রাতে সময় মতো খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়ি কারণ পরের দিন ভোর চারটার সময় উঠতে হবে।

চলবে...



বন্ধুরা, তাল কুড়ানো নিয়ে শেয়ার করা ব্লগটির দ্বিতীয় পর্ব তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানিও। সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে

Sort:  
 11 months ago 

বিশ এিশটা তাল পড়ে ছিল বাহ বিষয়টি তো বেশ দারুণ। আর সত্যি একেবারে ভোরে যদি বের হতেন তাহলে তো বাড়িতে জবাব দেওয়াই লাগত কোথায় যাচ্ছি কেন যাচ্ছি এটা একটা সমস্যা। আপনাদের গ্রুপের কেউ আপনাদের তাল কুড়াতো না এই বন্ডিং টা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। আপনাদের মধ্যেও একটা নৈতিকতা ছিল। আপনার এই তাল কুড়ানো এপিসোড গুলো চমৎকার লাগছে আমার কাছে। ধন্যবাদ আপনাকে।।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

তাল কুড়ানো নিয়ে শেয়ার করা ঘটনাটির এই পর্ব আপনার কাছে এত ভালো লেগেছে জেনে অনেক খুশি হলাম ভাই। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 11 months ago 

আপনার তাল কুড়ানো গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে তাল কুড়াতে হলে ভোরে উঠতে হয় ঠিক কিন্তু তাই বলে ভোর চারটার সময় কেউ তাল কুড়াতে যায় নাকি। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি অপেক্ষা করছে।

 11 months ago 

আপু সব দিন তো যেতাম না ভরে তাল কুড়াতে। ঐদিন আমরা বন্ধুরা একসাথে যাব বলে ওরকম টাইমে প্ল্যান করেছিলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59991.95
ETH 2664.96
USDT 1.00
SBD 2.45