শৈশবের স্মৃতিচারণ: তাল কুড়ানো (পর্ব-০৩)

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago

বন্ধুরা,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও বেশ ভালো আছি।
কিছুদিন আগে, তাল কুড়ানো নিয়ে শৈশবের একটি ঘটনার দ্বিতীয় পর্ব তোমাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম । আজ সেই ঘটনার তৃতীয় পর্বটি শেয়ার করব।

দ্বিতীয় পর্বের লিংক

bangladesh-6210124_1280.jpg

ইমেজ সোর্স

আমরা চারজন বন্ধু ঠিক করেছিলাম এই তাল কুড়ানোর জন্য যাব। তবে ভোর হলেই দেখি আমার দুইজন বন্ধু আমাকে ডাকার জন্য এসেছে। অন্য আরেকজনকেও তারা ডাকতে গেছিল কিন্তু অন্য সেই বন্ধুর বাড়ি থেকে এই ভোরবেলা ছাড়েনি। সেই জন্য সে আসেনি। যাইহোক, আমরা তিন বন্ধু প্ল্যান মত চলে যাই এই তাল কুড়ানোর জায়গাতে। আমরা যে সময়টাতে বেরিয়েছিলাম বাইরে বেশ অন্ধকার ছিল কারণ সূর্যের আলো তখনো ওঠেনি। সেই জন্য আমার সাথে লাইট নিয়ে গেছিলাম । গ্রাম থেকে একটু ভিতরের দিকে যেতে হবে যেখানে লোকালয় নেই। এই কারণে আমাদের বেশ ভয়ও করছিল।

আমরা হাতে বড় একটা ব্যাগ নিয়ে গেছিলাম যাওয়ার সময়। আমাদের নিজেদের উপর বিশ্বাস ছিল আমরা অনেকগুলো তাল কুড়িয়ে পাব সেই দিন এবং সেই তাল পরের দিন বাজারে নিয়ে বিক্রি করে অনেকগুলো টাকা আয় করতে পারবো। ছোটবেলার চিন্তাভাবনা গুলো যেমন হয় আর কি! যাইহোক অবশেষে হাঁটতে হাঁটতে কোনরকম ভাবে আমরা ভয়ে ভয়ে চলে যাই সেই জায়গাটিতে। আমাদের গা ছমছম করছিল ভয়ে সেখানে পৌঁছে। ভূতের ভয় আমাদের সবারই ছিল তবে আমরা তিনজন বন্ধু একসাথে ছিলাম দেখে ভূতের ভয়টা আমরা তখন পাচ্ছিলাম না। আমাদের সাথে লাইট ছিল আর আমরা এটা জানতাম যে, কাছে লাইট থাকলে ভূত কাছে আসতে পারে না । এই বিশ্বাস আমাদের মধ্যে কিভাবে এসেছিল তার সঠিক কারণ জানি না।

আমরা তাল তলায় গিয়ে দেখি অসংখ্য তাল পড়ে রয়েছে তাল গাছের নিচের জায়গাতে। আমরা তাড়াহুড়ো করে সেই তালগুলো তাড়াতাড়ি কুড়িয়ে নি। এই তাল কুড়ানোর মাঝের একটা সময় হঠাৎ করে আমাদের লাইটের আলো দূরের একটি অংশে গিয়ে পড়ে। তখন দেখি কুকুরের মত একটা প্রাণী দূরে দাঁড়িয়ে রয়েছে এবং তার চোখ জ্বলজ্বল করছে । আমরা কিছু বুঝে উঠতে পারছিলাম না প্রথমে। "কুকুর এইখানে এইভাবে কেন দাঁড়িয়ে রয়েছে?" আমরা নিজেরাই নিজেদের মধ্যে প্রশ্ন করছিলাম সেটা। মুল ব্যাপারটা হয়েছিল সেটি কোন কুকুর ছিলনা, শিয়াল ছিল। আমরা প্রথমবারে দেখে সেটাকে চিনতে পারিনি। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা সম্পূর্ণ ব্যাপারটা বুঝতে পারি। পরক্ষণে এটাও বুঝতে পারি যে, সেখানে একটি শিয়াল না, দুটি শিয়াল রয়েছে।

চলবে...



বন্ধুরা, তাল কুড়ানো নিয়ে শেয়ার করা ব্লগটির তৃতীয় পর্ব তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানিও। সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে

Sort:  
 10 months ago 

আপনার পোস্টে পড়ে সেই ছোটকালের কথা মনে পড়ে গেলো। ভাদ্র মাসের দিকে তাল গাছে পেকে থাকে। রাতে তাল কোড়ানোর মজাই আলাদা। তবে রাতের বেলায় তাল কুড়াতে গেলে অনেক কিছু সম্মুখীন হতে হয় আজ পর্যন্ত আমার সাথে এমনটা কখনো হয়নি। লাইট থাকলে ভূত আসতে পারে না এটা ভুল কথা কারণ ভূত বলতে কিছু নেই।

 10 months ago 

ভাই ভূত বলে কোন কিছু নেই সেটা তো আর ছোটবেলায় বুঝতাম না! এখন তো এই জিনিসটা বুঝি ভূত বলে কোন কিছু হয় না, শুধু মনের ভয়। 🤭

 10 months ago 

আসলে আমি ছোট থেকেই এই ভূতকে বিশ্বাস করতাম না তাই এই কথা বলেছি ভাই। ঠিক বলেছেন শুধু মনের ভয়। 🙃

 10 months ago 

ভাই ভূতের কথা শুনলে এখন হাসি পায়, ভয় আর পাই না।

 10 months ago 

জ্বি ভাই এখন ভয়ের থেকে মজাটাই বেশি পাওয়া যায়।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইজান বেশ ভালো লাগলো আপনার অতীতের এই সুন্দর স্মৃতি জানতে পেরে। অবশ্য এমন স্মৃতি আমার জীবনেও রয়েছে বেশ অনেক দিনের। যেগুলো খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে যাচ্ছি।

 10 months ago 

আমার শেয়ার করা ঘটনাটির মতো স্মৃতি আপনার জীবনেও ছিল জেনে ভালো লাগলো ভাই। সেই ঘটনাগুলো কবে শেয়ার করবেন সে অপেক্ষায় রইলাম ভাই।

আরে বাপরে!! আপনাদের তিন বন্ধুর দেখছি ভীষণ সাহস। এত ভোরের বেলায় টর্চলাইট হাতে নিয়ে তাল কুড়োতে যাওয়া তাও আবার লোকালয় এড়িয়ে একদম শুনশান জায়গায়। এমন জায়গায় গেলে তো গা এমনিতেই ছমছম করার কথা। তার ওপরে আবার দুই দুটি শিয়ালের সামনে পড়ে যাওয়া। তাল কুড়াতে গিয়ে বেশ ভালই অভিজ্ঞতা হয়েছিল ভাই আপনার। তবে যেহেতু আপনারা অনেকগুলো তাল পেয়েছেন একথা শুনে খুবই ভালো লাগলো। আসলে কি ভাই, শৈশবের স্মৃতিগুলো বড্ড মধুর হয়, আর সেই মধুর স্মৃতি গুলো মনে পড়তেও ভীষণ ভালো লাগে।

 10 months ago 

সেটা তো অবশ্যই ভাই, শৈশবের স্মৃতিগুলো অনেক মধুর হয়। এই স্মৃতিগুলো মনে করে বেশ ভালো লাগে। আমার শেয়ার করা শৈশবের এই ঘটনাটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।

 10 months ago 

তাল আমার প্রিয়।তাল বড়া খেতে খুব ভালো লাগে।আপনি ও আপনার বন্ধু দের তাল কুড়ানোর গল্প ভালো লাগলো। তাল কুড়ানো আনন্দ,একটু একটু ভুতের ভয়।আর শেয়ালকে কুকুর ভেবে তো রীতিমতো ভয় পেয়ে যাওয়া সব মিলিয়ে খুব সুন্দর শৈশবের সৃতিচারণ অপেক্ষায় রইলাম বাকি পোস্টের।

 10 months ago 

দিদি, খুব তাড়াতাড়ি এর পরবর্তী পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করব। সেটি হবে এই ঘটনার শেষ পর্ব । যার মাধ্যমে পুরো ঘটনাটাটি আপনার স্পষ্ট বুঝতে পারবেন।

 10 months ago 

আপনারা চার বন্ধু মিলে তাল কুড়ানোর প্ল্যান করলেও শেষ পর্যন্ত তিন বন্ধুই ভয়ে ভয়ে লাইট নিয়ে ভোরবেলা তাল কুড়োতে গেলেন দেখছি। ভূতের ভয় আসলে আমাদের সকলের মধ্যেই কম বেশি রয়েছে, আর বাগানে গেলে তো আরো বেশি ভয় কাজ করে। শিয়াল দেখে নিশ্চয়ই আপনারা খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন! দেখা যাক পরবর্তী পর্বতে কি হয়।

 10 months ago 

শিয়াল দেখে কি অবস্থা হয়েছিল সেটা পরবর্তী পর্বে জানতে পারবেন দিদি। হিহি 😂😂

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59887.64
ETH 2670.13
USDT 1.00
SBD 2.47