ভ্রমন: সিদ্ধেশ্বর পাহাড় ও শিব মন্দির (পর্ব -০৪) শেষ পর্ব
বন্ধুরা,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি। |
---|
আজকের নতুন একটি ব্লগে সবাইকে স্বাগতম । আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে ভ্রমণ মূলক একটি পোস্টের শেষ পর্ব শেয়ার করব।
কয়েক মাস আগে ঘাটশিলা ভ্রমণে গিয়ে সিদ্ধেশ্বর পাহাড় চড়ে শিব মন্দিরে যাওয়ার গল্পটা অনেকটাই বড়। তাই কয়েকটি পর্বের মাধ্যমে সেখানে যাওয়ার গল্পটা তোমাদের সাথে শেয়ার করব।
যাই হোক সবকিছু শোনা শেষ করে আমরা শিব মন্দিরের পাশের যে জায়গাটি ছিল সেইখান থেকে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করার চেষ্টা করি। কিছু সময় পর আমি পাহাড়ের একটা কোনায় গিয়ে বসে শান্তভাবে পাহাড়ের প্রকৃতিকে মন ভরে দেখি। বেশি গরম লাগার কারণে আমার বন্ধুরা মন্দিরের মধ্যে গিয়ে মন্দিরের পূজারীর সাথে গল্প করছিল। আমি পাহাড়ের কোনায় যখন বসেছিলাম তখন দূরের পাহাড় থেকে ধোঁয়া উড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখতে পেয়েছিলাম। তখন আমি মন্দিরের মধ্যে গিয়ে পূজারীর কাছে এই ধোঁয়া উড়ার কারণ জিজ্ঞেস করি। তখন পূজারী আমাদের জানায় দুষ্টু লোকেরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে হয়তো কোন কিছু চাষ করার জন্য অথবা কোনো কারণ ছাড়াই। সঠিক কারণ পূজারীও আমাদের বলতে পারেনি তখন।
পাহাড়ে ঐভাবে আগুন ধরিয়ে দেওয়া অবৈধ কাজ এবং আইনত দণ্ডনীয় তাই এসব কাজ যারা করে তারা লুকিয়ে করে। প্রশাসন এসব দেখলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিয়ে থাকে। কিছু সময় এইভাবে সবকিছু দেখে আমি মন্দিরের মধ্যে প্রবেশ করি, যেখানে বন্ধুরা পূজারীর সাথে গল্প করছিল। সেখানে আমি গিয়েও অনেকটা সময় পূজারীর সাথে গল্প করেছিলাম বিভিন্ন বিষয় নিয়ে । গল্প করা শেষ করে আমরা মন্দিরের প্রণামী বক্সে আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী কিছু টাকা দিয়ে আসি । পূজারী মন্দিরের ঐখানে একা একাই বসেছিল আমরা যাওয়ার আগে। আমরা বন্ধুরা মিলে গিয়ে যখন তার সাথে কথা বলছিলাম তারও একটু ভালো লাগছিল ,এই ব্যাপারটা আমরা কথা বলার সময় বুঝতে পারছিলাম। সে আমাদের মন্দিরের ইতিহাস সম্পর্কে অনেক কিছুই বলেছিল বসে গল্প করার সময় ।
যদিও সব কিছু এখন আমার পুরোপুরিভাবে মনে নেই। আমরা মন্দিরের মধ্যে গেলে মন্দিরের পূজারী আমাদের সবাইকে জল খেতে দিয়েছিলো । পাহাড়ের অন্যান্য জায়গার তুলনায় মন্দিরের মধ্যে সবথেকে বেশি ঠান্ডা ছিল। গরমের ওই সময়টাতে মন্দিরের মধ্যে ঢোকার পর আর বের হতে ইচ্ছা করছিল না আমাদের। যাই হোক মন্দির ও আশেপাশের সবকিছু দেখা শেষ করে অবশেষে আমাদের নিচে নামার সময় চলে আসে। আমাদের হাতে সময় নির্দিষ্ট ছিল কারণ অটোচালক আমাদের সব মিলে এক ঘন্টার মত সময় বেঁধে দিয়েছিল। যেহেতু সে আমাদের জন্য নিচে অপেক্ষা করছিল তাই আমাদের যাওয়ার তাড়া বেড়ে যায়। অবশেষে আমরা পূজারীর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে পাহাড়ের উপর থেকে নিচে নামা শুরু করি।
নিচে নামার সময় আমরা সব প্রকার সাবধানতা অবলম্বন করেই নামছিলাম কারণ উপরে ওঠার সময় আমার এক বন্ধু পড়ে গেছিল, সেই বিষয়টা আমাদের মাথায় ছিল । যাইহোক পুনরায় প্রকৃতি দেখতে দেখতে আমরা সাবধানতার সাথে নিচে নেমে যাই। এভাবে আমাদের সেদিন সিদ্ধেশ্বর পাহাড় ও শিব মন্দির দেখার প্লান সাকসেসফুল হয়। নিচে নামার পর পুনরায় আমরা আমাদের অটোচালককে সাথে নিয়ে আমাদের অন্য গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছুটে যাই।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ভ্রমণ |
---|---|
ডিভাইস | Samsung Galaxy M31s |
ফটোগ্রাফার | @ronggin |
লোকেশন | গালুডিহ ব্যারেজ, কুমির্মুরি, ঝাড়খণ্ড, ভারত। |
পাহাড়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ওই ব্যাপারটা আমার নিজের কাছেও অনেক খারাপ লেগেছিল। আসলে কিছু দুষ্কৃতিকারী মানুষ রয়েছে যারা এসব করে থাকে। এতে করে আমরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হই তেমনি প্রকৃতিও হয়ে পড়ে অনেক দুর্বিসহ। তবে পাহাড়ের উপরে ঐ শিব মন্দিরে গিয়ে আমরা কিন্তু অনেক মজা করেছিলাম এবং যথেষ্ট কষ্ট হয়েছিল এই পর্যন্ত পৌঁছাতে।
পাহাড়ে উঠতে যেমন কষ্ট হয়, সেই সাথে অনেক মজাও হয়। ওভারল একটা ভালো এক্সপেরিয়েন্স পাওয়া যায়।