লাইফস্টাইল || দুর্গাপুজোয় ঘোরাঘুরি (পর্ব -১১) শেষ পর্ব।
বন্ধুরা,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি। |
---|
যাইহোক, ২০২৩ এর দুর্গাপুজোয় ঘোরাঘুরি নিয়ে আজকের শেষ পর্বে সবাইকে স্বাগতম।
দুর্গাপুজোর নবমীর দিন নিউ ব্যারাকপুরের শেষ দুটি পুজো প্যান্ডেল দেখার মাধ্যমে আমার দুর্গাপুজোর ঘোরাঘুরি শেষ হয়। প্রায় সন্ধ্যা ৭ টার দিকে আমি এবং আমার বান্ধবী নিউ ব্যারাকপুরের কিছু পুজো প্যান্ডেল দেখে পুনরায় স্টেশনের দিকে হাঁটতে থাকি। তারপর স্টেশনে পৌঁছে, আমরা যে প্ল্যাটফর্মে নেমে প্রথমে নিউ ব্যারাকপুরের পুজো প্যান্ডেলগুলো দেখেছিলাম তার বিপরীত দিকের এলাকাতে পুজো প্যান্ডেল গুলো ঘুরে দেখার জন্য যাই। ওই দিকে কেমন পুজা প্যান্ডেল হয়েছে জানা ছিল না তাই লোকজনের মুখে শুনতে শুনতেই সামনে এগিয়ে যেতে থাকি।
লোক মুখে শুনে তখন বুঝতে পারছিলাম, আরেকটু সামনে এগিয়ে যাওয়ার পর বেশ বড় করে একটি পুজো প্যান্ডেল দেখতে পাবো। সেই জন্য আমাদের আগ্রহ অনেক বেড়ে যায়। রাস্তা ধরে আমরা এগিয়ে যাই তারপরে একটা গলি হয়ে কিছু দূরে যাওয়ার পর দেখি লম্বা একটা লাইন। নিউ ব্যারাকপুরের পুজোতে যে এত বড় লম্বা লাইন হবে, সেটা আমরা কল্পনাও করিনি। যাই হোক, হাঁটতে হাঁটতে আমরা সামনের দিকে যেতে থাকি। আমাদের তখন টার্গেট ছিল এত বড় লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে পুজো প্যান্ডেল দেখবো না। যদি কোনভাবে সুযোগ করে প্যান্ডেলের মধ্যে গিয়ে দেখা যায় তাহলেই দেখবো, না হলে দেখবো না । কারণ এখানে যে লম্বা লাইন ছিল, সেই লাইন ধরে গিয়ে পুজো প্যান্ডেল দেখতে গেলে মিনিমাম ৩০ মিনিটের বেশি সময় লেগে যেতো।
যাই হোক, আমরা হাঁটতে হাঁটতে পুজো প্যান্ডেলের একদম সামনে চলে আসি। আসার পরে দেখতে পাই এখানে কেদারনাথ মন্দিরের থিমে একটি পুজোর প্যান্ডেল করেছে। বিগত কিছু বছর ধরে এই কেদারনাথ মন্দির থিমের পুজো প্যান্ডেল অনেক জায়গায় দেখেছি। এই থিম খুবই জনপ্রিয় সব জায়গায় । যাইহোক, তখনই আমরা আসল কারণ বুঝতে পারলাম এই লম্বা লাইনের। সবাই এই পুজো প্যান্ডেলের মাধ্যমে কেদারনাথ মন্দির এর এক ঝলক দেখার জন্য লম্বা লইন দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। এই সময় আমি কিছুটা বুদ্ধি করে ওই পুজো প্যান্ডেলটির ভি আই পি লাইন যেখানে ছিল সেখানে চলে যাই। তবে আমাদের কাছে ভি আই পি কোন পাস ছিল না প্যান্ডেলের ভিতরে যাওয়ার জন্য ।
এই লাইন কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পর দেখি ওইখানকার একজন পুজো কমিটির মেম্বার ভি আই পি পাস হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তারপর তার কাছ থেকে কিছুটা রিকোয়েস্ট করে ভি আই পি পাস নিয়ে আমরা সামনে এগোতে থাকি। মূলত যারা ভি আই পি পাস ভুলে বাড়িতে রেখে এসেছে তাদেরকে সাহায্য করার জন্যই দাঁড়িয়ে ছিলো ওই কমিটির মেম্বাররা । ওই লাইন স্থানীয় লোকদের জন্যেই ছিল। তবে আমরা সেখানকার স্থানীয় না হয়েও খুব সহজে পুজো প্যান্ডেলটিতে ঢুকতে পারি এবং দেখতে পারি। এখানকার পুজো প্যান্ডেলটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছিলো। পুরো কেদারনাথ মন্দির যেমনটা আমরা ফটোতে দেখি, সেরকমটা এখানে গিয়ে পুজো প্যান্ডেলের থিমের মাধ্যমে দেখতে পেয়েছিলাম।
যেহেতু অন্য দিকে লম্বা লাইন করে সবাই দাঁড়িয়ে ছিল পুজো প্যান্ডেল টি দেখবে বলে, সেই জন্য বেশি সময় প্যান্ডেলের মধ্যে দাঁড়াতে দিচ্ছিল না। তাই ভেতরে গিয়ে খুব বেশি ফটোগ্রাফি করতে পারিনি। তবে প্যান্ডেলে প্রবেশের পূর্বে বিভিন্ন দিক থেকে বেশ কিছু ফটোগ্রাফি করেছিলাম সেগুলোই তোমাদের সাথে শেয়ার করলাম। এগুলো দেখলেও পুজো প্যান্ডেলটি কেমন করেছিল সেই সম্পর্কে তোমরা ধারণা পেয়ে যাবে। যাইহোক, এখানকার পুজো প্যান্ডেল দেখা শেষ করে আমরা আবার নিউ ব্যারাকপুর স্টেশনের দিকে যেতে থাকি অন্য একটি রাস্তা ধরে। যাওয়ার সময় মেইন রাস্তার পাশে ছোট একটি পুজো প্যান্ডেল আমাদের চোখে পড়ে। এই পুজো প্যান্ডেলটির কোনো থিমে করা ছিল না। সেখানে কোন ভীড়ও ছিল না। আমি জাস্ট সেই পুজো প্যান্ডেলটি একবার দেখার জন্য যাই। সেখান গিয়ে একটু দেখে কেবলমাত্র দুটো ফটোগ্রাফি করেই বেরিয়ে আসি। এভাবে ২০২৩ সালের দুর্গাপুজোর পুজো প্যান্ডেল দেখা কমপ্লিট হয় আমার। আমি যেহেতু ওই সময়টাতে একটু অসুস্থ ছিলাম সেজন্য আর অন্য কোথাও পুজো প্যান্ডেল না দেখতে গিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করি।
ক্যামেরা: স্যামসাং
মডেল: SM-M317F
ফটোগ্রাফার: @ronggin
অবস্থান: নিউ ব্যারাকপুর , নর্থ চব্বিশ পরগনা, ওয়েস্ট বেঙ্গল।