বুক রিভিও - ইরিনা- ২য় খন্ড ।। 10% for shy fox
◾️ ২২ মে
▪️ রবিবার
১ম খন্ডের লিংক
গ্যালাকটিক ইন্টেলিজেন্সের প্রধান অরচ লীওন এর সাথে স্টেশনে আসার পর তারা ট্রেনে উঠে পড়ে। এর আগে ইরিনা কখনও ট্রেনে উঠেনি। ইরিনা প্রথম শহরের মানুষ। প্রথম শহরে যারা থাকে তাদের জীবন কাটে কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে। এভাবে পর্যায়ক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শহর রয়েছে। একটি নির্দিষ্ট সময় প্রথম শহরে থাকার পর লোকজন দ্বিতীয় শহরে যাওয়ার অনুমতি পায়। তৃতীয় শহর এ যাওয়ার অনুমতি খুব কম সংখ্যক মানুষ পায়। তৃতীয় শহরে শুধু সুখ আর সুখ। এখাকার মানুষ দুঃখ নি জিনিস তা জানেই না। তৃতীয় শহর এর পরে রয়েছে নিষিদ্ধ নগরী। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শহরকে যারা নিয়ন্ত্রন করে তারা এই নিষিদ্ধ শহরে থাকে। এখানে খুব কম সংখ্যক লোক যেতে পারে। ইরিনাকে সেই নিষিদ্ধ শহরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কিন্তু ইরিনা এই কথা এখন পর্যন্ত জানে না। অরচ লীওন ইরিনাকে নিয়ে এক হাজার কিলোমিটার ধ্বংস স্তূপের মধ্য দিয়ে ট্রেনে করে নিয়ে যাচ্ছেন। ইরিনার মন খুব খারাপ থাকে। তাকে খাবার খাওয়ার কথা বলা হলেও সে কিছু খায় না। তার মনে অজানা ভয়। অরচ লীওন তাকে রেখেই খাবার গাড়িতে চলে গেলেন। কিছুক্ষন পরে ফিরে এসে ইরিনাকে খাবার গাড়িতে যেতে বলেন। ইরিনা তার কথামতো খাবার গাড়িতে যায়। যাওয়ার সময় ট্রেনের করিডোরে একটি এট্যান্ডেন্ট রোবটের সাথে ইরিনার কিছুক্ষন কথা হয়। এই রোবট গুলো সাধারনত ট্রেনের যাত্রীদের সহযোগিতার জন্য কাজ করে।
অরচ লীওন এর কথায় ইরিনা খাবার গাড়ির কিছু খাবার খায়। তখন অরচ লীওন জানায় সে ইরিনাকে নিয়ে তৃতীয় শহরে যাচ্ছে। সেখান থেকে ইরিনাকে একটি রোবটবাহী বিশেষ বিমানে করে নিষিদ্ধ নগরীতে নিয়ে যাওয়া হবে। এ কথা শুনে ইরিনার সারা শরীর জুড়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে যায়। অরচ লীওন আরও জানায় সে ইরনার সাথে তৃতীয় শহর পর্যন্ত যেতে পারেবে। এর বেশি তার যাওয়ার পারমিশন নেই। ইরিনাকে জিজ্ঞেস করা হয় এই নিউজে সে খুশি কিনা। সে কিছু বুঝতে পারছে না। সে এও চিন্তা করতে পারছে না তার এখন খুশি হওয়া উচিত কিনা। কারন গত চার শ বছরে দশ থেকে বারো জন কেবল মাত্র ঐ নিষিদ্ধ নগরীতে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু তারা আর কখনও ফিরে আসেনি। পুরো পৃথিবীকে যারা নিয়ন্ত্রন করছে তারা সেই নগরীতে থাকে। তারা অমর। তাদের মৃত্যু নেই। ইরিনা তাদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছে। কিন্তু ইরিনা অরচ লীওন কে প্রশ্ন করে এত মানুষ থাকতে সে কেনো যাচ্ছে।
অরচ লীওন জানায় তার মধ্যে হয়তো বিশেষ কোন গুণ আছে তাই সে ঐখানে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছে। অরচ লীওন আরও জানায় তার সঙ্গে আরও একজন ঐখানে যাচ্ছে। সেও এই মুহূরতে এই ট্রেনেই যাত্রা করছে। তাছাড়া আরও একটি খুশির সংবাদ তাকে দেয়া হয়। ইরিনার বাবা মা এই মুহূর্তে প্রথম শহর থেকে দ্বিতীয় শহরের নাগরিকত্ত লাভ করেছেন। তার বাবা মায়ের সঙ্গে তাকে কথা বলিয়ে দেয়া হয়। কথা বলে সে সত্যিই বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এরপরে অরচ লীওন সেই লোকটির সাথে পরিচয় হয়ে নেওয়ার কথা বলে ইরনাকে। ইরিনা ট্রেনের ছ নম্বর কামরায় গিয়ে দরজায় টোকা দিতেই একজন রোগা টাইপের লোক, চোখে মোটা কাচের চশমা পড়া লোক বেরিয়ে আসে। ইরিনা তাকে কিছু না বলেই তার কামরার ভিতরে ঢুকে যায়। বয়স্ক লোকটি তখন ঘুমের প্রিপারেশন নিচ্ছিল। ইরিনার এসময়ে আসাতে সে বিরক্ত হয়ে গেল। কিন্তু ইরিনার অনুরোধে সে কিছুক্ষন কথা বলতে রাজি হল। ইরিনা লোকটিকে বলল সে সেখানে যাচ্ছে তাকেও ঐখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। লোকটি এই কথা শুনে খুবই সাধারন ভবে রিয়েক্ট করে বলল এ এমন কি জরুরি কথা। সে খুব বুদ্ধিমান তাই তাকে নিষিদ্ধ নগরীতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইরিনার বেশ রাগ হল তার কথা শুনে।
এর পরে ইরিনা বেশ রাগান্বিত হয়ে রোম ছেড়ে চলে যেতে লাগলে লোকটি ইরিনাকে বলে সে যে খুব বুদ্ধিমান তা সে প্রমান করতে পারবে। এর পরে সে একটা বুদ্ধিমান রোবটকে কিভাবে বোকা বানালো তার গল্প বলে। ইরিনার বেশ ভাল লাগতে শুরু করে। এর পরে লোকটির সংগে তার আরও কিছুক্ষন আলাপ হয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। ইরিনা তার নাম জানতে চাইলে লোকটি জানায় তার নাম অখুন মীর। ইরিনাকে মীর নামে ডাকতে বলে। লোকটি ইরিনাকে বেশ সাহস দিতে শুরু করে। সে ইরিনাকে বলে নিশ্চয়ই তাদেরকে নিষিদ্ধ নগরীর জন্য প্রয়োজন বলে সেখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শাস্তি দেয়ার জন্য নিচ্ছে না। কারন শাস্তি দেয়ার থাকলে তা প্রথম শহরেই দিতে পারত। তারপর অখুন মীর কিছুক্ষনের জন্য চুপ হয়ে যান। আর গভীর ধ্যানে মগ্ন হয়ে কি জন্য তাদের নেয়া হচ্ছে সেটি ভাবতে থাকেন।
নিষিদ্ধ নগরী সম্পর্কে কৌতূহল হয়ে কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা বা ঐ শহর নিয়ে ভাবা প্রথম শ্রেনীর মানুষদের জন্য অপরাধ হিসেবে গন্য করা হয়। আর কেউ অপরাধ করলে তাদের প্রত্যেকের কার্ডে লাল দাগ দিয়ে দেয়া হয়। ১৫ টির বেশি লাল দাগ পড়লে সে আর কোনদিন দ্বিতীয় শহরের নাগরিক হতে পারে না। কিন্তু অখুন মীর এর কার্ডে ৪৩ টির বেশি দাগ পড়ে যাওয়া সত্ত্বেও তাকে নিষিদ্ধ নগরীর মতো জায়গায় যাওয়ার পারমিশন দেয়া হয়েছে। সে হেহাত ই বুদ্ধিমান বিধায় তাকে সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এসব কথা ইরিনাকে বলতে থাকে সেই সাথে আরও বিভিন্ন উদাহারন দেখাতে থাকে। এরপর মীর ঘুমের জন্য হাই তুলে। কিন্তু ইরিনার তার গল্প শুনতে ভালই লাগছে। যেতে ইচ্ছে করে না তার।
ব্যক্তিগত মতামত
এই অংশ পড়ে আমি বুঝতে পারি ইরিনা ও অখুন মীর দুই জনের মধ্যেই বিশেষ গুণ আছে। আর এজন্যই তাদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শহর ছাড়িয়ে ডিরেক্ট নিষিদ্ধ নগরীতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিশেষ কোন উদ্দেশ্য হাসিল করানোর জন্য। গল্পটি ক্রমেই অনেক ইন্টারেস্টিং হয়ে উঠছে আমার কাছে। এর পরের খন্ডের রিভিও খুব শীঘ্রই আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করবো। আজ তবে এ পর্যন্তই রাখছি। ধন্যবাদ সবাইকে। আল্লাহ্ হাফেজ।
বিভাগ | তথ্য |
---|---|
ডিভাইস | রেডমি নোট ১০ |
লোকেশন | ধানমন্ডি-১৯ |
শুভেচ্ছান্তে
@rokibulsanto
![blogPng.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmejDF8pcxNkApdukS6LGdRJnEy21vQRCVvV2u8FW39BkD/blogPng.gif)
ভাই আপনার প্রথম পর্ব পড়েছিলাম। দ্বিতীয় পর্বের অপেক্ষায় ছিলাম। আজকে রিভিউ পড়ে খুবই ভালো লাগলো। নিষিদ্ধ নগরী সম্পর্কে আমি কৌতূহলী। ধন্যবাদ ভাই, আপনার রিভিউ কোয়ালিটি খুব ভালো লাগছে। শুভকামনা রইলো।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাই। ২ টি পর্বই আপনি ভিজিট করেছেন। আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ভালবাসা অবিরাম ।
আমি আপনার প্রথম পর্ব গল্প পড়েছিলাম, দ্বিতীয় পর্বে খানিকটা অন্য রকম লাগলো, আরো বেশি ধোঁয়াশার মধ্যে পড়ে গেলাম, প্রথম শহর দ্বিতীয় শহর তৃতীয় শহর, খানিকটা রহস্য মনে হচ্ছে, আমি এরপরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকবো।
হ্যা প্রথম পর্বে আপনি আমার সাথে ছিলেন মনে আছে আমার। এই পর্বে ও আপনাকে পেলাম। অনেক কৃতজ্ঞ আমি আপনার কাছে। নেক্সট এর কাহিনি আরও ভাল লাগবে আশা করছি। ধন্যবাদ ভাই
বইয়ের সর্বোচ্চ ৩ টি পেজ শেয়ার করতে পারবেন। একটি পেজ এর ফটো কেটে দিন।
গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ সুমন ভাই। একটি পেজ কেটে দিয়েছি।