বুক রিভিও - ইরিনা- ১ম খন্ড ।। 10% for shy fox
◾️ ১৫ মে
▪️ রবিবার
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুগণ , কেমন আছেন সবাই ? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আজকে আমি হুমায়ুন আহমেদ রচিত "ইরিনা" সায়েন্স ফিকশন বইটির ১ম খন্ডের সংক্ষিপ্ত রিভিউ আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করব। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে লেখা শুরু করি।
এই বইটি হুমায়ুন আহমেদ এর সায়েন্স ফিকশন টাইপের। গল্পের শুরুতে বলা আছে রোগা টাইপের মুখ লম্বাটে ধরনের একটি লোক কাধে ব্যাগ নিয়ে ইরিনাদের বাড়িতে আসে। লোকটির বিনীত ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকা দেখে ইরিনা প্রথমে লোকটিকে ফেরিওয়ালা ভেবে নেয়। অবশ্য লোকটি একসময় বলেই বসে সে একজন দরিদ্র মানুষ । সে কাঁটা কাপড় বিক্রি করে বেড়ায়। ইরিনা যদি তার কাছে থেকে কিছু কিনে তবে তার অনেক উপকার হবে। ইরিনা ডিরেক্ট না করে দেয় যে তার কিছু দরকার নেই এখন। সে লোকটিকে চলে যেতে বলে । কিন্তু লোকটি চলে না গিয়ে বাড়ির এদিক ওদিক তাকাতে থাকে। ইরিনা ফের লোকটিকে কড়া গলায় চলে যেতে বললে লোকটি জানায় সে এখানে কিছু বিক্রি করতে আসেনি।
লোকটির কথা শুনে ইরিনা কিছুটা বিচলিত হয়ে গেলে তাকে জিজ্ঞেস করে তিনি কে ? এখানে কি জন্য এসেছেন? লোকটির প্রথমে যে বিনীত ভঙ্গীর আচরন ছিল নিমিষেই তা পালটে যায়। ইরিনা আবারও লোকটিকে জিজ্ঞেস করে সে কি জন্য এখানে এসেছে তার পরিচয় কি? লোকটি ইরিনাকে বলে বাইরে দাড়িয়ে থেকে তার এত কথা বলতে ভাল লাগছে না । সে ইরিনার কাছে এটা বুঝাতে চায় বাড়ির ভিতরে বসে সে আলাপ করবে। কিন্তু ইরিনা রাজি হয় না। কারন বাড়িতে সে একা আছে। তার বাবা মা বিশেষ কাজের জন্য বাইরে গেছেন। লোকটি ইরিনা এবং তার ফ্যামিলি সম্পর্কে অনেককিছু জানে। এটা ভেবে লোকটিকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে যায় ইরিনা।
ইরিনা লোকটিকে জিজ্ঞেস করে সে কোন খবর না দিয়ে কেন এসেছে। লোকটি একটু হেসে বলে খবর না দিয়ে অনেকেই আসে। যেমন- অসুখ-বিসুখ, জরা, মৃত্যু, গ্যালাকটিক ইন্টেলিজেন্সের লোকজন। তারপরেই লোকটি ইরিনাকে বলে শুভ দুপুর ইরিনা। ইরিনা অবাক হয়ে বলে আপনি আপনার নামও জানেন? তখন লোকটি বলে গ্যালাকটিক ইন্টিলিজেন্সের লোকজন যখন কারো বাড়িতে যায় তখন সব কিছু জেনেই যায়। তারপর লোকটি ইরিনাকে তার আইডি কার্ড ও পরিচয়পত্র দেখাতে চাইলে ইরিনা তাতে অনীহা জানায় এবং জিজ্ঞেস করে সে কি জন্য এখানে এসেছে এবং তার কাছে সে কি জানতে চায়। তখন লোকটি জানায় সে ইরিনাকে নিয়ে যেতে এসেছে। ইরিনা ভয় পেয়ে যায় এবং জিজ্ঞেস করে তাকে কোথায় নিয়ে যেতে চায়। তখন লোকটি ইরিনাকে আইনের একটি বিধি বিধি নং চ ২১১/২ মনে করিয়ে দিয়ে বলে ইন্টিজেন্সের লোকদের কোন প্রশ্ন করা যায় না। এটা নিয়মে নেই। আইন ভঙ্গ করলে তাকে প্রথমে শ্রেনীর শাস্তি ভোগ করতে হবে। ইরিনাকে আরেকটি বিধির উদাহরণ দেখিয়ে বলে ইন্টিলিজেন্সের লোক তাকে যদি কোথাও যেতে বলে তবে তাকে যেতে হবে।
লোকটি ইরিনাকে রেডি হতে বলে এবং তার প্রয়োজনীয় জিনিস সঙ্গে নিয়ে নিতে বলে। কিন্তু ইরিনা লোকটিকে জানায় তার বাবা মা যতক্ষন পর্যন্ত না আসবে সে কোথাও যাবে না। লোকটি তখন বলে তার বাবা মা এই মুহুরতে খাদ্য দপ্তরে আছে। বিকাল ৩ টা পর্যন্ত তারা সেখানে থাকবেন এর পরে তাদেরকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে। লোকটির কথাও কিছুক্ষন পরেই ইরিনাদের বাড়ির টেলিফোনে কল আসে। তার বাবা ঐ পাশ থেকে কল করেছে । সে জানায় তারা খাদ্য দপ্তরে আছে। এর পরেই কলটি কেটে যায়। লোকটির কথা বিশ্বাস করে ইরিনা লোকটির সাথে বের হয়ে পড়ে। তার মনে অনেক ভয়, শঙ্কা কাজ করতেছে। ইরিনাকে সে বলে সে একজন মূল্যবান মানুষ । ইরিনা তার ব্যাখ্যা জানতে চাইলে লোকটি জানায় সে অনুমান করে বলছে। কারন ইরনাকে নেয়ার জন্য তার মতো বিখ্যাত ব্যক্তিকে পাঠানো হয়েছে। ইরিনা যাতে ভয় না পায় তার জন্য অনেক হাসির গল্প শুনাচ্ছে তার মন ভাল করার জন্য।
লোকটি যখন ইরিনাকে নিয়ে বের হয় তখন প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেছে। রাত ৮ টার পরে কোন লোকজন যদি বাইরে থাকে তবে তাদের গভমেন্ট থেকে সান্ধ্য পাস নিতে হয়। রাস্তা দিয়ে কিছুদুর হাটার পরেই সিকিউরিটির একটি গাড়ি এসে তাদের আটকে দেয় এবং সান্ধ্য পাস দেখতে চায়। লোকটি অফিসার দু জনকে বলে আগে তো রাত ৮ টা বাজতে দিন। অফিসার দু জন একটু রাগান্নিত হয়ে তাদের পাস দেখাতে বলেন। ঠিন তখনই লোকটি তার আইডি কার্ড তাদের দেখায় সাথে সাথে অফিসার দু জন হকচকিয়ে যায় এবং তাদের স্যালুট দেয়। এরপরে রাস্তায় আর কোন সিকিউরিটি তাদের আটকায় না। ইরিনা লোকটির পরিচয় জানতে প্রথমে অনিহা করলেও এই কান্ড দেখার পরে সে তার পরিচয় জানতে চায়। তখন লোকটি বলে তার নাম অরচ লীওন। নাম শুনতেই ইরিনা চিনে যায়। কারন তিনি আসলেই একজন বিখ্যাত ব্যাক্তি। তিনি হচ্ছেন গ্যালাকটিক ইন্টিলিজেন্সের প্রধান। তারপর হাটতে হাটতে তারা শহরের শেষ প্রান্তে রেল স্টেশনে চলে আসে।
ব্যক্তিগত মতামত
সায়েন্স ফিকশন পড়তে আমার বরাবরই খুব ভাল লাগে। হুমায়ূন আহমেদ লেখা যে কোন বই আমার পছন্দের। প্রথম খন্ডে আমি প্রথমে ভেবেছিলাম লোকটি ইরিনাকে কিডনাপ করার জন্য তার বাড়িতে এসেছে। পরে বুঝতে পেরেছি সে একজন গ্যালাকটিক ইন্টিলিজেন্সের লোক। তাকে স্পেশাল কাজের জন্য পাঠানো হয়েছে ইরিনাকে আনতে। অনেক ইন্টারেস্টিং একটি বই। পরের খন্ডে বাকি কাহিনীর সংক্ষিপ্ত রিভিও লেখার চেষ্টা করবো। ভাল থাকবেন। ধন্যবাদ
বিভাগ | তথ্য |
---|---|
ডিভাইস | রেডমি নোট ১০ |
লোকেশন | ধানমন্ডি-১৯ |
আমি রকিবুল শান্ত। বর্তমানে ঢাকা সিটি কলেজে কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্টে অনার্স ৩য় বর্ষে লেখাপড়া করছি । আমি পজেটিভ চিন্তাধারার একজন মানুষ । সব সময় সিম্পল থাকার চেষ্টা করি। কোডিং করতে, মিউজিক করতে , বিভিন্ন বিষয় এর উপরে আর্টিকেল লিখতে বেশি পছন্দ করি। নিজের স্কিল বাড়ানোর জন্য প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শিখার চেষ্টা করি। ভালোবাসা পেলে ভালোবাসা দিতে কার্পণ্য করি না ।
শুভেচ্ছান্তে
@rokibulsanto
![blogPng.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmejDF8pcxNkApdukS6LGdRJnEy21vQRCVvV2u8FW39BkD/blogPng.gif)
হুমায়ুন আহমেদ স্যারের বই ইতিমধ্যে অনেক গুলো পড়ে ফেলেছি। এটা দেখি মিস হয়ে গেছে।
আপনার রিভিউ দেখে একখনি পড়ে নিতে ইচ্ছে করছে।
সময় পেলে অবশ্যই পড়ে নিয়েন। আশা করছি ভাল লাগবে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য
হুমায়ুন আহমেদের বই গুলোর মধ্যে একটা রহস্য থাকে যা পাঠককে শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাবেই।
হুমায়ুন আহমেদের প্রায় অনেকগুলো বই আমি পড়েছি।
এখন আর সময় হয়না।
আমারও খুব একটা সময় হয়না আগের মতো। তবুও চেষ্টা করি একটু সময় বের করে বই পড়ার জন্য। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য
হুমায়ুন আহমেদ এর বইগুলো পড়তে আমার কাছে খুব ভালো লাগে। আপনার আজকের বই রিভিউ পোস্ট দেখে মনে হচ্ছে বইটি পড়তে হবে। খুব আকর্ষণীয় ছিল। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া বই রিভিউ পোস্ট টি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল। এবং পরবর্তী বই রিভিউ এর অপেক্ষায় রইলাম।
আমারও প্রিয় একজন লেখক স্যার হুমায়ূন আহমেদ। চেষ্টা করি সময় পেলে তার বই পড়ার জন্য। জি অবশ্যই এর ২য় খন্ডের রিভিও নিয়ে আসবো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আপু। ভাল থাকবেন।
বেশ রোমাঞ্চকর একটি গল্প মনে হচ্ছে, আমি হুমায়ূন আহমেদের অনেক বড় একজন ফ্যান, তবে এই বইটি আমার পড়া হয়নি, সত্যি বলতে বেশ অনেক বছর হলো কারো বই পড়া হয়না, আমি এই বইয়ের পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকবো আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে।
অনেক ধন্যবাদ ভাই। আমিও বেশি একটা টাইম পাইনা এখন আগের মত। তাই বই পড়া বেশি একটা হয়ে উঠে না। ২য় পর্বের রিভিও দেয়ার চেষ্টা করবো ইনশাল্লাহ। ভাল থাকবেন ভাই। ভালবাসা নিবেন।
এই বইটি কখনো পড়া হয় নাই। তবে আপনার পোস্ট পড়ে খুব ভালো লাগলো। বইটি আমি কিনতে ভাই। দেখি কিছুদিনের মধ্যে রকমারি.কম থেকে বইটা কিনে ফেলবো। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।
কিনতে হবে না । আমার কাছে আছে। নিয়ে পইরেন। ভাল লাগবে আশা করছি। ধন্যবাদ আপনাকে মতামত প্রকাশ করার জন্য