Indian Museum ভ্রমণ -পর্ব ৩৩

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

Indian Museum ভ্রমণ -পর্ব ৩৩


পূর্বের এপিসোড : Indian Museum ভ্রমণ -পর্ব ৩২


শুভ সকাল বন্ধুরা,

আশা করি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন ।

গতকাল শেষ হয়ে গেলো আমাদের মেরিন লাইফ এর ধারাবাহিক ফটোগ্রাফি সিরিজটি । আজ থেকে শুরু হবে আমাদের নতুন পর্ব - ভারতীয় বিভিন্ন antique দ্রব্যের ফোটোগ্রাফি । এদের মধ্যে আছে প্রাচীন কালের নানান কারুকার্য্যময় শৌখিন দ্রব্যসামগ্রী । কিছু আছে হাতির দাঁতের তৈরী, কিছু দামি দামি কাঠ যেমন আবলুশ সেগুন চন্দন কাঠের তৈরী, কিছু ব্রোঞ্জ, কিছু তামা, কিছু পিতলের তৈরী, আবার আছে সোনা, রুপা, অষ্টধাতুর তৈরী নানান শৌখিন দ্রব্য যেমন মূর্তি, অস্ত্র-শস্ত্র, বাদ্য যন্ত্র, বাসন-কোসন এবং নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্যাদি কিন্তু দামি ধাতুর তৈরী । অমূল্য এসব antique বস্তু । টাকার মূল্য দিয়ে এদের সত্যিকারের মূল নিরুপন করা যায় না ।

আমাদের আজকের এপিসোডে যে সব antique বস্তুর ফোটোগ্রাফি থাকছে সেগুলো হলো :

১. রাধা-কৃষ্ণের যুগল মূর্তি (চন্দন কাঠের তৈরী)
২. ড্রাগন ওয়ারিয়র (কাঠ খোঁদাই করে তৈরী)
৩. তিব্বতীয় গুম্ফা দ্বার এবং প্রার্থনা বেদী (কাষ্ঠ নির্মিত)
৪. স্বর্ণনির্মিত মধ্যযুগীয় গড়গড়া বা আলবোলা
৫. পেতলের তৈরী নাড়ু গোপালের মূর্তি
৬. অষ্টধাতু নির্মিত অজস্র কারুকার্যখচিত pitcher বা কলসি
৭. তিব্বতীয় গুম্ফাদ্বারের প্রহরীর মূর্তি (আবলুশ কাষ্ঠনির্মিত )

তো বন্ধুরা চলুন দেখে নেওয়া যাক আমাদের আজকের আয়োজন কি আছে ! আশা করি খুব একটা খারাপ লাগবে না আজকের আয়োজন আপনাদের কাছে ।


রাধা-কৃষ্ণের যুগল মূর্তি (চন্দন কাঠের তৈরী) । খাঁটি চন্দন কাঠ খোদাই করে এই মূর্তিদ্বয় তৈরী করা হয়েছে । সময়কাল : মধ্যযুগ । প্রাপ্তিস্থান : মধ্যপ্রদেশ । সত্যি অপূর্ব কারুকাজ মূর্তি দুটির । কাঠ খুঁদে যে এমন সুন্দর মূর্তি তৈরী করেছিল মধ্যযুগের শিল্পীরা ভাবতেই অবাক লাগে ।
স্থান : Indian Museum, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


ড্রাগন ওয়ারিয়র । ড্রাগন যোদ্ধা । চৈনিক মূর্তি । কাঠ খুঁদে তৈরী করা । অনেক ডিটেলস ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মূর্তিটাতে ।
স্থান : Indian Museum, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


এটি একটি তিব্বতীয় গুম্ফা দ্বার এবং প্রার্থনা বেদী । দুটোই কাষ্ঠ নির্মিত । অসাধারণ কারুকার্য্যময় এই তিব্বতীয় গুম্ফা তোরণ এবং প্রার্থণা বেদী দেখলে চোখ ফেরানোই দায় ।
স্থান : Indian Museum, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


এটি কি জিনিস বলতে পারেন ? পারলেন না তো ? এটি একটি স্বর্ণনির্মিত মধ্যযুগীয় গড়গড়া বা আলবোলা । হুঁকার একটি সংস্করণ । তাম্রকুট মানে তামাকের ধোঁয়া সেবনের যন্ত্র এটি । খুবই অভিজাত শ্রেণীর মানুষদের জন্য বানানো এটি । ২ কিলো সোনা দিয়ে তৈরী ।
স্থান : Indian Museum, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


এটি একটি পেতলের তৈরী নাড়ু গোপালের মূর্তি । পিওর পিতলে তৈরী মূর্তি বেশ বড় সাইজের । দেখেই বোঝা যায় প্রাচীন কালের মূর্তি এটি ।
স্থান : Indian Museum, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


এটি একটি অষ্টধাতু নির্মিত অজস্র কারুকার্যখচিত pitcher বা কলসি । দেখেই বোঝা যাচ্ছে কোনো এক প্রাচীন অভিজাত ফ্যামিলির গৃহস্থালীর জিনিস এটি । পানীয় জল রাখা হতো এটায় । অষ্টধাতু হলো - সোনা, রূপা, তামা, পিতল, কাঁসা, পারদ, সীসা ও লোহা ।
স্থান : Indian Museum, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


এটি একটি তিব্বতীয় মূর্তি । তিব্বতের গুম্ফা দ্বারে কাষ্ঠনির্মিত তিব্বতীয় প্রহরীর মূর্তি এটি । একটি গোটা কাঠের গুঁড়ি খন্ড বিখন্ড না করে গোটা অবস্থায় খুঁদে খুঁদে এই মূর্তিটি তৈরী করা হয়েছে । আবলুশ কাঠের তৈরী এটি । মজার ব্যাপার হলো তিব্বতীয় মূর্তি হলেও এটি কিন্তু প্রাচীন ভারতের কোনো একজন শিল্পীর নির্মিত । তিব্বতীয় আর ভারতীয় শিল্পীদের স্টাইল একেবারেই আলাদা । তাই সহজেই আলাদা করা যায় কোনটি তিব্বতীয় শিল্পীদের করা আর কোনটা ভারতীয় শিল্পীর করা ।
স্থান : Indian Museum, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus
ক্যামেরা মডেল : EB2101
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ


Sort:  
 2 years ago 

এটি একটি অষ্টধাতু নির্মিত অজস্র কারুকার্যখচিত pitcher বা কলসি । দেখেই বোঝা যাচ্ছে কোনো এক প্রাচীন অভিজাত ফ্যামিলির গৃহস্থালীর জিনিস এটি । পানীয় জল রাখা হতো এটায় । অষ্টধাতু হলো - সোনা, রূপা, তামা, পিতল, কাঁসা, পারদ, সীসা ও লোহা ।

সত্যি আকৃষ্ট হওয়ার মতো সুন্দর। বিশেষ করে হাতের কারুকাজের প্রসংসা করতেই হবে।

 2 years ago 

দাদা, কাঠের তৈরি শিল্প গুলো আমাকে বারবার চমকে দেয়। মাঝে মাঝে নিজের চোখকে বিশ্বাস করাতে পারি না। এত নিখুঁত কারুকার্য কিভাবে সম্ভব! আর আরেকটা ব্যাপার যেটা খুব অবাক লাগে সেটা হলো, আমরা এই আধুনিক যুগে থেকেও মধ্য যুগের সেই অপরূপ সৌন্দর্যকে কখনো ছাপিয়ে যেতে পারিনা।

 2 years ago 

দাদা এই পর্বের সব ফটোগ্রাফি গুলো জাস্ট অসাধারণ। বিশেষ করে নাড়ু গোপালের পিতলের মূর্তি ও স্বর্ণনির্মিত মধ্যযুগীয় গড়গড়া বা আলবোলা ও রাধা-কৃষ্ণের যুগল মূর্তি (চন্দন কাঠের তৈরী) এই তিনটা বেশিভালো লেগেছে আমার কাছে ।

 2 years ago 

এটি একটি তিব্বতীয় গুম্ফা দ্বার এবং প্রার্থনা বেদী।

এই ক্যাপশন এর ছবিটি আসলেই দেখলে চোখ ফিরিয়ে নেওয়া বড় দায়।এতো সূক্ষ্ম কাজ!
ধন্যবাদ জানাই এতো কিছু দেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্যে।

 2 years ago 

দাদা আজকে আপনি যেই ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করেছেন সেগুলো দেখে অনেক ভালো লেগেছে আমার। বিশেষ করে রাধা-কৃষ্ণের যুগল মূর্তি আমার কাছে বেশি ভালো লেগেছে। চন্দন কাঠ দিয়ে অনেক সুন্দর ভাবে রাধা-কৃষ্ণের যুগল মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। এই ফটোগ্রাফি গুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো।আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা।

 2 years ago 

বাহ দাদা অসাধারণ সব শিল্পকর্ম অসাধারণ সব মূর্তি। রাধা কৃষ্ণের যুগল মূর্তিটা কী লাল চন্দন কাঠ দিয়ে তৈরি নাকী🙂। পুষ্পা ইফেক্ট থেকে বললাম। প্রত‍্যেকটা মূর্তি আমার কাছে দারুণ লেগেছে। ঐতিহাসিক সব স্থাপত্য বলে কথা। আমি শুধু ভাবছি কয়দিন লাগছিল আপনার এই মিউজিয়াম টা ঘুরতে।

 2 years ago 

দাদা, ভারতীয় মিউজিয়ামের 33 তম এপিসোড আপনি যে মূর্তিগুলোর ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।সেগুলো সম্বন্ধে কি লিখবো নিজেই বুঝতে পারছি না।প্রতিটা মূর্তির ফটোগ্রাফি আকর্ষণীয় এবং সুন্দর। আমার কাজে প্রতিটা মূর্তির ফটোগ্রাফি ভালো লেগেছে তবে তিব্বতীয় গুম্ফা দ্বার এবং প্রার্থনা বেদী ফটোগ্রাফি টা আমার খুবই ভালো লেগেছে।দাদা, ভারতীয় মিউজিয়ামের এপিসোডের মাধ্যমে যদি আপনি ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার না করতেন।তাহলে সত্যি ভারতীয় মিউজিয়াম এ কি কি আছে কখনো জানতেই পারতাম না। অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

বাহ অসাধারণ। বিশেষ করে অস্টোধাতুর কারুকার্য খচিত কলস টা দেখে সত্যিই অনেক ভালো লাগলো।অসম্ভব সুন্দর করে কারুকাজ করছে।

 2 years ago (edited)

প্রথমে শিল্প তেই হৃদয় ভরা।

চন্দন কাঠ দিয়ে যে এত সুন্দর মূর্তি তৈরি করা যায় এটা সত্যি চমৎকার। মধ্যযুগের শিল্পীদের প্রশংসা না করলেই নয়।। অসাধারণ হাতের কাজ।

তাছাড়াও সমস্ত পোস্ট গুলো এবং শিল্পগুলো ছিল অসাধারণ প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন।

 2 years ago 

আশ্চর্য হতে হয় শিল্পীদের তৈরি করা এই অসাধারণ কারুকার্য সম্বলিত বিভিন্ন অ্যান্টিক দ্রব্যাদি দেখলে। প্রায় দু কিলো স্বর্ণ দিয়ে তৈরি হুকো চিন্তা করলেই মাথা ঘুরে যায়। আর অষ্টধাতুর বিষয়ে আমি আশ্চর্য হই। রাস্তাঘাটে অনেক সময় দেখেছি অষ্ট ধাতু দিয়ে তৈরি আংটি বিক্রি করতে। কিভাবে এসব ধাতু কে একসাথে মিশিয়ে বিভিন্ন তৈজসপত্র বানানো হতো চিন্তা করলেই অবাক লাগে। যাইহোক নতুন এপিসোড গুলো আশা করি আমার মতো সবার কাছে ভালো লাগবে। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 58668.45
ETH 3162.85
USDT 1.00
SBD 2.44