Indian Museum ভ্রমণ -পর্ব ৩২

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

Indian Museum ভ্রমণ -পর্ব ৩২


পূর্বের এপিসোড : Indian Museum ভ্রমণ -পর্ব ৩১


শুভ সকাল বন্ধুরা,

আশা করি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন ।

শীত তো দ্রুত ফুরিয়ে আসছে । বসন্ত জাগ্রত দ্বারে । ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় আপনাদের মন নেচে উঠুক এই শুভ কামনায় শুরু করছি ভারতীয় জাদুঘর ভ্রমণের আজকের এপিসোড ।

আজকের পর্বে থাকছে মেরিন লাইফ এর পঞ্চম এবং সর্বশেষ এপিসোড। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল, আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীকুলের সংরক্ষিত স্টাফ করা দেহের সিরিজ ফটোগ্রাফের আজ শেষ পর্ব এখানে শেয়ার করা হলো ।

আমাদের আজকের এপিসোডে যে সব সামুদ্রিক প্রাণীবর্গের স্টাফ করা দেহ থাকছে সেগুলো হলো :

১. Hammerhead shark বা হাতুড়িমুখো হাঙর
২. তেলিয়া ভোলা বা তেলে ভোল মাছ
৩. কাতলা
৪. রুই
৫. ফলুই
৬. কালবাউশ মাছ
৭. পটকা মাছ বা মিল্কস্পটেড পাফার মাছ
৮. সাদা টিপ রিফ হাঙর
৯. গ্রানুলাটেড গিটার মাছ

তো বন্ধুরা চলুন দেখে নেওয়া যাক আমাদের আজকের আয়োজন কি আছে ! আশা করি খুব একটা খারাপ লাগবে না আজকের আয়োজন আপনাদের কাছে ।


Hammerhead shark বা হাতুড়িমুখো হাঙর । এই শার্কের মাথা দেখতে ভারী অদ্ভুত । হুবহু একটি হাতুড়ির মতো । মাথার দুই পাশের চোয়াল বহুদূর বিস্তৃত হয়ে একটি হাতুড়ির মাথার মতো সৃষ্টি করেছে । চোখ দুটিও বসানো এই হাতুড়ি আকৃতির মাথার দুই পাশে । ফলে একটি চোখ থেকে আরেকটি চোখের দূরত্ব অনেক । প্রায় ২-৩ ফিট । খুব অদ্ভুত তাই না ?
স্থান : Indian Museum, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


এটি একটি তেলিয়া ভোলা বা তেলে ভোল মাছ । এরা কমন গ্রপার (Groupers) শ্রেণীভুক্ত মাছ । আকারে বিশাল এই মাছ কিন্তু অসম্ভব দামি । এই মাছের পটকার দাম অনেক । এক কিলো তেলিয়া ভোলার পটকার দাম ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি টাকা । কেন এতো দাম ? এর কারণ এই মাছের পটকা থেকে সব চাইতে দামি অপারেশনের সুতো তৈরী হয় । এই সুতো দিয়ে সেলাই করলে সেটা চামড়ার সাথে এমনভাবে মিশে যায় যে কোনোরকমের কোনো দাগ থাকে না । মুখমন্ডলের প্লাস্টিক সার্জারিতে এই সুতো ব্যবহৃত হয়ে থাকে ।
স্থান : Indian Museum, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


আমাদের চির পরিচিত চারটি মাছ । কাতলা, রুই, ফলুই এবং কালবাউশ মাছ । এখানে মাছগুলোকে সজ্জিত করা হয়েছে একটি পুকুরের কোন কোন জলস্তরে তারা বসবাস করে । কাতলা হলো জলস্তরের সর্ব উপরের মাছ, তার নিচের স্তরে থাকে রুই মাছ, মাঝের স্তরে থাকে ফলুই এবং একেবারে সর্বশেষ মাটির কাছাকাছি স্তরে থাকে কালবাউশ মাছ ।
স্থান : Indian Museum, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


এই সেই বিখ্যাত পটকা মাছ বা মিল্কস্পটেড পাফার মাছ । আমাদের গ্রামে এই মাছকে বলা হতো ট্যাঁপা মাছ । জাপানে সর্বাধিক জনপ্রিয় এই মাছকে বলা হয়ে থাকে ফুগো । জাপানেই সব চাইতে বেশি খাওয়া হয়ে থাকে এই মাছ । জাপানের জাতীয় মাছ এই ফুগো । ভয় পেলে বা আক্রান্ত হলে এই মাছের শরীরের অভ্যন্তরে অবস্থিত ব্লাডার বাতাসে পূর্ণ করে একেবারে গোল ফুটবলের মতো হয়ে যায় । তখন এদের গায়ের কাঁটাগুলো শজারুর কাঁটার মতো দেখায় । একটি কাঁটাঅলা ফুটবলের মতো দেখতে লাগে তখন এদের । এই মাছ অসম্ভব টেস্টি কিন্তু একই সাথে এদের পিত্ত এবং নাভি কুন্ডলি ভয়ানক বিষাক্ত । একটিমাত্র পটকা মাছের পিত্তথলির বিষে ৩০ জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে । তাই খুবই সতর্কতার সাথে এদের শরীর থেকে পিত্তথলি ও নাভিকুন্ডলী কেটে বাদ দিয়ে রান্না করতে হয় । জাপানে একমাত্র লাইসেন্সড প্রাপ্ত শেফ ছাড়া ফুগো রান্নার অনুমতি নেই ঠিক এই কারণে ।
স্থান : Indian Museum, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


দুই প্রজাতির হাঙ্গর । সাদা টিপ রিফ হাঙর এবং গ্রানুলাটেড গিটার মাছ । সাদা টিপ্ রিফ হাঙরের সর্বাঙ্গে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সাদা রঙের টিপের মতো গোল গোল স্পট থাকে । এরা সামুদ্রিক কোরাল রিফে বসবাস করে থাকে । আর গ্রানুলাটেড গিটার মাছ দেখতে হবহু একটি গিটারের মতো । কি অদ্ভুত । তাই না ?
স্থান : Indian Museum, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus
ক্যামেরা মডেল : EB2101
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ


Sort:  
 2 years ago 

দাদা কখন যে দেখতে দেখতে মেরিন লাইফের শেষ পর্যায়ে চলে আসলাম বুঝতেই পারলাম না। মেরিন লাইফের পর্বগুলো আমার সত্যি খুব ভালো লেগে ছিল। সাগর এবং সাগরের প্রাণী গুলোর ব্যাপারে আমার একটা কৌতুহল সবসময় কাজ করে। গ্রুপার সম্পর্কে আগেই জানতাম কিন্তু এ মাছের দাম যে এত তা জানা ছিল না। দাম শুনে রীতিমতো ভিরমি খাবার জোগাড়। মাছ দিয়ে তৈরি হয় অপারেশনের সুতা এই তথ্য প্রথম জানতে পারলাম। আর ফুগো বা পটকা মাছ খাবার ব্যাপারে জাপানিদের অসংখ্য ভিডিও দেখেছি। যাই হোক মেরিন লাইফের পর্ব গুলোর মাধ্যমে অনেক অজানা বিষয় জানতে পেরেছি আপনার কাছ থেকে। ধন্যবাদ আপনাকে

 2 years ago 

দাদা মাছ গুলো ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। সত্যি বলতে আমার চোখের সামনে যেন জিবন্ত মাছ ভাসতেছে। দাদা একটা কথাই বলবো আপনার পোস্ট মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারতেছি এবং দেখতে পারতেছি। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

কত বৈচিত্র অদ্ভুত সব প্রজাতির মাছ। দেখে ভালই লাগলো কিছু অদ্ভুত মাছের সাথে পরিচিত হতে পারলাম। প্রত্যেকটি মাছেই যেন অনন্য সুন্দর। ধন্যবাদ দাদা এত সুন্দর করে ডিটেলসে উপস্থাপন করার জন্য।

 2 years ago 

শীত ফুরিয়ে আসছে এবং বসন্তের আগমনে আপনার শুভেচ্ছা বার্তাটি কিন্তু অসাধারণ ছিল।

তবে একটা জিনিস খুবই খারাপ লাগছে এটি আজকেই শেষ পর্ব। আপনার ভ্রমণের অসাধারণ দৃশ্য গুলো খুবই ভালো লাগতো এবং যে গুলো সত্যি অনেক শিক্ষণীয় ছিল। আজকে আর ফটোগ্রাফি নিয়ে কোন মন্তব্য করব না।

শুধু বলব সত্যিই অনেক মিস করবো আপনার প্রতিটি পর্বগুলো যে কাল থেকে আর এগুলো আসবেনা আমাদের সামনে।

 2 years ago 

এটি একটি তেলিয়া ভোলা বা তেলে ভোল মাছ । এরা কমন গ্রপার (Groupers) শ্রেণীভুক্ত মাছ । আকারে বিশাল এই মাছ কিন্তু অসম্ভব দামি । এই মাছের পটকার দাম অনেক । এক কিলো তেলিয়া ভোলার পটকার দাম ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি টাকা

দাদা আজকে আপনার পোস্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো, বিশেষ করে এই সব তথ্য আমার জানা ছিলো। এই মাছের দাম এত কেন এটি দেখে আমার খুবই আশ্চর্য মূল্য হলো। তারপরে আমি ভালো করে পড়ে দেখতে পেলাম এই মাছের পটকা দিয়ে অপারেশনের সুতা তৈরি করা হয়। যার কারনে এই সুতা স্কিনের সাথে একদম মিশে যায়। সত্যিই অসাধারণ আমার এই তথ্যটি অজানা ছিল। জেনে আমার খুবই ভালো লাগছে। আসলেই মাছের দাম খুবই বেশি এই জন্যই। আপনি খুবই সুন্দর ভাবে আমাদের ফটোগ্রাফির মাধ্যমে দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন এবং অনেক সুন্দর সুন্দর বিষয় জানতে পারলাম, খুবই ভালো লাগলো। আপনার জন্য রইল শুভকামনা ও ভালোবাসা।

 2 years ago 

প্রতিবার এর মতন এবার ও কিছু অসাধারন ঐতিহাসিক ছবি দেখতে পেলাম দাদা। পটকা মাছ খেয়ে আমাদের দেশে প্রায়ই মানুষ মারা যায়। এমন মাছ এড়িয়ে যাওয়াই ভালো আমার মতে। যাই হোক দাদা সব গুলো ছবি অনেক সুন্দর ছিলো। শুভেচ্ছা রইলো দাদা।

 2 years ago 

দাদা স্টাফড করা সামুদ্রিক প্রাণীদেহের ছবিগুলো অসাধারণ হয়েছে। আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আজকের এই পর্বে বিভিন্ন মাছ দেখলাম সত্যিই খুব সুন্দর এগুলো। অনেক ভালো লাগলো আজকের ফটোগ্রাফি দেখে কারণ এর থেকে অনেক কিছু জানতে পারলাম। যদিও মাছগুলো নাম জানতাম না আজকে ছবিসহ সব জেনে নিলাম।

 2 years ago 

এই সেই বিখ্যাত পটকা মাছ বা মিল্কস্পটেড পাফার মাছ । আমাদের গ্রামে এই মাছকে বলা হতো ট্যাঁপা মাছ । জাপানে সর্বাধিক জনপ্রিয় এই মাছকে বলা হয়ে থাকে ফুগো । জাপানেই সব চাইতে বেশি খাওয়া হয়ে থাকে এই মাছ । জাপানের জাতীয় মাছ এই ফুগো ।

এই মাছ বর্ষার মৌসুমে নদীতে জেলেরা প্রচুর মাছ ধরে। এই ধরনের টেপা মাছ তখনই দেখা যায়। আমি এই মাছ নিয়ে অনেক খেলেছি বিশেষ করে পাটকাঠির অংশ মুখের ভেতর দিয়ে দিতাম আবার ফুস হয়ে যেত। আবার ফুলাইতাম খুবই ভালো লাগতো। আমার কাছে ভালো লেগেছে আর এটা জাপানের জাতীয় মাছ আগে জানা ছিল না আপনার পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম দাদা। খুবই ভালো লেগেছে তথ্যমূলক পোষ্ট প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছেন যেটা থেকে অনেক কিছু শেখার এবং জানার আছে।❤️❤️

আজকের নতুন পোস্ট মানে নতুন কিছু জানাও শিক্ষা। আপনার প্রতিটি পোস্ট থেকে আমরা কিছু না কিছু পোস্ট থেকে শিখতে থাকি। আজকেও অজানা এই বিষয়গুলো জেনে অনেক ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ দাদা আপনাকে। পরবর্তীতে নতুন কিছু জানাও শেখার অপেক্ষায় রইলাম।

यह एक अद्भुत मेसियम है

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 58659.71
ETH 3164.52
USDT 1.00
SBD 2.43