গোয়েন্দা রহস্য গল্প : "অর্কিড যখন মৃত্যুর হাতছানি দেয়" - পর্ব ১০
copyright free image source pixabay
নবম পর্বের পর
দশ
পরের দিন, রাত ন'টা । সন্ধ্যে থেকেই সেদিন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে । সাথে বাদলা হাওয়া দিচ্ছে খুবই । নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস এয়ারপোর্টের ডিপার্চার গেট । ইন্সপেক্টর অনীশ মিত্র ও শ্যামপুকুর থানার বড়বাবু ঠিক ডিপার্চারের সামনেই উপস্থিত আছেন । তবে, দুজনেই আপদমস্তক ছদ্মবেশে । তার প্রধান কারণ হলো খুনী খুব সম্ভবত তাঁদের চেহারার সাথে বিলক্ষণ পরিচিত । যে হারে খুনের দিন থেকে তাঁদের দুজনকে মিডিয়ায় দেখানো হয়েছে তাতে খুনীর চোখকে তাঁরা কিছুতেই ফাঁকি দিতে পারবেন না ।
তাই এই ছদ্মবেশ ধারণ । ইন্সপেক্টর সেজেছেন এক পার্শি ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশ, টকটকে গৌরবর্ণ গায়ের রং, ছ'ফুট হাইট, আর চেহারার আভিজাত্য লুকটা এক্ষেত্রে খুবই কাজে দিয়েছে । মাথায় একটা পার্শি টুপি, দশ আঙুলে ফলস পাথর বসানো আংটি, হাতে একটা ব্রিফকেসে । একেবারে পারফেক্ট লুক ।
আর বড়বাবুকে নিয়ে প্রথমে একটু মুশকিল হয়েছিল । বিশাল ভুঁড়ি, খাটো উচ্চতা, আর মাথার টাক, এগুলোর জন্য তিনি খুব সহজেই আইডেন্টিফাইড হয়ে যাবেন । তাই বেশ কিছুক্ষন ভাবনা চিন্তার পরে অবশেষে ঠিক হলো বড়বাবু সাজবেন মারোয়াড়ি ব্যবসায়ী । সত্যি বলতে কি ছদ্মবেশ নেওয়ার পরে ইন্সপেক্টর মুগ্ধ নেত্রে বেশ কিছুক্ষন চেয়ে রইলেন । এক্কেবারে পারফেক্ট লুক ।
মারোয়াড়ি ব্যবসায়ীদের মতোই লাগছে বড়বাবুকে । মাথায় একটা পরচুলা পরানো, তার উপরে চাপানো মারোয়াড়িদের মতোই টুপি । গলায় একটা উত্তরীয়, হাতে একটা পেট মোটা পোর্টফোলিও ব্যাগ ।
দু'জনে গেটের দু'পাশে । আর কিছুটা দূরে দূরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্লেইন ড্রেসে পুলিশের লোক । ঘুঁটি সাজানোই আছে, এখন শুধু এ নাটকের কুশীলবের প্রতীক্ষা, তারপরেই শুরু হবে আসল খেল ।
সময় যেন আর কাটতেই চায় না । বড়বাবু ঘনঘন ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছেন । কালো আকাশের বুক চিরে এ মাথা থেকে শুরু করে ও মাথা অব্দি বিদ্যুতের একটা রেখা দেখা দিলো ।এরপরেই শুরু হলো ঝুম বর্ষা । মাঝে মাঝে গুরু গুরু মেঘ ডাকছে । সাথে তীব্র জোলো হাওয়া । বড়বাবুর একটু শীত শীত করতে লাগলো । মনে মনে তিনি বেশ অস্থির হয়ে পড়েছেন । খুনী আসবে তো ? তিনি এখনো কিছুই জানেন না । শুরু থেকে শেষ অব্দি তিনি এই কেসের সাথে আছেন অথচ এখনো বিন্দুবিসর্গও বুঝতে পারেননি । তবে, তিনি মোটামুটি শিওর যে হরিসাধনই টাকার লোভে তার মনিবকে খুন করেছে ।
ন'টা বেজে ৪০ মিনিট । এতক্ষণ ধরে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকে পায়ে যেন ঝিঁঝিঁ ধরে গেলো । বড়বাবু একটু পায়চারি করার জন্য যেই ঘুরেছেন অমনি দেখতে পেলেন একটা হলুদ রঙের ট্যাক্সি যেন রাতের অন্ধকার ফুঁড়ে সাঁ করে বেরিয়ে এলো । ট্যাক্সিটা ডিপার্চারের ঠিক সামনে এসে থামলো । মুহূর্তে তিনি লক্ষ করলেন ইন্সপেক্টর ও প্লেইন ড্রেসের পুলিশসদস্যরা সতর্ক হয়ে গেলো ।
দু'মিনিট পর ট্যাক্সির ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে ট্যাক্সি থেকে নামলো মাঝারি উচ্চতার একহারা চেহারার এক বাঙালি যুবক । চেহারায় কিছুটা জিপসি ছাপ আছে । পরনে জিন্স আর টি-শার্ট । এক মুখ ফ্রেঞ্চকাট দাড়ি আর চোখে পোলারয়েড গ্লাস । মাথার পেছনের বড় বড় চুলগুলি বিনুনির মত ঝুঁটি বাঁধা, পনিটেল । হাতে একটা মাঝারি ব্যাগ ছাড়া আর কিছুই নেই ।
ট্যাক্সি থেকে নেমে যুবকটি গট গট করে ডিপার্চারের গেটের সামনে সিকিউরিটির হাতে পাসপোর্ট আর ফ্লাইটের boarding pass টা দিলো । সিকিউরিটি গার্ড পাসপোর্টে নামটি পড়েই ঘাড় কাত করে ইন্সপেক্টরকে ইশারা করলো । সঙ্গে সঙ্গে দু'দিক থেকে ইন্সপেক্টর আর বড়বাবু এগিয়ে গেলেন যুবকটির দিকে ।
ইন্সপেক্টর ধীর পায়ে হেঁটে যুবকটির কাঁধে হাত রাখলেন । কয়েক সেকেণ্ডের নীরবতা ।হঠাৎ, পুলিশের বাঁশির তীব্র হুইসল বেজে উঠলো । চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পুলিশ দৌড়ে এসে ঘিরে ফেললো গেটের সামনের স্পেসটি । যুবকটি আস্তে ফিরে তাকালো ইন্সপেক্টরের চোখের দিকে ।
ইন্সপেক্টর মৃদু স্বরে বললেন, "প্রোফেসর প্রফুল্ল কুমার সেনকে হত্যার দায়ে আপনাকে এরেস্ট করা হলো, মি: বিকাশ সাঁতরা ।"
বড়বাবু দ্রুত হ্যান্ডকাপ পরিয়ে দিলেন, "ইউ আর আন্ডার এরেস্ট !"
অদ্ভুত একটা হাসির রেখা ফুটে উঠলো বিকাশের মুখে । খুব ধীরে মৃদু গলায় বললো, "ভয় নেই আমি পালাবো না মি: মিত্র । সত্যিই অদ্ভুত আপনার ক্ষমতা । আমাকে ধরা ইম্পসিবল ছিলো । পুলিশ ডিপার্টমেন্টে আপনার মত একজন অফিসার ছিলেন বলেই আমি ধরা পড়লাম । তবে, এতে আমার কোনো আক্ষেপ নেই । আমার ফাঁসির সাজা হলেও আই ডোন'ট কেয়ার । আমি আমার উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে পেরেছি, এটাই আমার পরম পাওয়া । তবে এটা জানার আমার তীব্র কৌতূহল হচ্ছে যে কি ভাবে আপনি আমাকে ধরতে সমর্থ হলেন ?"
-"সবই জানতে পারবেন মি: সাঁতরা । বড়বাবু, চলুন যাওয়া যাক । আমি জানি আপনিও খুবই কৌতূহলী এই কেসের সব রহস্য জানতে । চলুন, আগে আমার অফিসে । সকালে আপনি মি: সাঁতরাকে লকআপে নিয়ে যাবেন ।"
দাদা বড়বাবুর মতো তো আমার আর তর সইছে না একটু যদি পারেন তাহলে বাকি অংশটুকু একটু তাড়াতাড়ি দিয়েন । তবে দাদা একটা বিষয় বলতেই হবে যে আপনি গল্পটি উপস্থাপন করার কোয়ালিটি রাখেন।
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community
আহা দাদা এখনো তো মন শান্ত হয়নি কারণ কেস জানার যে বড়বাবুর মতো আমার ও খুব ইচ্ছে।
দাদা তাড়াতাড়ি নেক্সট পর্ব দিন,আর তর সইছেনা কারণ জানার আগ্রহ বেড়েই চলেছে।
গল্পটা জাস্ট ওয়াও হচ্ছে। কিছু বলার ভাষা নাই।
অনেক অপেক্ষা করছিলাম ১০পর্বের জন্য। এবার পড়া শুরু করি।
অবশেষে ইন্সপেক্টর মিত্র তার চৌকস দক্ষতায় খুনিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হলো। কিন্তু কৌতুহলটা রয়েই গেল। নতুন একটা চরিত্র তৈরি হলো সে চরিত্রের নাম দেয়া হলো মি. বিকাশ সাঁতরা। ইন্সপেক্টর মিত্র মি. বিকাশ সাঁতরাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যাচ্ছে। তবে খুনি নিজেও অবাক কিভাবে তাকে খুনের জন্য শনাক্ত করতে পারলো। থানার বড়বাবু এই কেসের রহস্য জানতে খুব কৌতুহলী ঠিক তেমনি আমরাও অনেক কৌতূহল নিয়ে আসল রহস্য জানার জন্য অপেক্ষায় রয়েছি দাদা। আগামী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
গল্পে মি; বিকাশের আগমন .আমি প্রথম থেকে ভেবে আসতেছিলাম হরিসাধণ কাজটি করে থাকতে পারে কিন্তু আজ ধারনা পরিবর্তন হয়ে অন্য দিকে মোড় নিলো । আমার মনে বিকাশ সাতরা প্রফেসর সেনের কলিগ ছিল এবং পুরো ব্যাপার তিনি ঠান্ডা মাথায় করেছেন ।কিভাবে জেনেছেন তার জন্য আগামী পর্বের জন্য অপেক্ষা বাড়ল।
যাক। অবশেষে খুনী ধরা তো পরলো। এবার রহস্য উদঘাটন এর পালা।
খুনির নাম সামনে আসলো। কিন্তু খুনের কারণ এখনও অপ্রকাশিত। তবে মনে হচ্ছে অর্থের লোভেই প্রফেসর সেনের খুন হয়েছে। খুনের আসল কারণ অবশ্যই আমরা পরবর্তী পর্বে জানতে পারবো। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
于老师三大爱好,抽烟喝酒烫头,但是我的爱好是点赞
Mr. Yu's three hobbies are smoking, drinking and hairdressing, but I like upvote ,thank you for your support! witnesses vote to me ,i will upvote to you everyday
গল্পটা খুব ভালো হয়েছে ভাই। আমার কাছে খুব ভালো লাগেছে ভাই।