আমার অতি সংক্ষিপ্ত ভ্রমণ বিষয়ক আপডেট -০৮steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগlast year


নভেম্বরের ১৭ তারিখ । আজ আমরা গ্যাংটক থেকে দার্জিলিং এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম । আবহাওয়া ছিল কিছুটা কুয়াশাচ্ছন্ন, তাই যাত্রাপথে আমরা কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা মিস করলাম । ভীষণ উঁচুনিচু পাহাড়ি পথ বেয়ে দার্জিলিং এর উদ্দেশ্যে ছুটে চলা । বেশ শীত শীত করছিলো ।

যাত্রাপথে খাদের কিনারে পাইন, বার্চ আর ঝাউগাছের ঘন জঙ্গল দেখলাম । ঝাউগাছ আর পাইন গাছগুলোর গায়ে পুরো জমাট কুয়াশা । প্রত্যেকটা গাছের গুঁড়ি আর ডালপালায় ঘন শ্যাঁওলা জমেছে দেখলাম । ড্রাইভার জানালো যে প্রায় বারো মাস ধরেই মেঘ আর কুয়াশায় ঢাকা থাকে এই জঙ্গল । তাই গাছের গায়ে এত পুরু শ্যাঁওলার আস্তরণ ।

সত্যি মনে হচ্ছিলো কোন এক আদিম প্রাগৈতিহাসিক জঙ্গলের ধার ঘেঁষে ছুটে চলেছি আমরা অজানার উদ্দেশ্যে । এরই মাঝে আমাদের দার্জিলিঙের সব চাইতে চমৎকার আকর্ষণ - "মেঘ এসে ভিজিয়ে দেওয়ার" সাথে পরিচয় হলো । হঠাৎ করেই এক খন্ড ছোট মেঘ এসে আমাদের গাড়ি ঢেকে দিলো । চটপট জানলা বন্ধ করে দিলাম আমরা । মেঘে ঢেকে গেলো আদিগন্ত ।

ড্রাইভার খুব সন্তর্পণে ড্রাইভ করে মেঘ ছিন্ন করে এলো । পথের দু'ধারে অসংখ্য নাম না জানা বুনো ফুল ফুটে আছে, পাখিরা ডাকছে । চারিদিক শান্ত নির্জন পরিবেশ । দারুন লাগছিলো সত্যি । এরই মাঝে গড়িয়ে থামিয়ে কিছু পাহাড়ি বুনো ফুলের ছবি তুললাম ।

দার্জিলিঙে একটা অভয়ারণ্য আছে । সিঞ্চল । এই জঙ্গলে পাইন, ওক, বার্চ, শাল, ঝাউ, দেবদারু, বাঁশ প্রভৃতি গাছ পাওয়া যায় । আর প্রাণীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বেঙ্গল টাইগার, চিতাবাঘ, বন বিড়াল, ভাল্লুক, নেকড়ে, বুনো কুকুর, বানর, পাহাড়ি ছাগল, পাহাড়ি হরিণ গয়াল প্রভৃতি ।

বেলা তিনটের দিকে আমরা অবশেষে ঘুম স্টেশনকে পেছনে ফেলে দার্জিলিং শহরে প্রবেশ করলাম । হোটেল আগে থেকেই বুক করা ছিল । রেজিস্টারে দ্রুত সই করে যার যার রুমে ঢুকে চিৎপটাং হয়ে শুয়ে পড়লাম । একটানা রেস্ট নিয়ে সন্ধ্যায় বের হলাম ম্যালে ।

দার্জিলিং শহরের প্রাণকেন্দ্র এই ম্যাল । নিচে দার্জিলিং ম্যালে আমাদের প্রথম সন্ধ্যাটি উদযাপনের ছবি শেয়ার করলাম ।


দার্জিলিঙের পথে । কালিম্পঙের এই ভিউ পয়েন্ট -এ দাঁড়ালে বহু নীচে তিস্তা আর রঙ্গীত নদীর সঙ্গমস্থল চোখে পড়ে ।

তারিখ : ১৭ নভেম্বর ২০২২

সময় : দুপুর ০১ টা ২০ মিনিট

স্থান : দার্জিলিং, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


পথের ধারে পাহাড়ি নাম না জানা বুনো ফুলের সমারোহ । ছবি তোলার লোভ সামলাতে পারলাম না ।

তারিখ : ১৭ নভেম্বর ২০২২

সময় : দুপুর ০২ টা ০০ মিনিট

স্থান : দার্জিলিং, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


দার্জিলিং ম্যাল । চৌরাস্তা । এখানে একটা ওপেন এয়ার থিয়েটার মঞ্চ আছে । সেখানে তনুজা আর টিনটিনের কিছু ফটো তুললাম ।

তারিখ : ১৭ নভেম্বর ২০২২

সময় : সন্ধ্যা ০৬ টা ১০ মিনিট

স্থান : দার্জিলিং, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


দার্জিলিং ম্যাল । ফোয়ারার সামনে ।

তারিখ : ১৭ নভেম্বর ২০২২

সময় : সন্ধ্যা ০৬ টা ৪০ মিনিট

স্থান : দার্জিলিং, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


দার্জিলিং ম্যালের প্রধান আকর্ষন হলো বিভিন্ন কিউরিও শপের দোকান । এসব কিউরিও শপে দুষ্প্রাপ্য বহু জিনিস পাওয়া যায় । আমরাও বেশ মোটা অঙ্কের টাকার কিছু কিউরিও আইটেম কিনেছি এখন থেকে ।

তারিখ : ১৭ নভেম্বর ২০২২

সময় : সন্ধ্যা ০৬ টা ৫০ মিনিট

স্থান : দার্জিলিং, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


ম্যালে ঘুরতে ঘুরতে বেশ খিদে পেয়ে গেলো । অগত্যা, খুঁজে পেতে একটা তিব্বতী রেস্তোরাঁতে বসে গেলাম ডিনারপর্ব শেষ করতে ।

তারিখ : ১৭ নভেম্বর ২০২২

সময় : সন্ধ্যা ০৭ টা ৩০ মিনিট

স্থান : দার্জিলিং, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus

ক্যামেরা মডেল : EB2101

ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ



✡ ধন্যবাদ ✡


Sort:  

RME, Thank You for sharing Your insights...AND photographs.

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Can You Upvote Me Please ?

 last year 

দাদা আপনার আপডেট পোস্ট গুলো পড়তে অনেক ভালো লাগে। বৃষ্টি এসে গাড়ি ভিজিয়ে দিয়েছে দারুণ ব্যাপাার ছিল । আসলে দাদা প্রকৃতির পরিবেশের সবকিছুই ভালো লাগে।বুনো ফুল গুলো দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে। কিউরিও শপের দোকানে গুলো অনেক সুন্দর লাগছে। যাইহোক দাদা ঘুরতে ঘুরতে খিদে লাগা স্বাভাবিক। অগত্যা, খুঁজে পেতে একটা তিব্বতী রেস্তোরাঁতে বসে ডিনারপর্ব শেষ করেছেন জেনে ভালো লাগল। ধন্যবাদ দাদা।

Hi @rme,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

Congratulations!

Your post has been rewarded by the Seven Team.

Support partner witnesses

@cotina
@bangla.witness
@xpilar.witness

We are the hope!

 last year 

মেঘ এসে ভিজিয়ে দেওয়ার বিষয়টি অনেক জায়গায় পড়েছি,এই ব্যাপারটার সাথে পরিচিত হওয়ার ইচ্ছে আমার বহুকালের।আপনার লেখা পড়ে দাদা সে ইচ্ছে আরো বহুগুণ বেড়ে গেলো!আর কিউরিও শপের জিনিষগুলো আসলে দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে বেশ এন্টিক ব্যাপার আছে তার মাঝে।আপনার এই লেখাগুলো পড়ে দারুণ উপভোগ করছি দাদা।বৌদিদের ছবি দেখেও বুঝা যাচ্ছে বৌদি,টিনটিন সবাই বেশ মজা করছে।

 last year 

ইস দাদা আপনার বর্ণনায় বুঝতে পারছি যে জায়গাগুলো কতটা সুন্দর। মেঘ গুলো যখন আপনাদের গাড়ির উপর পড়ছিল তখন কেমন লাগছিল অত কাছ থেকে মেঘ দেখতে, আর ড্রাইভাররাও কত এক্সপার্ট মেঘের ভিতর দিয়ে কত সুন্দর ভাবে গাড়ি চালিয়ে চলে আসে। ঘুম স্টেশনে সবাই ঘুমায় নাকি দাদা? হোটেলে গিয়ে চিৎপটাং হয়ে ভালই করেছেন ফ্রেশ হয়ে দার্জিলিংয়ের প্রাণকেন্দ্র ম্যাল এ সুন্দর সময় উপভোগ করতে পারবেন। দার্জিলিংয়ের আঁকাবাঁকা পথটা অনেক সুন্দর লাগছে দেখতে। বনফুল গুলো কে আমি তো প্রথমে জবা ফুল মনে করেছিলাম। কত ছবি তুলেছেন দাদা দারুন হয়েছে ছবিগুলো।

Thank You for sharing Your insights...

 last year 

যত পড়ছি, তত ভাল লাগছে দাদা। 🥰 মেঘ এসে গাড়িটাকে ভিজিয়ে দিচ্ছিল,চমৎকার সব ব্যাপার, যা কিনা দেখা হয়নি।তাজমহল গেলাম কিন্তু দার্জিলিং যাওয়া হয়নি আমার।সেখানে শুনেছি অনেক ঠান্ডা পরে।টিনটিন বাবুকে সাবধানে রাখবেন দাদা। প্রকৃতি,পরিবেশ সবকিছুই ভাল লাগলো। আপনার পোস্টের মাধ্যমে সবকিছু জানতে পারছি।ভাল লাগছে জেনে।বুনো ফুলও কিন্তু কম সুন্দর নয়।আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে চলে গেলেন,সাবধানে থাকবেন আশাকরি।সবাই খুব আনন্দে আছেন,দেখে ভাল লাগলো। অনেক ধন্যবাদ দাদা।অনেক শুভকামনা সবার জন্য। 💕🥰💕

 last year 

দাদা আপনার পোস্ট পড়ে মনে হচ্ছে আমি কল্পনায় চলে গেলাম সেই সুন্দর দার্জিলিং শহরে। আপনাদের গাড়ি মেঘ এসে ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে আহ কি মজার এক অনুভূতি। আপনারা কাছ থেকে খুব সুন্দর একটা মুহূর্ত অনুভব করতে পেরেছেন। এখানে যেমন বিভিন্ন ধরনের গাছ রয়েছে তেমনি ভয়ংকর প্রাণীও আছে। রাস্তার পাশে বুনো ফুলগুলো দেখতে কিন্তু বেশ সুন্দর। দার্জিলিংয়ের প্রাণকেন্দ্র ম্যাল এ খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। দাদা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদের ঘুরাঘুরির প্রতিটা পর্ব খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করার পর। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

Thank You for sharing Your insights...

 last year 

দার্জিলিং কে আর চেনাই যায় না। সময় কত বড় বিষয়! সব কিছু পাল্টে ফেলে সময়। ঘুমে সব সময়েই ভীষণ ঠান্ডা থাকে। উচ্চতম বলেই হয়তো। ট্রিপ প্রায় শেষের পথেই মনে হচ্ছে। ভালোই হল ঘোরা টা যা বুঝলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.13
JST 0.032
BTC 60953.94
ETH 2920.49
USDT 1.00
SBD 3.57