স্কুল জীবনের গল্প পর্ব -৩//by ripon40
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon40 বাংলাদেশের নাগরিক
- স্কুল জীবনের গল্প
- ২৫, ডিসেম্বর ,২০২৪
- বুধবার
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি " স্কুল জীবনের গল্প " শেয়ার করছি । আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
আজকে আবার স্কুল জীবনের গল্প নিয়ে হাজির হলাম। এর আগে দুইটি পর্ব শেয়ার করেছি । সেখানে অনেক সুন্দর সুন্দর মুহূর্ত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সেই মুহূর্তগুলো এখনো মনে পড়লে মনে হয় আবার যদি সে অনুভূতি গুলো ফিরে পেতাম সত্যিই অনেক ভালোলাগা কাজ করতো।
আমাদের ব্যাচের ছেলে পেলেরা খুবই জেদি ছিল। তারাও দমে যাওয়ার পাত্র নয়। একজন বলে উঠলো ক্লাসে এসে কালকেই পিকনিক হবে। যেহেতু স্যাররা রাজি হলো না আমরা আগামীকাল স্কুলে আসবো না। তার কথার সাথে সবাই সহমত পোষণ করলাম। সবার মধ্যেই একটা উত্তেজনা পূর্ণ মুহূর্ত কাজ করছিল। হঠাৎ করে এভাবে নৌকা ঠিক করা সত্যিই চিন্তায় পড়ে গেলাম সবাই। বর্ষাকালীন সময়ে নৌকা খুবই কম পাওয়া যেত। বন্ধু রোমান সে বলল নৌকার ব্যবস্থা আমি করব। তাহলে তো আর কোন বাধা থাকলো না। রান্নাবান্নার দায়িত্ব নিয়েছিল বন্ধু পলাশ। তাদের বাড়ি আবার পদ্মা নদীর যে শাখা ছোট্ট নদী ছিল তার পাশেই। আমরা সবাই তারপরের দিন রেডি হয়ে সবকিছু কেনাকাটা করে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।
আমাদের বাসা থেকে নদী খুব কাছে। সেই নদী দিয়ে বর্ষাকালীন সময়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি যাওয়া যেত। মূল পদ্মা নদীর সাথে সংযোগ সেই সময় প্রচন্ড স্রোত নদীর ভয়ানক পরিবেশ সবাইকে ভয় পাইয়ে দিত। আমরা মোট ১৬ জন ছিলাম। সবাই পিকনিকের কাজের অংশ ভাগাভাগি করে নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে দিলাম। কিন্তু বন্ধু রোমান ওইদিকে নৌকা তখনো ঠিক করতে পারেনি। এটাই ছিল সেই সময় বড় একটা দুশ্চিন্তা। আমাদের পিকনিকের প্রতিটা কাজেই যেন বাধা। কি করা যায় নৌকা এখনো ঠিক হয়নি। রোমানকে ফোন দিয়ে অনেক রাগ করা হলো। অনেক সময় পর সে একটি নৌকা পেয়েছে তখন একটু স্বস্তি ফিরে এলো। তারপর আমাদের নৌকায় উঠে ঘুরাঘুরি করার পালা।
যেহেতু আমাদের অনেক লেট হয়ে গিয়েছিল। আমরা দ্রুত নৌকায় উঠে পড়লাম। রোমান দেখছি নৌকায় সাথে আমাদের সমবয়সী একজনকে নিয়ে এসেছে। তার এলাকার চাচাতো ভাই। সে অনেক ভালো নৌকা চালাইতে পারে। অল্প কিছু দূর যেতে না যেতে একটি বিষয় লক্ষ্য করলাম নৌকার মধ্যে অনেক পানি। নৌকায় ছিদ্র আছে সেই ছিদ্র দিয়ে পানি উঠছে। সেটাই অনেক বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ালো। রোমানকে বললাম কি ব্যাপার নৌকায় পানি উঠছে এই নৌকা নিয়ে কি যাওয়া যাবে? সে বলল হ্যাঁ যাওয়া যাবে এমনিতেই সবার মাথা গরম নৌকা টেনসনে সেটাও আবার ভাঙ্গা নৌকা। আমরা অনেকেই রোমানকে রাগ করতে থাকলাম। সে আমাদের রাগের কথাগুলো শুনে তার চাচাতো ভাইকে পানি সেচতে বললো।
পানি এত দ্রুত নৌকার ভিতর উঠছিল সেটা সেওসি দিয়ে পানি ফেলে দিয়েও কুল পাওয়া যাবে না এমন পরিবেশ। বর্ষা কালীন সময়ে নদীতে ভরপুর পানি এত বড় রিস্ক নিয়ে যাওয়াটা সত্যি অনেকের কাছে ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নদীর মাঝা মাঝি জায়গায় একটা উঁচু চড় ছিল । সেখানে নৌকা থামিয়ে সবাই চিন্তা করতে থাকলাম এখন কি করা যায়।
এইদিকে রোমান রাগ করে সেওসি ফেলে দিয়েছে। সেই বয়সের রাগের মাথায় অনেক কিছুই হয়ে যেত। নৌকার পানি ওঠা থেমে নেই যেটা আরো ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। নৌকা কূলে নিয়ে সবাই ভাবতে থাকলাম কি করা যায়। হঠাৎ পাশ দিয়ে একটি পরিচিত নৌকা যাচ্ছিল তারা আমাদের বিষয়টি বুঝতে পেরে সেখানে নৌকা থামিয়ে বলল আমাদের নৌকার সেওসি নিয়ে যেতে পারেন। তখনই স্বস্তি ফিরে পেলাম। সবাই হাফপ্যান্ট পড়ে নৌকার উপর বসে আছি । আমার অনেকগুলো বন্ধু ছিল ভিতুর ডিম তাদের অনেকের ভয়ে চিন্তায় জড়োসড়ো। পরবর্তী পর্বে আরো সুন্দর কিছু মজার ঘটনা শেয়ার করার চেষ্টা করব। আশা করি এই পর্ব আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে।
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি মোঃ রিপন মাহমুদ। আমার স্টীমিট একাউন্ট@ripon40। আমি একজন বাঙালি আর আমি বাঙালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। আমি স্টীমিটকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসি পড়তে, লিখতে, ব্লগিং,ফটোগ্রাফি,মিউজিক,রেসিপি ডাই আমার অনেক পছন্দের। আমি ঘুরতে অনেক ভালোবাসি। আমার সবচেয়ে বড় গুণ হলো কারোর উপর রাগ করলে সহজেই ভুলে যাই।
https://x.com/mahmudrr_r/status/1871627945619657167?t=ENuXiFJh_H2nhdaeLM3x9g&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এমন নৌকাই নিয়ে এসেছিল পানি সেচতে সেচতে জীবন শেষ। তবে পিকনিকে অনেক মজা হয়েছিল সব বন্ধুরা যেদের বসে পিকনিকে যাওয়ার মুহূর্তটা আবার স্মরণ করিয়ে দিলে বন্ধু।