নাটকের রিভিউ "হারামখোর" || by ripon40
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon বাংলাদেশের নাগরিক
- নাটক রিভিউ
- ৩০, জুলাই ,২০২৩
- রবিবার
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে হারামখোর নাটকের রিভিউ শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
ছবিঃ ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলীঃ
নাম | হারামখোর |
---|---|
পরিচালক | ইমরান হাওলাদার। |
অভিনয় | মোশাররফ করিম , মীম চৌধুরী,আনিন্দিতা মিমি। |
দৈর্ঘ্য | ৪১:১৩ মিনিট । |
ধরন | ট্রাজেডি, শিক্ষামূলক। |
ভাষা | বাংলা। |
মুক্তির তারিখ | ৩০.০৬.২০২৩ইং। |
নাটকের সারসংক্ষেপ
আজ আমি আপনাদের সাথে মোশারফ করিমের হারামখোর নাটকের রিভিউ শেয়ার করব। মোশারফ করিম নাটকের সেরা তাছাড়া অভিনেত্রীর মিম চৌধুরীর অভিনয় আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। তার অনেক অভিনীত নাটক আমি দেখেছি। নাটকের চরিত্রে মোশারফ করিমের নাম আবু হায়াত সবাই তাকে আবু বলে ডাকে এবং মিম চৌধুরীর নাম আসিয়া খাতুন তিনি আবু হায়াতের স্ত্রী হিসেবে অভিনয় করেছেন। তিনি খুবই সুন্দর অভিনয় করেছেন। প্রথম দিকে আমরা নাটকের দৃশ্যকল্পে দেখতে পাই আবু সাহেব একজন সুদ ব্যবসায়ী ছিলেন তিনিই মৃত্যুবরণ করায় এলাকার সবাই খুশি হয়।
এলাকায় মাইকিং করে যখন বলা হয় আবু হায়াত চৌধুরী মারা গিয়েছে তখন এলাকার সবাই শুনে অনেক খুশি হয়। আবু হায়াত চৌধুরী তাঁর সুখ ব্যবসায়ী কারবারের জন্য যখন শহরে বের হয়েছিলেন সেই মুহূর্তে তার বউ তার কাছে বলে তিনি অনেকদিন যাবত অসুস্থ শ্বাসকষ্ট হচ্ছে তার জন্য যেন ওষুধ আনে তিনি তাকে অনেক কিছু বলে। যখন রুম থেকে বের হন আবু হায়াত চৌধুরীর মা বলে আমার মাজাটা খুবই ব্যথা আমার ডাক্তারের কাছে যেতে হবে । তখন আবহাওয়া চৌধুরী বলে বেশি বেশি করে টিভি দেখলে এবং সিরিয়াল দেখলে মাজা ব্যাথা ঠিক হয়ে যাবে। অন্যদিকে তার বাবা বলে আমার চোখের ছানি পড়েছে কবে এটা কাটবে সে বলে তোমার চোখের ছানি পড়াটা তো স্বাভাবিক বেশি বেশি করে মোবাইলটি চালাইলে ঠিক হয়ে যাবে।
শহরের বিভিন্ন ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের সাথে তার সুদ ব্যবসায়ীর কারবার। প্রথমে একটি ফলের দোকানে গিয়ে খুব তাড়াতাড়ি তার সুদের লাভের অংশ দিতে বলে তার একটু দেরি হলে তাকে অনেক গালাগালি করে এবং তাকে কিছু ফল দিতে বলে খাওয়ার জন্য। ফল দোকানদার তাকে কিছু ফল দেয় খাওয়ার জন্য সেখান থেকে আবার সবজি দোকানে চলে যায়। সেখানে গিয়ে সুদের লাভের অংশ দিতে বলে কিন্তু তিনি বলে এই সপ্তাহে দিতে পারবেনা তাকে অনেক বোকা বাজি করে তার সবজি থেকে একটি গাজর নিয়ে খাইতে খাইতে চলে যায়। তারপরে একটি চায়ের দোকানে গিয়ে বসে চা খাইতে হঠাৎ তার গ্রামের রফিক নামে একজন কাশি দিতে থাকে তাকে বিড়ি খাইতে মানা করে।
এরপর সে লাভের টাকা বিভিন্ন দোকান থেকে এনে বাড়িতে এসে গুনতে থাকে। সেই মুহূর্তে তার বউ নিচে শুয়ে অনেক কাশি দিতে থাকে কিন্তু বারবার টাকা গুনার মনোযোগ সেই কাশির আওয়াজ শুনে নষ্ট হয়ে যায়। সে তার বউ আসিয়াকে বলে সে যেন আর কাশি না দেয় কিন্তু তার অনেক কাশি হওয়ায় সে দ্রুত দিতে থাকে। এদিকে আলেয়া নামের একটি মেয়ে সৌদি থেকে দেশে ফিরেছে। প্রথমে রফিক মিয়ার সাথে দেখা হয় তার জন্য এই প্যাকেট বিদেশী সিগারেট গিফট করে কিন্তু সে নিতে রাজি হয় না কারণ সে সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে প্রচন্ড কাশি হওয়ার কারণে। আলেয়ার দিকে আবু হায়াত এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। আলেয়া সে বিষয়টি লক্ষ্য করে।
তার সাথে আবু হায়াত চৌধুরী কুশল বিনিময় করতে থাকে তাকে বলে সৌদি থেকে একাই এসেছ নাকি সঙ্গে কাউকে নিয়ে এসেছ । তখন আলেয়া বলে আরে না তাদের সাথে তেমন কোন কিছুই হয়নি তিনি দেশে এসেছেন ছুটি কাটানোর জন্য এখানে একমাস থাকবেন এই নোংরা পরিবেশ তার পছন্দ নয়। সৌদিতে ফলমূল রাস্তাঘাটে পড়ে থাকে খাওয়ার লোক নেই এই নোংরা দেশে থেকে কি লাভ ।আমি এখানে এসেছি তিনটি ভিসা নিয়ে যদি বিদেশে যাওয়ার কোন লোক থাকে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আবু হায়াত তার গ্রামের একজনকে বিদেশে পাঠিয়ে দেবে বলে অনেক টাকা নেয় এবং তাকে আরও টাকা দেয়ার জন্য বলে। লোকটি অনেকদিন ধরে ঘুরে তার পিছনে বলতে থাকে কবে যাইতে পারবো বিদেশ।
এদিকে আলেয়ার সাথে আবু হায়াতের ভালো একটা সম্পর্ক হয়। রফিক মিয়া সেই বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে আবু হায়াতের বইয়ের কাছে গিয়ে বলে। মা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি আমি চাইনা তোমার কোন ক্ষতি হোক। তোমার স্বামী আবু হায়াত আলেয়া বিদেশ থেকে আসা মেয়েটির সাথে বিভিন্নভাবে ঘোরাঘুরি করছে। তখন আছিয়া বলে আমার স্বামী এরকম হতেই পারে না। আমি তাকে ভালোভাবে চিনি তখন আমি কথাটি তোমার ভালোর জন্যই বলেছি তুমি একটু খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারো। তখন আসিয়া পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পারে তার স্বামীর সাথে আলেয়া কুশল বিনিময় করছে। সেই সময় গিয়ে তাদেরকে হাতেনাতে ধরে ফেলে এবং আলেয়াকে অনেক কিছু বলে এক পর্যায়ে আলেয়াকে আসিয়া মারতে যায়।
হঠাৎ আবু হায়াত একদিন অসুস্থ হয়ে পড়ে সে এই বিষয়টি নিয়ে অনেক চিন্তিত হয় । তারপর সে ডাক্তারের কাছে যায় ডাক্তার যখন রিপোর্ট দেবে তখন ডাক্তারের সহকারী এসে ডাক্তারকে বাইরে ডেকে নিয়ে যায় বলতে থাকে ওই রোগীটি যিনি ক্যান্সার আক্রান্ত বর্তমান তার তৃতীয় স্টেজ চলছে হয়তো আর বেশি দিন বাঁচবে না। আবু হায়াত মনে করে হয়তো আমার ক্যান্সার হয়েছে ডাক্তার আমার থেকে লোকাচ্ছে। সে কষ্ট পেয়ে তাড়াতাড়ি সেখান থেকে বেরিয়ে যায়। চায়ের দোকানে এসে স্থির হয়ে বসে থাকে তার শরীর ঘামতে থাকে চায়ের দোকানদার এটা দেখে ভয় পেয়ে যায়। তাকে জিজ্ঞেস করলে সে কিছুই বলে না সে সিদ্ধান্ত নেয় তার সকল সম্পত্তি মা এবং বউয়ের নামে লিখে দেবে সেটা করে সে একটি হাসপাতালে গিয়ে শুয়ে থাকে।
আবু হায়াত যে হসপিটালে গিয়েছিল তার চিকিৎসার জন্য সেই হাসপাতালে গিয়ে শুয়ে থাকে সেই নার্স তাকে বলে আপনি এখানে শুয়ে আছেন কেন? সে কোন কথার উত্তর না দিয়ে গান গাইতে শুরু করে । হঠাৎ ডাক্তার চলে আসে বলে আপনি এখানে শুয়ে আছেন কেন আমার ক্যান্সার হয়েছে আমি আর বেশি দিন বাঁচবো না সেজন্য একটু মনের সুখে গান করছে। তখন ডাক্তার বলে আপনি পাগল হয়ে গেছেন আপনার তো ক্যান্সার হয়নি। আপনার হয়েছে আলসার যেটা হলে মানুষ মরে না তখন আবু হায়াত উঠে অবাক হয়ে যায় কি বলেন আপনি তো দেখছি পাগল হয়ে গেছেন। তখন সে তাড়াতাড়ি হসপিটাল থেকে বেরিয়ে তার মায়ের কাছে ফোন দেয় তখন তার মা ফোন ধরে বলে আমরা তো মার্কেটে এসেছি মার্কেট করতে বৌমা আমাকে অনেক সুন্দর সুন্দর শাড়ি কিনে দিয়েছে এখনো অনেক কিছু কেনার বাকি তোর সাথে পরে কথা বলব এখানেই নাটক শেষ হয়ে যায়।
শিক্ষা
নাটক থেকে শিক্ষণীয় বিষয়টি হলো আমরা জীবনের এই সাময়িক তৃপ্তির জন্য অর্থলোভী হয়ে পড়ি। অর্থের জন্য অনেক কিছু করতে পারি হয়তো এই সামান্য অর্থের জন্য পরিবারের মানুষগুলোর সাথে খারাপ ব্যবহার করে থাকি। তাদেরকে দূরে ঠেলে দেই কিন্তু একসময় যে সকল অর্থই অনর্থের মূল হবে যখন এই পৃথিবী ছেড়ে আমরা চলে যাব তখন এই অর্থের আর কোন মূল্য থাকবে না আমাদের কাছে। এই বিষয়টি হয়তো মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেই বিষয়টি উপলব্ধি করে এখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
ব্যক্তিগত মতামত
নাটকটি কয়েকদিন আগেই রিলিজ পেয়েছে কিন্তু আমার দেখা হলো আজকে। মোশাররফ করিম , মিম চৌধুরী খুব সুন্দর অভিনয় করেছে। মোশাররফ করিমের নাটক মাঝে মাঝে দেখা হয় ভালই লাগে। এই নাটকটি আমার কাছে ভালোই লেগেছে। তাদের দুজনের জুটি অনেক মানিয়েছিল নাটকের গল্পটা চমৎকার ছিল। তাছাড়া মিউজিক, সাউন্ড সিস্টেম সবকিছু অনেক সুন্দর ছিল।
ব্যক্তিগত রেটিং
নাটকের লিংক
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি মোঃ রিপন মাহমুদ। আমার স্টীমিট একাউন্ট@ripon40। আমি একজন বাঙালি আর আমি বাঙালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। আমি স্টীমিটকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসি পড়তে, লিখতে, ব্লগিং,ফটোগ্রাফি,মিউজিক,রেসিপি ডাই আমার অনেক পছন্দের। আমি ঘুরতে অনেক ভালোবাসি। আমার সবচেয়ে বড় গুণ হলো কারোর উপর রাগ করলে সহজেই ভুলে যাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 5/7) Get profit votes with @tipU :)
বন্ধু মোশারফ করিমের নাটক মানেই হিট। হারামখোর নাটকের রিভিউটি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছ। এ ধরনের নাটক থেকে আমরা অনেক কিছুই শিখতে পারি। যদি ওই নাটকটি এখনো আমি দেখি নাই তবে চেষ্টা করবো দেখার। আমরা মানুষ জাতি অর্থ আর স্বার্থের জন্য অন্ধ হয়ে যাই। তাই এই অবস্থা থেকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে। সুন্দর শিক্ষনীয় নাটকের রিভিউটি প্রকাশ করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ বন্ধু।
মাঝে মাঝেই সময় পেলে চেষ্টা করি বাংলাদেশের নাটক দেখতে।খুবই ভালো লাগে মজার ও শিক্ষণীয় কাহিনীগুলো দেখতে।আপনার নাটক রিভিউ সুন্দর হয়েছে।পড়ে ধারণা পেলাম যে,টাকা মানুষকে অন্ধ করে দেয়।টাকার জন্য মানুষ তার আপনজনকে দূরে সরিয়ে দেয়,ধন্যবাদ ভাইয়া।
হারামখোর নাটকটা রিভিউ পড়ে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। যদিও আমি এই নাটকটা দেখেছিলাম। আসলে আমরা অর্থের জন্য অনেক কিছু করে ফেলি। নিজেদের সাময়িক তৃপ্তির জন্য আমরা অনেক বেশি অর্থলোভী হয়ে পড়ি এটা কিন্তু একেবারে সত্যি। আসলে আমাদের সবারই উচিত এই সবকিছুর থেকে দূরে থাকা। নতুন করে আপনি নাটকটার রিভিউ নিয়ে আমাদের মাঝে হাজির হয়েছেন দেখে ভালো লেগেছে।
মাঝেমধ্যে নাটক দেখতে ভালই লাগে। আর মোশারফ করিমের নাটকগুলো হলে তো কথাই নেই। যদিও এই নাটকটি দেখিনি। তবে পুরো নাটকের রিভিউ পড়ে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে।। সময় করে নাটকটি দেখার চেষ্টা করব। এত সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।