শেষটা খারাপ ছিল।
হ্যালো বন্ধুরা,, কেমন আছেন সবাই?? আজকে দুপুরের দিকে আমি একটা পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চেয়েছিলাম কিন্তু হঠাৎ করে একটা কাজ বেড়ে গেল। সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস থেকে গতকালকে ফোন দিয়েছিল। আমার নামে একটা পার্সেল এসেছে। পার্সেলটা আজকে নিয়ে আসার কথা ছিল । প্রায় প্রতিদিনই দুপুরে গোসল খাওয়া-দাওয়া শেষ করে পোস্ট লিখি। আজকেও বসেছিলাম পোস্ট লেখার জন্য। কিন্তু যখন মনে পড়লো আজকে আমার পার্সেলটা রিসিভ করতে হবে তখন একটা ছোট ভাইকে ফোন দিলাম ওর গাড়ি নিয়ে আসতে। দুজন একসাথেই যাব। ওর একটা কাজ ছিল, এজন্য কিছু সময় লেট হবে। ততক্ষণে আমি ভাবলাম রেডি হয়ে একটু বাইরে যাই। সারাদিন কোথাও যেতে পারিনি। সকালে ঘুম থেকে উঠতে উঠতে নয়টা দশটা বেজে যায়। পরে কমিউনিটির কাজগুলো সেরে গোসল খাওয়া-দাওয়া করতে করতে দুইটা বেজে যায়। এজন্য দিনেরবেলার বাইরে কোথাও যাওয়া হয়না।তবে বিকালে একটু সময় সুযোগ পেলে, সুযোগটা আর হাতছাড়া করি না। এজন্য আজকে মনে হচ্ছিল কাজটাও হয়ে যাবে আর একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসা হয়ে যাবে।
Picture was taken by: Xiaomi Redmi note 9 pro max Mobile
যেহেতু ওর আসতে একটু দেরি হবে তাই আমি রেডি হয়ে একটু মাঠের দিকে গেলাম। আমাদের বাড়ির পাশে একটা বড় মাঠ আছে। সে মাঠের মাঝখান দিয়ে আবার একটি সরু রাস্তা। ঐ রাস্তা দিয়ে বিকাল টাইমে হাটাহাটি করতে মন্দ লাগে না। এখনতো ধান কাটার ধুম পড়ে গেছে। মাঠে গেলেই পাকা ধানের গন্ধ নাকে লাগে। অদ্ভুত সুন্দর একটা ভালো লাগা কাজ করে এই গন্ধটা আমার কাছে। হাটাহাটি করতে করতে মাঠের প্রায় মাঝখানে চলে গেলাম। মাঠের মাঝখানে বলতে যেহেতু রাস্তা আছে ঐখানে , ওই রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মাঝামাঝি পজিশন পর্যন্ত গেলাম।দেখলাম কৃষকরা ধান কাটছে। একসাইডে সবেমাত্র ধান কাটা শুরু করেছে, অন্য একটা সাইডে ধান কাটা শেষ। ধানগুলো শুকানোর জন্য মাঠে রেখে দিয়েছে। আবার অন্যদিকে দেখলাম শুকিয়ে যাওয়া ধান মাথায় করে কয়েকজন বাড়ির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ধান কেটে সাধারণত বাড়িতে নিয়ে যাওয়া ঝামেলা বেশি। বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আবার শুকোতে হয়। এখানে জায়গা স্বল্পতার একটি ঝামেলা আছে। এজন্য মাঠে রেখে শুকানো টাই সর্বোত্তম পদ্ধতি।
Picture was taken by: Xiaomi Redmi note 9 pro max Mobile
মাঠে যখন এমন পরিবেশ, তখন আরো একটি সুন্দর দৃশ্য আপনার চোখে পড়বে। সেটা হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে পাখি যেগুলো কেটে রাখা ধানের উপর এসে বসে থাকে, আর ধান খুঁটে খুঁটে খায়। মাঝেমধ্যে যখন উড়ে যায় তখন দলবেঁধে উড়ে যায়। ওই দৃশ্যটা দেখতে খুব দারুণ লাগে। পাখিদের মধ্যে যেন এখন একটা উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। কেউ বাধা দিচ্ছে না। মনের সুখে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই খেয়ে আবার নিজ নিজ বাসায় ফিরে যাচ্ছে। আসলে পশুপাখি বা যেকোনো জীবজন্তুই স্বাধীন অবস্থায় সুন্দর । তাদেরকে যদি সোনার খাঁচায় রেখে দেয়া হয় তবুও তারা অসুখী। আসলে বন্যরা বনেই সুন্দর । এটা তো আমরা সবাই জানি।
Picture was taken by: Xiaomi Redmi note 9 pro max Mobile
যাইহোক, এসব দেখতে দেখতে প্রায় দশ পনের মিনিট কাটিয়ে দিলাম। মনে হচ্ছিল মাঠের মধ্যে আরও কিছু সময় থেকে যাই। কিন্তু যেহেতু শহরের দিকে যেতে হবে তাই চলে আসলাম। মাঠ থেকে আসার পর ঐ ভাইটিকে আবারো ফোন দিলাম। ও বললো ছোট্ট একটি কাজের মধ্যে পড়ে গেছে। এজন্য একটু দেরি হবে। আমি চিন্তা করলাম এরই মাঝে আরেকটি কাজ করে ফেলানো যায়। একটি বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং এর দোকানে গেলাম। ওখানে গিয়ে কিছু টাকা ক্যাশ আউট করলাম। ততক্ষণে আরো প্রায় ২০ মিনিট কেটে গেছে। রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকলাম। কিছু সময় পর হঠাৎ ঐ ছোট ভাইটি আমাকে ফোন দিল। ফোন দিয়ে বলল আমাদের এদিকে আসার সময় হঠাৎ একটা এক্সিডেন্ট করেছে ওরা। ফোন পাওয়ার পর আর এক মুহূর্ত দেরি না করে একটি ইজিবাইকে করে ওরা যেখানে ছিল ওইখানে চলে গেলাম। যাওয়ার পর দেখলাম ওইখানে প্রচুর মানুষ। ওর পায়ের দুইটা আঙ্গুলের নখ উঠে গেছে। বাইক ভেঙে গেছে তিন চার জায়গায়। তখনই আমার এক ভাগ্নে কোথা থেকে যেন ওখানে চলে আসলো। এসে বাইকটা নিয়ে বাজারের গ্যারেজের দিকে চলে গেল। আর আমি ওই ভাইটিকে নিয়ে বাজারের ডক্টরের কাছে গেলাম । ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা গুলো করিয়ে নিলাম। আর যা যা ওষুধ ছিল সেগুলো নিয়ে একটা চাচার দোকানে চলে গেলাম।
মোটামুটি গুরুতর ছিল। আমার ঐ ছোট ভাইটি মানসিক দিক থেকে ভালোই শক্ত। ওরে বাড়ি যেতে বললাম ও বলল বাজারে থাকতে বেশী ভালো লাগছে। কি আর করা যেহেতু বাজারেই থাকবে, ওর সাথে বাজারের এক সাইডে গিয়ে কয়েকজন কিছু সময় আড্ডা দিলাম। এরপর যখন সন্ধ্যা লেগে গেল ওই সময় ওকে নিয়ে বাড়ির দিকে চলে আসলাম। ওকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে আমি সোজা আমার বাড়িতে চলে আসলাম। আজকে পার্সেলটা আর আনা হল না। আগামীকাল আবার যেতে হবে পার্সেলটা আনার জন্য।
Screenshot was taken From: BoishakhiZone FB page
আচ্ছা, এবার পার্সেলের ব্যাপার একটু বলি। আমাদের কমিউনিটির ই একজন পরিশ্রমি মেম্বার @saifulraju. উনি অনলাইনে বিজনেস করেন। কিছুদিন আগেই উনার ফেসবুক পেইজ আমার নজরে আসে। উনার বিজনেস মডেল, উনার কাজের কোয়ালিটি সব কিছুই আমার কাছে খুবই ভাল লেগেছিল। পরবর্তীতে উনার পেইজ থেকে দুটি প্রোডাক্ট পছন্দ করে অর্ডার করেছিলাম। দুই থেকে তিন দিন আগে উনি প্রোডাক্ট গুলো আমার ঠিকানায় পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।আজকে রিসিভ করার কথা ছিল কিন্তু আজকের কাহিনী তো আপনাদের কে বললাম। দেখা যাক কালকে প্রোডাক্টে দুটি নিয়ে আসব। @saifulraju ভাইকে অনেক ধন্যবাদ দ্রুত প্রডাক্ট দুটি পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য। যাই হোক, আজ আর লিখছি না। পরবর্তী কোন পোস্টে আবার সবার সাথে কথা হবে দেখা হবে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। খোদা হাফেজ।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
গ্রামের ধান ক্ষেত এর সৌন্দর্য্যের তুলনা হয় না। বিশেষ করে যখন পেকে যায় সম্পূর্ণ ক্ষেত সোনালী আকার ধারণ করে। কৃষকের ধান কাটা, দীর্ঘদিন ধান শুকানোর জন্য জমিতে রেখে দেওয়া, কেটে রাখা ধানে পাখি উড়ে চলা সবকিছুর সৌন্দর্য আপনি খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তবে শেষ অংশে রাজু ভাইয়ের প্রোডাক্টের পার্সেল নিতে গিয়ে আপনার ছোট ভাইয়ের এক্সিডেন্টের বিষয়টি আমার কাছে খুব খারাপ লাগল। রাস্তাঘাটে আমাদের সবাইকে সাবধানে চলাফেরা করা উচিত। ধন্যবাদ আপনাকে।
ঠিক বলেছেন। মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনার ছোট ভাইটার এক্সিডেন্ট এর কথা শুনেই খারাপ লাগলো। নিয়তি আমাদের কোথায় নিয়ে যায় সেটা বলা দায়। তার সুস্থতা কামনা করছি। তবে আপনি যেই ছবিগুলো প্রথমে দেখালেন সেগুলো খুব ভালো লেগেছে।
সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ছোট ভাইয়ের সুস্থতা কামনা করছি।
ভাইয়া আপনার বিকেলের ঘুরাঘুরি মুহূর্ত গুলো খুব ভালো লেগেছে।
সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে মাঠ ভরা পাকা ধান অন্য পাশে ধান মাঠে রেখেই শুকানো।অনেক ভালো লাগেছে ভাইয়া,তবে সব থেকে খারাপ লেগেছে আপনার ছোট ভাইটির জন্য।আল্লাহ যেনও আপনার ছোট ভাইটিকে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দেয়।
👐আমিন👐
প্রথমে আপনার পোষ্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগছিল, সত্যি কথা বলতে আমি এরকম পাকা ধানের জমি কখনোই দেখিনি। ছবিটা যতই দেখছি ততই যেন দেখতে ভালো লাগছে । প্রকৃতির খুব সুন্দর সুন্দর মুহূর্তগুলোকে আপনি তুলে ধরেছেন। আমাদের কলকাতাতে এত সুন্দর দৃশ্য কখনো দেখার সুযোগই হয়ে ওঠেনি।এই জন্যই গ্রাম্য পরিবেশ খুব ভালো লাগে আমার। কিন্তু শেষের লাইনগুলো পড়ে খুব খারাপ লাগলো আমার আপনার ছোট ভাইটির জন্য। আমি আপনার ভাইয়ের তাড়াতাড়ি সুস্থতা কামনা করি।
আমি গ্রামীণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিয়ে পোস্ট করতে বেশি পছন্দ করি। মাঝেমধ্যে এমন সৌন্দর্য সবার সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করি।
সময় সুযোগ পেলে একদিন গ্রামের দিকে ঘুরতে যাবেন। খাঁটি প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে পারবেন।
সত্যি খুব খারাপ লাগলো ভাইয়া। ইসসস বাইক এক্সিডেন্ট ফাও এই শীতের সময়🥺🥺🥺।
আমি তো ক্যাপশন দেখে ভাবছিলাম আমার পারসেল পছন্দ হয়ে নাই পরে দেখলাম না ঘটনা অন্য রকম। আসলে আমার একটা বিষয় এখানে জড়িয়ে থাকার জন্য খুব খারাপ লাগছে নিজের কাছে।
আপনার পোস্ট করার পরে এক আপু নক দিয়ে পেজের লিং নিয়েছে 🥰।
দোয়া রইল ওই ভাই টার জন্য আল্লাহ সুস্থ করে দিন আমিন।
তাহলে তো আমি প্রমোশন করে দিলাম 😆
হাহাহাহাহাহাহ। তাই তো দেখছি হাহাহাহহা।
ভাই আপনার প্রতিটি ছবি গ্রামের সৌন্দর্য যেন তুলে ধরেছে। পাকা ধানের অমূল্য রতন এর ছবি। এখন কমবেশি আমাদের দেশে নবান্ন উৎসব পালন হচ্ছে ধান কাটা নিয়ে। আর আপনার বিকাল টি অনেক রোমাঞ্চকর ছিল।
তবে আপনার এই ছোট ভাইটির এক্সিডেন্ট টা দুর্ঘটনার ছিল। বাইক চালানোর সময় একটু সাবধানতা নিয়ে চালাতে হয়। যাই হোক আপনার ওই ভাইটি যাতে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয় এই দোয়াই রইল।
খারাপ ভালো নেই আপনার সময়টি কেটেছে আছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
দোয়া করি ওই ভাইটি যেনো খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়। কারণ এই শীত এর সময়ে আসলে যেকোনো কাটাছেঁড়া শুকাতে এমনিতেই অনেক সময় লাগে। তার উপর উনি তো একেবারে একসিডেন্ট করেছেন।ব্যাপারটা সত্যিই খুব দুঃখজনক। আপনিও তাড়াতাড়ি সাহায্য করতে গিয়েছেন যেটা আমার কাছে খুব বেশি ভালো লেগেছে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলেও শীতের সময় কাটা ছেঁড়া খুবই মারাত্মক।
এভাবেই হুট করে না চাইতেও অনাকাঙ্খিত এক্সিডেন্ট হয়ে থাকে যা আমরা ভাবতেও পারিনা অনেক সময় ।আপনার ছোট ভাইটির প্রতি দোয়া থাকলো ভাই ।ধন্যবাদ ভাই আপনার বিষেশ মুহুর্তগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ।
আপনার বিকেল বেলায় সামান্য ঘুরতে আসার মুহূর্ত
টা আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। একদিকে পাকা ধানের সুগন্ধ অন্যদিকে পাখি উড়ে যাওয়া অসাধারণ দৃশ্য যা পড়ে আমার মনটা জুড়িয়ে গেল ।আমাদের এখানেও ধান কাটা হচ্ছে আমি মাঝেমধ্যে সেখানে যাই আমার অনেক ভালো লাগে । আমাদের সামান্য পরিমাণ কিছু ধান রয়েছে যেগুলো আমি এবং আমার আব্বু কিছুদিন আগেই কেটেছি খুব ভালো অনুভূতি ছিল । ভাইয়া অসাধারন মুহুর্ত আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল দোয়া করি আরো এগিয়ে যান।
পাখি উড়ে যাওয়ার দৃশ্য টা আমি খুব তাড়াহুড়ো করে তুলেছিলাম। আমি আরো অনেকগুলো পাখি ফ্রেমের মধ্যে রেখে ছবি তুলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পাখিগুলো আগেই উড়ে গিয়েছিল।