আসক্তি।
image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY
হ্যালো প্রিয় বন্ধুরা? কেমন আছেন সবাই? অনেকদিনের অপেক্ষার পর অবশেষে গত দুইদিন যাবত পরিবেশে শীতলতা লক্ষ করছি। মেঘলা আকাশ, হালকা বাতাস এমন ওয়েদার কার না ভালো লাগে ? যাই হোক আশা করি এমন ওয়েদার সবাই অনেক এনজয় করছেন। আজকে আমি একটা বিষয় নিয়ে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করতে আসলাম সেটি হচ্ছে "আসক্তি"। এটি ছোট্ট একটি ওয়ার্ড, কিন্তু ভয়াবহতা বিশাল।
দিন বদলেছে। আমরা কেমন যেন বন্ধু-বান্ধবের সাথে আড্ডা দেওয়া মাঠে গিয়ে খেলাধুলা করা ওই দিনগুলো থেকে ফিরে এসেছি। গত দুই বছর আগে যখন করোনা মহামারী দেখা দিল ওই সময় আমি এলাকাতেই ছিলাম। বিকাল টাইমে মাঠে গিয়ে দেখতাম হাজার হাজার ঘুড়ি উড়ছে আকাশে । এত পরিমান ঘুরি আমি একসাথে আগে কখনই দেখিনি। ছোটবেলায় বন্ধুদের সাথে বিকেলবেলা ঘুড়ি উড়াতে যেতাম। তখন আমাদের বয়সী প্রায় সবাই ঘুড়ি উড়াত। কিন্তু সেবার করোনা মহামারীর লকডাউনে সবাই বাড়ি থাকায় বড় ছোট সবাইকেই ঘুড়ি উড়তে দেখেছিলাম। এখন দেশের পরিবেশ মোটামুটি ঠিকঠাক। কিন্তু এখন মাঠে গেলে দু'চারটে ঘুড়ি ছাড়া আর তেমন কোন ঘুড়ি দেখতে পাই না। সবার শখ কি এক নিমিষেই ফুরিয়ে গেল ?? না, যাদের এখন ঘুড়ি ওড়ানোর বয়স তাঁরা এখন ফোনে গেম খেলতে ব্যস্ত।
হায়রে সোনালী বয়স। এই সোনালী বয়সটা আমরা মিস করি সবসময়। আফসোস করি, যদি ওই বয়সটা আবার আমরা ফিরে পেতাম!! কিন্তু এরা কোন স্মৃতি নিয়ে রড় হচ্ছে?? ওরা এত সুন্দর একটা সময় পার করছে, ওদের উচিত ছিল এখন খেলাধুলা করে বেড়ানো, দৌড়োদৌড়ি হইহুল্লোড় করে বেড়ানো। কিন্তু না এখন ভার্চুয়াল গেমের কারাগারে বন্দি। ওরা হারাচ্ছে রোদের সোনালী ছেলেবেলা। এর জন্য দায়ী ওই গেম আসক্তি। বিকেল বেলা যখন মাঠে যাই তখন দেখি ছোট ছোট ছেলেপেলে যারা মাত্র সিক্স সেভেনে পড়ে তারা বসে বসে এনিমি মারছে।
ফোনের প্রতি আসক্তি, গেমের প্রতি আসক্তি এই জেনারেশনকে অন্ধ করে ফেলছে। তবে শুধু এই জেনারেশনকে দোষ দিলে হবে না। আমরাও কিন্তু চরম মাত্রার আসক্তির মধ্যে পড়ে আছি। facebook-youtube আমাদের প্রচুর প্রচুর মূল্যবান সময় খেয়ে নিচ্ছে, আমাদের চরম অবহেলাতেই। ফেসবুক এবং ইউটিউব এ সবসময় আপডেট নিউজ পাওয়া যায়। কিছু পজেটিভ সাইড আছে কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ফেসবুকে যখন ভিডিও কনটেন্ট আসতে শুরু করেছে তখন ফেসবুক কেমন যেন একটা সময় খেকো মেশিন হয়ে গেছে। একটু ফ্রি সময় পেলে দু'চারটে ভিডিও দেখার জন্য ঢুকলে ঘন্টার পর ঘন্টা কেটে যায় তারপরেও হুশ ফেরে না। কিন্তু এটা মারাত্মক আসক্তি। এটা থেকে বেরিয়ে না আসতে পারলে খুবই খারাপ হবে। ফেসবুকের শুধুমাত্র একটাই পজিটিভ সাইড আমি খুঁজে পাই সেটা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের নিউজ সবার আগে পাওয়া সম্ভব। কিন্তু দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে ঢুকলেই সারাদিনের নিউজ পেয়ে যাওয়া যায়।
আপনি চাচ্ছেন facebook-youtube আসক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে, কিন্তু পারছেন না?? এর একটা দারুণ সমাধান আছে আমার কাছে। এইতো কিছুদিন আগের কথা, আমি যখন ফোনটা হাতে নিতাম কোন ইম্পর্টেন্ট কাজে সেটা শেষ হওয়ার পর যদি আর কোনো কাজ না থাকতো তাহলে মনের অজান্তে কিভাবে যেন আমার আঙুলটা ফেসবুকের আইকনের উপর চলে যেত। আমি মনের মধ্যে একটুও ভাবি নি যে এখন ফেসবুকে ঢুকবো। কিন্তু মনের অজান্তে ফেসবুক আইকনের উপর ক্লিক করে ফেসবুকে ঢোকা হয়ে যেত। এরপর ফেসবুকে ঢুকেই স্ক্রল করা। স্ক্রল করতে করতে কখন যে দু এক ঘণ্টা পার হয়ে যায় বুঝতেই পারতাম না। একদিন আমার ভীষণ রাগ হয়ে গেল। হঠাৎ করে আমার আঙুলটা আমার অজান্তেই চলে গেল ফেসবুক আইকনের উপর। এই বিষয়টা আমি তখনই খেয়াল করলাম। খেয়াল করেই আমার মেজাজটা একটু গরম হয়ে গেলো। এরপর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম ফেসবুকের উপরে আসক্তির আমাকে যে করেই হোক কমাতে হবে।
আমি সিদ্ধান্ত নিলাম কয়েক সপ্তাহ ফেসবুক থেকে বিরতি নিব। আমি কোন কিছু চিন্তা না করে সরাসরি ফেসবুক আনইন্সটল করে দিলাম। ফেসবুক আনইন্সটল করার পর থেকে দু-একদিন যাবৎ একটা বিষয় আমি লক্ষ করলাম। আগের মতোই আমার আঙুলটা কেমন জানি ফেইসবুক যে পজিশনে ছিল ওইখানে চলে যাচ্ছে । কিন্তু যখন ফেসবুকে ঢুকতে পারছি না তখন এক ধরনের তৃপ্তি পেতাম। এভাবে বেশ কয়েকদিন যাওয়ার পর ফেইসবুক চালানোর প্রতি আমার ইচ্ছাটা নষ্ট হয়ে গেল। ফেসবুক ছিল, যেখানে ঢুকে সময় কাটাতাম, মনের অজান্তে ঢুকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় পার করতাম সেই জায়গাটার প্রতি আমার আর ইচ্ছেই জাগছে না। বিষয়টি এত সুন্দরভাবে কাজ করবে ভাবেনি আমি এখন সবাইকে পরামর্শ দেবো এই কাজটাই করতে যারা ফেসবুক থেকে ফেসবুকের আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে চান তারা এমনটা করতে পারেন।
সমাধান একটা দিয়ে দিলাম। আ্যপ্লাই করে দেখুন । কাজে লাগবে। ঠিকাছে আমি আজ তাহলে বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে আবার নতুন কোন কথা নিয়ে। আজ অনেক ট্রাভেল করতে হবে। ভালো থাকবেন সবাই। আল্লাহ্ হাফেজ।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
ঠান্ডা আবহাওয়া আমরা সকলেই উপভোগ করছি। এছাড়া ঘুড়ি উড়ানোর যে বিষয়টি বলেছেন সেটি সত্যিই আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আমরাও ছোটবেলায় অনেক ঘড়ি উড়িয়েছি। আসক্তির শব্দটি সত্যিই ছোট কিন্তু এর ভয়াবহতা খুবই খারাপ। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 5/6) Get profit votes with @tipU :)
ভাইয়া আপনার পোস্টটি পড়ে আমি অনেকটাই মিল পেলাম। আসলে আমি ফেসবুকে ঢুকতে চাই না কিন্তু অটোমেটিক আমার হাতের আঙ্গুলগুলো ফেসবুকের অ্যাপস এর উপরে চলে যায় এবং তখনই ফেসবুকে প্রবেশ করি, এবং অনেকটা সময় ব্যয় হয়ে যায়। এটা আমি ইচ্ছাকৃতভাবে করিনা তারপরেও কেমনে হয়ে যায় বুঝতেই পারিনা। আজকে আপনার পোষ্টটি পড়ে আমি সাথে সাথেই ফেসবুকে অ্যাপটি আনইন্সটল করে দিলাম এবং আমিও চেষ্টা করব আপনার মত সফল হতে পারে কিনা। যাইহোক আপনার এই পরিকল্পনা আমার খুবি ভালো লেগেছে।
অনেক সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে আজকের আলোচনা করেছেন। আর এই কথাটা একদম যথার্থ বলেছেন।
আমাদের ঘরেও একজন আছে সারাদিন শুধু গেমস নিয়ে বসে থাকে। কোন কিছুতেই যেন কাজ হয় না। এমনকি রাতে সারারাত গেমস খেলে এবং সারাদিন ঘুমায়, আবার ঘুম থেকে উঠে আবারো গেমস খেলে। শুধু এটাই যেন রোজকার রুটিন হয়ে গেছে। কি যে হবে বুঝতে পারছিনা।
আর হল ফেসবুক আপনার ফেসবুক থেকে লিভ নেওয়ার আইডিয়াটা আমার কাছে বেশ লেগেছে। কিন্তু সত্যি বলতে আমি কখনোই ফেসবুকের প্রতি আসক্ত ছিলাম না এমনকি এখনও নেই। কেন জানিনা আমার ফেসবুক একদম ভালো লাগেনা। কিন্তু অনেককে দেখি সারাক্ষণ ফেসবুক নিয়ে বসে থাকতে। আমিতো ভালোই আছি। আর এখন তো সময় কাটানোর জন্য এই প্লাটফর্ম অনেক মূল্যবান। আমিতো এখন সারাদিন এখানেই কাজ করি। এমনকি তার সাথে অনেক আনন্দ লাগে।
আসক্তি সময়ের সাথে এখন একটি ভয়াবহ শব্দে রূপায়িত হয়েছে। যার কারণে অনেক জেনারেশন বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। সময়ের সাথে প্রকৃতির লোকালয় গুলো যেন হারিয়ে যাচ্ছে। যন্ত্রের সাথে মানুষ হয়ে যাচ্ছে যান্ত্রিক। বিস্তীর্ণ খেলার মাঠ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নতুনধারার এমন চিন্তা কৌশল আপনার লেখায় ফুটে ওঠায় খুবই ভালো লেগেছে।
সবার শখ আগের মতোই আছে কিন্তু ফোনে গেম খেলতে ব্যস্ত। তারা এখন আর মাঠে খেলতে যায় না। তারা দিন দিন স্মার্ট ফোনের উপর আসক্ত।
ছোটবেলার কথা মনে পড়লে আমাদের কত ভালো লাগে বিকেল হলেই আমরা খেলতে যেতাম মাঠে। দুপুরবেলা গোসল করতে যেতাম পুকুরে সবাই মিলে পুকুরে কি যাপা যাপি করতাম।
আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন মোবাইল ফোনের ব্যবহার তেমন একটা দেখা যায়নি।যার ফলে ওই বয়সে আমরা ঘুড়ি ওড়ানো, মাঠে খেলাধুলা করা থেকে শুরু করে দৌড়ঝাঁপ বউচি, কানামাছি, আরো নানান ধরনের খেলা খেলেছি। আর এখন কার উঠতি ছেলেমেয়ে গুলো মোবাইল ফোনে গেমস খেলতে ব্যস্ত রয়েছে। যার ফলে তাদের সোনালী শৈশবকে তাঁরা হারিয়ে ফেলছে। সুন্দর বিষয়টি তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
আসলেই সোনালী দিন গুলো হারিয়ে যাচ্ছে। আমার ঘরেই দুই ভাই সারাদিন এই মোবাইল নিয়ে পরে থাকে। বাইরে বাচ্চাকাচ্চা খেলাধুলা করে কিন্তু তারা কখনই তাদের সাথে খেলতে যায় না। সব সময় ফ্রি ফায়ার কিংবা ইউটিউব নিয়ে পরে থাকে। আম্মু অনেকবার মারেনি তাও না, তাও আসলে এসব ছাড়তে পারে না। আমার মনে হচ্ছে ওরা যদি এই পথটা অনুসরণ করে তাহলে ছাড়তে পারবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে তারা কথাই শুনতে চায় না।
আমার মনে হয় মোবাইল ফোন আর কম্পিউটার আসার কারণে এখন আমাদের সবকিছু ভার্চুয়াল হয়ে গেছে। আগে যেখানে সবাই সকালে বা বিকেলে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে একসাথে আড্ডা দিত কিন্তু এখন সেটা ভার্চুয়াল হয়ে গেছে। মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো বা অন্য কোনও সোশাল নেটওয়ার্ক সার্ভিসের মাধ্যমে আড্ডা চলছে। আবার খেলাধুলার কথাই ধরুন, আগে বাচ্চা-কাচ্চারা খেলাধুলার জন্য সবাই মাঠে গিয়ে দলবদ্ধভাবে একসাথে খেলাধুলা করত এখন হয় মোবাইল অথবা ল্যাপটপেই খোলার কাজে ব্যস্ত। আসলে এই আসক্তিতে ভালো কিছু নেই সম্পূর্ণটাই ক্ষতিকর একটা ব্যাপার। ধন্যবাদ এমন একটি বিষয়ে সবাইকে সচেতন করার জন্য
আসলে ভাই ঠিকই বলেছেন আপনি। আমরা সেই ছোট বেলার সোনালী দিনগুলো কথা এখনো মনে হয়। তবে এখনকার যারা জেনারেশন আছে এরাই সোনালী দিনের কথা বোঝেনা। কারণ তারা তো ভাই ওই সময়টাই কাটা হচ্ছে না। তারা এই সময়টা পার করতেছে মোবাইলে গেম খেলে ইউটিউব ভিডিও দেখে। দোষটা আসলে ওদের না ভাই দোষটা আমাদের। কারণ ছোটবেলা থেকেই তাদের হাতে মোবাইল ফোন ধরে দিচ্ছি আমরা। তাদের কাছে হাতের নাগালে ল্যাপটপ মোবাইল। স্বাধীন তারা এগুলো নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। তবে ওদের দোষ দিলে হবে না আমাদের আসক্তি কম না। আর আপনার আইডিয়াটা আমার অনেক ভালো লেগেছে ভাই। আমরা 24 ঘণ্টার মধ্যে 16 ঘণ্টা ফেসবুকে থাকি। যাইহোক আপনার আইডিয়া টা কাজে লাগানোর চেষ্টা করব। ধন্যবাদ ভাই এরকম সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।