কালবৈশাখী শপিং পার্ট টু।
হ্যালো বন্ধুরা।
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন আপনারা সবাই? রমজান মাসের মহিমায় রহমতের আঁধারে আমরা কাটিয়েছি একটি মাস। আজ ২৯ তম রোজা। আগামীকাল ঈদ। প্রথমে জানাচ্ছি সকলকে ঈদের শুভেচ্ছা "ঈদ মোবারক"। ইতিমধ্যেই চাকরিজীবী সবাই শহর ছেড়ে গ্রামে চলে এসেছে প্রিয়জনের সাথে ঈদ করতে। সকলের ঈদ অনেক সুন্দর আনন্দময় কাটুক সে প্রত্যাশা করি।
গত বছরে কালবৈশাখী শপিং নামের একটি পোস্ট করেছিলাম সেটা অনেকেই মনে রেখেছেন সেটা আমার গত কয়েকটি পোস্টের কমেন্ট দেখেই বুঝতে পেরেছি। প্রত্যেক বছর ঈদের আগে একটা শপিং করি। এবার ঈদের কেনাকাটা ঢাকা থেকেই করে ফেলেছিলাম আগেই। আর পরিবারের সকলের কেনাকাটা ইন্ডিয়া থেকেই করে নিয়ে এসেছিলাম। যেহেতু আমরা প্রত্যেক বছর দলবেঁধে শপিং এ যাই, এবার না গেলে কেমন দেখায়। কারণ এটা আমাদের সার্কেলের কাছে একটা উৎসবের মতন। ঈদের আগের একটা বড় আনন্দ বলতে পারেন। গত বছর কালবৈশাখী ঝড়ের মুখে পরেছিলাম , যার কারণে অ্যাডভেঞ্চার পূর্ণ একটি শপিং ছিল। এবার আবহাওয়ার অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন।
পরিকল্পনামাফিক আমরা গত পরশুদিন রাতে গিয়েছিলাম শপিং করতে। আমরা মোট ১২ জন গিয়েছিলাম। সাথে নিয়েছিলাম পাঁচটি বাইক। রাত যখন সাড়ে নয়টা তখন আমরা রওনা দেই। এবার ঝড় বৃষ্টি হবে না এটা বুঝা যাচ্ছিল আগে থেকেই। কিন্তু গতবারের মতো আম খাওয়া কি আর মিস দেওয়া যায়?? এজন্য সাথে করে বড় বড় সাইজের কয়েকটি আম নিয়েছিলাম। গতবার বাইক চালিয়ে যখন যাচ্ছিলাম যে জায়গাটা থেকে ঝড় শুরু হয়েছিল আর যে জায়গায় আমরা থেমে আম কুরিয়েছিলাম ঠিক সেই জায়গাতেই আমরা থেমে গেলাম এবারও। এরপর সাথে করে নিয়ে যাওয়া আম লবণ দিয়ে খেয়ে নিলাম সবাই। এ বছরে কাঁচা আম তেমন খাওয়া হয়নি রোজার জন্য। এটা ছিল এ বছরের দ্বিতীয় বার আম খাওয়া।
আম খাওয়া শেষ করে আর একটু আড্ডা দিয়ে এরপর আবার আমরা রওনা দিলাম শহরের উদ্দেশ্যে। রাত সাড়ে দশটার দিকে আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম। এবার গিয়ে তো আমি পুরাই অবাক। গত বছর রাত ৯ টা দশটার দিকে মার্কেটে তেমন একটা মানুষ ছিল না। অবশ্য এটার কারণ ছিল ঝড় বৃষ্টি। আর এবার এত পরিমাণ মানুষ মনেই হচ্ছে না রাত দশটা এগারোটা বাজে। আমরা স্থির করলাম আমরা শুরুতেই কিছু কেনাকাটা করবো না। আমাদের কুষ্টিয়াতে অনেকগুলো নতুন নতুন ব্র্যান্ড এর দোকান হয়েছে, তাই আমরা ভাবলাম প্রত্যেকটা দোকানেই একবার করে ভিজিট করব দেখি কেমন কি কালেকশন রেখেছে।
বেশ কয়েকটি শোরুমে গেলাম দেখলাম আর ঘুরে চলে এলাম। যা গরম পড়েছে এসির বাতাস ও খাওয়া হলো সাথে। শোরুমগুলো ঘোরাঘুরি শেষ করে চলে গিয়েছিলাম হরিপুর ব্রিজে। একসময় যখন কুষ্টিয়া তে থাকতাম তখন এই ব্রিজে মাঝেমধ্যে আসতাম। অনেকদিন পর আসলাম, ভেবেছিলাম বাতাস থাকবে কিন্তু একটুও বাতাস ছিল না। ব্রিজের কিছু সময় থাকার পর রাত বারোটার পরে আমরা আবারো মার্কেটে ঢুকেছিলাম। তখন অনেকটাই ফাঁকা লাগছিল আগের তুলনায়। এবার আমরা কেনাকাটা শুরু করলাম। যদিও আমার তেমন কোন কিছু কেনার ছিল না। সবাই একসাথে থাকলে তো কেনা হবে না, এজন্য যার যার মত আলাদা হয়ে কেনাকাটা শেষ করতে বললাম।
কেনাকাটা করি আর না করি মজাটা ১০০ তে ১০০। আমাদের কুষ্টিয়ায় খুবই পপুলার একটি স্ট্রিট ফুড আছে সেটা হচ্ছে টিকিয়া। শপিং এর ফাঁকে আমরা সবাই টিকিয়া খেয়েছিলাম অনেকগুলো। মাত্র ২ টাকা পিস কিন্তু স্বাদে অমাইক।
যাইহোক ঘুরতেছিলাম, আড্ডা দিচ্ছিলাম আর এর মাঝে আমি অল্প কিছু জিনিস কিনেছিলাম। সেটা হচ্ছে আমার ছোট ভাগ্নের জন্য একটা জনসন বেবি পাউডার, আমার দাদীর জন্য একটি তেল, আমার চাচাতো ছোট বোনের জন্য একটি জামা, আমার ওয়াইফের জন্য বাড়িতে পড়ার মত একটি থ্রি পিস আর দুটি মেহেদী। এই ছিল আমার কেনাকাটা।
আমি নিজের জন্য একটা টি-শার্ট কিনতে চেয়েছিলাম কিন্তু পরে আর কেনা হয়নি। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল আর আমার পছন্দ হচ্ছিল না। আসলে প্রথমদিকে আমার মনেই ছিল না যার কারণে পরে আর কেনা হলো না।
রাত তখন দুটো বাজে। সবাই এক জায়গায় হলাম কেনাকাটা শেষে। এবার বাড়ি ফেরার পালা। আমাদের চিন্তা ছিল যে বাড়িতে এমন টাইমে যাব যখন বাড়ির সবাই সেহেরী খেতে উঠবে। এইজন্য আসতে ধীরে আমরা বাইক চালিয়ে আসতে শুরু করলাম। মনে আছে গতবার ফেরার সময় মাঝপথে এসে আমরা চা খেয়েছিলাম?? যদিও গতবার অনেক ঠান্ডা পরিবেশ ছিল কিন্তু এবার পরিবেশ গরম হলেও চা খাওয়া মিস দিইনি। কুমারখালী এসে সবাই চা খেলাম এক কাপ করে।
রাত তখন আড়াইটার বেশি বাজে। তেল পাম্প থেকে তেল নিয়ে চা খেয়ে, অনেকক্ষণ আড্ডা দিয়ে তারপর আবার রওনা দিলাম। এতক্ষণে আমার ঘুম পাচ্ছিল হালকা। কিন্তু ঘুমকে পাত্তা দেয় কে, আবার একসাথে চলতে শুরু করলাম। চলতে চলতে নদীর পাড়ে চলে আসলাম যেখান থেকে ঘটেছিল আমাদের সেই ভৌতিক কান্ড। এবারের পরিবেশটা নিস্তব্ধ ছিল। নিস্তব্ধতার মধ্য দিয়েই আমরা আমাদের বাড়ির পাশের মোড়ে চলে আসলাম। বিদায় জানালাম বাকি সবাইকে। এরপর চলে এলাম বাড়িতে। এটাই ছিল আমার কালবৈশাখী শপিং এর দ্বিতীয় পর্ব। যদিও কালবৈশাখী ঝড় হয়নি কিন্তু সিকোয়েন্স অনুযায়ী টাইটেল এটাই দিয়ে দিলাম আর কি। হাহাহা।। আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, ইনশা আল্লাহ্ সামনের বছর কালবৈশাখী শপিং থ্রি শেয়ার করব। আজ তাহলে এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ্ হাফেজ।
VOTE @bangla.witness as witness
লোকেশন:- কুষ্টিয়া মার্কেট
ছবিগুলো তোলা হয়েছে:- Xiaomi Redmi Note 9 Pro Max
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
ভাইয়া আপনাদের আম খাওয়ার ঘটনাটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। এ বছর কালবৈশাখীর ঝড়ের সম্মুখীন না হলেও সেই স্থানে টাটকা কাঁচা আম খাওয়ার আনন্দটা উপভোগ করতে পেরেছেন এটাই অনেক কিছু। যাহোক, টি শার্ট পছন্দ করে একটা কিনে ফেলায় আপনার উচিত ছিল। কিন্তু পছন্দ না হলে কি আর করার। যাহোক দারুণ একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ভাইয়া আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার কালবৈশী শপিং এর পার্ট ২ পড়ে ভালোই লাগলো। যদিও বা আগের বছর আমি ছিলাম না তাই পার্ট ওয়ান পড়া হয়নি। সত্যি বন্ধুদের সাথে এভাবে শপিং করতে যাওয়ার মজাটাই আলাদা। আপনাদের আম খাওয়ার মুহূর্তটা পরে বেশ ভালো লাগলো গতবার যেখান থেকে আম কুড়িয়ে খেয়েছিলেন এবারও সেখানে গিয়ে আম খেলেন জানতে পেরে ভালো লাগলো। আর শপিং শেষে বাড়ি ফেরার পথে আবার দেখি চা ও খেয়েছিলেন। সবমিলিয়ে পোস্ট পড়ে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এই সুন্দর পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আরে হ্যাঁ আপনাকেও ঈদের শুভেচ্ছা ঈদ মোবারক তাকাব্বাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম ভালো কাটুক আপনার সময় গুলো।
ওরে বাপরে! রাত বারোটায় বেশ মোটামুটি ভালোই লোকজন ছিল দেখছি কেনাকাটা করার জন্য। আপনারা তো অনেকগুলো ব্র্যান্ডের শপিং মলে ঘুরেছেন দেখছি। দু টাকা পিস টিকিয়া ,বাহ! দারুন ব্যাপার তো। একসাথে ১২ জন !! রাত আড়াই টার সময় আবার চা খেয়ে ,আড্ডা দিয়ে ,তারপরে বাড়ি ফিরলেন ।প্রায় সারা রাতই তো কেটে গেল দেখছি শপিং করতে গিয়ে। কিন্তু এর পরের পর্বটা মনে হচ্ছে ভৌতিক হবে।
ভৌতিক কান্ড ঘটেছিল গত বছরের পর্বে। এই পর্ব টা দেখে আসতে পারেন দিদি।
https://steemit.com/hive-129948/@rex-sumon/22jeqs
ঠিক আছে ভাই দেখবো 🥳।
একদম ঝড় না হলে কি,আম খাওয়া মিস দেওয়া যাবেনা।এবার সব মার্কেট ঢাকা ও ইন্ডিয়া থেকে করে আসলেও প্রতিবারের মতো বন্ধুরা সবাই আবারও কুষ্টিয়া মার্কেটে গিয়েছিলেন।সবাই মিলে আড্ডা দেওয়ার মজাই আলাদা।আর সেখানকার বিখ্যাত খাবার টিকিয়া খেয়েছিলেন সবাই মিলে।অবশেষে পরিবারের কয়েকজনের জন্য কিছু কেনাকাটা করলেন।রাত আড়াইটা বেজে গিয়েছিল আপনাদের বাড়ি ফিরতে।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর ব্লগটি শেয়ার করার জন্য।আর হ্যা ব্লগটির টাইটেল কিন্তু ভালো দিয়েছেন।
আমি কালবৈশাখী শপিং পার্ট ওয়ান পড়তে পাড়ি নাই। তবে পার্ট টু পড়ে আমার কাছে অনেক ভাল লেগেছে। যেমন ভাবে আবেগ দিয়ে শপিং করেছেন,আম খেয়েছে,চা খেয়েছেন,টিকিয়া খেয়েছেন ঠিক তেমন ভাবে পোষ্টি লিখেছেন। পড়ে অনেক ভাল লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া।