সালামির গল্প।
অল অ্যাবাউট সালামি
- The 06th May , 2022
- Friday
আসসালামু আলাইকুম কেমন আছেন প্রিয় বন্ধুগণ। চলে এলাম সবার সালামির খোঁজখবর নিতে। ঈদ চলে গেছে ২ দিন আগে। সবার ঘোরাঘুরি এখনো চলছেই। আবার অনেকেই ছুটি শেষ করে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন। ইতিমধ্যেই আবার অনেকেই সালামি পেয়ে পকেট ভরেও ফেলেছে। যা হোক, চলুন এসব নিয়েই আজকে কথা বলি। আজকের পোষ্টে ২ টি অংশ থাকবে। প্রথম অংশে আমি কিছু গল্প-গুজব করব। আর দ্বিতীয় অংশে আপনাদের কাছে কিছু প্রশ্ন করব সালামি সম্পর্কে। প্রশ্নগুলোর উত্তর কিন্তু অবশ্যই অবশ্যই দিবেন।
image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY
সালামি এমন একটা প্রথা, যেটা বহু আগে থেকেই প্রচলিত। এটার সঠিক সময়কাল টা এ পর্যন্ত কেউই ব্যাখ্যা করতে পারেনি। মুসলিমদের দুইটি বৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় এই সালামি দেওয়া-নেওয়ার প্রচলনটা দেখা যায়। সাধারনত পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যরা ছোটদেরকে সালামি বা উপহার দিয়ে থাকে। আবার আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে ছোট কুটুমরা এই সালামির ভাগীদার হয়ে থাকে। এটা সত্যিই মজাদার একটা প্রথা। ছোটদের ঈদের আনন্দ অনেক গুণে বাড়িয়ে দেয় এই সালামি বা কোন উপহার। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন একে অপরকে উপহার দিতে। এতে পারস্পারিক বন্ধনটা আরো দৃঢ় হয়।
আমি যখন অনেক ছোট ছিলাম ওই সময় ঈদের দিনে পরিবারের সব বড়দের কাছ থেকে অল্প কিছু হলেও সালামি পেতাম। ঈদের আনন্দের অর্ধেকটাই যেন ছিল আমার সালামি পাওয়ার মধ্যে। আমার এখনও মনে আছে ঐ সময় আমার বাবা আমাকে ঈদ সালামি হিসাবে ৫০ টাকা দিত। ওই সময় অবশ্য ৫০ টাকা দিয়ে অনেক কিছু কেনা যেত। সালামি পেয়ে যখন আমরা ঈদগাহ ময়দানে যেতাম, নামাজ শেষে ঈদগাহ ময়দান থেকে অনেক অনেক খেলনা কিনে আনতাম। ঈদগাহ ময়দান থেকে ফিরে এসে যখন আমরা সমবয়সী ছোট ছোট ছেলে মেয়ে একসাথে ঘুরে বেড়াতাম তখন আমাদের মধ্যে সালামি নিয়ে আলাপ হত। কার কত সালামি উঠল সে নিয়ে আমরা আলাপ করতাম। সালামি তে পাওয়া টাকা গুলোর কিছু অংশ রেখে দিতাম পরবর্তীতে যখন স্কুলে খুলত তখন আবার স্কুলে গিয়ে সেগুলো খরচ করতাম। প্রায় একমাস রাজার হালে পার হত সালামির টাকা দিয়ে।
দুঃখের বিষয় হচ্ছে যত বড় হয়েছি ততো অল্পসংখ্যক আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে সালামি পেয়েছি। এখন তো আমি প্রায় কারো কাছ থেকেই সালামি পাইনা বলতে গেলে। আমার একটা বড় বোন আছে। ও আমার প্রত্যেক ঈদেই সালামি দেয়। এটা আমি খুবই আনন্দের সাথে গ্রহণ করি। আমার খুবই ভালো লাগে আপুর কাছ থেকে সালামি নিতে। সারা জীবনই ওর কাছ থেকে সালামি নেব এটাই আমার ইচ্ছা। সালামি নেয়ার যে একটা সৌন্দর্য, সেটা ভোগ করার লোভ এখনো জিয়িয়ে রেখেছি। তবে বর্তমান জেনারেশনে অনেক বাজে অভ্যাস লক্ষ করা যায়। পূর্বে আমাদেরকে যতটুকুই সালামি দেওয়া হতো আমরা ততটুকু পেয়েই অনেক খুশি থাকতাম। কিন্তু এখন দেখা যায়: যে সালামি নিবেন, সে নিজেই পরিমাণ টা নির্ধারণ করে দেয়। একরকম জোর করে সালামি নেয়ার মধ্যে কী কোন আনন্দ আছে? আমার মাথায় ঢোকে না। এতে করে যে সালামি দেয় সে নিজেই সালামি দিয়ে তৃপ্তি পাবে না। সালামি দেওয়া এবং নেয়ার মধ্যে যেই আনন্দটা আমরা পেয়েছি সেটা সত্যিই বাঁধিয়ে রাখার মতন ছিল। যার যেমন সামর্থ্য তার কাছ থেকে অতিরিক্ত কিছু আশা করাটাও এক প্রকার জুলুম।
image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY
এখন সময় এসেছে সালামি দেওয়ার। আমাকেই এখন সালামি দিতে হয়। সালামি নেওয়ার সেই বয়সটা এখন আর নেই। যদিও আমার বড় বোনের থেকে আমি সারা জীবন সালামি নিয়ে যাবো, এটাই আমার আশা। যারা এখন সালামি পাচ্ছেন, তারা গ্রহণের এই আনন্দটা ভালোভাবে উপভোগ করুন। এটার মধ্যে সত্যিই অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করে এটা যেন ছোটদের একটা অধিকার। এবার আমাদের কমিউনিটি থেকে আমাদের দাদা কর্তৃক আমরা সকলেই সেলামি পেয়েছি। এটা সত্যিই আমাদের সকলের জন্য অনেক আনন্দের ছিল৷ বাংলা ব্লগ কমিউনিটি এমন একটা কমিউনিটি, যেটা থেকে ঈদের সালামি পর্যন্ত পাওয়া যায়। এর থেকে ফ্রেন্ডলি কমিউনিটি আর দ্বিতীয় টি খুঁজে পাওয়া যাবে না।
এবার আসি আপনাদের প্রসঙ্গে। আমি কমেন্ট বক্সে একটুখানি দেখতে চাই আপনারা কত টাকা সালামি পেলেন এবার। আর কত টাকা সালামি দিতে হলো অন্যদেরকে। আশা করি আপনারা কমেন্ট বক্সে বিষয়গুলো শেয়ার করবেন। আপনাদের মন্তব্যের আশায় থাকলাম। আজ আমি বিদায় নিচ্ছি দেখা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে। সে পর্যন্তই সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
বিষয়টা একদম যথার্থ বলেছেন। আগের দিকে যখন সালাম দেওয়া নেওয়া হতো তখন অনেক বেশি আনন্দ লাগত। কিন্তু এখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যায় জোর করে সালাম এই আদায় করা হয়। এমনকি নির্দিষ্ট একটা এমাউন্ট নির্ধারণ করে দেয় যাতে এটাই দিতে হবে। এতে তো কোনো আনন্দ নেই উল্টো আরো মনে কষ্ট। আর একটা কথা ঠিকই বলেছেন আগেকার সময় আমরা ঈদের সালামি দিয়ে প্রায় অনেকগুলো দিন খুব আরাম আয়েশের কাটিয়ে দিতাম। বিষয়টি এই ভাবে বোঝানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
খুব ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার লিখাটি পড়ে। আসলেই ছোট বেলার ঈদ আর এখনকার ঈদের মধ্যে অনেক তফাৎ। এখন আর কেউ সালামি দেয় না।
অনেক বছর পর এইবার ঈদে সালামি পেয়েছি 6000 টাকার মত। আর আমি অসুস্থ থাকার কারণে কাউকে সালামি দিতে হয় নি। আর দিলেও আমার হাসবেন্ড দেয়। তা দিয়েই আমি চালিয়ে দেই।😝😝
আমার মনে হয় কারো উপর জোর করে সালামি আদায় করা খুবই খারাপ একটি কাজ। কারণ প্রিয় মানুষগুলো মন থেকে ভালোবেসে যতটুকুই সালামি দেন ততটুকুতেই সন্তুষ্ট হওয়া উচিত। আসলে সবাই চেষ্টা করে প্রিয় মানুষ গুলোকে নিজের সর্বোচ্চ দেওয়ার জন্য। এটা যদি কখনো নির্ধারণ করে দেয়া হয় তাহলে এর মাঝে কোনো ভালোবাসা থাকে না। সালামি যদি এক টাকাও হয় তারপরও যদি ভালোবাসা মিশে থাকে তাতেই সন্তুষ্টি আসে। তবে যাই হোক এবার ঈদে মোটামুটি ভালোই সালামি পেয়েছি। আবার অনেক সালামি দিতেও হয়েছে। ৩,১০০ টাকা সালামি পেয়েছি আর ৩,৭৫০ টাকা সালামি দিতে হয়েছে। তবে ছোট ভাইবোনদেরকে সালামি দিতে পেরে আমার অনেক ভালো লেগেছে। আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে আমার বাবা-মাকে সালামি দিতে পেরে। কারন তাদের কাছ থেকে সবসময় সালামি পেয়েছি। এবার ঈদে আমিও তাদেরকে নিজের সাধ্যমত সালামি দেওয়ার চেষ্টা করেছি। অনেক সুন্দর একটি বিষয়ের উপর পোস্ট করার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি ধন্যবাদ। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো। 💗💗
আমি প্রথমদিকে ভাবছিলাম একেবারে সালামি পাবনা। তবে শেষের দেখিন
কিছু সালামি পেয়েছি। সালামির পরিমাণটা হল 2000 টাকা। তবে স্পেশিয়ালি দাদার সালামি কথা কখনোই ভুলবো না। পরস্পরকে উপহার দেয়ার মাধ্যমে আমাদের মধ্যে সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়। ধন্যবাদ আপনাকে।
সালামি আমি পেলাম ৫০০ এর মতো,আর কতো দিয়েছি মনে নেই কারণ অনেককেই দিতে হয়েছে।
আসলেই আজকালকার সালামি চাওয়া দেখলে কেমন বিব্রত হয়ে যেতে হয় মানুষের।
আমারও আপনার মতো অবস্থা। এখন বড় হয়েছি তাই সালামি নেওয়ার বদলে দেওয়া লাগছে এটাও বেশ আনন্দের। তবে আমিও সালামি পেয়েছি পাইনি তা না। এবং সবচেয়ে ভালো লেগেছে দাদার থেকে সালামি পেয়ে সত্যি এটি অনেক আনন্দের। দারুণ একটি বিষয়ে আলোচনা করেছেন ভাই।।
হাজার খানেক সালামি পেয়েছিলাম তবে ছোটদের দিয়ে আবার সেগুলো প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। যেটা অবশিষ্ট আছে সেটা বলা যায় না একটু সিক্রেট 🤦
আর সবচেয়ে মজার বিষয় ছিল দাদা আমাদের সবাইকে সালামি দিয়েছে। সত্যি ভাইয়া এমন ফ্রেন্ডলি কমিউনিটি আর অন্য একটাও নেই।
আমি পেয়েছি ১৭০০ টাকা।দিয়েছি কত সেটা মনে নেই ।ছোট ছোট বাচ্চার অভাব ছিলনা। যাই হোক আসলে সালামি দেওয়া-নেওয়ার মাঝে অন্য রকম একটা অনুভূতি কাজ করে। আমার তো ভালোই লাগে এভাবে সালামি পেতে দিতে। কিন্তু জোর করে দেওয়ার মানে আমার মাঝে কোন আনন্দ নেই। এতে করে লোক আরো খারাপ জানে। যাইহোক আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
আসলে ভাই আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আমাকে ডেকে নিয়ে আমার বড় চাচা এবং আমার বড় ভাই সালামি দিত। এখন বড় হয়েছি আর তাদের কাছ থেকে সালামি পাই না। তবে তাদের কাছ থেকে এখন চেয়ে নিয়েছিলাম, কিন্তু চেয়ে নেওয়ার মধ্যে কোন আনন্দ নেই। তারপরেও আমি যা পেয়ে ছিলাম তার তিনগুণ বেশি আমাকে দিতে হয়েছে। কারণ আমার ছোট ভাই, বোনরা এখন আমাকে বলে তুমি অনেক বড় হয়ে গেছিস, এখন তুমি আমাদের সালামি দিবা। যাই হোক তাদের সালামি দিতে পেরে আমার খুবই ভালো লেগেছে আসলে এটা অনেক আনন্দের বিষয়।
সালামি ব্যাপারটা আমার কাছেও বেশ মজার লাগে। স্কুল কলেজে পড়ার সময় কত সালামি সালামি করতাম স্যার দের কাছে। খুব মজা হতো। তবে কখনো কারো কাছে পাই নি অবশ্য। এবার প্রথম আমাদের শ্রদ্ধেয় দাদার কাছ থেকে ঈদ সালামি পেলাম। ব্যাপারটা ভাবতেই বেশ লাগছিল সত্যি।