আপুর জন্য আমার প্রথম উপহার।
হ্যালো বন্ধুরা। কি অবস্থা সবার। সবাই ভালো আছেন আশা করি। আজকে বাইরের আবহাওয়া টা একেবারেই নরম আর মেঘলা। বাইরের পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছে আজ আকাশের মনটা খুবই খারাপ । এজন্য আকাশটা কালো মেঘে ছেয়ে আছে । তো এমন একটা পরিবেশে আমার ইচ্ছে হলো , একটি গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করি। তাহলে চলুন শুরু করি।
উপহার পেতে আমরা কে না পছন্দ করি? কেউ যদি আমাদের উপহার দেয় হোক সেটা দামি অথবা কম দামি আমরা খুবই খুশি হয়ে যাই। আমিও উপহার পেতে ভীষণ পছন্দ করি। আমার একটি বড় বোন আছে। ছোটবেলা থেকেই আমার সেই আপুর কাছ থেকে অনেক উপহার পেয়েছি। কিন্তু আপুকে কোনদিন কোন উপহার দেয়া হয়নি। কিছুদিন আগে শুনলাম আমার আপু যে ফোনটা ইউজ করে সেই ফোন প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে ।নতুন একটা ফোন কিনতে হবে। এটা শোনার পর তখন আমি ডিসিশন নিয়েছিলাম যে আপুর জন্য একটা নতুন ফোন কিনবো আর সেটা আপুকে গিফট করবো।
এমনটা শুধুমাত্র আমার মনেই ছিলো। কিন্তু কবে ফোনটা কিনব এরকম কোনো ডিসিশন নিয়েছিলাম না। কিছুদিন আগে বিকেলবেলায় ঘুরতে ঘুরতে বাজারের দিকে আসলাম। বাজারে এসে দেখলাম অনেকেই একসাথে আছে। আড্ডা দিচ্ছে সবাই। আমরা প্রায় প্রত্যেক দিনেই বাজারে আড্ডা দিই। সেদিন বাজারে এসে সবাইকে আমার বিষয়টা বললাম। তখন একজন বলল ১৫ হাজার টাকার মধ্যে একটা ফোন আছে যেটা ও নিজেও কিনেছে। সবাই বলল এখনই যেতে। সবাই একসাথে আছি ঘুরতে ঘুরতে যেয়ে ফোনটা কিনে নিয়ে আসা যাবে। আমি ও সাথে সাথে রাজি হয়ে গেলাম। কিন্তু আমার কাছে ১৫ হাজার টাকা ঐ মুহুর্তে ছিল না। আমার কাছে ছিল মাত্র ৮ হাজার টাকা। এই মুহূর্তে আমার এক মামার কাছে ফোন দিলাম টাকার জন্য। ও বলল ওর কাছে হ্যান্ড ক্যাশ নেই। ওর কার্ডে টাকা আছে। আমি ওর কার্ড নিয়ে আসলাম তখনই। এরপর সবাই রউনা দিলাম।
তখন বাজে সন্ধ্যা ৭ টা। আমরা গেছিলাম ৬ জন। বাইক ছিল তিনটা। গ্রামের আঁকাবাঁকা রাস্তা দিয়ে রাত্রে বেলায় বাইক চালাতে ভালোই লাগে। আমাদের বাজার থেকে ১২ কিলোমিটার দক্ষিনে অবস্থিত একটি মার্কেটে গিয়েছিলাম ফোন কিনতে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌঁছে গিয়েছিলাম। এরপর ফোনের দোকান টিতে প্রবেশ করে প্রথমেই দোকানির কাছে vivo y21 মডেলের ফোনটি চাইলাম। আমাদের কাঙ্ক্ষিত সেই ফোনটি দোকানদার বের করে দিলো। আমরা ফোনটি ভালো ভাবে দেখে নিলাম । ডিজাইন টা বেশ ভালই লাগছিল আমার কাছে। আমার ফোনটির চেহারা দেখেই ফোন পছন্দ হয়ে গিয়েছিল।
![]() | ![]() |
---|
ফোন পছন্দ হওয়ার পর দোকানিকে প্যাকেট করে দিতে বললাম। ফোনটির মূল্য ছিল ১৪,৯৯০ টাকা। কিন্তু দোকানিকে আমরা ১৪,৫০০ টাকা পে করেছিলাম। এরপর ফোনটা আরো ভালোভাবে দেখে নিলাম। ফোনের কনফিগারশন গুলো ভালো ভাবে চেক করে নিলাম। এরপর টাকা পরিশোধ করলাম। জীবনের প্রথম আপুকে একটা ফোন গিফট করবো , এট ভাবতেও ভাল লাগছিল। আর তখন মনে মনে ভাবছিলাম আপু এটি পেয়ে নিশ্চয়ই অনেক খুশি হবে।
যাইহোক, ফোন ক্রয় করা শেষ হলে দোকান থেকে বেরিয়ে এলাম। এরপর প্ল্যান করলাম সবাই একসাথে কিছু খাওয়া-দাওয়া করবো। যেহেতু আমি ফোন কিনলাম তো সবাইকে ট্রিট দিতে হবে। তো আমরা ওইখানে মন মতন কিছু পেলাম না। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম আরও পাঁচ থেকে সাত কিলোমিটার পশ্চিমে বড় একটি বাজার আছে ওইখানে গিয়ে আমরা সবাই কেক আর নুডুলস খাব। সেখান থেকে প্রায়ই নুডুলস আর কেক খাওয়া হয়। এরপর আমরা পেট্রোল পাম্পে গেলাম তেল ভরতে। গাড়িতে তেল শেষ হয়ে গিয়েছিল। তেল ভরে আমরা হাইওয়ে দিয়ে আমাদের নতুন সেই গন্তব্যের দিকে চলেতে শুরু করলাম। পৌছানোর পরে সেখানে গিয়ে লুডুস আর কেক খেলাম। রাত অনেক হয়ে গিয়েছে। এরপর আমরা আবার রওনা দিলাম বাড়ির দিকে। বেশ ভালই লাগছিল নতুন ফোন কিনলাম বলে। সব মিলিয়ে বেশ দারুন ছিল অনুভূতি টা।
যাইহোক, এটাই ছিল আমার ফোন কেনার সেদিনের গল্প। আমি ইতিমধ্যেই আপুকে ফোনটি গিফট করে এসেছি। আপু খুবই খুশি হয়েছে আমার কাছ থেকে একটা গিফট পেয়ে। এইতো, আমি গতকালই ফোনটি দিয়ে আসলাম। যাইহোক এখন এই পর্যন্তই আবার আগামী কোন পোস্টে দেখা হবে সবার সাথে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন । আল্লাহ্ হাফেজ।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
পরিবারের জন্য কিছু করতে পারার আনন্দটাই আলাদা, আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আপনার গল্পটি পুরো পড়ে যেতে বুঝতে পারলাম ভাই বোনের সম্পর্ক যে কতটা মধুর হয় সেটা আপনিই গিফট এর মাধ্যমে বুঝিয়ে দিলেন। অবশ্যই আপনার আপু গিফটা পেয়ে নিশ্চয় অনেক খুশি হয়েছেন এবং মনে মনে ভেবেছে আমার ভাই তো এখন বড় হয়ে গেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি আনন্দঘন মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন ভাই। আমার আপু অনেক খুশি হয়েছে গিফটা পেয়ে।
আসলে দাদা নিজের মানুষদের জন্য কিছু করতে পারলে খুব ভালো লাগে। ফোনটা খুবই সুন্দর দাদা। আর উপহার তো উপহারই হয়। সেটা কম কম ও বেশি দামের হোক। উপহার মুল্য দিয়ে বিচার হয় না। আর ছোটো ভাইদের কাছ থেকে উপহার পেলে সব দিদিরা ভীষণ খুশি হয়। আপনার পোস্ট টি পড়ে আমার খুব ভালো লাগছে।দাদা আপনি খুব সুন্দর একটি কাজ করেছেন। আপনার বোন যখন ফোনটি ব্যাবহার করবে তখন আপনার কথা তার মনে পড়বে।আমার তো কোনো বড় বোন ও দাদা নেই তো। বড় দিদি ও দাদা থাকলে অনেক মজা হয়।আপনার বোনের ও আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো দাদা।
আমার আপু যখন ফোনটা হাতে পেল তখন খুবই খুশি হয়েছিলো। বলছিল আমার ভাইটা আজ অনেক বড় হয়ে গেছে। আমিও এই উপহারটি দিতে পেরে ভীষণ খুশি ছিলাম।
আমার এই আপু আমার জীবনে অনেক হেল্প করেছে। একজন বড় আপু থাকা সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। আমাদের রিলেশন বিয়েতে পূর্ণতা পেয়েছে আমার এই আপুর জন্যই। 💖💖
পৃথিবীর সব দিদি ই অনেক সুন্দর।
পরিশেষে আমি আমাদের প্রিয় দাদা কে ধন্যবাদ দিতে চাই। কারণটা আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন বৌদি ।
নিজের প্রিয় মানুষদের জন্য কিছু করতে পারলে সত্যি খুব ভালো লাগে। মোবাইলটি খুব সুন্দর হয়েছে , দিনশেষে পরিবারের জন্য কিছু করতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে হয়।
জি ভাই ঠিক বলেছেন। উপহারটি দিতে পারে আমি অনেক খুশি।
ভাইয়া খুবই ভালো লাগলো আপনার গল্পটি। প্রিয়জনকে গিফট দেয়ার মধ্যে আসলেই অনেক আনন্দ আছে। আমার মনে হয় গিফট পেতে যেমন আনন্দ আপনজনকে গিফট দেওয়াও ততটাই আনন্দ। আর এখন ফোন কিনলে বন্ধুদের ট্রিট দেয়া একটা ট্রেন্ড এর পর্যায়ে চলে গেছে। কেউই এ ব্যাপারে ছাড় দিতে রাজি নয়।
হাহাহা,, একদম ঠিক বলেছেন ভাই। কিন্তু বিষয়টি ভালো ও লাগে।
আসলে নিজের পরিবারের জন্য কিছু করতে পারা এইটা অনেক আনন্দের। আপনি আপনার বোনের জন্য ফোন কিনেছেন। খুব ভাল লাগলো। খুব সুন্দর করে বর্ণনা করেছেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
গিফট পেতে সবারই অনেক ভালো লাগে। আপনি আপনার বড় আপুর জন্য একটি মোবাইল ফোন কিনেছেন এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো। হয়তো তিনি এই গিফটটি পাওয়ার পর অনেক বেশি খুশি হবেন। আসলে গিফট যেরকমই হোক না কেন আনন্দটা একই থাকে। মাঝে মাঝে কাছের মানুষগুলোর মুখে হাসি ফোটাতে গিফট করা খুবই আনন্দের ব্যাপার। ছোট ছোট গিফট হলেও আমরা অনেক আনন্দ পাই। আশা করছি নতুন এই ফোনটি পেয়ে আপনার আপু অনেক খুশি হবে। আপনাদের ভাই বোনের ভালোবাসা এরকম অটুট থাক সারা জীবন এই কামনাই করছি ভাইয়া। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
একদম ঠিক বলেছেন ভাই। গিফট ছোট হোক আর বড় হোক, গিফট পেলেই অনেক খুশি লাগে।
বোনের প্রতি ভাইয়ের ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ হলাম। সারাজীবন যেন বোনের পাশাপাশি পরিবারের৷ সবার সাথে এই মধুর সম্পর্কটা থাকে সেটায় দোয়া করি ভাইয়া। বোনকে নিজে ফোন কিনে দেওয়ার আনন্দটায় অনেক মজা। তাছাড়া ভাই-বোনের ভালোবাসা হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভালোবাসা। আপনার এবং আপনার পরিবারের দোয়া দোয়া রইলো ভাইয়া,, ❤️❤️
সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।
সত্যি ভাই মেঘের মনটা খারাপ এবং আজকে যেন আরও বেশি খারাপ। কখন যেন মেঘ কান্না করে দেবে।
এবং গিফট পেলে নিজের খুশিটা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ফোনটা ভালো হয়েছে। ফোনের কয়েকটি রিভিউ দেখেছি এবং সেগুলো পজেটিভ ছিল। আপনার আপু দেখলে খুশি হয়ে যাবে।
আমি এই। ফোনটা সম্পর্কে তেমন কিছুই জানতাম না একজন বলল আর তখনই গিয়ে কিনে নিয়ে চলে আসলাম।
আসলেই প্রিয় মানুষদের গিফট দেওয়াটা অনেক মজার আর ভালো লাগার।কি যে ভালো লাগা কাজ করে তা লিখে বুঝানো সম্ভব না।
জি আপু, একদম ঠিক বলেছেন। এ ফিলিংস টা আসলেই অমায়িক।
পরিবার বা প্রিয় মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে আসলে অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে। বড়রা আমাদের অনেক দেয়। আমরা তাদের সামান্য কিছু দিলেই তারা এতে খুশি হয় যে দিতে পেরেই মন ভালো হয়ে যায়। ফোনটা আসলেই সুন্দর দেখতে। রিজনেবল প্রাইজ এ সুন্দর একদম। আপনার আপু অনেক খুশি হয়েছে নিশ্চয়ই।
জি আপু,, ওই দামের মধ্যে ফোনটা দেখতে আসলেই অনেক সুন্দর ছিল। আর আপু অনেক খুশি হয়েছে ফোনটা হাতে পাওয়ার পর।