বৃষ্টিময় জার্নি।steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো বন্ধুরা। কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি বাহিরে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। পরিবেশটা অনেক ঠান্ডা ছিল। ঘুমটাও বেশ হয়েছে রাতে। সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে কাজে বসেছিলাম। কাজ করতে আজ একটু বেশিই মজা লাগছিল। সকালে ঠান্ডা পরিবেশ, বাহিরে বৃষ্টির আওয়াজ সাথে কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করা। সত্যিই দারুণ একটা অনুভূতি। কাজ শেষ করে আমি সবেমাত্র বিছানায় গিয়ে শুয়েছি, এমন সময় আমার এলাকা থেকে আমার ফ্রেন্ড ফোন দিল। ফোন দিয়ে এমন একটা নিউজ দিল আমিতো হতবাক।

ও বলতেছে ওর হঠাৎ আজ বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। আমাকে আজ ওই মুহূর্তে ঢাকা ত্যাগ করে বাড়ি আসতে হবে। আমার আগামী কাল ক্লাস আছে তবুও আমি আসার ডিসিশন নিলাম। কারণ এ ছাড়া তো আর করার কিছু নেই। বন্ধুর বিয়ে না গেলে তো সমস্যা । আসলে ওর বিয়েটা আপাতত পড়িয়ে রাখবে আর পরে চলন করে বাড়িতে নিয়ে আসবে। আর এই বিয়ের দিন বন্ধু হিসেবে তো আমাকে অবশ্যই থাকতে হবে। এজন্য সোজা বাড়িতে চলে আসলাম। আর এই বাড়িতে আসতে আজ যে পরিমাণ প্যারা সহ্য করেছি আমার লাইফে কোনদিন ঢাকা থেকে বাড়ি আসতে এত ঝামেলা পোহাতে হয়নি।

প্রথমে আমি বারোটার দিকে রওনা দিয়েছিলাম তখন বৃষ্টি ছিল। বৃষ্টি মাথায় দিয়েই কোন মত গাবতলী বাস স্ট্যান্ডে এসে পৌঁছাই। এরপর সেলফি পরিবহনে উঠে ধীরেসুস্থে পাটুরিয়া ফেরিঘাটে পৌছালাম। পাটুরিয়া ফেরীঘাটে এসে অনেক সময় নষ্ট হয়েছে।

1663092433336-01.jpeg

1663092449437-01.jpeg

কিছুদিন আগেও বাস ট্রাকের জ্যাম বেঁধে থাকতো। আর এখন ফেরি দাঁড়িয়ে থাকে কখন গাড়ি আসবে তারপর সে গাড়িকে ওপারে নিয়ে যাবে। আমি ২ টা ৩৩ মিনিটে ফেরিঘাটে আসি এবং তখন ফেরি একদম ফাঁকা ছিল। এরপর এক ঘন্টা লেগে গিয়েছিল গাড়ি সম্পূর্ণ লোড হতে । ফেরী ছেড়েছিলো ৩:২৮ এ, আর নদী পার হতে সময় লেগেছিল আরও আধা ঘন্টা। এরপর নদী পার হয়ে বাস স্ট্যান্ডে গেলাম। বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে পদ্মা গড়াই নামের বাসে উঠতে গিয়ে দেখি আজ ওদের সার্ভিস বন্ধ। এই রুটে ওদের সার্ভিসটাই সবচেয়ে ভালো, বাকিগুলো খুবই বাজে। কিন্তু আজকে যেহেতু পদ্মা গড়াই বন্ধ ছিল, একটা লক্কর-ঝক্কর বাসে উঠে আসতে হচ্ছিল।

1663092482238-01.jpeg

বাসটি ছিল খুবই ছোট, বসে একেবারে মজা পাচ্ছিলাম না। ঘন্টা দেড়েক চলার পর এদিকে এসে দেখি আবার আরেক বিপত্তি। সামনে বিশাল বড় একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে রাস্তা একদম ব্লক। এপারের গাড়ি এবং ওপারের গাড়ি সব দাঁড়িয়ে রয়েছে। রাস্তায় জ্যাম লেগে গেছে। এই রাস্তা ক্লিয়ার হতে মিনিমাম ২ থেকে ৩ ঘন্টা সময় লাগবে। আমি আর ১ মিনিট ও বাসে থাকলাম না। কারন আমার বাড়িতে গিয়ে বন্ধুর বিয়েতে যেতে হবে। আমার তারা আছে। আমি এরপর এক ছোট ভাইকে ফোন দিলাম। ফোন দেয়ার পর ও দ্রুত বাইক নিয়ে আমাকে নিতে চলে আসলো। আমি যতদূর পারলাম হেটে আগাতে থাকলাম।

কিছুদূর গিয়ে একটা অটো পেলাম। অটোতে ৫-৬ কিলোমিটার পর্যন্ত গেলাম। এরপর দেখা হল রাহুলের সাথে। বাইক নিয়ে এসেছিল। উঠে পড়লাম বাইকে, এরপর সোজা চলে গেলাম এলাকায়। বাড়িতে এসে কোন মতন ফ্রেশ হয়ে বিয়েতে চলে গিয়েছিলাম। সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল। সুন্দরভাবে বিয়ে সম্পুর্ন হলো৷ খাওয়া-দাওয়া করে আমি আবার রাত ৯ টা ৪৫ মিনিটে দ্রুত বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে আসলাম। কারন দশটায় মিটিং ছিলো। মিটিং শেষ করে এখন আমি আবার বন্ধুর বাসায় যাব। আমরা সবাই আজ একসাথে থাকবো, একসাথে আড্ডা দিব, মজা করব। আজ আমি এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ্ হাফেজ।



JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abbVD.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

বন্ধুর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এভাবেই সারা জীবন অটুট থাকুক আপনাদের বন্ধুত্ব। কষ্ট হলেও বন্ধুর বিয়ে যেতে তো হবেই। এরই নাম বন্ধুত্ব। যাই হোক বিয়েতে অত্যন্ত আনন্দ এবং মজা হয়েছে। বন্ধুর বিয়েতে আসার সময় ফটোগ্রাফি গুলো সুন্দর করেছেন। আপনাদের অগাধ বন্ধুত্বের জন্য শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

ভাইয়া বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কষ্ট করে হলেও বাড়িতে তো চলে গেছেন। আমি কাল বাড়ি যাবো আমি আজকেই চিন্তা করতেছি,কি হবে যদি এমন বৃষ্টি থাকে। আপনার ছোট ভাইয়ের বাইক আছে এসে নিয়ে গেছে,আমার তো তাও নেই। দেখা যাক কি হয়,ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

আসলেই ভাইয়া আজ সকাল থেকে বৃষ্টির কারণে পরিবেশটা খুব ঠান্ডা ছিল অনেক ভালো লাগছিল ।আপনি কত সুন্দর মুডে কম্পিউটারে বসে কাজ করছিলেন বিছানায় শুতে যাবেন এই মুহূর্তে ফোনটা দিয়ে আপনার সুন্দর মুডটাই নষ্ট করে দিল তারপরও ভালো হয়েছে বন্ধুর বিয়েতে যাওয়ার একটা সুযোগ পেলেন বন্ধুর বিয়ে বলে কথা। অনেক কষ্ট করে আপনি বন্ধুর বিয়েতে গিয়েছেন। কিন্তু ভাইয়া আমি বুঝতে পারলাম না আপনি পদ্মা ব্রিজ রেখে কেন ফেরিতে করে নদী পার হতে গেলেন আর এত কষ্টই বা কেন করলেন আমার খুব জানার ইচ্ছা। শেষ পর্যন্ত আপনার বন্ধু রাহুল বাইক নিয়ে এসেছিল বলে আপনার রক্ষা তানাহলে অটোতে করেই বাড়িতে মনে হয় যেতে হতো। আজ রাতটা মজা করে বন্ধুদের সাথে কাটান তাহলে সারাদিনের কষ্টটা কিছুটা হলেও কমবে।

 2 years ago 

ক'দিন ধরে দেশের সবখানেই বৃষ্টি হচ্ছে, আবহাওয়া টা খুব সুন্দর কিন্তু এই সময়ে মানুষ বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। হঠাৎ করেই বন্ধুর ফোন পেয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া বিষয় টা অনেক ভালো লাগার মতো ছিল।গাবতলী থেকে সেলফি পরিবহনে করে ফেরিঘাটে আসা তারপর দীর্ঘ সময় অপেক্ষা তারপর পছন্দসই বাস না পেয়ে লক্কর ঝক্কর বাসে উঠে যাত্রা শুরু তারপর আবার রোড এক্সিডেন্ট সেখানে ২-৩ ঘন্টা সময় নষ্ট তার উপর বন্ধুর বিয়ের সময় ঘনিয়ে আসছে সবমিলিয়ে ভাইয়া আপনি খুব প্যারাময় একটি জার্নির মধ্যে দিয়ে দিনটি পার করেছেন। এটা ভেবে ভালো লাগছে সময়ের মধ্যে বন্ধুর বিয়েতে উপস্থিত হতে পেরেছেন এবং সবকিছু ঠিকঠাক মতো হয়েছে। হয়তোবা আপনার ছোট ভাই রাহুল ছিল বলেই সময় মতো পৌঁছাতে পেরেছেন। ভাইয়া আপনার বন্ধুর নব জীবনের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল,ওনাদের দাম্পত্য জীবন যেনো সুখের হয় এই প্রার্থনা করি। আর ভাইয়া আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

মনে হয় আড্ডায় আছেন ভাইয়া!😍আপনি যে বাসে ওঠেছিলেন বাসের নাম খুব সুন্দর ছিল লক্কর-ঝক্কর বাস!🤣 জীবনে এই প্রথম বাসের নাম জানলাম। তবে আজ আপনার যাত্রা মোটে ও ভাল ছিল না। অনেক বেদনা দায়ক যাত্রা। যাক সব কিছুই ঠিকঠাক হয়ছে জেনে খুশি হয়েছি।আপনার বন্ধুর জন্য শুভ কামনা রইলো।

 2 years ago 

যেদিন তাড়া থাকবে সেদিনই দেখবেন যত বিপত্তি সামনে আসবে।আশা করি বন্ধুর বিয়েতে অনেক মজা করেছেন এবং আমরা সেই মুহূর্ত গুলোও দেখতে পাব।

 2 years ago 

বৃষ্টি হলে পরিবেশ একদম নিশ্চুপ নিস্তব্ধ হয়ে যায়। এই পরিবেশ আমার কাছেও খুব পছন্দ। আপনাদের বন্ধুত্বের প্রশংসা করতে হয়। তা না হলে বন্ধুর হঠাত বিয়ের খবর পেয়ে আপনি ক্লাশ মিস দিয়ে ঐদিনই বাড়ি চলে গেলেন। আপনার বাড়ি যাওয়ার ভ্রমন টা একটু ঝামেলার মধ্য দিয়েই হল। প্রথমে গাবতলি যাওয়া, সেখান থেকে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত আবার বাসে যাওয়া, ১ ঘন্টা ধরে ফেরি লোড হওয়া, ঘাট আধা ঘন্টায় পার হয়ে আবার ভাল গাড়ি না পাওয়া, লোকাল বাসে উঠে আবার জ্যামে পড়া, তারপর অটো করে সামনে গিয়ে আবার বাইকে করে বাড়ি যাওয়া সত্যিই অনেক ঝামেলার ছিল। তবে আমার কাছে এডভেঞ্চারাস মনে হচ্ছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

বাড়ির উদ্দেশ্যে বৃষ্টির মধ্যে দিয়েই জার্নি করলে। আসলে বৃষ্টির মধ্যে দিয়ে জার্নি করার মজাটা আছে কিন্তু বৃষ্টি যদি ঘন্টার পর ঘন্টা হয় সেটার মজা থাকে না সেটা বিরক্তির কারণ হয়। যাই হোক আপনি কষ্ট করে বাড়ি এসেছেন এবং আপনার ছোট ভাই বাইকে করে আপনাকে এগিয়ে নিয়ে গেলো।তবে বৃষ্টির দিনের ভ্রমণকাহিনীর শুনে ভালো লেগেছে।

 2 years ago 

বৃষ্টির দিনে ঘরে বসে কাজ করার অনুভূতি আসলেই চমৎকার। কিন্তু বিষয় যখন বন্ধুর বিয়ে তাহলে সেই চমৎকার কাজ ফেলেও সকল বাধা অতিক্রম করে বন্ধুর পাশে যাওয়াই সর্বোত্তম। আসলে বৃষ্টির ভেতরে জার্নি করাটা কষ্টকর। শেষ পর্যন্ত আপনি সফলভাবে সকল বাধা অতিক্রম করে বন্ধুর বিয়েতে উপস্থিত থাকতে পেরেছেন জেনে খুবই ভালো লাগলো।

 2 years ago 

বন্ধুর বিয়েতে যাওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ঝামেলায় পড়তে হয়েছে ভাইয়া। একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে ফেরিঘাটে অপেক্ষা। সবকিছু মিলে বেশ ঝামেলায় পড়তে হয়েছে। এখন যেহেতু পদ্মা সেতু হয়েছে তাই ফেরিঘাটে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে। ফেরিঘাট পার হওয়ার পর আবার আরেক বিপত্তিতে পড়ে গেলেন। আপনার বন্ধু আপনাকে নিতে এসেছিল বলেই ঠিক সময়ে বিয়ে বাড়িতে পৌঁছাতে পেরেছেন ভাইয়া। বিয়ে বাড়িতে অনেক আনন্দ করুন এই কামনা করি।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59484.75
ETH 2614.53
USDT 1.00
SBD 2.41