অপচয় কে না বলুন!!!!
আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আমি আশা করি সবাই ভালো আছেন। শীতের আগমন টা সবার অনেক ভালো কাটছে।শীতের আগমনের সাথে সাথে পিঠা-পুলির উৎসব তো এখন ঘরে ঘরে প্রায়। বাঙালি মানেই তো উৎসব। কিন্তু শুধু উৎসবে মেতে থাকলে হবেনা। আমি আজকে আপনাদের সাথে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে এসেছি। বিষয়টা আমাকে মাঝেমধ্যেই ভাবায়। আমাদের মধ্যে খুব কম মানুষই আছে যারা অপচয় করে না। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ কোনরকম অপরাধবোধ ছাড়াই এ ধরনের কাজ প্রতিনিয়তই করে যাচ্ছে।
অপচয় এর খারাপ দিকগুলোর ব্যাপারে আজ আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব। আমার এই আলোচনার ফলে যদি আমার একজন পাঠক সঠিকভাবে বিষয়টি বুঝতে পারে আর সে ভাবে মেনে চলেতে পারে তাহলে আমি সার্থক। দেখুন আমরা যখন খুব সহজেই খাবার টেবিলে ভাত পেয়ে যাই তখন কোন কিছু না ভেবে খাবার শেষে অনেকটা খাবার নষ্ট করে ফেলি। এমনটা প্রায়শই দেখা যায়। বিশেষ করে যাদের কোনো অভাব অনটন নেই তাদের ক্ষেত্রে এই বিষয়টা বেশি পরিলক্ষিত। যার অর্থ সম্পদ বেশি সে খুব সহজেই যেকোনো ধরনের খাবার কিনে খাবার টেবিল পর্যন্ত নিয়ে আসতে পারে। তার কোন বেগ পোহাতে হয় না। এখন পর্যন্ত তো সব ঠিকই আছে। কিন্তু সমস্যা তো অন্য জায়গায়। দেখা যায় অনেক অনেক খাবার, খাবার টেবিলে সাজিয়ে রাখে কিন্তু সব তো আর খেতে পারে না। পরে সেগুলো নষ্ট করে ফেলে। অথচ কিছু কিছু ডাস্টবিনের সামনে দেখা যায় কিছু অসহায় ক্ষুধার্ত মানুষ ভদ্রলোকদের ফেলে দেয়া খাবার খুঁজে খুঁজে খাচ্ছে । এটা কেমন দৃশ্য একবার বিবেচনা করে দেখেছেন? আমাদের খাবার গুলো আমরা অপচয় না করে কি তাদের মুখে তুলে দিতে পারি না?
ধীরে ধীরে অপচয় টা যেন অনেকটা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। খাবার অল্প একটু খাবে আর বেশি টুকু নষ্ট করবে। ইদানিং তো আবার কিছু ইউটিউবার দেখা যাচ্ছে, যারা বিভিন্ন স্টাইলে খাবার নষ্ট করে সেগুলো আবার ভিডিও করে আপলোড দিচ্ছে। যারা ভিডিও গুলো দেখেন নাই তারা হয়তো ভাবতে পারেন তারা খাবার নষ্ট করে আবার ইউটিউবে কেন আপলোড দিবে ? জানিনা ভাই,, আমি নিজেও এর উত্তর জানিনা। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হলো সেই ভিডিও গুলোতে মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ। আসলে তাদের টেকনিক হল, মানুষ ফানি টাইপের ভিডিওগুলো একটু বেশি পছন্দ করে। কিন্তু সেটার বিষয়বস্তু আর গভীরতাটা মানুষ একটু কমই খেয়াল করে। আর সেই ফানি ভিডিও বানাতে গিয়ে যা তা করে বেড়াচ্ছে। খাবার তো অনেকেই নষ্ট করে। কিন্তু আমি এসব কনটেন্ট ক্রিকেটারদের কথা বলছি কারণ তারা অনেক ফেমাস। তাদের অনেকেই ফলো করে। এসব বড় বড় ইউটিউবাররা ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে কাজ করে। তারা যেটা দেখাবে সেটা অনেকটা ফ্যাশনের মতো হয়ে যাবে তার ফলোয়ারদের কাছে । আমার কথা গুলো হয়তো অনেকেরই বিশ্বাস হবেনা। ইউটিউবে এমন অসংখ্য ভিডিও আছে। গত কিছুদিন আগে আমার ফেসবুক ওয়ালে আমি এমন একটা ভিডিও শেয়ার করেছিলাম।
আবার আমাদের দেশে কিছু পাতি নাপিত আছে, যাঁরা বার্থডে সেলিব্রেট করতে গিয়ে ডিম ছুড়ে মারে, কেক নষ্ট করে, আটা-ময়দা নষ্ট করে। আর অন্যদিকে কত পরিবার ভাত খেতে পারছেন না ঠিকমতো। জন্মদিন পালন করতে হয় এসব গরিব-দুঃখীদের একদিন খাবার কিনে দে। তোদের অধিকার নেই এরকম খাবার-দাবার নষ্ট করা। গতদিন ফেইসবুকে একটা ভিডিও দেখেছিলাম। একটা বৃদ্ধা ক্যামেরার সামনে বলতেছে, সে গত কিছুদিন যাবত কোন খাবার কিনে খেতে পারে নাই। গাছের পাতা সেদ্ধ করে খেয়েছে। আর এদিকে কিছু হারামজাদারা জন্মদিনের নামে খাদ্যদ্রব্য নষ্ট করছে। এগুলোকে পথে-ঘাটে দেখলে রুটিন করে থাপড়ানো উচিত। আমার যারা পাঠক আছেন তাদেরকে আমি রিকোয়েস্ট করব আপনার পরিচিত কেউ যদি এমন ভাবে জন্মদিন উদযাপন করে, তাহলে তাকে প্লিজ বুঝান ।
আমাদের প্রায় প্রত্যেকের মধ্যে আরও একটি অপচয় এর আধিক্য পরিলক্ষিত। অনেকেই আছে যারা এমনি খাদ্যদ্রব্য তেমন একটা অপচয় করো না। কিন্তু পানির পর্যাপ্ততা দেখে কোন হিসাব নিকাশ না করে অনবরত পানি অপচয় করে যায়। দক্ষিণ আফ্রিকার অবস্থা কিন্তু খুবই খারাপ। পৃথিবীর প্রায় ৮০ কোটি মানুষ সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত। আজ হয়তো আমাদের এখানে পর্যাপ্ত সুপেয় পানি আছে। কিন্তু কখনো যদি এর ঘাটতি দেখা দেয় তখন কি করবো আমরা ? এজন্য সময় থাকতে আমাদের পানির মর্ম বুঝতে হবে। শুধু শুধু ট্যাপ ছেড়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে না থেকে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই ব্যবহার করা উচিত। পানি খাওয়ার সময় যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই নেওয়া উচিত। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন পরিস্থিতিতে নিজেকেই সাবধান হতে হবে। নিজেকেই পরিবর্তন হতে হবে। পানি অপচয় এর বিষয়টা আমি অনেক ছোটবেলা থেকেই খুব খারাপ নজরে দেখি। আমার সামনে কেউ পানি অপচয় করলে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করি তাকে বাধা দেওয়ার। বিষয়টা আমাকে খুবই রাগান্বিত করে। আসুন আমরা সবাই চেষ্টা করি সব ধরনের অপচয় রোধ করতে।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
বাহ ভাইয়া অনেক সুন্দর করে কথা গুলু গুছিয়ে বলেছেন , অপচয়কারী শয়তানের ভাই, এটা আমরা জানি , তবু এমন কিছু মানুষ আছে যারা অকারণে খাবার অপচয় করে , কেন করে , এইতো আপনি বললেন এখন খাবার অপচয় করা একটা ফ্যাশন হয়ে গেছে , দুঃখ লাগে খুব যখন রাস্তার পাশে গরিব মানুষদের ফেলে দেয়া খাবার তুলে খেতে দেখি, আসলে মানুষের মনে যদি বিন্দু পরিমান মনুষত্ব থাকতো তবে তারা কখনোই এভাবে খাবার অপচয় করতে পারতোনা। ভাইয়া অনেক সুন্দর একটা টপিক নিয়ে কথা বললেন , ভালো লাগলো। আর আপনার মতো মানুষ রা ভালো থাকুক সবসময়।
ঠিক বলেছেন ভাই একদম ।আজ মানুষের বিবেক একদম উজার হয়েগেছে ।তাই তো অসহায় মানুষের আর্তনাদ চোখের সামনে দেখেও না দেখার ভান করে থাকে ।সব কিছু নষ্ট করে ফেলবে তবুও তাদের হাত অসহায়দে দেওয়ার জন্য বাড়বে না ।আর পানির কথা কি বলবো ।যখন বেশি পায় তখন অপচয় বেশি হয় ।তাই সবার উচিৎ অপচয়কে না বলা ।ভাই সুন্দর বিষয় তুলেধরেছেন আপনার জন্য শুভকামনা ।
অপচয় বন্ধ করি, অন্যকে ডোনেট করি।
বর্তমানে অপচয়ের লেবেল টা অনেক উপরে চলে গেছে।আর মানুষ তো এখানে ওখানে খেতে গেলেই অপচয় করবে। অপচয় টা যেনো এখন ফ্যাশন হয়ে গেছে।যারা অপচয় করে তাদের শুভ বুদ্ধি উদয় হোক।
আমি সব সময় আপনার প্রতিটা নির্দেশ মেনে চলার চেষ্টা করি আপনার নির্দেশ গুলো আমাকে দারুন ভাবে অনুপ্রাণিত করে।তাইতো নিজে অপচয় নআ করে বাকি টাকা দিয়ে অন্যর সাহাযে এগিয়ে যাউ সবই আপনার নির্দেশনা ভাইয়া।দোয়া রইলো আপনার জন্য।আমার জন্যও দোয়া করবেন আপনার নির্দেশ যেনো মেন্ব অন্যর পাশে দারাতে পারি।
অপচয় খুবই খারাপ একটি গুন।
আর আমরা যারা ইসলাম ধর্মাবলম্বী আছি সেক্ষেত্রে তো বলা হয়েছে - "অপচয়কারী সয়তানের বন্ধু"।
কিন্তু বর্তমান সময় এ অনেকে জেনে বা না জেনেই অপচয় করে ফেলছে অপরদিকে কতজন আছে যারা এখনও এক বেলাও একটু পেট ভরে খেতে পারছে না।
আপ্পনার প্রত্যেকটি কথার সাথে আমি সহমত জ্ঞাপন করছি ভাইয়া
বাহ! ভাই চমৎকার একটি বিষয়ে লিখেছেন। আমি আপনার মন্তব্যের সাথে সহমত পোষণ করছি।
স্বাভাবিকভাবে আমরা বিদেশে বেশিরভাগ অপচয় করে বলে জানতাম, তবে আমাদের দেশেও আজকাল অপচয় এর উৎস এর অভাব নাই। অথচ এখনও কত গরীব অসহায় লোকেরা একমুঠ খাবারের জন্য কাতরে বেড়ায়
খুব খারাপ লাগে এই সব দেখে 😔😔😔
আসলেই ভাইয়া।বার্থডের এটা আমার মাথায় আসেনা। বার্থডেতে সুন্দরভাবে সেলিব্রেট করবে। কিন্তু এভাবে ডিম মেরে, ময়দা মেরে এসবের মানে টা কি এবং মজাটা কি তা আমি কোনভাবেই খুঁজে পাইনা!! মজা কি করে হয় সেটাই তো আমি বুঝতে পারি না!! যেখানে এতগুলো কাপড়-চোপড়, চুল, শরীরটাই নষ্ট হয় এসবের কারণে। আসলে এরা যখন কোনদিন খাবারের অভাবে অথবা পানির অভাবে পড়বে সেইদিন ওই এসবের যে কত জ্বালা তা বুঝতে পারবে। এর আগে কখনোই হয়তো এরা বুঝবে না।
আমরা আসলে দিনদিন বিবেকহীন ও মনুষ্যত্বহীন হয়ে যাচ্ছি।খাবার গুলো নষ্ট না করে, ওগুলো রেখে দিয়ে কোন গরীব লোককে ডেকে দিলে, তারও উপকার হতো এবং পরিবেশ দুষণমুক্ত হতো।
আর ইউটিউবারদের কথা বলছেন-এরা তো ভিউ পাওয়ার জন্য অনেক কিছুই করতে পারে।
যদি ইউটিউব কমিউনিটি গাইড লাইনে প্রাণী হত্যার ভিডিও বৈধ থাকতো, তাহলে ইউটিউবাররা মানুষ খুন করার ভিডিও দিতে দিধাবোধ করতো না।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ বাস্তব ধর্মী একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
বাংলায় একটা কথা প্রচলিত আছে অপচয়কারী শয়তানের ভাই। বাংলাদেশে পানির অপচয় নিয়ে সবসময়ই আমি চিন্তান্বিত। এদেশের পানি অপচয়কারী প্রতিটি মানুষকেই কিছুদিনের জন্য মরুভূমিতে রেখে আসা উচিত। তাহলে তারা পানির মূল্য বুঝতে পারত। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি বিষয় আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
দাদা সমাজের কুৎসিত কিছু বাস্তবতা আজ আপনার লেখায় ফুটে উঠেছে। আমাদের বিবেক পকেটে নিয়ে ঘুরছি ব্যাপারটা অনেক টা এমন। পান থেকে চুন না খোসতেই একদল অতি মডার্ন প্রাণী ট্রিট ট্রিট করে বিভিন্ন রেস্তোরায় খাবার নষ্টের মহড়ায় নিজেদের লাগিয়ে দেয়। অথচ খিদের জ্বালায় কত মানুষ ডাস্টবিনের খাবার কুড়িয়ে খাচ্ছে। কি আর বলবো দাদা। মানুষের মনুষ্যত্ব একটু হলেও জেগে উঠুক এই প্রার্থনা করি।
ভাইয়া আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক বেশি ভালো লাগলো। আপনার প্রতিটি লেখায় বাস্তবের চিত্র তুলে ধরেছেন। সত্যি কথা বলতে আমাদের সমাজে খাবার নষ্ট করা এখন ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকে মনে করে সবটুকু খাবার খেলে হয়তো মানুষ তাকে আনস্মার্ট ভাববে। সেজন্য প্রতিনিয়তই নিজেকে স্মার্ট প্রমাণ করার জন্য খাবার নষ্ট করে যাচ্ছে। আমাদের দেশে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা দুবেলা-দুমুঠো খেতে পায়না। আমরা যদি তাদের দিকে লক্ষ্য করি তাহলেই বুঝতে পারবো আমরা কতটা বড় অপরাধ করে চলেছি। বিশেষ করে পথে ঘাটে পড়ে থাকা খাবার গুলো দেখলে খুবই খারাপ লাগে। আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা পথে-ঘাটে খাবার পড়ে থাকতে দেখলে কুড়িয়ে খায়। একমুঠো ভাতের জন্য তারা সর্বত্র হাহাকার করে বেড়ায়।আমাদের কাছে যে খাবারের মূল্য খুবই কম আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা একমুঠো খাবারের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে প্রতিনিয়ত। তারা না খেয়ে দিন পার করছে। তাই আমাদেরকে অপচয় এড়িয়ে চলা উচিত। ধন্যবাদ ভাইয়া।
অপচয়কারীকে শয়তানের ভাই বলা হয়। যে ব্যক্তি অপচয় করে সে কখনোই জীবনে উন্নতি লাভ করতে পারে না। জীবনে উন্নতি লাভ করতে হলে অপচয় রোধ করতে হবে। অপচয় একটি খারাপ দিক যা জীবনের প্রতিটা মানুষের উন্নতির ধারাকে নষ্ট করে দেয়। তাই আমরা অপচয় করব না এবং অপচয় কাউকে করতে দেবোনা এই অঙ্গীকার নিয়ে সমাজে কাজ করতে হবে।