হিরোস অফ ৭১
বর্তমান জেনারেশনের কাছে গেম খুবই জনপ্রিয়। সেটা যেকোন রকমের গেম হতে পারে। আমি প্রথম অ্যান্ড্রয়েড একটি মোবাইল হাতে পাই ক্লাস নাইনে থাকতে। ওই তখন থেকেই গেম খেলতে আমার খুবই ভাল লাগত। আমি প্লে স্টোর থেকে গেম ডাউনলোড দিয়ে অথবা কোন বন্ধুর কাছ থেকে তার ফেভারিট গেম টি সংগ্রহ করতাম। অবসর সময় গুলোতে গেমে মেতে থাকতাম পুরোপুরি।
অনেক আগে থেকে আমি একটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গেম এর খোঁজ করতাম। কিন্তু ওই সময়ে এরকম কোন গেম ছিল না বাংলাদেশের। তারও অনেক পরে আমি একটি গেম এর সন্ধান পেয়েছিলাম যেটা বাংলাদেশি গেম ডেভেলপাররা মিলেই তৈরি করেছিল। আর সেটি হচ্ছে বাংলাদেশের একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধর ভিত্তিতে নির্মিত একটি গেম। গেমটির নাম হিরোস অফ ৭১। মুক্তিযুদ্ধের গল্প তো আমরা অনেক শুনেছি। অনেক সময় মনের মধ্যে একটা জিদ কাজ করতো যদি আমিও ওইসব শত্রুদের মারতে পারতাম তাহলে কতই না তৃপ্তি পেতাম। কিন্তু এটা তো সম্ভব না। তবে গেমের মধ্যে শত্রুদের মারতে বেশ ভালই লাগে। আর সেই শত্রু যদি হয় আমাদের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হানাদার বাহিনী তাহলে তো কোন কথাই নেই।
যাইহোক গেমটির সন্ধান পাওয়ার পর এই গেমটি দ্রুত ডাউনলোড দিয়ে নিয়েছিলাম। বাংলাদেশের একাত্তরের পটভূমিতে নির্মিত এই গেমটির গ্রাফিক্স মোটামুটি ভালই ছিল। গেমটি ডাউনলোড দিয়ে ফোনে বেশ কিছুদিন খেলেছিলাম। ভালই লাগতো শত্রুদের মারতে। কিছুদিন খেলার পরে আবার গেমটি আনস্টল করে দিয়েছিলাম। আজ অনেকদিন পর হঠাৎ এই গেমটি আবার আমার চোখের সামনে আসলো। গেমটি দেখেই প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড দিয়ে নিলাম। ডাউনলোড দিয়ে গেমের মধ্যে প্রবেশ করলাম আর কিছু সময় গেমটি খেললাম। গেমটির ইস্টোরি টা খুব সুন্দর ভাবে সাজানো হয়েছে। চলুন স্টোরিটা আপনাদের সাথে একটু শেয়ার করি।
কবির, বদি, সজল, তাপস আর শামসু নামের পাঁচজনের মুক্তিযোদ্ধা টিম খবর পায় শিবচরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হানাদার বাহিনীরা ক্যাম্প করেছে। তারা পাঁচজন প্ল্যান করে রাত দুটোর দিকে ওইখানে গিয়ে হামলা করবে। কিন্তু সমস্যা হল, নদী থেকে চর জেগে ওঠা একটি জায়গা সেখানে হামলা করতে গেলে ওই স্থানে থাকা ওয়াচ টাওয়ার থেকে হানাদার বাহিনীরা তাদেরকে দেখে ফেলবে। এজন্য তারা গেরিলা স্টাইলে ওইখানে যায় এবং চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর পরিকল্পিতভাবে একসঙ্গে হামলা করে অর্থাৎ গুলিবর্ষণ করে। এমন পরিস্থিতির জন্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা মোটেও প্রস্তুত ছিলনা। তারা ভাবে অনেক বড় একটি দল তাদেরকে হামলা করেছে। এজন্য তারা ভয় পেয়ে দ্রুত গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়।
কিছুদুর যাওয়ার পর তারা বুঝতে পারে তারা ভুল করছে। এজন্য আবার ওই স্থানে ব্যাক করে। এরপর এলোপাথাড়ি গুলি চালানো হয় মুক্তিযোদ্ধাদের উপর। এরই মাঝে 'বদি' ওই স্থান ত্যাগ করে । করণ ওই মুহুর্তে আরো মুক্তিযোদ্ধাদের খবর দিতে হবে । আর এদিকে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীদের হামলার ফলে 'সজল' শহীদ হয়। এখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের সাথে লড়তে হবে কবির, তাপস আর শামসুর। আর এই যুদ্ধটি করতে হবে আপনাকে। অর্থাৎ গেমটি ডাউনলোড দিয়ে এই তিনজনের হয়ে আপনাকে যুদ্ধ করতে হবে । এভাবেই মূলত গেমটি শুরু হয় । আমরা যখন গেমটি ডাউনলোড দিয়ে খেলা আরম্ভ করব তখন স্টরি গুলো যদি স্কিপ করি তাহলে যে অবস্থান থেকে আমাদের দেখানো হবে সেটি নিম্নে আলোচনা করা হলো।
প্রথমে এই যোদ্ধার হয়ে আপনাকে খেলতে হবে। এই যোদ্ধাটির নাম হল কবির। এই স্থানে লুকিয়ে খেলতে হবে। যখন ট্রাকভর্তি হানাদার বাহিনী গুলো আসবে তখন তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। প্রথম অবস্থায় আমরা দেখতে পাব তিনজন করে আসছে। পরবর্তীতে সেই সংখ্যাটি দাঁড়াবে ৬ জনে ।
ওই পাশেই স্কুলের ছাদে আমাদের আরেকটি মুক্তিযোদ্ধা থাকবে এর নাম হচ্ছে শামসু। ভিন্ন ভিন্ন পজিশনে থাকা শত্রুদের মারার জন্য ভিন্ন অবস্থানে থাকা মুক্তিযোদ্ধা দিয়ে যুদ্ধ করাই বুদ্ধিমানের কাজ। তাহলে ড্যামেজ রিকভার এ সময় পাওয়া যাবে। যখন ম্যাগজিনের গুলি শেষ হয়ে যাবে তখন রিলোড করার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন। সেই সময়ে একটু নিচু হয়ে কভার নিতে হবে।
খুব ভালোভাবে যুদ্ধ করার পর শেষের দিকে আসবে মর্টার । আর মর্টার কে মারা সহজ হবে না। তখন হাজির হবে তাপস । এখানে তাপসের দক্ষতা বেশি থাকবে। খুবই ধীরেসুস্থে চিন্তাভাবনা করে প্রতিটি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। শেষের দিকে পরিস্থিতি অনেক কঠিন হয়ে যায়। তখন একটু অসাবধানতা অবলম্বন করলেই মারা পড়তে পারেন।
তো যাইহোক, আপনারা গেমটি খেলুন। আমি নিচে গেমটির লিংক দিয়ে দিচ্ছি । আশাকরি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। এখানে আর বেশি কিছু বলবো না। একেবারে সবকিছু বলে দিলে মজাটাই থাকবে না। তবুও অনেক কিছু বলে ফেলেছি। আপনারা গেমটি খেলে আসতে পারেন। আর যেহেতু আমাদের বাংলাদেশী ডেভেলপার গেমটি ডেভেলপ করেছে , তো আমরা বাঙালিরা একটু সাপোর্ট তো করতেই পারি। আজ তাহলে যাচ্ছি। ভাল থাকবেন সবাই। আল্লাহ্ হাফেজ।
গেমটির ডাউনলোড লিংকঃ- এখানে স্পর্শ করুন
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
ধন্যবাদ ভাইয়া, গেইমের লিংকসহ শেয়ার করার জন্য। যুদ্ধভিত্তিক গেইম খেলতে আমার বেশ ভালোই লাগে, মাঝেমধ্যে পাবজি খেলতাম তবে সেটা বিনোদনের জন্যই মাত্র। হিরোস-অফ ৭১ এই গেইমটি অবশ্যই খেলবো, যেটি কিনা হানাদারবাহিনীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। এই গেইমের নাম আগে একবার শুনেছিলাম কোন একটা ট্রেইলারে, তখনো গেইমটা রিলিজ হয় নি, বিনোদনের জন্যই গেইম খেলতাম বলেই তেমন একটা গুরুত্ব দিলাম না, তবে আপনি যে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন, যেখানে একটা যুদ্ধের আগেই একটা কাহিনী বা গল্প থাকবে, তা সত্যি আসলে আকর্ষনীয় করে তুলেছে গেইমটার প্রতি। ধন্যবাদ ভাইয়া।
এই গেমটি অনেক আগে খেলেছি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে খুবই চমৎকার একটি গেম ছিল। বাংলাদেশি গেম ডেভলপারদের উচিত এই ধরনের আরও গেমস বের করা। তাহলে বাংলাদেশের তরুণ সমাজ পাবজি,ফ্রি ফায়ার থেকে বের হয়ে দেশি গেমস এর দিকে যেতে পারবে এবং যুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কেও জানতে পারবে।
হিরোফ অফ ৭১ গেমটি আমি অনেক দিন আগে প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করেছিলাম। কিন্তু ঔ সময়ে আমার ভালো ফোন ছিলো না। তাই খুব একটা ভালো খেলতে পারি নাই। আজকে আপনার দেওয়া লিংক থেকে গেইমটা ডাউনলোড করবো।
আসলে অনেক গেইম খেলা হইছে। কিন্তু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গেইম বিষয় টা অন্য রকম ফিলিংস এর ব্যাপার। যারা গেইমটি ডেবলোপ করেছেন তাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আর সুমন আপনাকে স্পেশাল ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি গেইম এর তথ্য আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
সুমন ভাই একসময় প্রচুর গেম খেলতাম। বাসায় এখনও প্রায় ২০০/300 গেম এর সিডি রয়ে গেছে। হিরোস অফ 71 গেমটি খেলেছি। মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে তৈরি এই গেমটি মোটামুটি ভালো মানের। তবে আপনার রিভিউটি পরে আরো বেশি ভালো লাগলো। শুভকামনা আপনার জন্য।
যদিও আমার গেমস এর প্রতি তেমন একটা আকর্ষণ নেই।মাঝে মধ্যে ইচ্ছে হলে খেলি, এমনটাই।তবে এই গেমসটির আপনার দেওয়া তথ্য গুলো পড়ে মনে হচ্ছে বেশ ভালো একটি গেমস।
এই গেমসটি বেশ কয়েকবার খেলেছি আমি।
আসলেই চমৎকার জিনিসটা। বিশেষ করে চমৎকার এনিমেশন আর গল্পটা দারুনভাবে সাজানো হয়েছে। এধরনের গেমস সত্যিই তরুণ প্রজন্মের জন্য আরো দরকার।