বন্ধুদের সাথে ইকোপার্কে ভ্রমন করতে যাওয়ার স্মৃতিময় গল্প// পর্ব-৩ ও শেষ পর্ব)
হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।
স্কুল জীবনের কথা মনে করতে পেরে আজ খুবই ভালো লাগে। স্কুল জীবনের সেই দিনগুলো অনেক আনন্দের ছিল। বন্ধুদের সাথে ঘোরাফেরার মুহূর্তগুলো অনেক মনে পড়ছে। আর স্কুলের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বন্ধুদের সাথে ঘুরে বেড়ানো সেই মুহূর্তগুলো সত্যিই অসাধারণ ছিলো।হাজারো স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে এই স্কুল জীবনের দিনগুলোতে। আমরা চার বন্ধু মিলে ইকোপার্কে ভ্রমন করতে গিয়েছিলাম আর এই ইকোপার্কে ভ্রমণের মুহূর্তগুলো সত্যিই অনেক আনন্দের ছিল। সবুজ প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যময় ছিলো সেই দিন গুলো।তো বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের মাঝে তৃতীয় ও শেষ পর্ব নিয়ে এসেছি। আশা করছি ইকোপার্কে ভ্রমন এর শেষ পর্বের গল্পটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে, তো চলুন পড়া শুরু করা যাক।
যমুনা নদীর পাশে এই সিরাজগঞ্জের ইকো পার্কের সবুজ প্রকৃতির দৃশ্য গুলো খুবই আনন্দের সাথে উপভোগ করতেছিলাম। বিশেষ করে ইকো পার্কের পাশে রয়েছে যমুনা সেতু ছিলো।আর ইকো পার্কের পাশে থেকে যমুনা সেতু দৃশ্য উপভোগ করতে পেরে আমাদের খুব ভালো লেগেছে। তো বন্ধুরা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে ছিলাম ইকো পার্কের ভিতরে পশু পাখিদের সাথে কাটানো মুহূর্ত। আমরা সকল পশুপাখি দেখতেছিলাম, ময়ূর থেকে শুরু করে অনেক জাতের পাখি রয়েছে। একটি খাঁচার ভিতর অনেকগুলো বানর রয়েছে। আর সবাইকে খাবার দিচ্ছে, খাঁচার ভিতর খাবার দেওয়ার সাথে সাথে বানরগুলোর দৃশ্য দেখে আমরা হাসতে ছিলাম। কারণ বানানো গুলো খুবই লাফালাফি করছিল এবং এমন কিছু কাজ করতে ছিল সেগুলো দেখে খুশি হাসি পাচ্ছিলো। এরমধ্যে আমার বন্ধু হাসান কলা কিনে নিয়ে আসলো বানোরকে খাওয়ানোর জন্য। আর এই কলা খেতে গিয়ে একটি দুর্ঘটনা ঘটে।বন্ধুরা সেই ঘটনাটি হল হাসান বানোর গুলোকে কলা খেতে দিতে ছিলো আর বানোর লাফ দিয়ে কলা খেতে এসেছিল, তখনই হাসানের হাতে এই বানরের একটি গামছা লেগে যায়।
বানরের আঘাত লেগে যাওয়ার কারণে হাসানের হাত থেকে অল্প কিছু রক্ত বের হতে লাগলো। তখন আমরা হাসানকে টিস্যু দিয়ে রক্ত মুছে দিতে লাগলাম। এমন সময় বনবিভাগে একজন কর্মকর্তা ছিলো সে এসে হাসানকে একটি মলম লাগিয়ে দিল। আর অবাক করা বিষয় ছিলো যে বানোর এর আঘাতে হাসানের হাতে রক্তে বের হচ্ছিলো।সেই বানোরটি হাসানের দিকে নিরব মনে তাকিয়ে আছে।বানরটি এমনভাবে হাসানের দিকে তাকিয়ে রয়েছে যেন মনে মনে খুবই কষ্ট পাচ্ছে। আমাদের মাঝে মানুষের মধ্যে কাউকে আঘাত করার পরে যেমন আমরা অনুতপ্ত বোধ করি, ঠিক তেমনি সেই বিষয়টা বানোরের মধ্যে দেখতে পেলাম। আমার কাছে বিষয়টি অবাক লেগেছে। বানরের এই নিরবতা সত্যিই বানরকে যেন মানুষের মতো মনে হচ্ছিল।হাসানও বানোরের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন।বন বিভাগের সেই লোক বলল এই বানোর আপনাকে আঘাত করতে চাইনি হঠাৎ করে লেগে গেছে।তাই বানরটি কষ্ট পাচ্ছে।
বানরের এভাবে নীরবতা দেখতে পেয়ে আমাদেরও খারাপ লাগলো। তখন বন বিভাগের লোকটি বললো আসো আমার সাথে বানরের কাছে যাবে।আর এই বানর তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিবে। এগুলো আমাদের পোষা বানোর, ওরা কাউকে আঘাত করে না। আজকে হঠাৎ করে লেগে গেছে। আসলে কলা খাওয়ার জন্য হয়তো লাফ দিয়ে এসেছে তাই আঘাতটা লেগেছে। আর যার কারণে বানরটি নীরব হয়ে গেছে। তো হাসান যেতে ভয় পাচ্ছিল।যেতে চাচ্ছিলো না।সেই লোক বললো ভয় নেই আমি তো আছি। সেই লোকেশন এর কথা শুনে হাসান এগিয়ে গেলো।
হাসান তখন বানরটির কাছে এগিয়ে গেল, সে লোকটির সাথে। তখন লোকটি বানরকে ডাকলো আর বললো ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দাও।আর বানরটি তখন আস্তে করে আসলো এবং খাঁচার ভিতর দিয়ে হাত বের করে দিয়ে হাসানের মাথায় হাত বুলিয়ে দিল। সত্যিই এই দৃশ্যটি আমার খুবই ভালো লেগেছে। হাসান তখন অনেক হেসে উঠলো। আর তখন বানরটি ও হেসে উঠে লাফ দিয়ে আবার খাঁচা অন্য দিকে চলে গেল এবং সেখানে গিয়ে আবার আগের মতো লাফালাফি করতে লাগল। এই দৃশ্যটি আমার আজীবন মনে থাকবে। আসলে বানর যেন মানুষের মতোই বুদ্ধির রয়েছে। তারা যেন খুব সহজেই মানুষকে আপন করে নিতে পারে। সেই দিনটি সত্যিই অসাধারণ ছিল।
ইকো পার্কের ভ্রমণ করতে যাওয়া দারুন একটি গল্প আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আসলে বন্ধুদের সাথে যে কোন স্থানে ঘুরতে যাওয়ার আনন্দ ঘন মুহূর্তটা স্মৃতি হয়ে থাকে জীবনের পাতায়। যা হোক পড়ে খুব ভালো লাগলো আমার।
আপনার সুন্দর মতামতের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া🌻🌹