"আজকে কয়েক ঘন্টার জন্য গ্রামের বাড়ী গিয়ে কাটানো কিছু সুন্দর মূহূর্ত".।||10% beneficiaries @shy-fox. ||



আসসালামু আলাইকুম,


সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই খুব ভালো আছেন। যারা নিজ বাড়ী থেকে বাইরে সব সময় দিন পার করে থাকেন।তাদের বাড়ীর প্রতি একটা আলাদা ধরনের টান থাকে। বাসায় যাওয়ার জন্য যেন মনটা ছটফট করে। আমি অনেক দিনই হলো বাসার বাইরে কুষ্টিয়া শহরে ম্যাচে আছি। ম্যাচেও কেউ ছিল না। আমি একাই ছিলাম। কালকে এক বড় ভাই আইছে। আমি ভাবলাম আজকে একটু বাসা থেকে ঘুরে আসি। কয়েক ঘন্টার জন্য বাসায় গিয়ে কাটানো সময়ের অনুভুতিটা আপনাদের সাথে শেয়ার করব, আশা করি আপনাদেরকে ভালো লাগবে। আমার পোষ্টের ১০% বেনিফিশিয়ার @shy-fox কে। চলুন পোষ্টটা শুরু করি-



গতকালকে যখন দুপুরে আপুদের বাসায় খাবার আনতে গেছিলাম, তখন আপু বললো চল কালকে বাসায় যায়। সকালে গিয়ে আবার বিকালে চলে আসবনে। আমি প্রথমে রাজি ছিলাম না।কারণ একদিনে গিয়ে আবার আসাটা কষ্টকর ব্যাপার। তারপর রাজি হয়ে গেলাম। কারণ অনেক দিন হলো বাসা থেকে ম্যাচে এসেছি।এরপর আজকে সকালে প্রাইভেট থেকে এসে আমি ফ্রেশ হয়ে ৮ টার পর রেডি হলাম বাসায় যাওয়ার জন্য। তবে প্রথমে আমি আপুর বাসায় যাব, তারপর সেখান থেকে আপুর সাথে আমাদের বাসায় যাব। এই উদ্দেশ্যে রেডি হয়ে ম্যাচ থেকে বাইরে বের হলাম।


IMG_20210827_204556_818.jpg

বাসায় যাওয়ার জন্য ম্যাচ থেকে বের হবার পর
Device : Itel vision 1.
w3w link


এরপর আমি একটা রিকসা করে আমার বোনের বাসায় গেলাম। আমার বোনের বাসা আমার ম্যাচ থেকে কিছুটা দূরে। যেখানে রিকসায় যেতে ১৫ টাকা ভাড়া লাগে। আপুর বাসায় গিয়ে আমি সকালের নাস্তাটা শেষ করলাম। তারপর আমি আপুর সাথে ৯ টার পর বাড়ী যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হলাম। আমার বেশ খুশি খুশি লাগছিল।কারণ অনেক দিন একা একা পরিবার থেকে আলাদা ছিলাম। আজকে একটু সবার সাথে দেখা হবে। এরপর আমরা প্রথমে অটোতে করে কুষ্টিয়া লাহিনী বটতলা গেলাম। সেখান থেকে একটা সিএমজিতে করে কুমারখালী যাওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম।


IMG_20210827_204632_392.jpg

সিএনজি থেকে তোলা রাস্তার ছবি
Device : Itel vision 1.
w3w link


এরপর আমরা কুমারখালী এসে সিএনজি থেকে নেমে একটা ভ্যান নিয়ে নদীর ঘাটে যেতে লাগলাম। এর মাঝে যাওয়ার সময় আমার আব্বু যেখানে কাজ করে সেখানে গেলাম। কারণ বাসায় গেলে আব্বুর সাথে দেখা হবে নানে। আর আমরা যেহেতু আজকেই বিকালে কুষ্টিয়া আবার চলে আসব। তাই আর দেখাও হবে নানে। তাই বাজার থেকেই আব্বুর সাথে দেখা করলাম। এরপর আমরা আব্বুর সাথে কথা শেষ করে নদীর ঘাটে গেলাম। নদীতে প্রচুর পরিমাণে পানি বাড়ছিল। কিন্তু দেখলাম একটু পানি কমছে। অনেক দিন পর আবার আজকে নদী পার হবো।


IMG_20210827_204640_542.jpg

নদীর ঘাট
Device : Itel vision 1.
w3w link


এরপর আমরা নৌকায় উঠলাম নদী পার হওয়ার জন্য। নদী পার হওয়ার জন্য প্রতি খালি মানুষকে ৫ টাকা করে দিতে হয়। যেহেতু আমরা দুইজন ছিলাম তাই ১০টাকা দেওয়া লাগল। এই পারাপারের মূল্যটা এক একটা জিনিসের এক এক রকম। ভারি যানবহন পার হলে তার ভাড়া আরও বেশি।


IMG_20210827_204716_988.jpg

IMG_20210827_204702_001.jpg

নদীর ঘাট থেকে তোলা কিছু ছবি
Device : Itel vision 1.
w3w link


IMG_20210827_204653_413.jpg

নদী কাটার ডির্জার।
Device : Itel vision 1.
w3w link


এরপর নদী পার হয়ে আমাদের গ্রামের কাছে চলে আসলাম। নদী পার হওয়ার পর আমার বাসায় যেতে ৩/৪ মিনিট সময় লাগে, হেটে। এরপর আমরা গ্রামের সেই চেনা রাস্তা দিয়ে হাটা শুরু করলাম। যে রাস্তায় বেড়ে ওঠা, সেখান দিয়ে অনেক দিনই যাওয়া হতো না। আজকে আবার সেই চেনা রাস্তায় হাটলাম। বেশ ভালো লাগছিল বাসায় যাওয়ার সময়।


IMG_20210827_204744_562.jpg

IMG_20210827_204736_830.jpg

সেই চেনা রাস্তা
Device : Itel vision 1.
w3w link


এরপর কিছুটা সময় হাটার পর বাসায় গিয়ে পৌঁছলাম। এরপর আমার মায়ের সাথে কিছুটা সময় কথা বললাম। তারপর আমার বড় চাচীদের বাসায় গেলাম। এরপর সেখানে কিছুটা সময় সবার সাথে কথা বললাম। সেখানে গিয়ে আমি আমার চাচাতো নানীকে দেখে বেশ খুশি হয়েছিলাম। কারণ উনি আমাকে খুবই ভালো বাসেন। কিন্তু আমি জানতান না উনি আমার চাচীদের বাসায় আছেন। কিন্তু আমার ভাগ্যটা ভালো যে উনার সাথে দেখা হয়ে গেল। এরপর অনেক সময় কথা বলার পর, আমি বাসায় এসে ফ্রেশ হলাম। তারপর আমার ছাগলের সাথে কিছুটা সময় দুষ্টুমি করলাম। আমার নিজের তিনটা ছাগল আছে। তার মধ্যে দুইটা খাসি ছাগল। এখনও বাচ্চা।


IMG_20210827_204810_726.jpg

ছাগলের বাচ্চা
Device : Itel vision 1.
w3w link


ছাগলের সাথে মজা করার পর আবার কিছুটা সময় বাইরে আমার চাচাতো ভাইয়ের ছেলে মেয়েদের সাথে আড্ডা দিলাম।আসলে বাসায় অনেক দিন ছিলাম না, তাই সবার সাথে একটু বেশিই কথা বলতে হলো। আমার চাচাতো ভাইয়ের ছেলেকে নিয়ে কিছুটা সময় দারিয়ে ছিলাম। ও প্রথমে আমার কাছে আসতে চাচ্ছিল না। তারপর আসলো।


IMG_20210827_204836_550.jpg

আমি এবং আমার চাচাতো ভাইয়ের ছেলে
Device : Itel vision 1.
w3w link


এরপর আমি ১২:২০ এর দিকে গোসল করতে গেলাম। কারণ আজকে জুম্মার দিন, তাই একটু তারাতারি মসজিদে যেতে হবে। এরপর আমি গোসল।শেষ করে।রেডি হয়ে নামাজে যাওয়ার জন্য বেরোলাম। অনেক দিন পর আবার গ্রামের মসজিদে নামাজ পড়তে গেলাম।


IMG_20210827_204854_170.jpg

নামাজে যাওয়ার সময়
Device : Itel vision 1.
w3w link


এরপর নামাজ কালাম শেষ করে বাইরে আসলাম। এরপর রাস্তায় দাড়িয়ে আমার কিছু বন্ধুদের সাথে কিছু কথা বললাম। বাসায় থাকলে আমি বেশির ভাগ সময়টাই ওদের সাথে কাটাতাম। অনেক কথা বলার পর আমি এবং আমার এক বন্ধু আমাদের বাড়ীর সামনে এসে আরও কিছুটা সময় কথা বললাম। ও হলো আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু।


IMG_20210827_204907_741.jpg

আমি এবং আমার বন্ধু
Device : Itel vision 1.
w3w link


এরপর অনেক সময় গল্প করার পর, দেখি ২:২০ বেজে গেছে। তারাতারি আবার বাসায় আসলাম।কারণ আমাদের আবার কুষ্টিয়া চলে যেতে হবে, সে জন্য সব গুছিয়ে নিলাম। বিকালে আগেই ম্যাচে যেতে হবে, কারণ বিকাল হলেই আজ কয় দিন আবার বৃষ্টি খুব জালাচ্ছে। বিকাল হলেই শুরু হয় মুষল ধারে বৃষ্টি। সেজন্য বাড়ী এসে মায়ের হাতের রান্না করা দুপুরের খাবার খেতে লাগলাম।অনেক দিন আমার মায়ের হাতের রান্না খাওয়া হয় না। মায়ের হাতের রান্নার খাবারের কোনো তুলনা হয় না। আমি এবং আমার আপু দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষ করলাম।


IMG_20210827_204921_558.jpg

IMG_20210827_204929_261.jpg

IMG_20210827_204937_628.jpg

মায়ের হাতের রান্না করা খাবার
Device : Itel vision 1.
w3w link


এরপর খাওয়া দাওয়া শেষ করে ফিরে আসার পালা।আমার মা ম্যাচে রাতে খাওয়ার জন্য একটা টিফিন বক্সে কিছু খাবার দিয়ে দিলেন। মায়ের সন্তানকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তা করে। এরপর আমার আপু বিভিন্ন ধরনের জিনিস ব্যাগ বন্দি করতে লাগল।আর আমাকে বলতে লাগল সব কিন্তু তুই টেনে নিয়ে যাবি। আমি বললাম, আচ্ছা চল। আমরা রেডি হয়ে ৩ টার দিকে বের হবার সময়ই শুরু হলো বৃষ্টি। কয়েক মিনিট হওয়ার পর থেমে গেল।আমরা আবার বাসা থেকে বেরিয়ে পরলাম। ব্যাগে অনেক জিনিস নিছে আপু তাই ভারির কারণে টানা যাচ্ছিল না। সে জন্য আমি এবং আপু শেয়ারে দুইজন ব্যাগটা নিয়ে যাচ্ছিলাম।


IMG_20210827_204952_706.jpg

আমি এবং আমার বোন কুষ্টিয়া ফিরে আসার সময়
Device : Itel vision 1.
w3w link


এরপর নদীর ঘাটে আসলাম নদী পার হওয়ার জন্য। কেবই নৌকাতে উঠলাম।শুরু হলো বৃষ্টি, তারাতারি নৌকা থেকে নেমে পাশে একটা জায়গায় দারালাম। এরপর কিছু সময় পর বৃষ্টি কমলে নদী পার হয়ে চলে আসলাম। ম্যাচে আসতে আসতে আমার ৪:৩০ বেজে গেল। ম্যাচে এসে আমি আাগে কিছুটা সময় রেস্ট নিলাম। কারণ এক দিনে বাসায় গিয়ে আবার চলে আসার মতো কষ্টকর কোনো জিনিস নাই। বাসা থেকে মন যেনো আসতে চাই না। তবুও চলে আসতে হয়।


আজকে আমি বাসায় কাটানো কয়েক ঘন্টার সময়ের কিছুটা মূহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আশা করি সবার কাছে আমার আজকের পোষ্টটা ভালো লেগেছে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।


সবাইকে অনেক ধন্যবাদ আমার আজকের পোষ্টটা পড়ার জন্য এবং আপনাদের সময় ব্যয় করে মূল্যবান মতামতটা জানানোর জন্য।



logo.gif

Sort:  
 3 years ago 

আপনার গ্রামের বাড়িতে কাটানো সময় গুলো বেশ লাগছিল সেই সাথে মায়ের হাতের রান্না তার তুলনাই হয়না চমৎকার লাগলো আপনার পুরো অনুভুতি পরে।ধন্যবাদ

ধন্যবাদ আপু। শুভ কামনা।

 3 years ago 

ভাইয়া আমরা অনেক সময় একটা পোস্ট একটু বড় হলে সেটা আর বলতে চাই না কিন্তু আমি ভেবে দেখলাম আমরা পোস্ট পড়তেই এতটা অসহ্য ফিল করি কিন্তু যে লিখে সে কতটা ধৈর্য নিয়ে পোস্ট টা লিখে আমাদের জন্য আসলে আমাদের সবারই জন্য কঠিন প্রতিটা পোস্ট পড়ে পড়ে তারপর কমেন্ট করা আপনার প্রতিটা মুহূর্ত সত্যি অনেক সুন্দর গিয়েছে আর বিশেষ করে একটা ছবি দেখলাম যেটা আপনি নওগাঁতে উঠেছিলেন তো সেটা একান্তই আমার নিজের গ্রামের কথা মনে পড়ে গেছে কারন আমি আসলে খুব একটা বাড়িতে যাই না বাড়িতে যখন যাই তখন আমার যাওয়ার পথে ঠিক এইরকম একটা পথ পড়ে তাই খুব বেশি মিস করছি আপনার এই পোস্টটি পড়ে এবং আপনার ছবিগুলো দেখে ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর হবে আপনার আজকের দিনটি উপস্থাপন করার জন্য

আপনাকেও ধন্যবাদ আমার পোষ্টটা পড়ার জন্য।

 3 years ago 

অনেক দিন পর নিজের বাসায় যাওয়ার মজাটাই আলাদা।অনেক ব্যস্ততার মাঝে মায়ের হাতের রান্না খেয়ে তৃপ্তি পাওয়া যায়।পাঙ্গাস মাছ আমার খুবই প্রিয় মাছ।ঠিক বললাম তো ভাইয়া পাঙ্গাস মাছ ছিল তো !যাইহোক ভালোভাবে ম্যাচে এসেছেন এতেই শান্তি ।ধন্যবাদ ভাইয়া।

জি বোন পাঙ্গাস মাছই ছিল।। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মতামতের জন্য।

 3 years ago 

আজকের দিনটি খুব ভালো কেটেছে আশা করছি। আপনার এই সুন্দর মুহুর্ত গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাই💜💜💜💜

ধন্যবাদ।

 3 years ago 

পড়াশুনার ফাঁকে ফাঁকে অবশ্যই নিজের বাসা থেকে ঘুরে আসা অত্যন্ত জরুরি তা হলে মন ফ্রেশ থাকে। এবং পড়াশোনায় মন বসে। খুবই সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।

জি ভাইয়া এটা সত্য কথা। মন ভালো করার জন্য হাওয়া বদল দরকার। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 3 years ago 

আপনার গ্রামের দৃশ্য অনেক সুন্দর। মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

ধন্যবাদ ভাইয়া।

 3 years ago 

ভাই উপস্থাপনার ধরণ দেখে আমি রীতিমত অবাক।কয়েকঘন্টার জার্নি কতো সুন্দর করে বর্ণণা করেছেন।শিখতে পারলাম অনেক কিছু।ধন্যবাদ

ধন্যবাদ ভাই।

 3 years ago 

আজকে আপনি অনেক সুন্দর দিন কাটিয়েছেন ভাই শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার জন্য শুভকামনা রইলো 🥀

ধন্যবাদ ভাই।

 3 years ago 

আপনার গ্রামে যাওয়ার দৃশ্যগুলো খুব ভালো ছিল। আশেপাশের পরিবেশগুলো বেশ সুন্দর দেখা যাচ্ছে এবং আপনার গ্রামের বাড়ির মুহূর্তগুলো লেখার মাধ্যমে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ দাদা সময় করে আমার পোষ্টটা পড়ার এবং দেখার জন্য। শুভ কামনা দাদা।

 3 years ago 

হ্যালো ভাইয়া আপনি খুব অসাধারণ ভাবে লিখেছেন। এবং আপনি খুব সাজিয়ে গুছিয়ে লিখতে পারেন। আপনার বাইরে যাওয়া দেখে মনটা কেন জানি ছটফট করতেছে। মন চাইছে আমিও বাড়ি যাই। মায়ের হাতের রান্নার কথাটাও মনে করিয়ে দিলে। আসলে পৃথিবীতে মা তোমায় মায়ের হাতের রান্না মজা মজাদার আর কোন রান্নায় হয় না। আপনার লেখাটি থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি । থ্যাংক ইউ ভাইয়া।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 3 years ago 

ধন্যবাদ ভাই

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 62102.06
ETH 2415.08
USDT 1.00
SBD 2.49