বারাসাতের কালী পূজা ভ্রমণ।।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

নমস্কার বন্ধুরা

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভালো আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।


আমরা সকলেই জানি যে কলকাতার দুর্গাপুজোর মতো আমাদের বারাসাতের কালীপুজোও কতটা বিখ্যাত। প্রতিবছরই আমাদের বারাসাতে প্রচুর ধুমধাম করে কালীপুজোর আয়োজন করা হয়। আমাদের বারাসাতের মতো এরকম কালীপুজো অন্য কোথাও তেমন বিশেষ কোন দেখা যায় না, তবে বনগাঁতে দুই একটা কালী পূজা বেশ বড় রকমের হয়, কিন্তু বারাসাতের তুলনায় সেটা খুবই কম। আসলে সমস্যা হলো যে আমার বাড়ির পাশে এত বড় বড় পুজো অনুষ্ঠান হলেও আমি খুব বেশি একটা বাইরে বেরোতে পছন্দ করি না এই সময়। এজন্য অধিকাংশ সময় ঘরে বসেই কাটাই। তবে এই বছর ব্যাপারটা একটু অন্যরকম হয়েছিল, কারণ এর আগের দুই বছর করোনার কারণে তেমন কোন পূজা অনুষ্ঠান আমাদের এদিকে হয়নি। তাই এইবার বেশ কৌতুহল নিয়ে বেরিয়েছিলাম পুজো দেখার জন্য।

InShot_20230601_182349555.jpg

বারাসাতের কালী পূজো নিয়ে অনেকেই দেখেছি সুন্দর সুন্দর পোস্ট করেছেন। যদিও আমি সেই পূজা মন্ডপ গুলোতে গিয়েছিলাম তবে আগে থেকে সবাই শেয়ার করে দিয়েছে জন্য আমার আর সেগুলো শেয়ার করতে ইচ্ছে করেনি। তবে তাছাড়াও আরো অনেক পুজো মণ্ডপ ছিল ছোট ছোট যেগুলো আমি ঘুরে ঘুরে দেখেছিলাম। তার ভিতর থেকে আজকে একটা পূজা মন্ডপের কিছু দৃশ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাইছি। যাইহোক তার আগে দুই একটা কথা বলে নেই, আমি আসলে এবার পুজো দেখতে সর্বমোট দুই দিন বেরিয়েছিলাম। একদিন বন্ধু-বান্ধবের সাথে এবং অন্য একদিন আমার বাবা মায়ের সাথে। কারণ তারা যেহেতু এই জায়গাতে থাকেন না তাই আমার দায়িত্ব ছিল তাদের নিয়ে অন্তত একদিন পূজো ঘুরে দেখার। যদিও তারা সেই আশা নিয়েই আমার এখানে এসেছিল। প্রথমত পরিবারের লোকজনদের বারাসাতের ভিতরের যত বড় বড় পূজা মন্ডপ ছিল সেগুলো ঘুরে দেখানোর চেষ্টা করলাম, তবে পুরোপুরি দেখে শেষ করতে পারেনি প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে।

20221025_173437.jpg

20221025_173353.jpg

তারপরও মোটামুটি বেশ কয়েকটা পূজা মন্ডপ ঘুরে ঘুরে দেখিয়েছিলাম। এরপর আমার মা বলল যে এখানে তো মোটামুটি দেখেছি তবে আমি শুনেছিলাম নীলগঞ্জের ওইদিকে নাকি বেশ ভালো ভালো পুজো হয়। যদি তোর সময় হয় তাহলে চল ওই দিকটা একটু ঘুরে আসি। মায়ের এই কথা শুনে আমি সত্যিই অবাক হয়েছিলাম। কারণ মা এখন আগের মত অত হেঁটে হেঁটে পুজো দেখতে পারেনা। তারপরও মায়ের এই কৌতূহল দেখে আমার মনে হচ্ছিল যে তাহলে একবার ঘুরে আসাই যাক। বারাসাতের হেলা বটতলা থেকে একটা অটো ধরে আমি বাবা এবং মা চলে গেলাম নীলগঞ্জের পুজো দেখার জন্য। তবে অটো বেশি দূর যেতে পারিনি মোটামুটি মাঝ রাস্তায় গিয়ে অটো থেমে গেছিল। আসলে মানুষের এত ভিড় ছিল ওই দিকটাতে যে কোন গাড়ি ঢুকতে দিচ্ছিল না ভিতরে। তাই আমাদের বাধ্য হয়ে হেঁটে হেঁটে যেতে হয়েছিল। যাই হোক ওখানে গিয়ে বেশ কয়েকটা পূজা মন্ডপে পুজো দেখার চেষ্টা করেছিলাম এর ভিতর একটা ছিল রাজমহল থিম নিয়ে, যেটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছিল। সেটা না হয় অন্য কোন একদিন শেয়ার করব। তারপর এই পূজা মণ্ডপটি দেখে আমি হঠাৎ করেই রাস্তার পাশে থমকে দাঁড়ালাম।

20221025_173407.jpg

20221025_173417.jpg

এই ক্লাবের নামটা আসলে আমার জানা নেই তবে তাদের পুজোর থিম দেখলাম জংলি জানোয়ার এবং গাছপালা নিয়ে তৈরি করেছে এবং এদের ডেকোরেশনটা এত বেশি সুন্দর ছিল আর লাইটিং গুলো এত সুন্দর ছিল যে, যে কেউ দেখে সেখানে দাঁড়িয়ে যেতে বাধ্য হবে। প্রথমেই আসলে আমরা লাইনে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছিলাম ভিড়ের কারণে। এরপর আধা ঘন্টা ধরে লাইনে দাঁড়ানোর পর আমরা পূজা মন্ডপে ঢোকার সুযোগ পাই। তবে বাইরে থেকে যতটা সুন্দর লাগছিল ভেতরে তার থেকে আরো অনেক বেশি সুন্দর ছিল। তাছাড়া মা কালীর মূর্তিটা অন্যরকম ধাঁচে তৈরি করা হয়েছিল যেটা আমার কাছে অনেক বেশি ইউনিক মনে হয়েছিল তখন। আসলে বারাসাতের বেশ কয়েকটা বড় বড় পূজো মণ্ডপ ঘুরেছিলাম তবে এত অল্পের ভিতরে এত সুন্দর করে সাজানো গোছানো পূজো মণ্ডপ আমার চোখে পড়েনি আর একটাও। যাই হোক তারপর সেখান থেকে পুজো দেখে আরো দুই একটা পুজো মন্ডপ ঘুরে কিছু খাওয়া দাওয়া করে আমি, বাবা এবং মা বাড়িতে উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

20221025_173348.jpg

20221025_173342.jpg

20221025_173336.jpg

20221025_173321.jpg

20221025_173310.jpg

ডিভাইসrealme 8i
ফটোগ্রাফার@pujaghosh
লোকেশনবারাসাত
পোস্ট টাইপভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট

আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি ।ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।

Sort:  
 last year 

এই পুজো প্যান্ডেলটি যে ক্লাব আয়োজন করেছিল সেই ক্লাবের নাম হলো আমরা ক'জন ক্লাব। এটি আমার বাড়ির খুব কাছের একটি ক্লাব। এই বছর এই ক্লাবের পুজোর থিম ছিল বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ। কালী পুজোর সময় আমি এই পুজো প্যান্ডেলটা দেখতে দুই থেকে তিনবার গেছিলাম। বারাসাতের কালী পুজো গুলো খুবই বড় আকারের হয়। আমিও দিদি আপনার মত পরিবারের লোক নিয়ে একদিন বারাসাতের পুজো প্যান্ডেল গুলো ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। নীলগঞ্জে এবার সত্যিই অনেক বড় করে পুজো প্যান্ডেল করেছিল। নীলগঞ্জের সবকয়টি পুজো প্যান্ডেলও আমরা ঘুরে ঘুরে দেখেছিলাম। এতদিন পরে এসে কালী পুজো প্যান্ডেলের এই ফটোগ্রাফি গুলো দেখে পুজোর সময়কার কথাগুলো মনে পড়ে গেল, বেশ ভালো লাগলো ।

 last year 

হ্যাঁ ঠিক বলেছেন ভাই, বারাসাতের কালীপুজো গুলো অনেক বড় করে হয়। অনেকদিন পর কালী পুজো প্যান্ডেলের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আপনার পুজোর সময়ের কথা মনে পড়েছে জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

আমি দিদিভাইয়ের মুখে বারাসাতের কালি পূজোর কথা কথা শুনেছিলাম আগে। অনেক নামকরা আয়োজন হয়ে থাকে। এর আগেও অনেক পোস্ট দেখেছি। আজ আবার দেখলাম। সত্যি মন ভরে যায় দেখে। আপনাদের ওখানে সুন্দর থিম করে সব পূজার ডেকোরেশন করা হয়, এই জিনিসটা সব থেকে বেশি ভালো লাগে আমার। আমাদের এদিকে তো এত চমৎকার আয়োজন খুব একটা হয় না। তাই এই রকম পোস্ট দেখলে একটা অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে ভেতর থেকেই। মা কালী আমাদের সকলের মঙ্গল করুক, এটাই প্রার্থনা করি 🙏🙏

 last year 

সত্যিই তাই, এইসব দিকে পুজো প্যান্ডেলে এত সুন্দর থিম করে ,যা দেখে সত্যিই মন ভরে যায়। কখনও সুযোগ হলে একবার পুজোর সময় এসে এখানে ঠাকুর দেখে যাবেন ,অবশ্যই ভালো লাগবে।

 last year 

আপনি বারাসাতের কালী পূজায় গিয়ে খুবই ভালো মুহূর্ত অতিবাহিত করেছিলেন দেখেই বুঝতে পারছি। আপনাদের ঘুরাঘুরি করার মুহূর্তটা খুবই ভালো কেটেছে মনে হচ্ছে। অনেক বড় আয়োজন করা হয়েছিল পূজোর জন্য দেখেই বুঝতে পারছি। পুজোর ডেকোরেশনটা খুবই সুন্দর ভাবে পড়েছে। আপনি বেশ কয়েকটা ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন এবং নিজের অনুভূতি লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করার চেষ্টা করেছেন দেখে অনেক বেশি ভালো লাগলো। জাস্ট অসাধারণ ছিল আপনার ঘোরাঘুরি করার মুহূর্তটা।

 last year 

হ্যাঁ ভাই ,বারাসাত এর কালী পুজোয় ঠাকুর দেখতে গিয়ে খুবই সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছিলাম। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 55758.52
ETH 2348.78
USDT 1.00
SBD 2.31