জেনারেল রাইটিং : মায়েরা কি আসলেই এমন হয়......?

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

নমস্কার বন্ধুরা


আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।

আজকের পোস্টটা করতে সত্যিই অনেক বেশি কষ্ট লাগছে। বিগত বেশ কিছুদিন আগে ফেসবুকে একটা পোস্ট দেখেছিলাম, যেটা দেখে মনে হল যে এই ঘটনাটা আপনাদের সাথে শেয়ার করা যাক। আমি জানি আজকের এই ঘটনাটা শোনার পর আপনারা যারা মা রয়েছেন তারা অনেক বেশি কষ্ট পাবেন। এবং মনে মনে এটাই চিন্তা করবেন যে একটা মা এরকম নিষ্ঠুর কি করে হতে পারে। আমি আসলে এই ঘটনাটা জানার পর কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তারপরও চেষ্টা করছি মোটামুটি আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। এই ঘটনাটা খুব সম্ভবত ২০২৩ সালের ,আমেরিকার ওহায়ো তে৷ আসলে মেইন ঘটনা হলো যে একজন মা তার ১৬ মাসের সন্তানকে ঘরে বন্দী করে রেখে তার ছেলে বন্ধুর সাথে দশদিনের ট্যুরে সমুদ্র ভ্রমণে গিয়েছিল। যেহেতু বাড়িতে আর কেউ ছিল না তাই তার সন্তানকে একটা রুমের ভিতর বন্দি করে বাইরে থেকে তালা দিয়ে চলে যায়।

ai-generated-8059130_1280.webp

সোর্স

এরপর সেই ১৬ মাসের বাচ্চাটা একা একা ঘরের ভিতর বন্দি থাকা অবস্থায় শুধু মায়ের জন্য কান্নাকাটি করতে থাকে। প্রথম দিন তো খিদার যন্ত্রণা কিছু বুঝতে পারিনি কিন্তু ধীরে ধীরে যখন সে কান্নাকাটি করার পর তার মাকে খুঁজে না পায় তখন সে এদিক সেদিক ছোটাছুটি করতে থাকে খাবারের জন্য। কিন্তু তাকে যেহেতু ঘরে বন্দি করে রাখা হয়েছিল এজন্য তেমন কোন খাবারের সুব্যবস্থা ছিল না। আর এত ছোট মানুষ খাবার খাবেই বা কি করে। মোটামুটি দু-এক দিন যাওয়ার পরেই প্রচণ্ড কান্নাকাটি করতে করতে সে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে যায় এবং একসময় থাকতে না পেরে নিজের মলমূত্র খেতে শুরু করে। খিদের যন্ত্রণা যে কতটা ভয়ংকর সেটা আমরা প্রত্যেকেই জানি। তাহলে একটা ১৬ মাসের বাচ্চা কতটা কষ্ট পেতে পারে সেটা আমরা মোটামুটি আন্দাজ করতে পারছি। আসলে বাচ্চাটা বেঁচে থাকার জন্য নিজের মলমত্র পর্যন্ত খেয়েছিল কিছুদিন। তবে শেষ পর্যন্ত বাচ্চাটাকে আর বাঁচানো যায়নি। ওভাবেই কান্না করতে করতে অসুস্থ হয়ে মারা গেছে ঘরে বন্দি থাকা অবস্থায়।

এখন আমার কথা হচ্ছে একটা মা কতটা নিষ্ঠুর হলে তার বাচ্চাকে এইভাবে ঘরের ভেতর বন্দী করে তার ছেলে বন্ধুর সাথে ঘুরতে যেতে পারে। মহিলাটা এত আনন্দ ফুর্তি করে বেরিয়েছে কিন্তু একবারও কি তার মনে হয়নি যে তার সন্তান ঘরের ভেতর কি অবস্থায় আছে এবং সে কতটা কষ্ট পাচ্ছে। আমার কথা হচ্ছে তার যদি সন্তান এতই অপছন্দ হয়, তাহলে তাকে বাইরে ছেড়ে দিয়ে যেতে পারতো। তাহলে হয়তো অন্য কেউ তাকে নিয়ে অন্তত খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখতে পারতাম। কিন্তু সে সেটা না করে তাকে একেবারে ঘর বন্দি করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। এরকম উদাহরণ যে কম আছে সেটা কিন্তু নয়। আমাদের ভারতবর্ষেও আসলে এরকম অনেক উদাহরণ রয়েছে যে নিজের প্রেমিকের জন্য তার আগের সন্তানকে হত্যা করে।

যাই হোক ঘটনাটা শোনার পর থেকে আমার মনের অবস্থা খুব বেশি একটা ভালো নয়। যদিও মহিলাটার অনেক বড় শাস্তি হয়েছে। তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। তবে আমি মনে করি এটাও কম হয়ে গেছে। আসলে মা হলো এমন পবিত্র জায়গা যেখানে আমরা নিজেদেরকে সব থেকে বেশি সেফ মনে করি। একজন মা তার সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য জীবন পর্যন্ত দিয়ে দিতে পারে অনায়াসে। তবে এরকম কিছু নিষ্ঠুর প্রকৃতির মানুষদের জন্য মায়েদের দুর্নাম হয়। আসলে এর থেকে বেশি কিছু লেখার মত শক্তি আপাতত আমার গায়ে নেই, এই ঘটনা জানার পর থেকে। মোটামুটি যতটা পেরেছি আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আপনাদের অতি মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে আপনাদের মতামত জানাবেন।


পোস্ট বিবরণজেনারেল রাইটিং

আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।





🪔আমার পরিচয়🪔

InShot_20240217_224020693.jpg

আমি পূজা ঘোষ(রাজশ্রী)। বনগাঁতে বসবাস করি। আমি বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয় থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, বিজ্ঞান বিভাগে ।পাশাপাশি কম্পিউটার এবং স্পোকেন ইংলিশের কোর্স করেছি। বর্তমানে আমি ফার্মাসিতে অধ্যায়নরত । ভবিষ্যতে এইগুলো নিয়ে ভালো কিছু করার আশায় এগোচ্ছি। কবিতা আবৃত্তি করতে আমি খুবই ভালোবাসি। ছোটো বয়েস থেকেই কবিতা আবৃত্তি শিখছি। এছাড়া ছবি আঁকতে,ঘুরতে যেতে,নতুন নতুন খাবার খেতে,গান শুনতে,ফোটোগ্রাফি করতে আর মানুষের সাথে মিশতে ভালোবাসি।

🎯 সমাপ্ত🎯

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 5 months ago 

আসলে পৃথিবীর অবস্থা দিন দিন ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। এখন মানবিকতা মমত্ববোধ এবং ভালবাসা সবকিছু দিনদিন হারিয়ে যেতে বসেছে। যাই হোক এরকম অসংখ্য বিচ্ছিন্ন ঘটনা আমিও প্রতিনিয়ত দেখতে পাচ্ছি। তবে একটি মায়ের কাছ থেকে কখনো এ ধরনের অমানবিক আচরণ কাম্য নয়। যাইহোক সব মানুষ এক রকম হয় না। আপনি আপনার মানসিক অবস্থাটা ঠিক করে নিন এবং ভবিষ্যতে নিজের সন্তানদের অনেক ভালোবাসায় আর আদরে আগলে রাখবেন এই কামনা করছি।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

আসলেই ভাই,পৃথিবীর অবস্থা দিন দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আর যেগুলো কখনো ভাবা যেত না সেইগুলোই ঘটছে।

 5 months ago 

ফেসবুকে এই কাহিনীটি কয়েকদিন থেকে খুবই ভাইরাল হয়েছে। আসলে কাহিনীটি শুনে সত্যিই খুব খারাপ লেগেছিল। একটা মা তার ১৬ মাস বয়সের সন্তানের সাথে কিভাবে এমন করতে পারে। এটা আসলে খুবই অবাক করা বিষয়।যাইহোক ঘটনাটি সবার মাঝে তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 5 months ago 

আসলেই আপু,খুবই দুঃখজনক একটি বিষয় এটি। বিশেষ করে ১৬ মাস বয়সের বাচ্চাটির জন্য খুবই খারাপ লাগছে।

 5 months ago 

এরকম নরপশু মায়ের খবর যেমন পাই ঠিক তেমনি বাচ্চাদের জন্য নিজের জীবন দেয়া খবরও পেয়ে থাকি।মা কথাটাই নিরাপদ। মা মানেই নিরাপদ কিন্তুু এখবরটি দেখার পর আমিি নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি।সামনে বার বার চলে আসতো খবরটা আর কষ্ট পেতাম।আসলেই ঠিক বলেছেন যদি পছন্দই না তবে বাইরে ফেলে রেখে যেতে পারতো।দত্তক দিতে পারতো।কেন এমন করলেন ইস বাচ্চা টির কান্না এখনো কানে ভাসছে এমন মনে হচ্ছে। আপনার মতো আমারও মন ভীষণ খারাপ হয়ে যায় এরকম খবর শুনলে। ধন্যবাদ দিদি পোস্ট টি আমাদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য।

 5 months ago 

আসলেই দিদি,এ ধরনের খবরগুলো শুনলে সবার মন খারাপ হওয়ার কথা। পোস্টটি পড়ে একটি গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

দিদি, আমিও ওই নিষ্ঠুর মায়ের কাহিনী ফেসবুকে দেখেছি। আর যখন থেকে দেখেছি তখন থেকে আমিও অস্বস্তিতে আছি। যখনই আমার এই ঘটনাটির কথা মনে পড়ে, তখনই যেন মনের ভিতরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সত্যিই দিদি এ কেমন মা, যে মা কিনা নিজের এতোটুকু সন্তানকে একা ঘরে বন্দী করে রেখে যেতে পারে, তাও আবার নিজের সুখ শান্তির জন্য। দিদি, যদি আমি ওই মহিলাকে সামনে পেতাম, তাহলে আমি নিজেই ওই মহিলাকে শাস্তি দিতাম। যাবজ্জীবন তার জন্য কম হয়ে গেছে। পৃথিবীর মধ্যে একজন মায়ের কোল হচ্ছে সন্তানের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়। অথচ ওই ছোট্ট শিশুটি তার মায়ের কারণে মৃত্যুবরণ করেছে। এটা সত্যি মেনে নেয়া যায় না। যাই হোক দিদি, ওই নিষ্ঠুর মায়ের কাহিনী নিয়ে, আপনার মনের অনুভূতিটুকু শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

 5 months ago 

আসলেই ভাই, খুবই দুঃখজনক মর্মান্তিক একটি কাহিনী এটি। আমিও যতবার ফেসবুকে এই ঘটনাটি দেখছি খুবই খারাপ লাগছে।

 5 months ago 

আসলে এই কাহিনীটা যদিও আগে শোনা হয়নি এবং দেখিনিই তবে আপনার কাছ থেকে সম্পূর্ণটাই পড়ার চেষ্টা করলাম। আমার কাছে তো অনেক বেশি খারাপ লাগলো সম্পূর্ণ কাহিনীটা পড়ে। এ ধরনের অমানবিক আচরণ দেখলে অনেক বেশি খারাপ লাগে এমনিতেই। আপনি অনেক সুন্দর করেই কিন্তু পুরো লেখাটা মাঝে মাঝে শেয়ার করেছেন। সুন্দর করে পুরোটা লিখেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে পুরো লেখাটা সবার মাঝে ভাগ করে নেওয়ার জন্য।

 5 months ago 

আমার পোস্টের মাধ্যমে আপনি প্রথম এই ঘটনাটি জানলেন দেখছি আপু। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 5 months ago 

দিদি এই ঘটনাটার কথা শুনে তো আমার চোখে জল চলে এসেছে। এরকম নিষ্ঠুর মাও যে হতে পারে এটা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে অনেক বেশি। একজন মা কিভাবে পারে এত ছোট একটা শিশুকে ঘরে বন্দি করে 10 দিনের ট্যুরে যেতে। আমি তো মনে করি ওই মহিলাটাকেও কোন রকম খাবার না দিয়ে ঘরের ভেতরে বন্দী করে রাখা। তাহলে মহিলাটাও বাচ্চাটার মতো তিলে তিলে কষ্ট পেয়ে মারা যেত। আর এটার থেকে বড় শাস্তি অন্য কিছুতে হতেই পারে না। এই ধরনের মানুষদের জন্য আসলেই মায়েদের দুর্নাম হয়। আমি তো এটাই কামনা করি যেন এরকম নিষ্ঠুর মা সন্তান জন্ম দেওয়ার আগেই মারা যায়। আর ওই ছোট বাচ্চাটার জন্য সব সময় দোয়া করি।

 5 months ago 

ঠিকই বলেছেন ভাই,এই ধরনের কিছু অমানবিক মায়েদের জন্য পৃথিবীর সমস্ত মায়েদের দুর্নাম হয়। যাইহোক, পোস্টটি পড়ে একটি গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 5 months ago 

একজন মা তার ১৬ মাসের সন্তানকে ঘরে বন্দী করে রেখে তার ছেলে বন্ধুর সাথে দশদিনের ট্যুরে সমুদ্র ভ্রমণে গিয়েছিল।

এই ঘটনাটা আসলেই অনেক বেশি মর্মান্তিক। আমিও সেটাই চিন্তা করছি যে, একজন মা এরকম নিষ্ঠুর কি করে হতে পারে! তবে তার যে শাস্তি হয়েছে, সেটা মনে করি একদমই ঠিক হয়েছে। আমি শুধু চিন্তা করছি যে, বাচ্চাটা কতটা কষ্ট পেয়ে মারা গেল। আসলে এই ঘটনাটা পড়তে পড়তে আমার নিজেরও অনেক বেশি খারাপ লাগছিল দিদি।

 5 months ago 

আসলে খুব খারাপ লাগার মতনই একটি ঘটনা এটি। আমারও খুব খারাপ লেগেছিল যখন প্রথমবার ভিডিওটা দেখেছিলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 57951.76
ETH 2347.51
USDT 1.00
SBD 2.36