তারিখ-০৭.১১.২০২২
নমস্কার বন্ধুরা
আশাকরি সকলে ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি।আমি আগস্ট মাস থেকে এই কমিউনিটির সদস্য হয়ে আছি। আর ঠিক আগস্ট-সেপ্টেম্বরের পর থেকে আমাদের পুজো পার্বন গুলো শুরু হয়। তাই এক এক করে এর আগে আমি দূর্গাপূজা,কালীপূজার প্রতিমা দর্শনের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছি। এররপরই চলে এলো জগদ্ধাত্রী পুজো যা ইংরেজ আমলের শুরু থেকেই পশ্চিম বঙ্গে প্রচলন হয়েছিলো। আর জগদ্ধাত্রী পুজো মানেই এক হল কৃষ্ণনগর আরেক হল চন্দননগর। এর আগে একবার কৃষ্ণনগরে আমি জগদ্ধাত্রী পুজোতে প্রতিমা দর্শন করেছি। ভাবলাম কোনবার জগদ্ধাত্রী পুজো তে চন্দননগর যাওয়া হয় নি। তাই একবার ঘুরেই দেখি।
ঘুরে যা বুঝলাম, চন্দননগর এবং কৃষ্ণনগরে পুজোর মধ্যে তফাৎ এটাই যে কৃষ্ণনগরে মায়ের পুজো হয় সাবেকি আদলে। আড়ম্বর তুলনামূলক কম হলেও ভক্তদের সমাগমের খামতি নেই। অপরদিকে চন্দননগরের পুজোর বৈশিষ্ট্য হল বেশীরভাগ মায়ের সাথে হয় ডাকেরসাজে, শোলা কেটে গয়না, বস্ত্র বানানো হয়।জগদ্ধাত্রী মা কে মা দূর্গারই এক রূপ হিসেবে পুজো করা হয়। তবে মা জগদ্ধাত্রীর ৪ বাহু থাকে এবং মা সিংহের উপর অধিষ্ঠিত থাকেন। কোন অসুর থাকে না।
কথিত আছে চন্দননগরের ইন্দ্রনারায়ন চৌধুরী মহারাজা মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের বন্ধু ছিলেন এবং তিনিই ভদ্রেশ্বরে ১৭৫৫ এর আসেপাশে সময়ে প্রথম মা জগদ্ধাত্রীর পুজো প্রচলন করেন যদিও এই ইতিহাস এখনও ধোঁয়াশা। অপর দিকে যখন কৃষ্ণচন্দ্র মীরকাশিম দ্বারা বন্দী হন এবং ইংরেজদের হস্তক্ষেপে ছাড়া পান, ততদিনে পশ্চিম বঙ্গে দূর্গাপূজা শেষ এবং মহারাজা স্বপ্নে আদেশ পান যেনো মায়ের এই জগদ্ধাত্রী মূর্তি কে পুজো করেন মহারাজ। তারপরই এই পুজো প্রচলন কৃষ্ণনগরে।যদিও এই নিয়ে দ্বিমত আছেই।
সে পুজোর উৎস যা ই হোক না কেনো,আমাদের মত মানুষের কাছে একটু ঘোরাঘুরির একটা অজুহাত তো বটেই।তাই বেড়িয়ে পড়লাম প্রথমবারে চন্দননগরে মা কে দেখতে। চন্দননগর মানেই হল আলোর খেলা। বড় বড় জায়গায় চন্দননগর নগরের লাইটিং যায়। আর এক কালে এই চন্দননগরে যায়ের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বেড়োতো শুধু মশাল আর হেরিকেনের সাথে।আসুন আর কথা না বাড়িয়ে আপনাদের মন্ডপের ছবি ভাগ করে নি।
এটি মান কুন্ডু সার্বজনীনের প্যান্ডেল এবং মায়ের মূর্তি।মানব জীবনে ডিপ্রেশন, উদ্বেগ কতটা খারাপ প্রভাব ফেলে তার উপর ভিত্তি করেই এই মন্ডপ সজ্জা।
চন্দননগর নতুন পাড়ার মন্ডপ সজ্জা এবং দেবী মূর্তি।মন্ডপটি পাতা, কাগজ এবং বাঁশের কঞ্চি দিয়ে করা হয়েছে।মায়ের মূর্তি সাজানো হয়েছে ডাকের সাজে।
চন্দননগর সার্কাস মাঠের পুজো. মন্ডপটি রাজস্থানের মহলের ন্যায় বানানো হয়েছে কাগজ্যেডং শোলা কেটে।মায়ের গহনা এবং কাপড়ে গোল্ডেন টাচ আছে।
নৈহাটীতে যেমন "বড় মা", কৃষ্ণনগরে বু"ড়ি মা" তেমনই চন্দননগরে "রাণী মা"। সবার কথায় মা খুবই জাগ্রত।
লিচু তলায় জগদ্ধাত্রী পুজো। শোলার সাজে সাজানো হয়েছে মা কে।
চন্দননগর দৈবক পাড়ায় মায়ের মন্ডপ। আলোর মালা দেখুন এখানে। ছোটবেলায় কাগজের চড়কা হাওয়ায় যেমন ঘোরাতে, তেমন চড়কা দিয়ে সাজানো হয়েছে।
লাল বাগানে বড় প্যান্ডেল হয় না। কিন্তু মা কে এই ভাবেই শোলার কাজকরা আভরণে ঢেকে দেয়।
বাগবাজারে মায়ের প্রতিমা।চন্দননগরে বেশীরভাগ প্রতিবাদ সাদা শোলার সাজে সাজানো হয়।
মধ্যাঞ্চলে মায়ের পুজো। পুরো মন্ডপটাই মঙ্গল চিহ্ন আর মা লেখায় সাজানো হয়েছে।
ফটাকগড়ায় মায়ের পুজো।মন্ডপের আড়ম্বর না থাকলেও মায়ের মুর্তি বেশ মিষ্টি এবং দর্শণীয়।
আজ এখানেই শেষ করলাম বন্ধুরা। খুব বেশী ঘুরি নি। অল্প কিছু ঘুরেছি। আরো কিছু বাকি ছিলো। আপনাদের কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। ভালো থাকবেন।আবার আসব নতুন কিছু নিয়ে।
🌸🌸🌸ধন্যবাদ🌸🌸🌸
আমি পায়েল।ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার কাছাকাছি ডাক্তার বিধান রায়ের স্বপ্নের শহর কল্যাণীর বাসিন্দা।একসময় যদিও চাকরী করেছি কিন্তু বর্তমানে ফুলটাইম ব্লগার এবং ভ্লগার।যদিও নিজেকে এখনও শিক্ষানবিশ মনে করি। আর তা ই থাকতে চাঈ।সফল হয়েছি কিনা বা কতদিনে হব তা জানি না, কিন্তু নিজের প্যাশনকেই লক্ষ্য করে এগিয়ে চলেছি।বাকিটা আপনাদের হাতে।আশাকরি আমার সাথে যুক্ত থাকলে আশাহত হবেন না।
OR
Set @rme as your proxy
চন্দননগরের পুজো তো আমরা অনেকেই দেখি, তবে তার ইতিহাস সম্পর্কে আমরা কয়জনই বা জানি। আমার নিজেরই তো জানা ছিল না। ইতিহাসটা লিখে বেশ ভালোই করেছেন। প্রতিবছর চন্দননগরের পুজো দেখবো দেখবো করে, কোন বছরেই যাওয়া হয় না। বেশ ভালই করেছেন এই পোস্ট করে। আপনার মাধ্যমে দেখে নিলাম আর কি। খুব সুন্দরও হয়েছে ফটোগ্রাফি গুলো।
হ্যাঁ আমারও এবারই প্রথম। ভীষণ ভালো লেগেছে ঘুরে। 😊
কৃষ্ণনগর আর চন্দন নগরের জগদ্ধাত্রী পূজার ধুম অনেক আগে থেকেই জানি। কিন্তু পুজোর পিছনের এই ইতিহাস গুলো একদমই জানা ছিল না। আজ প্রথমবার এভাবে জানলাম। খুব ভালো লাগলো। আর মায়ের পুজোতে যাওয়ার ইচ্ছে আছে। বুড়ি মার ছবি সব সময় আমার ব্যাগে থাকে।যেখানেই যাই সাথে করে নিয়ে যাই। মা কে রোজ বলি তার পূজোয় যেন একবার তার কাছে নিয়ে যান 🙏। সেই দিনটার অপেক্ষায় আছি। সত্যি বলতে মন চাইলেও যাওয়া হয়ে ওঠে না যদি না মা কৃপা করেন।
যাইহোক , আজকের পোস্ট থেকে আমার চোখ যেন সরাতে পারছিলাম না। কোনটা রেখে কোনটা দেখব! এক কথায় অপূর্ব 🙏।
অবশ্যই আসবেন। আমি মনে করি আপনি অনেক ভালো স্মৃতি মনে নিয়ে যাবেন। ধন্যবাদ। 😊
মায়ের প্রতিমা বরাবরই অপূর্ব।তবে আপনার মাধ্যমে
কৃষ্ণনগর ও চন্দননগরের মধ্যে পুজোর পার্থক্যটা বুঝলাম।
আপনার মাধ্যমে পূজার ইতিহাস জেনে ভালো লাগলো।
যদিও কখনো দেখা হয়নি এই পূজা তবে আপনার মাধ্যমে
দেখে ভালো লাগলো, ধন্যবাদ দিদি।
প্রিয় দিদি আপনাদের ইন্ডিয়া যে অনেক জাঁকজমক পূর্ন ভাবে পুজো হয় ৷ তা বেশ ভালো ভাবেই দেখতে পাচ্ছি প্রতিটি ফটোগ্রাফি দেখে ৷ চন্দননগর জগদ্ধাত্রী পুজোয় বেশ আনন্দ করেছেন ৷ আর এর ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পেরে অনেক ভালো লাগছে ৷ ধন্যবাদ দিদি এতো সুন্দর একটি ব্লগ উপস্থাপন করার জন্য ৷