সরকারি ব্যবস্থাপনার শোচনীয় অবস্থা।

🌼 হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম।সবাই কেমন আছেন? আশাকরছি সকলে ভালো আছেন,আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি ।আসলে বলার জন্যেই বলা ভালো আছি!

প্রায় এক মাস আগে আমি খুব বেশি সমস্যার মধ্যে দিয়ে একটা দিন পার করেছিলাম। তবে তা নিয়দ পোস্ট করবো করবো করে আর শেষ পর্যন্ত করা হয়নি। তাই ভাবলাম আজকেই আপনাদের সাথে শেয়ার করা যাক।

কয়েকদিন আগে আমি ভোটার আইডি কার্ডের ছবি তুলতে গিয়েছিলাম। আমি ভাবলাম হয়তো গিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হবে এরপরে ছবি তুলে চলে আসতে পারবো। অর্থাৎ এর বাইরে আমি আর কোনো কিছুই ভেবে যায়নি।

এরপরে বেশ অনেকক্ষণ লাইনে দাঁড়ালাম। অর্থাৎ ঐখানে আসলে লাইন বললে ভুল হবে। মানুষের জনসমুদ্র বললেও হয়তো কম বলা হবে। কিন্তু আমি দাঁড়িয়ে থাকলাম। কারণ ভোটার আইডি কার্ড টাও খুব দরকারি।

যত সময় যেতে লাগলো মানুষের পরিমাণ ততই বেশি বাড়তে লাগলো তা আপনারা ছবিগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন।

সে সাথে বিভিন্ন অনিয়ম তো আছেই। কারণ ছেলে মেয়ে কিংবা বয়স্ক ছোট অর্থাৎ যাদের বয়স কম সবমিলিয়ে খুব ঝামেলাকর একটা পরিস্থিতি। আর সরকারি ব্যবস্থাপনা যে এতোটা বাজে হতে পারে তা জাস্ট না দেখলে কখনো বুঝতেই পারতাম না।

এরপরে আমি প্রায় গেইটের কাছাকাছি চলে গিয়েছিলাম। কিন্তু হুট করে এতো বেশি মানুষের চাপ আর ধাক্কাধাক্কি বেড়ে গিয়েছিল যে একটা মুহূর্তে আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিলো। অর্থাৎ এতো বেশি মানুষ ছিলো চারপাশে যা এখানে লিখে বুঝানো সম্ভব নয় আর ঐখানে পরিস্থিতিও ছিলো না ছবি তোলার মত। আর আমার শ্বাসকষ্ট আছে এটাও নতুন নয়, হুট করেই এসবের কারণে আমার প্রচন্ড রকমের শ্বাসকষ্ট বেড়ে গিয়েছিলো। আর আমি কোনোভাবেই নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না। নিশ্বাস নিতে চাইছিলাম কিন্তু পারছিলাম না। মনে হচ্ছিলো সেই মুহূর্তে আমি মারাই যাবো।নিশ্বাস আটকে মানুষ যে মারামারি করতে পারে সেদিন আমি প্রথম বুঝতে পেরেছি।আমি চিৎকার করে বলছিলাম যে আমাকে একটু বের হতে দিন আমি ছবি তুলবো না। আসলে কেউ কারো কথা শোনার অবস্থাতেই ছিল না তখন। এরপর এক পর্যায়ে যখন আমি মাটিতে বসে পরলাম আর না পেরে অর্থাৎ অনেকটা সেন্সলেসের মতোই। এরপরে কয়েকটা মহিলা ধরে আমাকে ভীড় থেকে বের করলো,পানি খাওয়ালো।

তখন আমি গিয়েছিলাম ও একা। এরপরে আম্মুকে ফোন দিলাম, আম্মু বললো তখন ই নিতে আসবে। এরপরে আমি পরে পাশের একটি দোকানে একটু বসলাম।দোকানের ওই আঙ্কেল টা ঠান্ডা পানি দিলো। খাওয়ার পরে আবার আমি আম্মুকে ফোন দিলাম যে না দরকার নেই আমি বাসায় চলে আসছি, আর এরপর বাসায় চলে আসলাম।

এরপরে আমার খালামণিকে নিয়ে গেলাম আবার।কারণ তারিখ দিয়েছিলো সেদিনের মাত্র। খালামণি আমার জায়গায় লাইনে দাঁড়ালো। আর আমি পাশের রুমে বসে ছিলাম। কোন সকাল আটটা বাজে গিয়েছি আর আমি ছবি তুলতে পেরেছিলাম বোধহয় রাতের আটটা বাজে। তার মানে বুঝতেই পারছেন আর রাতেও কতোটা ভিড় ছিল তা এই ছবিটাতে দেখলে বুঝতেই পারবেন।

এরপরে ছবি তোলার অবস্থা দেখে তো আমি জাস্ট অবাক। অর্থাৎ এতো বেশি অন্ধকারের ভিতর কি করে ছবি তোলা যায় আমার অন্তত জানা নেই।

পরে দেখলাম অন্ধকার কাটানোর সুন্দর সুব্যবস্থা! অর্থাৎ ক্যামেরার উপরে একটা রুমের বাল্ব দিয়ে লাইটিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে! সত্যিই হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম সরকারি ব্যবস্থা দেখে।

এরপরে কোনোরকমে ছবি তুললাম। ছবিটা অবশ্যই অসম্ভব বাজে হয়েছে। তা আমি আমার এনআইডি কার্ড হাতে পাওয়ার পরেই বুঝেছি। যাই হোক একটা মানুষ মৃত্যুর কাছাকাছি চলে যায় সরকারি ব্যবস্থাপনা কতোটা খারাপ হলে তা সত্যিই এখানে কারোরই হয়তো ধারণা থাকবে না। যতক্ষণ না ওই মানুষ এই পর্যায়েটাতে এসে দাঁড়াচ্ছে।

আমি শুধুমাত্র এই কারণেই কোনদিনই কোনো সরকারি হাসপাতালে যাইনি।কারণ আমি যতটুকু জানি সরকারি প্রতিটি কাজেই এইরকম অবস্থায় হয়।

আশা করছি লেখাটি আপনাদের ভালো লাগবে।এই প্লাটফর্ম এর এই লেখাগুলো থেকে যাবে চিরকাল সে সাথে থেকে যাবে আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্যগুলোও।তাই আশা করছি আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্য দেখতে পাবো।