কাঁচা আমের জ্যাম।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আমের সিজন শুরু হতেই আমার মাথায় একটা জিনিসই ঘোরাঘুরি করে যে, কিভাবে আমি সারা বছর ধরে আম সংরক্ষণ করে রাখতে পারি, যাতে আমি সারা বছর ধরে বিভিন্নভাবে আম খেতে পারব। আসলে আম আমার খুব পছন্দের একটি ফল সেটি কাঁচা হোক আর পাকা। আমের জন্য আমি সারা বছর অপেক্ষা করে থাকি। যখনই আমএর সিজন শুরু হয়ে যায় আমি আম বিভিন্নভাবে রান্না করে খাওয়ার সাথে সাথে সংরক্ষণ করার ব্যবস্থাও শুরু করে দিই। আজকে তেমনি কিছু আম সংরক্ষণের চিন্তাভাবনা করেছি যা আমি মাঝেমধ্যেই চটজলদি সময়ে খেতে পারবো বা অন্যদের খাওয়াতে পারব। আজ করব কাঁচা আমের জ্যাম। এই জ্যাম সকালবেলা পাউরুটি অথবা রুটির সাথে চটজলদি সকালের খাবারে বা চায়ের সাথে খাওয়া যেতে পারে। কোন অস্বাস্থ্যকর উপকরণ ছাড়াই জ্যাম তৈরি হয়ে যায়। তাই বাইরে থেকে খারাপ অস্বাস্থ্যকর কেমিক্যাল যুক্ত যে কোন ফলের জ্যাম না কিনে এমন করে ঘরে বানিয়ে খাওয়া ভালো। মাত্র দুটি উপকরণে এই কাঁচা আমের জ্যাম খুবই সহজে তৈরি করা সম্ভব এবং খুবই সুস্বাদু হয়ে থাকে খেতে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক কাঁচা আমের জ্যাম তৈরি।
-:কাঁচা আমের জ্যাম তৈরির উপকরণ:-
কাঁচা আম
চিনি
এলাচ
-: কাঁচা আমের জ্যাম তৈরি পদ্ধতি:-
প্রথমেই আমি পাঁচটি মাঝারি আকারের সুন্দর কাঁচা আম নিয়ে নিলাম। এবার আমগুলোর ভালো করে খোসা ছাড়িয়ে নিলাম। খোসা ছাড়ানোর পর বেশ ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিলাম। অবশ্যই আমি আমের আটিগুলো বাদ দিয়ে শুধুমাত্র আমটা কেটে নিয়েছি। আমগুলো অনেক কচি ছিল তাই আমের আটি শক্ত হয়ে পারেন। টুকরো করে কেটে নেওয়ার ফলে বেশ তাড়াতাড়ি সুন্দর সেদ্ধ হয়ে যাবে। এবার পরিষ্কার জলে দুই তিনবার ধুয়ে নিলাম। আমগুলো ডুবে না যায় এমন ভাবে আমের পরিমাণ এর অর্ধেক পরিমাণ জল দিয়ে নিলাম। এতে করে আম সেদ্ধ হয়ে যাবে কিন্তু জল ফেলার প্রয়োজন হবে না। জল ফেলে দিলে আমের পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ ফেলে দেওয়া হয়ে যায় তাই জলটা পুরো শুকিয়ে নিয়ে সেদ্ধ করব যেন আমের পুষ্টিগুণ সব থাকে।
ওভেনে বসিয়ে দিলাম সেদ্ধ হওয়ার জন্য এবং একটা ঢাকনা দিয়ে ঢাকা দিয়ে দিলাম যেন অল্প জলেই সুন্দর করে সেদ্ধ হতে পারে। বেশ কিছুক্ষণ বাদে আম ভালো করে সেদ্ধ হয়ে গেলে ওভেনের ওপরে একটি কড়াই নিয়ে নিলাম ওই কড়াইতে সেদ্ধ করা আম টুকরোগুলো দিয়ে দিলাম। এবার দিয়ে দিলাম প্রায় ৫০০ অর্থাৎ অর্ধেক কেজি চিনি। এক কাপ মত জল দিয়ে দিলাম যেন কড়াইয়ের নিচে পুড়ে না যায় এবং চিনিটা গলে যায় ভালোভাবে। এ পর্যায়ে আম এবং চিনি ভালো করে মিশিয়ে কিছুক্ষণ নাড়াতে থাকলাম। কিছুক্ষণ পরেই চিনি গলে পুরো জলের আকার ধারণ করেছে। এপর্যায়ে দিয়ে দিলাম দুটো ছোট আকারের এলাচ। তারপর বেশ কিছুক্ষণ জাল দিতে দিতে প্রায় জল সব শুকিয়ে এলো এবং আমটা ঘনঘন হয়ে আসলো। কড়াই থেকে নামিয়ে কিছুক্ষণের জন্য ঠান্ডা করে নিলাম।
ঠান্ডা হয়ে গেলে একটি ঝাজরি তে করে ঘষে ঘষে জ্যামটা বের করে নিলাম। জ্যামএর মধ্যে কোন দলা বা আমের শক্ত কোন অংশ থাকলে ঝাজরিতে আলাদা হয়ে আসবে। সম্পূর্ণ জ্যামটা ভালো করে ঘষে ঘষে আলাদা করে নিলাম। এ পর্যায়ে বেরিয়ে এলো একদম স্বচ্ছ সুন্দর স্বাস্থ্যকর কাঁচা আমের জাম। এবার এই জ্যামটি প্রস্তুত হয়ে গেল খাওয়ার জন্য। এইভাবে আমের জ্যাম তৈরি করে একবার খেলে বারবার খেতে ইচ্ছা করবে। পাকা আম এবং কাঁচা আম দু প্রকার আম দিয়ে এই জ্যাম তৈরি করা যায়। তবে পাকা আম দিয়ে তৈরি করা জ্যাম মিষ্টি হয়ে থাকে এবং কাঁচা আম দিয়ে তৈরি করা জ্যাম একটু টক মিষ্টি খেতে হয়ে থাকে। খুবই সুস্বাদু এবং লোভনীয় এই আমের জ্যাম।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
আপনার ভাবনাটা খুব সুন্দর। আপনি যেভাবে আম সারা বছর ধরে খাওয়ার জন্য ঘরে নিজে জ্যাম বানাচ্ছেন, সেটা একদম দারুন কাজ। এতে একদিকে যেমন আমের স্বাদ অনেক দিন উপভোগ করা যাবে, অন্যদিকে বাইরে থেকে কিনে খারাপ জিনিস খাওয়ার দরকারও নেই। খুব কম উপকরণে এই জ্যাম সহজে তৈরি হয়, আর খেতেও খুব মজার। আপনার এই রকম উদ্যোগ আসলে ভালোবাসা আর যত্নের এক চমৎকার উদাহরণ।
কাঁচা আম আমারও খুবই পছন্দের । মজার একটি রেসিপি তৈরি করেছেন আপনি।আপনি যেভাবে কাঁচা আমের জ্যাম তৈরি করেছেন আমরা ওভাবে আমসত্ত্ব তৈরি করে থাকি। এরকম রেসিপি তৈরি করে আসলে সারা বছর কাঁচা আমের রেসিপিগুলো সারা বছর ধরে খাওয়া যায়। আপনার রেসিপিটি আমার কাছে বেশ ভালোই লেগেছে ধন্যবাদ আপনাকে।
কাঁচা আম খেতে এমনিতেই ভীষণ ভালো লাগে। তার মধ্যে কাঁচা আমের তৈরি এমন এমন মজাদার রেসিপি দেখলে তো ভীষণ লোভ লেগে যায়।আপনি তো খুবই মজা করে কাঁচা আম দিয়ে জ্যাম তৈরি করছেন আপু। যা পাউরুটির সাথে খেতে দারুন লাগবে।রেসিপিটি দেখতে খুবই লোভনীয় লাগছে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আম আপনার খুব পছন্দের আর সেই পছন্দ থেকে আপনি সারাবছর সংরক্ষণ করার জন্য কাঁচা আমের জ্যাম তৈরি করেছে। দারুণ বানিয়েছেন। লোভনীয় হয়েছে আপনার রেসিপিটি। ধাপে ধাপে রন্ধন প্রনালী চমৎকার সুন্দর করে আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন।ধন্যবাদ আপনাকে লোভনীয় রেসিপিটি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
বেশ অল্প উপকরণে আমের জেলী বানিয়েছেন আপু। বেশ সহজভাবে বানানোর পদ্ধতি তুলে ধরেছেন। যে কেউ চাইলেই বানিয়ে নিতে পারবে আমের এই সিজনে। ধন্যবাদ সহজভাবে আমের জেলী বানানোর পদ্ধতি শেয়ার করার জন্য।
আপনার রেসিপিটি সহজ এবং দারুণ!আমিও আগে কাঁচা আমের চাটনি বানাতাম, কিন্তু জ্যামের আইডিয়াটি নতুন! গত বছর আমি আমের পিউরি ফ্রিজে রেখে দিয়েছিলাম, সেটি পরে স্মুদি বানাতে কাজে লেগেছিল। আপনার রেসিপি এবার অবশ্যই ট্রাই করব! আপনি আপনার রেসিপিটি ধাপে ধাপে সম্পন্ন করেছেন এবং সেটা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এজন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।