কালী পূজা। পর্ব:- ৮
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আমরা নৈহাটির প্রায় সব পূজো দেখে ফেলেছি। আর হাতেগোনা দু-একটা কালী মায়ের প্যান্ডেল দেখা বাকি আছে। আসলে এটা কিন্তু সত্য কথা যে, আমরা মায়ের পূজো দেখতে বেরোই না। আমরা সেজেগুজে বের হই মায়ের পুজোর জন্য যে প্যান্ডেল করা হয়েছে সেটা কেমন হয়েছে তাই দেখার জন্য। কারণ পুজো দেখতে হলে তো আমরা যে কোন মন্দিরেই দেখতে পারি বা নিজের পাড়ায় যে প্যান্ডেল করে পুজো করে সেখানেই দেখতে পারি। কিন্তু আমরা যাই এই সুন্দর সুন্দর থিম করে প্যান্ডেল করে সেটাই দেখতে। তাই প্যান্ডেল বাকি না রেখে আর যে কয়টা প্যান্ডেল আছে দেখে নেওয়ার জন্য আমরা হেটে চলেছি। হাঁটতে হাঁটতে এবার দেখলাম একটু নতুনত্ব লাইটিং। এই লাইট গুলো দেখতে বেশ সুন্দর লাগছিল আর রাস্তা অনেকটাই আলোকিত হয়ে উঠেছে এই লাইটিং এর জন্য। রাস্তা জুড়ে যে বড় আলোকসজ্জা করা হয়েছে তার একদম ওপরে দেখা যাচ্ছে, আলোর মাধ্যমে শিব পার্বতীর ছবি তুলে ধরা হয়েছে। দেখতে খুবই সুন্দর লাগছিল।
আর তারপরে যে আলোকসজ্জা করা হয়েছে সেগুলি দেখে মনে হচ্ছিল দুটি প্রদীপ জ্বলছে। প্রদীপটি বিভিন্ন রঙের আলো দিয়ে করা হয়েছে তাই আরও বেশি ভালো লাগছিল। এই রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলাম একটি মাঠের মধ্যে। এবং দেখতে পেলাম বেশ বড় একটি প্যান্ডেল। আর এই প্যান্ডেলের সামনে অনেক সুন্দর কিছু ফুল ফুটেছে। সত্যিকারের ফুল না হলেও লাইটিং করে করা এই ফুলগুলি দেখতে অনেক সুন্দর লাগছিল। আমি তো এই ফুলগুলো সামনে গিয়ে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে দেখছিলাম। আর তার উপরে একটা প্রজাপতি করেছে যেন ফুলের মধু খেতে এসেছে। প্যান্ডেলটি করেছে পুরো হলুদ, সাদা এবং নীল রঙের তবে হলুদ রংটা একটু বেশি ফুটছে, তাই দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে।।আমরা কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ফুল দেখার পরে দেখতে পেলাম এই প্যান্ডেলে আবার ছেলেদের লাইন মেয়েদের লাইন আলাদা করে দিয়েছে। খুবই বিরক্ত সহকারে বড় মশায়ের হাতটা ছেড়ে দিতে হলো এবং আমাকে যেতে হলো মেয়েদের লাইনে আর তাকে যেতে হল ছেলেদের লাইনে।
লাইনে দাঁড়িয়ে দূর থেকে এমন ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল যেন আমাকে ছেড়ে খুব অসহায় হয়ে পড়েছে। আমার দিকে তাকাতে তাকাতে গুটি গুটি পায়ে হেঁটে এগিয়ে চলেছে কারণ ওদের লাইন তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিচ্ছিল। কিছুক্ষণ পরে আমি প্যান্ডেলের মধ্যে প্রবেশ করলাম। দেখলাম আমি ঢুকতে ঢুকতে বড় মশাই কালী মায়ের প্রতিমা দর্শন করে বেরিয়ে গেছেন। তাই এবার একাই প্রতিমা দর্শন করতে হবে। কালী মায়ের প্রতিমা দেখেই প্রথমে যেটা মনে হল মা যেন রথে করে কোথাও যাচ্ছেন। তবে শুধু কালী মা একা নয় মায়ের সাথে আছে আরো অনেক দেবতা গন। কালী মা রথে যাবার সময় শত্রু দমন করছেন এবং সাহায্যের জন্য দেবতা গনদের সঙ্গে এনেছেন। কালী মায়ের রথের নিচে দেখা যাচ্ছে অনেক অসুর আহত হয়ে পড়ে আছেন। কালী মায়ের রথ টেনে নিয়ে যাচ্ছে দুটি ঘোড়া। আর এই ঘোড়া দুটি ও যেন শত্রু দমনে মায়ের সাহায্য করছে।
শিব ঠাকুর কে এখানে দেখা যাচ্ছে মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন, এবং কালী মায়ের সাথে তিনিও শত্রু দমনে ব্যস্ত আছেন। কালী মায়ের প্রতিমা দর্শন করে প্যান্ডেলের দিকে চোখ পড়তেই দেখলাম, অনেকগুলি মেয়েদের মূর্তি এবং তারা বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছেন। আর তার চারপাশে এবং উপরের দিকে শোলা দিয়ে সুন্দর করে কারুকার্য করা। মাথার ওপরের দিকে তাকিয়ে দেখলাম অনেক বড় একটি ঝুমুর ঝোলানো রয়েছে। তার চারিপাশটাও সুন্দর কারুকার্য করা। এই ঝুমুর এবং তার চারপাশের কারুকার্য দেখে আমার কেমন রাজবাড়ীর মত ফিল হচ্ছিল। চারদিকটা দেখে এবার বাইরে বেরিয়ে গেলাম। বাইরে বেরিয়ে দেখি আমার বড় মশাই গেটের সামনেই আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আজকের দিনের মত নৈহাটি সব কালী মায়ের প্যান্ডেল দেখা হয়ে গেছে। সেই জন্য আমরা এই মাঠে মেলাতে একটু সময় ঘোরাঘুরি করে বাড়িতে চলে গেলাম।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
কালী মায়ের দারুন একটি ছবি আপলোড করে দেখালেন। কালী ঠাকুরের সঙ্গে তো ব্রহ্মা-বিষ্ণু সকলে চলে এসেছেন দেখছি। আর তার সঙ্গে মেলাটি খুব সুন্দর। পুজোর মেলা আমরা সারা বছর মিস করি। এত সুন্দর ঠাকুর প্রতিমা এবং তার সঙ্গে প্যান্ডেল জায়গাটিকে একেবারে ভরিয়ে দিয়েছে। দারুন সুন্দর একটি পোষ্ট।
নৈহাটি তে অনেক কালীপূজো হয় শুনেছি৷ আপনার পোস্টে সেই সবই দেখতে পেলাম৷ খুব ভালো লাগছে প্যান্ডাল দেখতে৷ বিশেষ করে লাইটিংগুলো৷