খেজুরের রস চুরির পরিবর্তে ৪১ টা নারকেল ডাব চুরির অবিশ্বাস্য গল্প।|বাস্তবিক গল্প| পর্ব দুই
আমার প্রিয় বন্ধুগন, সবাই কেমন আছেন? সবাইকে আমার আন্তরিক মোবারকবাদ এবং অন্তরের অন্তস্থল থেকে আপনাদেরকে জানাই শুভেচ্ছা।
পোষ্টের ভেরিয়েশন ও কমিউনিটির সৃজনশীলতা রক্ষার্থে আমি চেষ্টা করব একেক দিন একেক বিষয় নিয়ে হাজির হতে।
খেজুরের রস চুরির পরিবর্তে ৪১ টা নারকেল ডাব চুরির অবিশ্বাস্য গল্প। দ্বিতীয় পর্ব |
---|
আমার বন্ধু বলে চল চল, আমি বলি না সে কি বলতে চায় দেখি,কারণ তখন আমার বন্ধু চলে যেতে চাইলেও আমার মাথাটা গরম হয়ে গিয়েছিল। যেহেতু আমরা এখনো রস চুরি করি নাই এবং আমরা কেনই বা তার কথায় ভয় পাব। আর তাছাড়া আমরা তো কখনো চুরিও করি নাই। আজকে প্রথম এসেছি তাও এখনো চুরি করার আগ মুহূর্তে এই অবস্থা। তাহলে ও ধমকানোর কে। সে জন্য আমি দাঁড়িয়ে গেলাম।
এরপর লোকটি আমাদের কাছে আসলো। কাছে আসার পরে দেখলাম সে নিজেই ভয় পেয়ে গেছে। কারণ আমরা দুইজন ছিলাম, সে মাত্র একজন ছিল। এখন সে বলতে লাগলো আমরা কষ্ট করে খেজুর গাছ কাটি আর মানুষ রস নিয়ে যায়, এতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। এসব কথা বলতেছিল তাও আস্তে আস্তে নতস্বরে। তখন চিন্তা করলাম, না লোকটা ও হয়তো ভয় পেয়েছে।
তখন বললাম যে আসলে আমরা কখনো চুরি করি নাই। তবে এই প্রথমবার আসলাম তাও কোথাও পেলাম না। তবে আপনি যদি বিক্রি করেন আমরা কিনে নেব, কারন শখ হয়েছিল কাঁচা রস খাওয়ার, সেজন্য। লোকটি বলল না অনেকেই নিয়ে যায়, যার কারণে আমরা নিজেরাও পাই না,কিভাবে বিক্রি করব।এইসব ভালো-মন্দ কথা বলে আমরা সেখান থেকে চলে আসলাম।
পরবর্তীতে তো নিজেকে মানাতে পারতেছি না, একদিকে ভারী রাত, হাঁড় কাঁপা শীতের মধ্যে, আবার ছোটখাটো হলেও একটু অপমানিত হলাম। পরবর্তীতে চিন্তা করলাম না আজকে যেহেতু এত রাত অপেক্ষা করলাম, একটা না একটা দিয়ে পোষাতে হবে।তখন আমরা প্ল্যান চেঞ্জ করলাম। ভাবলাম খেজুরের রস তো পেলাম না নারিকেলের ডাব খেয়ে পোষাতে হবে।
তখন আমরা বাড়িতে গিয়ে বোতলটা রেখে একটা গামছা নিয়ে বের হয়ে গেলাম, সাথে একটা দা নিয়ে নিলাম। প্রথমে আমাদের বাড়ি থেকে একটু দূরে একলা এক বাড়িতে গিয়ে সেখান থেকে আমার বন্ধু গাছে উঠে ১১ টা ডাব পাড়ে। তার মধ্যে একটা পানিতে পড়ে যায় বাকি দশটা আমরা আমাদের খামারের কর্নারে বসে বসে খেলাম।তখনও মনে হচ্ছে যে কোথাও যেন রাগ জমে আছে কারণ যে কাজে এসেছি সেটা তো হলো না বরং অপমানিত হলাম। সেজন্য রাগটা কোনভাবেই যেন কমছে না।
পরে দুজনে আবার চিন্তা করলাম না এটুকু খাওয়াতে কিছুই হবে না,আরও খেতে হবে। তখন গেলাম এক জ্যাঠাতো ভাইয়ের বাড়িতে। সেখানে গিয়ে জ্যাঠাতো ভাইকে কল দিলাম। চিন্তা করলাম তাকে ডেকে একসাথে চুরি করবো তাদের গাছ থেকে। আর একসাথে কয়েকটা নারিকেলের ডাব খেয়ে চলে যাব।এদিকে তাদের ডাব চুরি করা অনেক রিস্ক এর কাজ।কারণ ছোট জ্যাঠাতো ভাই রয়েছে, সে অনেক ডেঞ্জারাস টাইপের। শীতের রাত্রিতে যদি সে শুনতে পায় কেউ তাদের ডাব চুরি করতেছে তাহলে সে প্রথমে এসে দা দিয়ে কল্লাটা ফেলে দিবে। এই রকম ছিল সেই ছোট ভাইটা।
যদিও আমাদেরকে দেখলে বা চিনলে কিছু করবে না। কিন্তু প্রথমে তো আর কে ডাব খাচ্ছে সেটা দেখবে না, কল্লাটা ফেলে তার পরেই দেখবে। সেই ভয়েই প্রথমেই তার বড় ভাই মানে আমাদের বন্ধুকে কল দিলাম। কিন্তু তার ফোনে কোনভাবেই কলটা যাচ্ছিল না। চিন্তা করলাম যাই হোক কি আর করার রাগ তো আছেই মাথায়। তাই রিস্ক নিয়ে আমার বন্ধুকে বললাম শুরু কর দু-চারটা পেড়ে নে। হ্যাঁ মাঝখানে বলে রাখি দুটো গাছেই কিন্তু আমার বন্ধু উঠেছিল। কারণ আমি গাছে উঠতে পারিনা।
তখন বন্ধু উঠে প্রথমেই বিসমিল্লাহ বলে একটা কোপ দিল নারিকেলের থোকার মধ্যে। এক থোকা নারিকেলের মধ্যে ছিল একত্রিশটা নারিকেলর ডাব। যদিও বন্ধু চেয়েছিল ছোট একটি থোকায় কোপ দিতে, কিন্তু তার সামনে বড়টা ছিল তাই ওটাতে কোপ দিয়ে ফেলেছে ভুলে। পরবর্তীতে এক কি দুই কোপে পুরো থোকা নিচে পড়ে যায় এবং বিশটা নারিকেল চারদিকে ছিটকে যায়। আর এগারোটা নারিকেল থোকায় ছিলো সেগুলো আমি নিজে একা খামারের কর্নারে রেখে আসি।
তারপর আবার এখানে এসে বাকি ২০টি নারিকেল এর ডাব আমরা গামছায় করে নিয়ে গেলাম, সেই যেখানে প্রথমে খেয়েছিলাম সেই কর্ণারে। অবশেষে সেখানে বসে বসে খাওয়া শুরু করলাম। একটা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত আমরা এই ৩১ টা ডাব খেয়েছিলাম। আর সব মিলিয়ে টোটাল হয়েছে ৪১টা ডাব। যদিও এই বিষয়টি কেউ বিশ্বাস করবে না, তবে আসলেই বিশ্বাস করার মতো ও নয়। তবে ডাবের সাইজটি বেশি ছিল না, পানি সর্বোচ্চ এক গ্লাসের মত করে হবে।
কেউ গত পর্ব পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন 👇 |
---|
তো বন্ধুরা আজকে এতটুকু ,আর আমার পোস্ট এ যদি কোন ভুল ত্রুটি থাকে সেটা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।এই বলে আজকের মত এখানেই বিদায় নিলাম।
♥️আল্লাহ হাফেজ♥️ |
---|
আজ আর নয়, আপনার নিকটতম এবং প্রিয়জনদের সাথে সুস্থ ও নিরাপদে থাকুন, নিজের যত্ন নিন। আপনার দিনটি শুভ হোক
ফোনের বিশদ বিবরণ
ক্যামেরা | স্যামসাং গ্যালাক্সি |
---|---|
পোষ্ট | গল্প |
মডেল | M32 |
ফটোগ্রাফার | @nevlu123 |
সম্পাদনা | শুধু সেচুরেশন |
অবস্থান | বাংলাদেশ। |
আমি বাংলাদেশ থেকে এমদাদ হোসেন নিভলু। আমার স্টিমিট আইডি হল @ nevlu123। আমি ফেনী জেলায় থাকি। আমার কাজ কম্পিউটার শেখানো, আমার একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে। যেখানে আমি স্টিমিট কাজের পাশাপাশি আমার সময় কাটাই। @nevlu123 নামে আমার একটি ডিসকর্ড অ্যাকাউন্ট আছে। আমার বয়স এখন 30 বছর। আমি জাতিগতভাবে মুসলিম বা আমি মুসলিম কিন্তু ভাষাগতভাবে আমি বাঙালি। কারণ আমি বাংলা ভাষায় কথা বলি, তাই ভাষাগতভাবে আমি বাঙালি।
https://twitter.com/Nevlu123/status/1611980093517365248?s=20&t=5D7DcapWn7JXTJBp7amZwA
শীতের দিনে গাছের রস চুরি করে খাওয়ার মজাই আলাদা। আমরাই ছোটবেলায় যখন গ্রামে যেতাম তখন এই কাজটি করতাম চাচাতো ফুফাতো ভাই বোনরা মিলে। সাথে একটি পাইপ নিয়ে যেতাম যাতে কলস থেকে চুমুক দিয়ে খাওয়া যেত। তবে ডাব চুরি করার গল্প অনেক শুনেছি আজকে আপনি তো একেবারে অবিশ্বাস্য গল্প বললেন। ৪১ টি ডাব আপনারা দুজনে মিলে খেয়েছেন যত ছোটই হোক এক গ্লাস করে খেতেও তো কষ্ট হয়। শেষ পর্যন্ত নিজের জেঠার গাছের ডাব চুরি করে খেয়ে রাগটা পোষালেন।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু খুব চমৎকার ও সাবলীল ভাষায় একটি মন্তব্য করার জন্য।
খেজুরের রস না পাওয়াই তার থেকে আরও বেশি অপমানিত হলেন সেই রাগ পোশার জন্য আপনারা দুই বন্ধু ৪১ টা ডাব একাই খেলি নিলেন।সত্যিই এটা কিন্তু অবিশ্বাস্যের ঘটনা কিন্তু আমাদের তো বিশ্বাস করতে হবে আপনি যেভাবে বলেছেন বিশ্বাস করার কথা। অনেক বছর আগের ছিল এই ঘটনাটি। আপনি নারিকেল ডাব একটু বেশি পছন্দ করেন তা আমি জানি তাই আমি বিশ্বাস করতে বাধ্য হলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক ধন্যবাদ খুব সুন্দর গোছালো মন্তব্য করার জন্য।
খেজুরের রস চুরি করতে না পারায় অবশেষে ডাব চুরি করলেন। তবে এক রাতে দুজনে মিলে এতগুলো ডাব একসাথে খেয়ে শেষ করে করে দিলেন। এবং ডাব খেয়ে নিজের জেদ কমালেন। খেজুরের রস চুরির পরিবর্তে ডাব চুরির গল্পটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আসলে স্মরণীয় করার মত এই একটি উপায় ছিল। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
প্রথমে দশটি খেলেন তারপরে আরো ৩১ টি নারিকেল ডাব খেলেন দুই বন্ধু মিলে। কোন রকম ম্যানেজ করে যদি আরো ৯ টি খেয়ে নিতেন তাহলে আপনারা দুই বন্ধু মিলে হাফ সেঞ্চুরি করতে পারতেন হাহাহা। যাই হোক আপনাদের দুজনকে দেখে মনে হয় লোকটি ভয় পেয়েছিল। লোকটি একা ছিল তাই কিছু করতে পারত না। এতগুলো ডাব খেয়ে রাগ পোষালেন। এরকম ঘটনাগুলো কিন্তু স্মৃতি হিসেবে আজীবন থেকে যায়। ধন্যবাদ।
একদম ঠিক বলেছেন আরও নয়টি হলে হাফ সেঞ্চুরি হয়ে যেত। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
রাতে খেজুরের রস না পেয়ে অনেকগুলো ডাব খেয়ে ফেলেন। লোকটি ভালো বিদায় আপনাদেরকে তেমন কিছু বলে নাই। তারপরও অনেক রাগ হল আপনাদের। দুই জায়গা থেকে ৪১ টি ডাব পাটলেন। চাচাতো ভাইয়ের গাছ থেকে যখন এতগুলো ডাব পাটলেন তখন মনে হয় একটু ভয় পেলেন। আপনার ছোট একটি জেঠাতো ভাই ডেঞ্জারেস শুনে আমারও একটু ভয় লাগলো। যাক এই অভিজ্ঞতার কথা আপনাদের অনেকদিন মনে থাকবে। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে খুব সুন্দর করে শেয়ার করার জন্য।
সত্যিই ছোট ভাইটা অনেক মারাত্মক ছিল। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
বাপরে একেবারে ৪১ টা ডাব খেলেন তবে 🥴 খেজুরের রস খাওয়া না হলেও আপনার সবচয়ে প্রিয় জিনিস ডাব এতগুলো আপনারা দুই বন্ধু খেয়ে নিশ্চয়ই অনেক মজা করেছেন। তবে এই ঠাণ্ডায় রাত ৩:৩০ টে পর্যন্ত 🥶।
জি আপু আসলে রাগ করেই খেয়েছিতো, যার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।