হয়তো এভাবেই বহু যুগ আগে সৃষ্টি হয়েছিল অনন্তের চিহ্ন, যা ঘুরছে মানুষের হাতে হাতে।

in আমার বাংলা ব্লগlast month

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,


সমস্ত ভারতবাসী এবং বাংলাদেশের বাঙালি সহযাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।


character-4852542_1280.jpg
সোর্স








আশা করি আপনারা ঈশ্বরের কৃপায় সুস্থ আছেন, সব দিক থেকে ভালোও আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।



গতকাল প্রচন্ড ব্যস্ততার কারণে আসতে পারিনি। একটু ফাঁকা হতেই ভাবলাম ব্লগটা লিখে ফেলি। তবে আজ মনটা একেবারেই ভালো নেই। তার বিশেষ কারণ হল গতকাল এখানে লিখিনি৷ আসলে আমার বাংলা ব্লগে নিয়মিত লেখা অভ্যেসে দাঁড়িয়ে গেছে৷ তাই না লিখলে মন খারাপ হয়। মনে হয় দিনটাই পূরণ হয়নি৷ এই যে এখন লিখতে এসেছি আস্তে আস্তে সমস্ত মেঘ কেটে যাচ্ছে৷

খুব সাম্প্রতিক কালে পৌরাণিক কাহিনী নিয়ে একটি বই পড়তে গিয়ে বিষয়টা চোখে পড়ে। পরে অনেক ভেবেছি। হয়তো এটাই ঠিক হয়তো না। এই টানাপোড়েনের মাঝে ঠিক করলাম যা মনে হচ্ছে তা লিখে রাখি। আজ লিখে রাখলে কাল হয়তো আমিই খণ্ডাতে পারব৷ বা অন্য কেউ। কারণ সমৃদ্ধশালী শিক্ষা ধাপে ধাপে শুধু এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। বন্ধুরা, আজ কথা বলব হাজার হাজার বছর আগের। যখন মানুষ লিখতে জানত না। যখন ধর্ম বলতে কেবল মাত্র ছিল অনন্ত মানুষের যাত্রাপথ- জীবন ধর্ম। তখন জীবনের পাঠ শুনে শুনে মনে রাখতে হত। অর্থাৎ শ্রুতি। সেই শ্রুতি কালের উৎকৃষ্ট পাঠ যা পরবর্তীতে গ্রন্থিত হয় বেদ নামে। আর তারই বর্ধিত অংশ হল উপনিষদ৷

আমাদের বর্তমান জীবনধারায় একটি প্রচলিত কথা আছে যা বেশি বাঙাল ভাষাতেই ব্যবহৃত হয়-

সবই ব্যাদে আছে

সব বেদ-এ আছে, এ কথা ডঃ মেঘনাদ সাহা কে ঢাকা নিবাসী এক উকিল বলেছিলেন তার বৈজ্ঞানিক কাজ বিষয়ক কথা শুনে৷ কিন্তু এই একটা কথায় তিনিও খানিক ধাক্কা খেয়ে শুরু করেছিলেন যুগের উচ্চারণ সম্পর্কে জ্ঞান জোগাড় করতে। পরবর্তীতে অনেক কিছু পেয়েও ছিলেন। তাই নিয়ে তাঁর বিস্তর লেখালিখি আছে৷ তবে আজকের বিষয় বেদ নিয়ে নয়, মেঘনাদ সাহা নিয়েও নয়। আজ আমি লিপি বদ্ধ করব অনন্তের চিহ্ন কিভাবে সাধারণ একটি খেলনা বা বাদ্য যন্ত্র যা বৈদিক যুগ বা তারও আগে থেকে আজও প্রচলিত, যার মধ্যে শায়িত বিজ্ঞানের সূত্র।

বাদ্যযন্ত্রটি হল ডুগডুগি বা ডমরু৷

istockphoto-1172139735-612x612.jpg
সোর্স

কথিত আছে সর্বপ্রথম তাল বাদ্য হল এই ডমরু বা ডুগডুগি যার উৎপত্তি প্রাক বৈদিক যুগে। হঠাৎ সেই যুগে মানুষ ডমরু কে কেন প্রচলিত করতে চেয়েছিল? বিশেষ কি কারণ আছে? এই যেমন ধরুন, গনেশ বা নরসিংহ কে দেখলে আমার বারবারই মনে হয় ধরাতলের চিকিৎসাশাস্ত্রে একদা ব্রেন ট্রান্সপ্লান্ট করা হত। হয়তো তা পশুর সাথেই৷ তেমনি ওই পৌরাণিক কাহিনী নির্ভরশীল উপন্যাস পড়ে আমার মনে হয়েছে ডুগডুগির উৎপত্তি সত্যিই বিজ্ঞানের আবিষ্কারকে ধরে রাখার জন্য। আজ আমরা যেমন জানি কালের ধ্বংস হবে ও নতুনের সূত্রপাত হবে৷ সে যুগেও মানুষ ভাবত। আমরা আমাদের মূল্যবান আবিষ্কার নানান ভাবে স্টোর করার চেষ্টা করছি তেমনি তারাও করত। তাদের পদ্ধতি হয়তো আলাদা ছিল৷ কিন্তু তারাও করত৷ যার প্রমাণ আমরা বহুক্ষেত্রে পেয়েছি। ডমরু এমনই এক বাদ্যযন্ত্র যা অনন্তকে মানুষের হাতে হাতে বিলি করে। যার তালে তালে বানর নাচে, ভাল্লুক খেলে ফেরিওয়ালাও জিনিস বেচে৷ অথচ বিলুপ্ত হয়ে যায়নি৷ সেটা কেমন? তার জন্য আমি একটি ছবি এঁকেছি তা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।

InShot_20240921_193253781.jpg

ছবির প্রথমেই একটি ডমরুর ছবি এঁকেছি। তার নিচে ডমরুর জ্যামিতিক আকার। এই জ্যামিতিক আকারের চার কোনে চার যুগের নাম এবং কিছু অ্যারো চিহ্ন দিয়েছি। এই চার যুগের নাম কেন ব্যবহার করলাম? বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টির কালগণনাকে যুগচক্রে ফেললে চারটে যুগ হয়। যা প্রাক বৈদিক যুগ থেকেই প্রচলিত। সত্য যুগ, ত্রেতা যুগ, দ্বাপর যুগ এবং কলি যুগ। এই চার যুগ হাজার বার (সম্ভবত) ফুরোলে শেষ হয় এক কল্প। এবং একটা কল্প শেষ হলে শুরু হয় নতুন কল্প। অর্থাৎ একটা মহাধ্বংসের পর পুনরায় সৃষ্টি।

আমি যেভাবে অ্যারো দিয়েছি ঠিক সেই ভাবে একেবারে নিচের ছবিতে পেন চালিয়েছি। মানে অ্যারোর দিক নির্দেশ মেনে৷ প্রথম প্রথম আস্তে আস্তে চালিয়েছি। ফলত কোণগুলো ছুঁতে পারছিলাম। তারপর গতি বাড়িয়েছি। এবং গতি ক্রমশ বাড়িয়েই গেছি। তখন আর কোণগুলো আঁকা যায়নি। সেগুলো গোলাকার হয়ে গেছে। এবং ইনফিনিটি অর্থাৎ অনন্তের সিম্বল বা চিহ্ন তৈরি হয়েছে৷ একটি ডমরুকেও দ্রুত গতিতে নাড়ালে এই চিহ্নই তৈরি হয়।

এসব পড়ে মনে হয় যেন দুয়ে দুয়ে চার করতে চেয়েছে বর্তমান যুগ। কিন্তু সত্যিই কি তাই? সত্যিই কি সব কাকতালীয়? জানি না প্রশ্ন আমারও মনে, তবে জেনেছি যখন লেখা প্রয়োজন। ডকুমেন্টেশন সব কিছুরই দরকার। তাই লিখে রাখলাম। যে কয়জন এই লেখাটা পড়বেন তাঁরা প্রত্যেকেই আমার থেকে জানবেন। হয়তো একই প্রশ্ন আসবে আমার যেমন ভেতরে চলছে৷ সবই কি কাকতালীয়? নাকি দুয়ে দুয়ে চার করার চেষ্টা? সত্যিই যদি তাই হয় তবে চার তো হচ্ছে। প্রাক বৈদিক যুগের এক ধারণা বা আবিষ্কার এমন কথাই হয়তো যুগের পর যুগ ধরে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছে। অসম্ভব যে তারও প্রমাণ নেই।

ভাবো, ভাবো, ভাবা প্র‍্যাক্টিস করো। (ঋত্বিক ঘটক)

না ভাবলে কিভাবে আরও ধাপ পার করব? তাই না?

বন্ধুরা, আমার ভাবনা চলতে থাকুক, পরে এমন আরও অনেক ভাবনা নিয়ে আসব আপনাদের মাঝে৷ আজকের লেখা এখানেই শেষ করছি। আবার আগামীকাল...

টা টা

1000205476.png


1000216462.png

পোস্টের ধরণএলোমেলো চিন্তাধারা
শব্দকারনীলম সামন্ত
লোকেশনপুণে,মহারাষ্ট্র


1000216466.jpg


৫% বেনেফিশিয়ারি এবিবি স্কুলকে এবং ১০% বেনেফিশিয়ারি লাজুকখ্যাঁককে


1000192865.png


~লেখক পরিচিতি~

1000162998.jpg

আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিতব্য গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা



কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।

🌾🌾🌾🌾🌾🌾🌾🌾


Drawing_4.png

1000205458.png

InShot_20240918_223755649.jpg

1000205505.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last month 

সুন্দর একটি বৈজ্ঞানিক পোস্ট এবং যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা। পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো কারণ এর মাধ্যমে এক অজানার বলয় যেন মানুষের সামনে উন্মুক্ত হয়ে গেল। ছবি এঁকে সুন্দর করে বিষয়টি বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আরো সহজ থেকে সহজতর হয়ে গেল পুরো বিষয়টি। আমাদের পুরাণগুলি সত্যিই যেন এক ব্রহ্মাণ্ড গোলক। সেখানে নেই এমন কিছুই যেন পাওয়াই যায় না। সবকিছুই বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার দ্বারা এক সুন্দর উপস্থাপনায় বহু হাজার বছর আগে প্রকাশ করা হয়ে গেছে।

 last month 

চেষ্টা করছি। এইগুলো আমার কাছে এক একটা ধাঁধা৷

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 68245.80
ETH 2509.65
USDT 1.00
SBD 2.52