স্বরচিত কবিতা || নীলম সামন্ত
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,
সমস্ত ভারতবাসী এবং বাংলাদেশের বাঙালি সহযাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
আশা করি আপনারা ঈশ্বরের কৃপায় সুস্থ আছেন, সব দিক থেকে ভালোও আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।
অনেকদিন হল আপনাদের সাথে কবিতা শেয়ার করিনি। আজ অবশ্য অন্য কিছু নিয়ে লিখব ভেবেছিলাম। কিন্তু আমার নেটওয়ার্কের এতোই দূর অবস্থা যে কোন একটাও ছবি আপলোড করতে পারছি না৷ আসলে আমি কেরালা বেড়াতে এসেছি। আজ আছি ভারকালাম বীচে৷ এই বীচটি শহর থেকে অনেকটাই বাইরে। আর খুব একটা উন্নতও হয়নি৷ তবে ছুটির মরসুমের কারণে ভিড়ের অভাব নেই৷ এখানে বীচে যেতে হলে অনেকগুলো সিঁড়ি ভেঙে নিচে যেতে হয়। যদিও বীচের ধারে বেশ কিছু দোকানদানী হয়েছে। হোটেল পাতিও মোটামুটি ভালোই। যাইহোক ভ্রমণ প্রসঙ্গে ব্লগ তো লিখবই। তখন ডিটেইলস বলব। আজ বরং গরমের জায়গা থেকে আপনাদের জন্য আবারও শীতের লেখা শেয়ার করি৷ সেই একই জিনিস, গদ্য আকারে কবিতা। অর্থাৎ গদ্য কবিতা।
শৈত্যকথা সিরিজ - ৩ ও ৪
এবং মিছিল মিছিল করে পাগল ছেলে মেয়েরা একটি পুরনো বাড়ির দেওয়ালে ঝকঝকে রঙ দিয়ে ফুল লতাপাতায় ভরিয়ে তুলল। দরজার ভাঙাচোরায় নির্লোভ পাখি। জানালায় বিলাপ। মেঝেতে দীর্ঘ অপেক্ষা। কিসের তাই নিয়ে অজস্র ব্যানার৷ শহরে নবান্ন নেই তাই ঢুকে পড়চ্ছে নবাবজাদা সম্মেলন।
এমত অবস্থায় আপনি মুখ ফিরিয়ে আয়নার সাথে কথা বলবেন নাকি জুতোর লেসে অংকের সুত্র প্রয়োগ করবেন তা একমাত্র ক্ষণিকের অনুষ্ঠান। তবে বাড়ি থেকে বেরনোর সময় সোজা হাঁটলে কাঁধে বসতে পারে কোন পাখি কিংবা পায়ের ছাপে দলাপাকা আগুন।
আগুন ভয়ানক কি?
আগুন+উড়ান = আগুনপাখি—
উপন্যাসের পাতায় সে পুড়িয়ে দিয়েছিল হঠাৎ লোভ এবং জবরদস্তির পাটাতন।
খানিকটা আগুন আমিও জমিয়েছি পিঠের দিকে, তার ওপর ফুলের বাগান। মধু খাবার আগে মৌমাছিদের পা ধোয়ার কথা উল্লেখ করেছি। কারণ শীত বা বসন্ত ঋতু যাইহোক না কেন, ট্রেসপাসারস উইল বি প্রহিবিটেড।
পতঙ্গ প্রিয় মানুষের শরীর কখন যে পতঙ্গ হয়ে যায় তা বোধহয় প্রকৃতি নিজেও জানে না। এই যে রাত জেগে লিখছি, ঘড়ির কাঁটা আর ঝিঁঝিঁর ডাকে কতখানি ধুলো উড়ছে বুঝতে পারি না, তবে শীত এলে ধুলো ওড়ে, হাত-পায়ে খড়ি ফোটে। হাঁটু মুড়ে বসা শরীরগুলোতে স্পষ্ট হয় এই সব শীতের দাগ৷ এই আপেক্ষিক বিষয়গুলিই সাহিত্যের উপকরণ, ওই যেমন অন্নপূর্ণা আর পিঠেপুলি।
আরেকটু ভেতরে গেলেই দৃঢ় হাড়গুলোর মতো স্পষ্ট হয় খিদে। তার রকমফেরে ঘরের বৌ সব মাথায় ঘোমটা টানে, বাহার দেওয়া পোশাকে ঘুম দেয় অসংলগ্ন বেড়াল। যেন অভুক্ত শরীর মাছের গন্ধে ওঁত পাতে—
দেখতে দেখতে অগ্রহায়ণ গাঢ় হয়, চাদরের ভিতর হিম জমে। দেহাতি চাঁদ দেখে সাধনার পথ প্রসস্থ হয়। মার্গ দর্শন করানোর জন্য একে একে ঘরে ঢুকে পড়ে চিরঞ্জীবী ছায়ারা৷ সাজ খুলে দিই। এখন মজ্জায় মজ্জায় কোলাকুলির সময়। এখন ব্রহ্মজ্ঞানের আলোয় শীত আর কুয়াশার নির্ভরতা কমে যাবার সময়।
আজ আপনাদের এই সিরিজের আরও দুটো কবিতা দিলাম৷ পরে আবার দেব। অনেকেই বলেন লেখা বুঝতে অসুবিধে হয়। তবে আমার মনে হয় কোন লেখা একটু যত্ন করে পড়লে তার একটা না একটা অর্থ ঠিকই বোঝা যায়৷
আজ এ পর্যন্তই থাক। আবার আগামীকাল আসব৷ অন্য কিছু নিয়ে। আপনারা ভালো থাকুন ততক্ষণ।
টা টা
পোস্টের ধরণ | ক্রিয়েটিভ রাইটিং |
---|---|
কলমওয়ালা | নীলম সামন্ত |
মাধ্যম | স্যামসাং এফ৫৪ |
লোকেশন | পুণে,মহারাষ্ট্র |
ব্যবহৃত অ্যাপ | ক্যানভা, অনুলিপি |
১০% বেনেফিশিয়ারি লাজুকখ্যাঁককে
~লেখক পরিচিতি~
আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশ ও ইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিতব্য গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আমার বাংলা ব্লগ এর অনেক সদস্য কবিতা লেখে। সবার কবিতা সাধারণ হলেও আপনার কবিতা সব সময় ভিন্ন হয়! আপনার কবিতা সবার থেকে আলাদা হয় আর ভালো লাগার কথা ভাষায় প্রকাশ করতে চাইনা আপু। অনেক অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য এভাবেই আমাদের জন্য সুন্দর সুন্দর কবিতা লেখেন।
কবিতা তো আপু অনেক দিনই লিখি৷ ছোটবেলায় যেমন লিখতাম এখানকার বন্ধুরা সেরকম লেখেন৷ তারপর লিখতে লিখতে পড়তে পড়তে আমি অনেক কিছু শিখেছি৷ আসলে কবিতা আমার আরও একটা জীবন৷ তাই হয়তো আপনার এতো ভালো লাগে৷ ঠিক যেমন আমরা অনেকেই আঁকি৷ কিন্তু আর্টিস্ট আপনি৷
আপনার লেখা আজকের এই নীলসাগর কবিতাটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। খুবই সুন্দর ভাষায় ছন্দে মিলিয়ে লিখেছেন যার কারণে পড়ে মজা পেলাম।
আপনি হয় অন্যের কবিতা পড়ে আমার এখানে কমেন্ট করেছেন নয় আমার লেখাটা না পড়েই কমেন্ট করেছেন৷
আজ আপনি আমাদের মাঝে দারুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছেন। আসলে প্রতিনিয়ত আপনার পোস্টগুলো করতে আমার খুব ভালো লাগে। এত সুন্দর সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ দাদা৷ আপনি পড়লেন আর আমার এই সাধারণ লেখা আপনার পছন্দ হয়েছে জেনে ভালো লাগল।
দারুন সুন্দর দুটো মুক্তগদ্য শেয়ার করলি। কোনটা ছেড়ে কোনটা কথা বলি। দুটো মুক্ত গদ্যই অসাধারণ লেখা হয়েছে। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার দ্বিতীয়টার যাপন খুব ভালো লাগলো। যেন ধাপে ধাপে সম্পূর্ণ একটা জীবন কাহিনী উঠে এলো মুক্তগদ্যের মাধ্যমে। শীতের আঙ্গিকে লেখা গদ্যগুলি অসাধারণ হয়েছে।
আপনার কবিতা টা গতানুগতিক ধারার বাইরের ছিল। অনেকে এটাকে গল্প বলে ভুল করতেই পারে। তবে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে আপু। দারুণ লিখেছেন কবিতা টা আপু। বেশ ভালো লাগল। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।