শিক্ষণীয় ঘটনা: জমি বিক্রি করে কাঁঠালের দাম পরিশোধ।
আসসালামু আলাইকুম
সবাই কেমন আছেন? আশা করি আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো সুস্থ আছি। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে নতুন ব্লগ শুরু করলাম।
কিছুদিন আগে একজন বড় ভাইয়ের কাছ থেকে আমি এই গল্পটি শুনেছিলাম। তার বাবার সাথে ঘটেছিল এটি। বড় ভাইয়ের বাবা কাঁঠাল খুবই পছন্দ করত। যেকোনো বিভিন্ন জায়গা থেকে, বিভিন্ন সময় কাঁঠাল নিয়ে আসতো। পরিবারের সবাইকে নিয়ে কাঁঠাল খেতে ই পছন্দ করত।
তার বাবা একজন মসজিদের মোয়াজ্জেম ছিলেন ।তাদের বাড়ির পাশের গ্রামেই ছিল তার মসজিদ। বাড়ি থেকে আসা-যাওয়া করেই মসজিদের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। দীর্ঘ ৪০ বছর যাবত একটি মসজিদে ছিলেন তিনি। তিনি একজন কোরআনের হাফেজ ছিলেন। গ্রামের মধ্যে তার অনেক সম্মান। সব সময় গ্রামের সবাই তাকে অনেক ভালো একজন মানুষ হিসেবে পরিচিত রয়েছে। যেকোনো ছোট কিংবা বড় অনুষ্ঠানে তাকে নিমন্ত্রণ না করলে যেন তাদের অনুষ্ঠানগুলো পরিপূর্ণ হয় না।
তার আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে যখনই যায় তখনই কাঁঠাল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করত। সৃজনে বা সৃজন ছাড়া সব সময় তিনি কাঁঠাল খেত। বড় ভাই বলেছে একদিন খাগড়াছড়ি গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে অনেক বড় বড় কাঁঠাল নিয়ে এসেছিল। আত্মীয়-স্বজন সবাইকে দিয়ে আবার নিজের জন্য ও রেখেছে। সেদিন অনেক টাকা দিয়ে কাঁঠাল গুলো কিনেছিল।
তিনি যে গ্রামে ইমামতি করতেন সে গ্রাম থেকে আসার পথেই একটি কাঁঠালের আড়ত ছিল। সেখান থেকে বিভিন্ন জায়গায় কাঁঠাল যেত। অনেক ডিসটিক থেকে সেখানে কাঁঠাল আন্ত এবং এখান থেকে বিভিন্ন জায়গায় যেত। এজন্য প্রতি নিয়ত তার বাবা বাড়িতে আসার সময় একটি একটি কাঁঠাল নিয়ে আসতো। এভাবে অনেক বছর যাবত তিনি কাঁঠাল নিয়ে আসতো। অনেক সময় টাকা দিত আবার অনেক সময় টাকা দিতে পারতো না। কিন্তু গ্রামের মধ্যে তার সম্মান থাকার কারণে সব সময় দোকানের কর্মকর্তা টাকা চাইতো না তার কাছে। সব সময় খাতায় লিখে রাখত।
যখন তার কাছে টাকা চাইতো তখন তিনি বলতো একসময় একসাথে টাকা দিয়ে দিব। কিন্তু গ্রামের অনেক প্রিয় মানুষ হওয়ার কারণে কখনোই কেউ তাকে নিয়ে দুই কথা বলত না। কারণ সবারই বিশ্বাস ছিল, টাকা দিয়ে দিবে। তিনি যখন দেখল দীর্ঘদিন যাবত সে টাকা দেয় নাই। তখনই সে একটি জমিন বিক্রি করে দিল। জমিন বিক্রি করে তার সবগুলো টাকা একসাথে পরিশোধ করে দিল। এ বিষয়ে নিয়ে গ্রামের মধ্যে একটি আড়োলন সৃষ্টি হয়েছিল। তার প্রতি গ্রামের মানুষের শ্রদ্ধা আরো বেশি বেড়ে গেল।
বিঃ এখান থেকে একটি শিক্ষা রয়েছে আমাদের। কারো টাকা মেরে খাওয়া উচিত নয়। কোন মানুষের টাকা মেরে সে যদি মক্কা-মদিনায় হজ্জ করা হয় তাহলে, তাহলেও লাভ নেই। মানবিক হওয়া এবং মানবতার পক্ষে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সকল ধর্মের মানুষকে মানুষ হিসাবে প্রাধান্য দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সৃষ্টিকর্তা আমাদের সকল বস্তুর উর্ধ্বে করে সৃষ্টি করেছেন।
নিজেকে নিয়ে কিছু কথা
আমার নাম নুরুল আলম রকি। আমার steemit I'd narocky71। আমি বাংলাদেশী নাগরিক । বাংলাদেশে বসবাস করি। তার সাথে সাথে আমি বিশ্বনাগরিক। আমি বাংলা ভাষায় কথা বলি। বাংলা ভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করি। আমি বাংলা ভাষাকে ভালবাসি। আমি ফটোগ্রাফি করতে ও ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে জল রং দিয়ে পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। যখনই আমার সময় এবং হাতে টাকা থাকে তখন ভ্রমণ করতে বেরিয়ে পড়ি। বিশেষ করে আমি ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি অনেক বছর আগ থেকে ফটোগ্রাফি করে থাকি। কিন্তু বিশেষ করে ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি বেশি করা হয়। বর্তমানে তার সাথে আর্ট করতে অনেক ভালোবাসি। বর্তমানে আমি বেশি সময় কাটাই আর্ট শিখতে। বর্তমানে আমার স্বপ্ন, আমি একজন ভালো ফটোগ্রাফার, ও একজন ভালো আর্টিস্ট হব। ( ফি আমানিল্লাহ)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
আপনার গল্পটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে ভাইয়া। ওই ইমামে মোয়াজ্জেমের কথা শুনে সত্যিকারের সিওরে উঠেছে। তিনটা টাকা পরিশোধ করার জন্য অবশেষে তার জমি বিক্রি করে দিল। সকলের উচিত কারো কাছে যার পাওনা থাকে পরিশোধ করে দেওয়া। তl গল্পটি পড়ে মোয়াজ্জেমের প্রতি আমারও শ্রদ্ধা বেড়ে গেল।
আপনি ঠিক বলেছেন আমি যখন এই গল্পটি শুনেছিলাম তখনও তার প্রতি শ্রদ্ধা আমার ভেবেছিল। কিছু ভালো মানুষ থাকার কারণে আমাদের পৃথিবীতে আজও এত সুন্দর। ভালো মানুষগুলার কে সম্মান দেওয়া আমাদের দায়িত্ব
একদমই ঠিক বলেছেন ভাই, গ্রামের মধ্যে তার সুনাম অনেক বেশি ছিল। এজন্য দীর্ঘ অনেক বছর যাবত কাঁঠাল বিক্রেতা কাঁঠাল দিয়ে গেছেন। কখনো টাকার জন্য জোর করে নাই। আমার পুরো পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
ভাই এখানে একজন সত্যিকার কাঠাল প্রেমী,একজন ভাল মানুষ এর কথা জানতে পারলাম।যিনি নিজের কথা রক্ষা করার জন্য জমি বেচতেও দ্বিধা করেন নি।সবাই এরকম হলে দুনিয়া টা কত সুন্দর হত।ধন্যবাদ ভাই এমন একজন ভাল মানুষের সততার গল্প আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
একদমই ঠিক বলেছেন আপনি তিনি সৎ ও কাঁঠাল প্রেমি। পুরো বিষয়টা ভালোভাবে পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। খুবই ভালো লাগলো।
জমি বিক্রি করে কাঁঠালের দাম পরিশোধ গল্পটি আমার কাছে ভালো লেগেছে। আপনার বড় ভাইয়ের বাবা দীর্ঘদিন যাবত মসজিদে মোয়াজ্জেম ছিলেন। তিনি কাঁঠাল পছন্দ করেন যেখানেই যান কাঠাল নিয়ে আসেন। তিনি খুব ভালো হওয়ার কারণে কারো টাকা মেরে খাওয়া তার নিয়ত ছিল না। যখন দেখলো যে তার দেনা পরিমাণ অনেক বেড়ে গেল। তখন জমি বিক্রি করে সবার টাকা দিয়ে ঋণ মুক্ত হয়ে গেল। সত্য ঘটনা তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।
বিষয়টা আপনি খুব সুন্দর ভাবে বুঝতে পেরেছেন আপু। জুবিন বিক্রি করে তিনি যে সঠিক মানুষ ছিলেন তার প্রমাণ করলেন। গ্রামের সবাইর কাছে তিনি আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠলেন।
এটাই হলো বান্দার হক রক্ষা। উনি উনার সুনামের খারাপ ব্যবহার করেনি। ঠিকই কাঁঠালের টাকা পরিশোধ করে দিয়েছেন তাও আবার জমি বিক্রয় করে। সত্যি ভাই শিক্ষনীয় একটি ঘটনা ছিল।
ঠিক বলেছেন আপনি, বান্দার হক নষ্ট করা উচিত নয় তিনি তা জানতেন। এজন্য গ্রামের মধ্যে তার এত সুনাম। তার কাছে সম্মান ছিল বড়
এরকম ঘটনা আমি এই প্রথম শুনেছি। আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না এটি কোন বাস্তব ঘটনা মনে হচ্ছে কোন গল্প শুনছি। তবে আসলেই পৃথিবীতে ভালো মানুষ এখনো বেঁচে আছে। আর তাইতো তিনি কাঁঠালের দাম পরিশোধ করার জন্য জমি বিক্রি করে দিয়েছেন। এই ধরনের ঘটনাগুলো থেকে আমাদের সবারই শিক্ষা নেওয়া উচিত।
পৃথিবীতে যদি ভালো মানুষ না থাকতো তাহলে পৃথিবীটা অনেক আগেই ধ্বংস হয়ে যেত। মানবিক ঈমানদার মানুষ থাকার কারণেই পৃথিবীটা আজ রয়েছে। জমিন বিক্রি করে তার ঋণ মুক্ত হয়েছিলেন তিনি।
মনে হয় লোক ঠিক কাঁঠাল প্রিয়। আপনার বন্ধুর বাবা মসজিদের ৪০ বছর ধরে। সে সবসময় কাঁঠাল বাড়িতে নিয়ে যায় সবাই মিলে খাই। কাঁঠালের এত টাকা বাকি বললে। পরে সে জমি বিক্রি করে দিলেন। সত্যি অবাক করার মত বিষয়। তবে আপনি অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
সত্যিকারের ঘটনা গুলো লিখতে আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। এজন্য প্রতিনিয়ত আমি সত্যিকারের ঘটনাগুলো খুঁজে বেড়াই। আমার পুরো লেখাটি আপনি পড়েছেন এজন্য ধন্যবাদ।
ভাইয়া আপনার গল্প টি পড়ে বুঝতে পারলাম আপনার বড় ভাই এর বাবা নিঃসন্দেহে একজন সৎ ও সজ্জন ব্যক্তি উনি চাইলেই ওনার নাম ভাঙ্গিয়ে খেতে পারতেন কিন্তু উনি তা করেন নি। টাকা পরিশোধ করার জন্য জমি বিক্রি করে দিয়েছেন এটা সত্যি অনেক প্রশংসনীয় ও শিক্ষনীয় একটি বিষয়। সুন্দর ও শিক্ষনীয় গল্প টি শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
নিঃসন্দেহে তিনি একজন সৎ আপু। সৎ না হলে এত বড় ডিসিশন সে নিতো না। আসলেই তিনি খুব প্রশংসার দাবিদার। অনেক অনেক ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ে এত সুন্দর গোছালো মন্তব্য করার জন্য।
জী ভাইয়া আপনি ঠিক বলেছেন। মানুষের টাকা মেরে মক্কা মদীনা গেলেও কোন লাভ হবে না। তিনি জমি বিক্রয় করে কাঠাঁলের টাকা শোধ করার কারনে তিনির সম্মান আরো বেড়ে গেল। যেটা টাকা দিয়ে ক্রয় করা যেত না । ধন্যবাদ ভাইয়া।
পৃথিবীতে ঋণ রেখে মরে যাওয়াটাও অনেক বড় একটি অপরাধ। আমাদের পৃথিবীতে অনেক মানুষই রয়েছে এমন সৎ। তারা আছে বলেই পৃথিবীটা আজ এত সুন্দর।
আমার বাবাও অনেকটা এই লোকটার মত কাঁঠাল প্রিয় মানুষ। সে প্রচুর পরিমাণে কাঁঠাল পছন্দ করে। আমি আমার বাবাকে দেখে মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যাই, একটা মানুষ কিভাবে এতো কাঁঠাল খেতে পারে।আমার বাবাও খুব সহজ সরল স্বভাবের এবং সৎ মানুষ। আপনার শিক্ষনীয় বাস্তব ঘটনা পড়ে এটাই জানতে পারলাম যে লোকটি ভীষন সৎ। তিনি খুব ভালো করেই জানতেন এবং মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন যে আল্লাহর কাছে প্রতিটি জিনিসেরই হিসাব দিতে হবে। তাই তিনি জমি বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করে দিয়েছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর শিক্ষনীয় একটি ঘটনা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।