আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা-২৬ || আমার বানানো ভিন্ন রকমের কেকের রেসিপি
নমস্কার
আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগণ আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভালো আছি। আজকে আমি আমার বাংলা ব্লগ আয়োজিত কেক রেসিপি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছি।
আজকে আমি কিভাবে বাড়িতে খুব সহজে মজাদার কেক তৈরি করব সেই রেসিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আমি মনে করি কেক বলতেই ভালোলাগার জিনিস। আর তাইতো যেকোনো আনন্দ উৎসবে কেক কেটে আমরা আমাদের প্রিয় দিনগুলো উদযাপন করি। আমার বাংলা ব্লগে আমি নতুন সদস্য। অভিজ্ঞতায় আমি এখনো অনেক পিছিয়ে। কিন্তু যখন @shuvo35 দাদার আয়োজিত প্রতিযোগিতাটা দেখলাম তখন ভাবলাম যোগদান করে ফেলি।
ব্লগ লিখতে অনভিজ্ঞ হলেও কেকটা মন্দ বানাই না।এটি মূলত ভিন্ন রকম কেকের কনটেস্ট তবুও আমি চেষ্টা করলাম সহজ এর মধ্যে কিভাবে আপনাদের খুব সুস্বাদু একটি কেকের রেসিপি দেওয়া যায়।
আমার বাড়িতে আমার শাশুড়ি মুরগির ডিম খায় না, বর মহাশয় আবার হাঁসের ডিম খান না। তাই প্রায়ই আমাকে ডিম ছাড়া কেক বানাতে হয়। এজন্য আমি ভাবলাম আপনাদের সাথে সেটাই শেয়ার করি।
প্রথমে আমি কেকের ডেকোরেশন নিয়ে ভাবলাম।কিভাবে আমার কেক কে ভিন্ন রূপ দেওয়া যায়। যেহেতু আমাদের এই প্রতিযোগিতাটি দুই দেশের মানুষ অংশগ্রহণ করবেন এবং আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে আমার পরিচয় হয় সে সকল মানুষদের সাথে, তাই ভাবলাম আমার থিমটিও হবে দুই দেশের মানুষের সেতুবন্ধন এর মাধ্যমে।
চলুন দেখা যাক মূল রেসিপিটি। ডিম ছাড়া কেক বানানোর দরকারি উপকরণ :
১। ময়দা এক কাপ,
২।চিনিএক কাপ,
৩।লবণ এক চিমটি,
৪।গুড়ো দুধ আধা কাপ,
৫।তরল দুধ আধা কাপ,
৬।বেকিং পাউডার ১চা চামচ,
৭।বেকিং সোডা হাফ চা চামচ,
৮।ভিনেগার হাফ চা চামচ,
৯।তেল ২টেবিল চামচ,
১০।সুজি হাফ কাপ,
১১।টক দই ২টেবিল চামচ।
প্রথম ধাপঃ
ময়দা,বেকিং সোডা,বেকিং পাউডার,গুড়ো দুধ, শুকনো উপকরণ একসঙ্গে চেলে নিয়েছি।
দ্বিতীয় ধাপঃ
সুজিটাকে হালকা গরম দুধে ভিজিয়ে রেখে দেব।
তৃতীয় ধাপঃ
চেলে নেওয়ার সব শুকনো উপকরণগুলো তেল ও তরল দুধের সাহায্যে অল্প অল্প করে মেশাতে হবে।সবগুলো শুকনো উপকরণ একবারে না দিয়ে বারে বারে মেশাতে হবে।
চতুর্থ ধাপঃ
আগে থেকে ভিজিয়ে রাখা সুজিটাকে এবার পূর্ববর্তী ব্যাটার টির সাথে মিশিয়ে নিতে হবে।এই পর্যায়ে কেকের মিশ্রণটি অনেকটা থকথকে হবে সেজন্য টক দই দিয়ে ভালোভাবে কাটা চামচের সাহায্যে ফেটিয়ে নিয়ে কেকের মিশ্রণটি সাথে মেশাতে হবে।
পঞ্চম ধাপঃ
কেক যে পাএে বসানো হবে সেই পাত্রটিকে ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে। তারপর একটি পাতলা কাগজের সাথে তেল ব্রাশ করে বাটি টির মধ্যে খুব সুন্দর ভাবে বসিয়ে দিতে হবে। আর কেকের বাটিটি যে পাত্রে বসানো হবে সেটাকে প্রিহিটে বসিয়ে দিতে হবে। কেক বসানোর জন্য আমি এখানে একটি সিলভারের কড়াই নিয়েছিলাম। মূলত সিলভারের পাত্র কেক বসানোর সময় ব্যবহার করলে কেকের কালার সুন্দর আসে। আমি এখানে লবণের উপরে কেকের ব্যাটার টি বসিয়েছিলাম। এই লবণটি পরবর্তীতে ফেলে না দিয়ে রান্নার কাজে ব্যবহার করা যায়। চাইলে আমরা বালির উপর বসাতে পারি।
ষষ্ঠ ধাপঃ
কেকের ব্যাটার টি ভালোভাবে মিক্স করে পাত্রে ঢেলে ট্যাপ ট্যাপ করে বাড়ি দিতে হবে। যাতে করে ব্যাটার টির মধ্যে বাতাস না ঢোকে। বাতাস ঢুকলে কেকটি ফুটো ফুটো হবে।এবার আমি মিশ্রণটি চুলায় বসিয়ে দিলাম আর ৩০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে লাগলাম। ৩০ মিনিট পর ঢাকনা সরিয়ে একটি টুথপিকের সাহায্যে আমি চেক করে নিলাম কেকটি পুরোপুরি হয়েছে কিনা। দেখলাম যে আমার কেকটি খুব সুন্দর ভাবে ফুলে উঠেছে। এবার মনের মতন করে সাজিয়ে নেবার পালা। ওদিকে দুষ্টু মেয়ে দুষ্টুমি শুরু করেছে কেক খাবে বলে। ওকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে ওর কিছু চকলেট ধার নিয়ে নিলাম। বললাম যে আজ তোমার চকলেট গুলো দিয়ে সুন্দর একটি ডেকোরেশন করব।
ডেকোরেশন:
কেক বানাতে যেমন সবগুলো মিশ্রণের মিলবন্ধন হয় তেমনি আমার বাংলা ব্লগে এপার বাংলা ও ওপার বাংলার মানুষজনের মিলবন্ধন হয়েছে। আর তাইতো আমিও আমার কেকটি সেভাবেই তৈরি করলাম। ভিন্নরূপ আনার জন্য আমি এখানে দুই দেশের মাঝে একটি সিঁড়ি দিয়ে জোড়া লাগিয়ে দিলাম। আশা রাখছি আমার এই কনসেপ্টে আপনাদের ভালো লাগবে। আর যেহেতু আমি একজন দন্ত চিকিৎসক তাই সব জায়গায় নিজের একটা ছাপ রেখে গেলাম।
কেক একটি মিষ্টি জাতীয় খাবার। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সকলের বাড়িতেই ইয়াম্মি ইয়াম্মি কেক তৈরি হয়েছে এবং এটি খাওয়াও হচ্ছে নিশ্চয়ই।তাই মিষ্টি জাতীয় খাবার খেয়ে আমরা অবশ্যই ভালোভাবে কুলকুচি করব। পারলে ব্রাশ করে ফেলব।
আমার মনে হয় এই রেসিপিটি ফলো করে আপনারাও ঘরে থাকা উপকরণ দিয়ে খুব সহজেই কেক বানিয়ে ফেলতে পারবেন। আর আজই আমার প্রথম বার আমার বাংলা ব্লগের কোন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছি। প্রতিযোগিতার ফলাফল যাই হোক না কেন, আমি নিজে থেকে ভীষণ খুশি এখানে অংশগ্রহন করতে পেরে। আমার ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি। সবাই অনেক ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
আপু আপনার কেকের থিম খুবই ভালো লেগেছে আমার কাছে। তাছাড়া যেরকম থিম কল্পনা করেছেন তার থেকে সুন্দরভাবে কেকটি তৈরি করেছেন। কেকটি যে সুস্বাদু হয়েছে তা নিঃসন্দেহে বলা যাচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হয় যে আপনার উপস্থাপনা আরেকটু ভালো হলে পোস্টটি দেখতে আরো ভালো লাগতো। ডেকোরেশন এর আরো কিছু ছবি এড করলে ভাল হত। হয়তো আপনি নতুন জন্যই এমন হয়েছে। আশা করি ধীরে ধীরে সব কিছু শিখে যেতে পারবেন । প্রতিযোগিতার জন্য শুভকামনা রইল।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আমার পোস্টে কমেন্ট করার জন্য। জি আমি ও দেখলাম বাকিদের থেকে আমার উপস্থাপনায় অনেক কমতি আছে। আশা করি আমি পরবর্তী কোন প্রতিযোগিতায় আর ও ভালো করে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব।দোয়া করবেন আমার জন্য।
আপনি ঠিক বলেছেন আমার বাংলা ব্লক মানে দুই দেশের মানুষের সেতু বন্ধন। ইন্ডিয়া এবং বাংলাদেশের মধ্যে।ডিম ছাড়া তো কেক বানানো যায়। আপনার কেক কিন্তু অনেক সুন্দর হয়েছে।আপনি কেমন বানালেন সেটা বড় কথা না আপু। আপনি যে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন সেটা দেখে আমার খুব ভালো লাগছে।আপনার কেকের ডেকোরেশনটা সত্যি অসাধারণ হয়েছে।আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ আপনাকে। এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বাজারে খুব অল্প উপকরণ দিয়ে কেক টি বানিয়েছি।বাড়িতে কখন ও চেষ্টা করে দেখতে পারেন। আশা করি নিরাশ হবেন না।আমার জন্য দোয়া রাখবেন।নতুন সদস্য হিসেবে অনেক ভুলএুটি আছে জানি।তবুও আমি চেষ্টা করেছি।
সত্যি বলতে দিদি নতুন ইউজার হিসেবে তুমি যতটুকু চেষ্টা করেছ এটা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। তোমার কনসেপ্টটা এক কথায় অপূর্ব ছিল। এটা ঠিক উপস্থাপনাটা আরেকটু ভালো হতে পারতো হয়তো। ব্যাপার না এটা তো প্রথমবার মাত্র। সামনে আরো অনেক দিন পড়ে আছে। নিজেকে প্রস্তুত করো। বেশি বেশি পোস্ট দেখো এবং সেখান থেকে আইডিয়া নিয়ে পরবর্তীতে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে। কেকটা তো এবার খেতে পারলাম না। তবে বাড়িতে আসলে খাওয়াতে ভুলবে না কিন্তু 😊
আপনি খুব অসাধারণ একটি ভিন্ন ধরনের কেক বানিয়েছেন। প্রতিযোগিতার মাঝে বিভিন্ন ধরনের কেক আমরা দেখতে পেলাম। আপনার কেকটি আমার কাছে খুব ভালো লাগলো।কেক সবাই কমবেশি পছন্দ করে খাওয়ার জন্য। খুব সুন্দর করে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করেছেন। এবং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।