একটি ভয়ানক রাতের গল্প (দ্বিতীয় পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

"আমার বাংলা ব্লগে আপনাদের সকলকে জানাই আমার সালাম"


today 14 November,2022
আজ ২৯ কার্তিক,১৪২৯ বঙ্গাব্দ


haunted-house-7508035_640.jpg

image source


মার প্রিয় বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখে শুরু করছি আমার আজকের এই ব্লগ।আশা করি আমি আমার দক্ষতার মাধ্যমে আপনাদের সকলের নিকট ভালো কিছু উপস্থাপন করতে সক্ষম হবো,এবং আপনাদের ও ভালো লাগবে।


গতকাল একটি ভয়ানক রাতের গল্প শেয়ার করেছিলাম আপনাদের সাথে।যদিও সেটা গল্প না বলে বাস্তব ঘটনা বলাই বেশি ভালো হবে কারণ সেই ঘটনা আমার সাথেই হয়েছে।আর সেই ঘটনাগুলোই কেবল গুছিয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করছি মাত্র।তো যাইহোক যারা কালকের সেই পোস্ট পড়েছেন তারা তো জানেনই আর যারা জানেন না তাদের সুবিধার্তে প্রথম পর্বের লিংক দিয়ে দিলাম।প্রথম পর্ব


কালকে যাওয়ার সময় অতটাও ভয় পাই নি।বলা যায় স্বাভাবিক ভাবেই বাজারে পৌঁছাইছি।কিন্তু যাওয়ার সময় সেই রাস্তার ছোটখাটো মমেন্টগুলো মনের মধ্যে যে ভায়ের আবহ তৈরি করেছিল সেটা বাজারে যাওয়ার পর আরো বেশি দৃঢ় হতে শুরু করতেছিল।মনের মধ্যে তখনও ও একটা খটকা বিদ্যমান ছিল এত রাতে সেই নির্জন শ্মশানে কুকুর তিনটে কোথা থেকে আসলো,আর আমাদের সামনেই কেনো বের হলো।এইসব জল্পনা কল্পনা করতে করতে ফেরার সময় হয়ে গেলো।কিন্তু রাতের মধ্যে খাওয়া দাওয়া শেষে শরীর এমনিতে ভারী,তারউপর মনের মধ্যে মেলা সংশয় আর প্রশ্ন।এই জন্যে একবার ভাবলাম মেইন রোড দিয়েই যাই যতদূর এই হোক।তাই সংকোচ ঝেড়ে লুমান কে বলেই ফেললাম এই রাস্তা দিয়ে আবার যাওয়াটা ঠিক হবে না।কিন্তু এখানে আবার একটা সমস্যা আছে সেটা হলো মেইন রোড দিয়ে এত রাতে দুইজন হেঁটে গেলে পুলিশ এর জবাবদিহিতা করতে হবে।এমনিতেই দেশের পরিস্থিতি অনেক খারাপ।আর সেখানে কোনো গাড়ি ঘোড়াও ছিল না যাওয়ার জন্য।শেষমেষ বাধ্য হয়েই ওই রাস্তা দিয়েই আসার সিদ্ধান্ত নিলাম।


রাত প্রায় তিনটা চারদিকে নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে।আর মুরুব্বিদের কাছে শুনেছি রাত জিনিসটা খুব রহস্যময়।আর বিশেষ করে ফজরের আজান দেওয়ার আগের সময়টা বেশি ভয়ঙ্কর।বিশেষ করে ওই সময়টা জ্বীনদের পিক টাইম,আর ওই সময় নাকি ওদের সরব উপস্থিতি টের পাওয়া যায়।আর এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে আমরাও ঠিক ওই সময়েই ওখান থেকে রওনা দিয়েছি।কিন্তু আমি যে ভিতরে ভিতরে বিভিন্ন প্রশ্নের ভারে ঘাবড়ে গেছি সেটা কিন্তু লুমানকে বুঝতে দেই নাই।


এরপর বাজার থেকে আল্লাহ ভরসা করে বের হলাম।আর বাজার থেকে যখন একটু দূরে আসলাম তখন চারপাশটা অন্ধকারে ভরা,চাঁদের আলো ও নেই।শুধু ওই দূরের হাইওয়ে থেকে ভেসে আসছে গাড়ির ভো ভো শব্দ।এদিকে লুমান ওর মত হাঁটছে আর আমি আমার মত হাঁটছি।হাঁটতে হাঁটতে যখন নিরিবিলি রাস্তায় এসেছি তখন কেমন যানি পুরা শরীর অদ্ভুত এক ঠান্ডা বাতাসে শিওরে উঠলো।আমি পাশ থেকে লুমানকে বলছি,"এদিকটায় তো ভালই শীত করছে রে"। লুমান আমার কথার কোনো জবাব না দিয়েই ওর মত হাঁটতে থাকলো,আর ওর মৌনতা দেখে আমিও আর দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেস করি নাই ওকে।


হাঁটতে হাঁটতে লোকালয় ছেড়ে অনেকটা দূরে প্রায় সেই কাশবনের কাছে চলে এসেছি।আর যেই কেবল কাশবনের ভিতর দিয়ে যাবো অমনে লুমান আকস্মিক ভাবে দাড়ায় গেলো।আর লুমান এর এমন অদ্ভুত আচরণ দেখে আমিও অনেকটা হচকিয়ে উঠলাম।"লুমানকে জিজ্ঞেস করলাম,কি ব্যাপার হটাৎ হাটা থামায় দিয়ে দাড়ায় গেলি কেন? ও এদিক সেদিক তাকায় বললো কে যেনো ডাকলো মনে হচ্ছে।আমি আবার ওরে বুঝাইলাম বেটা তোর মতিভ্রম হয়েছে।আসলে এমন পরিস্থিতিতে প্যানিক হয়ে উল্টাপাল্টা ভাবনাচিন্তা সবসময় মাথায় আসে।আমি ওর অদ্ভুত আচরণকে মতিভ্রম ভেবে বললাম চল বেটা তাড়াতাড়ি, দেরি করা যাবে না রাত অনেক হইসে।"


যেই কাশবনের ভিতরে ঢুকবো ঠিক ওইসময় বুকে কাপন ধরিয়ে অদ্ভুত এক দমকা হওয়া খেলে গেলো শীতের রাতে।পুরা শরীর ঠাণ্ডা হয়ে গেলো নিমিষে।আর এই কাশবনের রাস্তাটা বেশি না প্রায় 10 মিনিট এর মত হাঁটলে এই রাস্তা পার হওয়ার যায়।কিন্তু যেই একটু দূরে গেছি মনে হচ্ছে পিছন থেকে কিছু একটা ধেয়ে আসছে আমাদের দিকে শো শো শব্দে।আর মাঝে মাঝে কাশবনের ভিতরে থেকে বিড়াল এর কান্নার আওয়াজ এর মত কাদো কাদো কন্ঠে কিছু শব্দ কানে ভেসে আসছিলো।এমন অবস্থায় লুমান শুধু আমাকে বললো কোনদিকে তাকাবি না সোজা হাঁটতে থাক পিছনে যা হয় হোক। লুমান মুখে দিয়ে কি যেনো বিড়বিড় করছে আর দ্রুত পায়ের ধাপ ফেলেছে।10 মিনিট এর ওই পথ পার হইতে যেনো 5 মিনিট সময় ও লাগে নি।কাশবনের ওই রাস্তা টুকু পার হয়ে সেই ঝড়ের মত শো শো শব্দ আর অদ্ভুত সব শব্দগুলো নিমিষেই গায়েব হয়ে গেলো।আবারও চারদিকে পিনপতন নিরবতা শুধু মাঝে মাঝে কিছু ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক কানে ভেসে আসছে।এমত অবস্থায় হটাৎ করে খেয়াল করলাম এই শীতের মধ্যেও আমার মুখ চোখ অনেকটা ঘেমে গেছে।মুখটা মুছতে মুছতে ভাবতেছি একটু আগেই ঠান্ডায় কাপতেছিলাম আর এখনি ঘেমে গেলাম।আর এমত অবস্থায় আবার হাটা শুরু করলাম।কিন্তু ওই সেই শ্মশান ঘাটের কাছে এসে আমাদের সাথে যা ঘটেছে......



আজকে কিন্তু নিয়ত ছিল পুরো পর্বটা পোস্ট করবো।কিন্তু পোষ্টটা লেখার পর যখন দেখি অনেক বড় হয়ে গেছে এই জন্যে অর্ধেক লেখাটা কালকের জন্য রেখে দিলাম।যাইহোক সবাই ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন দেখা হবে কালকে শেষ পর্ব নিয়ে আপনাদের সাথে।



8SzwQc8j2KJZWBXFXnbnQ1FtoZhRqrTWozhqoqWHpGmpmnKbH2aXgvEHL86Grag4XAKog4igp4yqWuDvpB3jnZYauA71PhjLSqVVjyBkKwBxpSheevA.png

আমি এই সমাজের তথাকতিত সকল নিয়ম এর ঊর্ধ্বে।আমি কেবল আমার সত্তায় বিশ্বাস করি,আর বুক ভরা সাহস নিয়ে পথ চলি।একদিন এই ঘুনে খাওয়া সমাজের পরিবর্তন আমার মত কারো হাত ধরেই হবে এটাও আমি জানি।সেদিন সকল পরাধীনতার শিকল ভেঙ্গে আমি উড়বো মুক্ত নীল আকাশে,তখন লোকে কি বলে বলুক কিছুই যায় না আসে মোর তাতে।আজ শুনেছি আমি বিজয়ের গান,আমি পেয়েছি নতুন আহ্বান।আজ মুক্ত আমি বাঙালি হয়ে বাংলাই আমার প্রাণ।


45GhBmKYa8LQ7FKvbgfn8zqd6W2YEX34pMmaoxBszxVcFZuj6oTYKs1WsMYL4GjvYG8jyHvkLUASU9U7Y2WqhDjpgqe1KPEzN7jG6YN7NQ...mcwa2hjjKJYshWHKGUWNaMKwm8JQJfFkzq1wnaVJP8bHftgupwV2ndY1mzFkthygVSsL4V9Rt51ksbGZpNUu9FPxSstPSnWwHgF3SYhKeeZuufdGBrCXiJ8gAS.png

cyxkEVqiiLy2ofdgrJNxeZC3WCHPBwR7MjUDzY4kBNr81R73dHAE6Ew3WjyveXn6UfQ8ahESLfvvdHjthdnPNKJby2matSBUDur7QMrVroCpwxQmohTSZHpBAXjQT9ZkpEa.png

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

45GhBmKYa8LQ7FKvbgfn8zqd6W2YEX34pMmaoxBszxVcFZuj6oTYKs1WsMYL4GjvYG8jyHvkLUASU9U7Y2WqhDjpgqe1KPEzN7jG6YN7NQ...mcwa2hjjKJYshWHKGUWNaMKwm8JQJfFkzq1wnaVJP8bHftgupwV2ndY1mzFkthygVSsL4V9Rt51ksbGZpNUu9FPxSstPSnWwHgF3SYhKeeZuufdGBrCXiJ8gAS.png

Sort:  
 2 years ago 

মেইন রাস্তা দিয়ে গেলেই বুঝি বেশি ভালো করতেন ভাই, ভূতের সামনে পড়ার থেকে পুলিশের সামনে পরাই অনেক ভালো আমার মতে।
এই পর্বটা আমার কাছে খুবই গা ছমছমে লেগেছে ভাই। এমন জায়গায় থামিয়ে দিলেন ভাই, খুব দ্রুত পরের পর্ব পোস্ট করে ফেলুন।

 2 years ago 

পুলিশ এর যে পেরা,ধরলে মান ইজ্জত সব মাইরা দিত।ওর চেয়ে এই রাস্তা দিয়ে আসায় সেফ মনে হয়েছে।যাইহোক আজকে শেষ পর্বটা পোস্ট করেছি পড়তে পারেন।

 2 years ago 

ভাইরে ভাইরে ভাই এই গল্প শুনে তো আমার নিজের ভয় লেগেছে ভাই।
হ্যা এই সময়টিতে জিনেরা হয়তো উৎপাত শুরু করে। কি যে আসছে পিছনে 😕।
যাক পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

হ্যা ভাই,এমন মুহূর্তের জন্যে আমরা মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।আর আজকে শেষ পর্বটি ইতিমধ্যে পোস্ট করেছি পড়তে পারেন ভাই।🙏

 2 years ago 

আপনার গল্প শুনে আমার তো হাত-পা কাঁপছে। আপনার সাথে তো বাস্তবে ঘটেছে আপনি কি রকম ফিল অনুভব করেছেন আমি শুধু তাই ভাবছি। আপনি খুবই সুন্দর ভাবে এই গল্পটি লিখেছেন আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য তাও বাস্তবিক ঘটনা নিয়ে। আপনার পরের পর্বটি দেখার অপেক্ষায় থাকবো।

 2 years ago 

হ্যা ভাই ঠিক বলছেন।ওই মুহূর্তটা সত্যিই খুব ভয়াবহ ছিল তবে নিজের নার্ভ ধরে রেখে চেষ্টা করেছি টিকে থাকার।

 2 years ago 

এতো স্পুকি কেমনে ভাই!আমার হুডির ভেতর দিয়ে মনে হয় একটা ঠান্ডা বাতাস বয়ে গেলো।জোস একটা গল্প।
অধীর আগ্রহে থাকলাম পরের পর্বের জন্য।

 2 years ago 

আসলে এটা গল্প না ভাই এটা বাস্তব ঘটনা।আর আজকে এই পর্বের শেষ পার্ট টা ইতিমধ্যে পোস্ট করেছি পড়তে পারেন।

 2 years ago 

আপনার ভয়ানক রাতের গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আপনার লেখা খুবই ভালো ছিল। গল্পটি খুবই রোমাঞ্চকর ছিলো। আমি তো প্রথমে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। যাইহোক এত চমৎকার গল্প শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। আগামী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.032
BTC 64103.87
ETH 2762.96
USDT 1.00
SBD 2.65