একটি ভয়ানক রাতের গল্প (প্রথম পর্ব)
"আমার বাংলা ব্লগে আপনাদের সকলকে জানাই আমার সালাম"
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখে শুরু করছি আমার আজকের এই ব্লগ।আশা করি আমি আমার দক্ষতার মাধ্যমে আপনাদের সকলের নিকট ভালো কিছু উপস্থাপন করতে সক্ষম হবো,এবং আপনাদের ও ভালো লাগবে।
কালকে রাতে প্যারানরমাল বিষয় নিয়ে সবার মাঝে বেশ তর্ক।সবাই নিজের দাম্ভিকতা আর সাহসিকতা দেখাচ্ছে।সবাই নিজের বুকের ছাতি টান করে বলতেছে আমি এসব জীন ভূতে ভয় পাই না।তবে এই ব্যাপারে সজীব একটু বেশি মুখের জোর দেখাচ্ছিল।আর এইজন্য সবাই ওরে নিয়ে মজাও নিচ্ছিল।কিন্তু সে তবুও হার মানতে নারাজ,তার কথা একটাই সে হইলো সাহসী ছেলে সে এসব জীন ভূতে ভয় পায় না।যদিও সবচেয়ে বেশি ভয় পায় ওয়ই,কিন্তু দিন হইলে ওই বেশি ফাপরবাজি মারে।তো কাল রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে সজীব কে লুমান চ্যালেঞ্জ দিয়ে বসলো,য সজীব যদি এখন আমার সাথে বাইরে বাজার পর্যন্ত যাইতে পারিস তবে সে যা খাইতে চাবে তাই খাওয়াব।কিন্তু সজীব যে ভিতরে ভিতরে প্যান্ট নষ্ট কইরা ফেলসে সেটা আমরা বুঝতে পারতেছি, কিন্তু তারপরেও সে মুখে হার মানতে নারাজ।তো যাইহোক এরপর লুমান আরো ভয় দেখাতে বললো চলো রিচুয়াল করবো।আর রিচুয়াল মানে কি সেটা তো মনে হয় সবাই জানেন?রিচুয়াল মূলত জিনদের উপস্থিতি টের পাওয়ানর জন্য কিছু নিয়ম মেনে ওদের আমন্ত্রণ করা।এই ব্যাপারে না হয় আরেকদিন আলোচনা করবো।তো রিচুয়াল এর এক পর্যায়ে এসে সজীব এর অবস্থা পুরায় হাইপার,যদিও সবাই একটু করে ভয় পাইছে কিন্তু সজীব সবচেয়ে বেশি।আর ওর এই অবস্থা দেখে নিরব,সুমন,হিমেল,কনক তো আরো বেশি করে মজা নিচ্ছে।আর ওই রিচুয়াল আমরা এমন কিছু ফিল করছিলাম যেটা সত্যিই যে কারো ভয় পাওয়ার জন্য যথেষ্ট।
এরপর রিচুয়াল শেষে সবার আবার খিদা লাগছে।এখন লুমান সজিবকে অফার করে বসলো চল দোকানে যাবো, আর তুই যদি আমার সাথে যাস যা খাইতে চাবি তাই খাওয়াবো।আর তখন রাত বাজে ঘড়ির কাঁটায় ঠিক একটা।চারদিকে থমথম পরিবেশ হালকা শীত পড়ছে আর দূর থেকে ভেসে আসছে কিছু ঝিঁঝিঁ পোকা ডাক।আর হ্যা, বলে নেওয়া ভালো আমরা যে জায়গায় থাকি এটা মূলত একটা অজপাড়া গ্রাম।গ্রামের ভিতরে একটা বাজার আছে কিন্তু সেটা সন্ধার একটু পরেই বন্ধ হয়ে যায়।আর আশেপাশেও কোনো বাজার নেই।একটু দূরে একটা বাজার আছে কিন্তু এতদূরে যাওয়ার জন্য এখন গাড়ি ঘোড়াও পাওয়া যাবে না।কিন্তু একটা শর্টকাট রাস্তা আছে যেটা দিয়ে গেলে 3 কিমি হাঁটলে বাজারে গিয়ে পৌঁছানো সম্ভব।কিন্তু এই গভীর রাতে এই পথ দিয়ে যাওয়াটাও এত সহজ ব্যাপার না।একে তো নির্জন রাস্তা তারউপর এই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় একটা কবরস্থান আর দুইটা শ্মশান পথে পড়ে সাথে একটা কাশবনের ভিতর দিয়ে যাইতে হয়।আর এই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় অদ্ভুত কিছু ঘটার সম্ভাবনা তো আছেই সাথে পুলিশ আর ছিনতাই কারির ভয় তো আছেই।সবকিছু ভেবে শেষমেষ সজীব স্বীকার করেই নিল সে আসলেই ভয় পাইসে।তো সবার থেকে আমি আবার একটু বেশি সাহসী,ওরা এগুলা নিয়ে প্যাচাল পারলেও আমি তেমন মাথা ঢুকাই না।এবার ওরা সবাই মিলে প্ল্যান করলো আমাকে আর লোমান কে বাজারে পাঠাবে।মোটামুটি একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে ছুড়ে দিলো আমার দিকে যেনো আমি না কইতে না পারি।আর না কইলেই ওরাও খিল্লি উড়ানো শুরু করবে,আর আমাকে অফার করা হলো তুমি যদি এখন লুমান এর সাথে যাও তাইলে যা খাইতে চাবা তাই খাওয়াব।আর এই লোভ কি সামলানো যায় আপনারাই বলেন।
যাইহোক আমি এমনেই আগে থেকে একটু বেশি সাহসী তাই আগ পাচ না ভেবেই বের হইলাম। রাস্তায় বের হয়ে দেখি নিশ্চুপ চারিধার সাথে হালকা কুয়াশা ও পড়ছে।প্রথম প্রথম অবশ্য এরকম অবয়াহা বেশ ভালই লাগছিল তবে সত্যি কথা বলতে রিচুয়াল করার পর মনের মধ্যে যে ভয়ের সঞ্চার ছিল সেটার রেশ কিন্তু তখন ও ছিলো।কিন্তু বিশ্বাস করেন ওরা যে চ্যালেঞ্জ দিছে আমারে এইটা না করতে পারলেও ওদের পচানি সহ্য করতে হবে,আবার মুখ খুলে কইতেও পারি না আমারও একটু একটু ভয় হয়।যাইহোক উপায় না দেখে বাধ্য হয়েই বের হয়ে গেলাম আমি আর লুমান।আমাদের পথচলা শুরু আর পথ চলতে ও আমার সাথে কথা কয় না আমিও ওর সাথে কথা কই না চারদিকে শুধু নিস্তব্ধতা বিরাজমান।এরপর পতিমধ্যে পড়লো প্রথম কবরস্থান সেটাও পার হয়ে গেলাম কিন্তু তখন ও অতকিছু ফিল করি নাই।এরপর সামনে একটি গ্রাম পড়লো আর এই গ্রামের পর বাকি পথটা কিন্তু একদম ফাঁকা আবার একটু দূরেই সেই শ্মশান।আমরা দুইজন দুজনের মত করে হাটা শুরু করলাম,কেউ আর কারো সাথে কথাও বলি নাই।কিন্তু যখন শেষের শ্মশানটা পার হব আর কেবল গেটের সামনে দিয়ে পার হবো আর হুট করেই সামনে এসে পড়লো তিনটা কুকুর।আর হুট করে এমন ঘটনা ঘটলে ভয়তো একটু লাগাই সেটা দিনের বেলা হইলেও।আর এমন অবস্থায় মনে অনেক জল্পকল্পনা করতেছি আর মনে বিভিন্ন ধরনের কথা মনে হচ্ছে।মনে মনে যে একটু ভয় ও পাইছি সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না,কারণ এত রাত আর এদিকে কোনো বাড়িঘর ও নাই হটাৎ করে কুকুর কোথা থেকে আসলো।এমন সব ভাবনা চিন্তায় মাথা তখন ঘুরতেছে আর এগুলা ভাবতে ভাবতেই পা বাড়াচ্ছি,একবার মনে হলো আজকে ফিরে যাই কিন্তু এত সহজে হাল ছাড়লে কি চলবে।কিন্তু এতকিছুর পরেও লুমানকে বুঝতে দেই নাই কিছু,কিন্তু লুমানও যে একটু হলেও ঘাবড়ে গেছে সেটা তার চোখে মুখে স্পষ্ট। এরই মধ্যে লুমান এর দিকে খেয়াল করলাম ও যেনো কিছু পড়ছে হয়তো দোয়া দরুদ পড়ছে।তারপর কোনরকম 40 মিনিট হাঁটার পর প্রায় 2 টার দিকে সেই বাজরে পৌঁছালাম,আর বাজারে ঢুকেই মনে হলো এই বুঝি একটু বাঁচলাম।তারপর লুমান আমারে কফি খাওয়াইল কেক খাওয়াইল।খাওয়া দাওয়া শেষে পেট ভারী মনে হচ্ছে আর হাঁটতে পারবো না,কিন্তু সেখান থেকে আসার জন্য কোনো গাড়ি ঘোড়াও নাই।আর তখন রাত বেজে গেছে প্রায় 3 টা।এদিকে সজীবরা বাসায় বেশি চিন্তা করছে আমাদের নিয়া,কারণ ফাঁকা রাস্তা বলা তো যায় না কখন কি হয় এই জন্য সজীব ফোনের উপর ফোন দিতেই আছে কিন্তু ইচ্ছে করেই আমরা ধরতেছিলাম না ওদের টেনশন বাড়ানোর জন্য।যাইহোক এবার ফেরার পালা,কিন্তু এইবার মনে হয় সত্যিই একটু ভয় পেয়েছি আমি কিন্তু উপায় নেই ফিরতেই হবে বাসায়।কিন্তু ফেরার সময় আমরা যা দেখছি আর অনুভব করেছি সেটার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না........
আজকের মত এই পর্ব এখানেই শেষ।আসলে পুরোটা একসাথে লিখতে গেলে অনেক বড় হয়ে যাবে তাই আজকে এতটুকুই।আর বাকিটা না হয় কালকে শেয়ার করবো আপনাদের সাথে।
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmbHqqT9yDhtpFAUjXitFwCkBuVzXm41m8xBUNMpzVkLn7/IMG_20220606_232300_039.jpg)
বন্ধুদের মাঝে এমন একজন থাকা স্বাভাবিক যে তার নিজের ক্ষমতার চেয়ে ফাপরবাজিতে বেশি এগিয়ে।
এইটুকু পড়তে গিয়ে আমারে নিজেরই তো ভয় করছিল। যখন কুকুর আসার কথা বললেন তখন নিজের চিৎকার করে চিল্লাতে ইচ্ছা করছিল। তবে যাই বলেন ভাইয়া গা শিউরে ওঠার মত ভয়ংকর ছিল।
এইটা একদম চরম সত্য কথা বলছেন ভাই।আসলে বন্ধু মহলে সব ধরনের বন্ধুই থাকে।যাইহোক পরের পর্বটা আজকে পোস্ট করেছি পড়তে পারেন ঐটা আরো বেশি ভালো লাগবে আশা করি।
লুমানের দোয়া দরুদ পড়ার কারণও আছে। তখন ওই অবস্থায় এটা ছাড়া তো আর কোন উপায় ছিল না। যদিও আপনারা ভয় পেলে ও কেউ কাউকে বুঝতেই দিচ্ছেন না। আপনার পোস্ট করতে করতে আমি নিজেই ভয় পেয়ে গেছি।রিচুয়াল বিষয়টা আমি শুনেছি কিন্তু একেবারে ক্লিয়ার নয়। কখনো এই বিষয়টা নিয়ে লিখবেন তাহলে ব্যাপারটা সম্পর্কে আরো জানতে পারবো। যাইহোক, শেষ পর্যন্ত কবরস্থান, শ্মশান সবকিছু পেরিয়ে গেলেন। আবার ভালোভাবে খেয়ে দেয়ে নিলেন। একেবারে রাত তিনটা বেজে গেল। কিন্তু আসার পথে কি এমন হলো? এই বিষয়টা জানতে খুব ইচ্ছে করছে।
জ্বি আপু একদিন সময় করে এই বিষয়টা নিয়ে লিখবো।আর ফেরার পথের ঘটনা আজকে লিখেছি চাইলে পড়তে পারেন।ঐটা আরো বেশি লোমহর্ষক।
আরে ভাই এই্টা কিছু হইল, আসল জায়গায় এসেই শেষ করে দিলেন। আবার পড়ের পর্বের জন্য অপেক্ষা। যাই হোক বয়সকালে সবাই এমন সাহস দেখাতে চায় তবে মনে রাখতে হবে চোখে দেখা যায়না বলেই পৃথিবীতে আর কিছু নেই এমন না। অপক্ষোয় রইলাম।
আসলেই ভাই এটা বয়সের দোষ আর তারুণ্যের উত্তজেনা।আর আসলেই আমাদের চোখের অন্তরালে অনেক কিছুই হয়।আর আজকে এই সিরিজের দ্বিতীয় পর্বটি পোস্ট করেছি পড়তে পারেন।
প্যারানরমাল গল্প গুলো ভালোই লাগে অনেক ভাল লেগেছে পরবরতি পর্বের জন্য অপেক্ষাই রইলাম।ভাই শুভ কামনা আপনার জন্য এগিয়ে যান।
ইতিমধ্যে দ্বিতীয় পর্বটি পোস্ট করা হয়ে গেছে চাইলে পড়তে পারেন ভাই।আর ধন্যবাদ জানাচ্ছি সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।🙏
ভাই এমন জায়গায় গল্পটি থামিয়ে দিলেন এখন তো গল্পটি পড়ার জন্য মন খুজখুজ করছে। তাড়াতাড়ি দ্বিতীয় পর্বটি পোস্ট করে ফেলুন, দ্বিতীয় পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
এইতো আজকে দ্বিতীয় পর্বটি ও পোস্ট করেছি।আর আপনি তো সেটাও ইতিমধ্যে পড়ে ফেলেছেন হাহা।😌
হ্যাঁ ভাইয়া এবার তারপরের পর্বটির অপেক্ষা করছি।
ওইসময় নিজেকে কেমনে যে কন্ট্রোল করেছি সেটা আমি জানি।নেহাত একটু সাহস বেশি বলে দাড়িয়ে থাকতে পেরেছি নাহলে তো অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যেত।
এসব ভুতুড়ে বা প্যারানরমাল গল্পগুলো আমার শুনতে বেশ ভালই লাগে। যদিও পুরো গল্পটা পড়ে আমি খুব বেশি একটা ভয়ের কিছু পেলাম না। তবে যেখানে গিয়ে গল্পটা শেষ করেছেন, তাতে আগ্রহ আরও অনেক গুনে বেড়ে গেল। বেশ ভালই লিখেছেন আপনি।
আসলে গল্পের ভিত্তিটা মজবুত করার জন্য প্রথমের দিকে প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো বেশি ভেসে এসেছে লেখায় আর এই জন্যে ভয় একটু কম লাগারই কথা।তবে পরের পর্ব গুলো পড়লে আশা করি বিষয়টা বুঝতে পারবেন।আর হ্যা এইটা কোনো বানানো গল্প নয় একদম সত্য ঘটনা তাও আমার নিজের সাথেই।আর দ্বিতীয় পর্ব ইতিমধ্যে পোস্ট করে ফেলেছি পড়ে দেখতে পারেন।