সিঁদল কুমড়ো বড়া দিয়ে টাকি মাছ ভুনা রেসিপি।
সিঁদল কুমড়ো বড়া দিয়ে টাকি মাছ ভুনা রেসিপি।
আসসালামুয়ালাইকুম
আমি @mrnazrul আপনাদের বাংলাদেশি বন্ধু ।আশা করি সবাই ভালোই আছেন ।
আলহামদুলিল্লাহ
আমিও সবার দোয়া ও মহান আল্লাহর রহমতে আমিও ভাল আছি।
বন্ধুরা
আজ আমি আপনাদের জন্য উপহার হিসেবে নিয়ে এসেছি ,গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী অতি পরিচিত একটি রান্নার রেসিপি ।যদিও রান্নাটি গ্রাম বাংলার সকল জায়গায় দেখা যায় না। তার পরেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে এর প্রচলন অনেক বেশি দেখা যায় ।বিশেষ করে রংপুর অঞ্চলে এর প্রচলন অনেক বেশি। ইদানিং আমি কুষ্টিয়া এবং ফরিদপুর ঘুরাঘুরি করতে দেখেছি ,কুষ্টিয়ার বাজারে এসব কাঁচামাল প্রতিটি গালামালের দোকানে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে।
এজন্যই মনে করা হচ্ছে যে কুষ্টিয়া অঞ্চলের লোক এসব রান্না বেশি পছন্দ করে।
আমরা অনেকেই এই রান্নার উপকরণ গুলো সম্পর্কে বেশ ভালোই জানি। আবার অনেকে নাম জানা বা শুনা মাত্রই কৌতুহলী হয়ে উঠে। তার মানে আমরা এটার নাম কখনো শুনি নাই বা জানি নাই।
কুমড়ো বড়া গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খাবার গুলোর মধ্যে একটি । যা আমি আগেই বললাম এই কুমড়ো বড়া কুষ্টিয়ার প্রতিটি গালামালের দোকানে আমি বিক্রি হতে দেখেছি। এর সাইজগুলো একটু বড় বড় ।তবে সব মিলে রাজশাহী অঞ্চলের কুমড়ো বড়া সারা বিশ্বে পরিচিত এবং সমাদৃত।
সিঁদল প্রচলিত একটি নাম। যার বানান দন্তসয়ে রশ্মিকার চন্দ্রবিন্দু দ ও ল। নামের বানানটি খুব সহজ হলেও একে তৈরি করা খুবই কঠিন । তৈরি নিয়মের মধ্যে রয়েছে প্রথমে ছোট মাছের শুটকি কে গুঁড়ো করে নেওয়া হয় । তারপর বুনো কচু ছিলে ছালে কেটে কেটে ধুয়ে রস চিপে চিপে শুটকির সাথে মিশিয়ে এই সিঁদল তৈরি করা হয়।
তবে একেক অঞ্চলে একেক রকম। আরো স্বাদের জন্য ভিন্ন রকম উপাদান দিয়ে থাকে। যেমন অনেক এলাকায় দু'একটি কাঁচামরিচ দু'একটি রসুনের কোয়া দেওয়া হয়। শুকানোর সময় এটির গায়ে হলুদ মাখিয়ে শুকানো হয় ।যেহেতু এটিত কাঁচা শুটকি থাকায় সহজে পচে যাওয়ার সম্ভাবনা ।তাই হলুদের গুঁড়া মেখে শুকাতে দেওয়া হয় ।শুকানো হলে সিঁদল এর মাঝখানে ফুটো করে মালা তৈরি করে, রোদে দেওয়া হয় ।এরপর ভালোভাবে শুকালে খাওয়ার জন্য সংরক্ষণ করা যায় যায় ।এক বছর ধরে খাওয়া যায় বলে আমরা মনে করি এবং আমরা খেয়ে থাকি।
আজকের এই রান্নাটি ছোট বড় সকল মাছের সাথে খাওয়া যায়। তবে বেশি চর্বিযুক্ত মাছে বেশি স্বাদ হয়ে থাকে। আমাদের এলাকায় সাধারণত আমরা টাঁকি মাছ বা গড়াই মাছ দিয়ে রান্না করে বেশি খেয়ে থাকি । টাকি মাছ কে আমাদের এলাকায় গড়াই, শাটি ও বন মাছ বলে থাকি।
বন্ধুরা
আমি এখন আপনাদের দেখাবো এই ঐতিহ্যবাহী রেসিপিটি কিভাবে তৈরি করা হয়।
তার আগে দেখাবো আমি এই রান্না করতে কি কি উপকরণ নিয়ে বসেছি।
🔥 প্রয়োজনীয় উপকরণ সমূহ ⛄
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
টাকি মাছ | ৩০০ গ্রাম পরিমাণ |
সিঁদুর | মাঝারি সাইজের তিনটি |
কুমড়ো বড়া | ৭-৮ টি |
কাঁচা মরিচ | ৫-৬টি |
লবন | দু-চামুচ |
হলুদ গুড়া | দু চামুচ |
মরিচ গুঁড়া | দু চামুচ |
তেজপাতা | চার-পাঁচটা |
গরম মসলা বলতে ।ছোট এলাচ দুইটি
সয়াবিন তেল |১ কাপ পরিমাণ
বন্ধুরা
এই ছিল আমার আজকের সিঁদল কুমড়ো বড়া ও টাকি মাছ ভুনা রান্নার রেসিপি এর উপকরণসমূহ ।
এখন আমি আপনাদেরকে আমার রান্নাঘরে নিয়ে দেখাবো ,কিভাবে আমি এই ভুনা রেসিপি তৈরি করলাম ।
তাহলে আপনারা সাথে থেকে দেখুন আমার রান্নার নিয়ম নিয়মাবলী।
🔥 আমার রান্না ঘর-⛄
🔥রান্না চলছে-এক⛄
টাকি মাছ গুলি ধুয়ে তাতে লবণ হলুদ মরিচ ও জিরা গুড়া দিয়ে রেখে দেওয়া হল। আলু গুলো কেটে নেওয়া হয়েছে
।
🔥রান্না চলছে-দুই⛄
রান্নার জন্য কুমড়ো বড়ি ও সিঁদল নেওয়া হয়েছে
।
🔥রান্না চলছে-তিন⛄
সিঁদল ও বড়া ভালোভাবে ভেজে নেওয়া হলো
।
🔥রান্না চলছে-চার⛄
ভাঁজা সিঁদল গুলো রান্নার জন্য পানিতে ভিজিয়ে পেস্ট করে নেওয়া হয়েছে। কুমড়ো বড়ি গুলো শুকনো অবস্থায় রেখে দেওয়া হল
।
🔥রান্না চলছে-পাঁচ⛄
কড়াইয়ে তেল ঢেলে এক চিমটি রসুন ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে বাদামি রং করে ভাজা হলে, তাতে মাছগুলো ঢেলে দিয়ে কষিয়ে নেওয়া হলো
।
🔥রান্না চলছে-ছয়⛄
কষানো মাছগুলো পানি দিয়ে হালকা একটু সিদ্ধ করা হলো তার পর পরবর্তী স্টেপের জন্য নামিয়ে নেয়া হলো নামিয়ে নিয়ে ওই কড়াইয়ে এবার সিঁদল গুলো ঢেলে দেওয়া হল
।
🔥রান্না চলছে-সাত⛄
এবার কড়াইয়ের সিঁদল পেস্টের উপরে প্রথমে পিয়াজ তারপর আদা রসুন কুচি তেজপাতা গরম মসলা আগে থেকে কেটে রাখা মসলা ও শেষে আলুগুলো ঢেলে দেওয়া হল
।
🔥রান্না চলছে-আট⛄
সব উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে তাতে রান্নার জন্য পানি দেয়া হলো ।পানি পরিমাণমতো দিয়ে ঢেকে দেওয়া হলো ।এবার রান্না খুলে দেখা গেল তরকারির পানি কমে এসেছে এবং হয়ে এসেছে ।এবার আগে ভুনা করা টাঁকি মাছ গুলো এখন ঢেলে দেওয়া হল
।
🔥রান্না চলছে-নয়⛄
হালকা নেড়ে মাছ গুলো ঝোলের মধ্যে ডুবিয়ে দিলে আমার তরকারি অল্পক্ষণের মধ্যেই হয়ে গেল। এবার চুলার জ্বাল বন্ধ করে দেয়া হলো।
🔥রান্না চলছে-দশ⛄
পরিবেশনের জন্য রেডি করা হয়েছে।
বন্ধুরা
এই ছিল আমার আজকের সিঁদল কুমড়ো বড়া ও টাঁকি মাছের ভুনা রেসিপি। আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে।
|
Visit My Another Activists
My Blog Twitter Facebook Youtube |
---|
Regard By | @mrnazrul, Bangladesh |
---|---|
Category | Flower, Nature, Animal.Recipe.Photography,Digital art. |
Device | Walton Primo6 Max |
w3w | Location |
Beneficiary | 10% Benefit for shy-fox. |
Regard
ভাইয়া কখনো কুমড়ো বড়া খাইনি। এটা খেতে কেমন সেটাও জানি না। কিন্তু আপনার রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু এবং মজাদার। দেখে মনে হচ্ছে খুবই লোভনীয় একটা রেসিপি। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ মজাদার রেসিপি টা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ।আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
এলাকার হাট বাজারে এসব পাওয়া যেতে পারে ।ট্রাই করে দেখতে পারেন ।খেতে ভালো লাগে।
খুবই সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর একটি মাছের রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ।রেসিপিটি দেখেই জিভে জল চলে আসলো 😋কারণ টাকি মাছ আমার খুবই প্রিয় ইচ্ছে করছে তুলে খেতে শুরু করি।
রন্ধনপ্রণালী সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আমরাও পাওয়া সাপেক্ষে মাঝেমধ্যে খেয়ে থাকি ।মন্দনা ভালোই লাগে খেতে।
সিদল কুমড়ো বড়া দিয়ে টাকি মাছের মজাদার ভুনা ওয়াও অনেক সুন্দর ছিল রেসিপি টি । কুমড়ো বড়া এর আগে কখনো খাওয়া হয়নি। আপনাদের অনেক রেসিপি পড়ি যেখানে বড়া ব্যবহার করা হয়। তবে এই বড়া কিভাবে তৈরি করা হয় তা আমার জানা নেই। অনেক সুন্দর ছিল আজকের পোস্ট ধন্যবাদ।
মাসকলাই এর সাথে চাল কুমড়া মিশাইয়া এই বড়া তৈরি করা হয়। প্রথমে তাই তৈরি করে নিয়ে হাতে কোন কিছুতে বড়া আকার বা গুটি তৈরি করে শুকিয়ে নিয়েএ বড়া তৈরি করা হয়।এ জন্য মাসকালাইয়ের পেস্ট ও কুমড়া পানি ঝরিয়ে তার পেস্ট একসঙ্গে মিশিয়ে বড়ার জন্য পেস্ট তৈরি করা হয়।
কুমড়ো বড়া আমি এই প্রথম দেখেছি। বিষয়টি আমার কাছে বেশ ইন্টারেস্টিং মনে হয়েছে। এটি কিভাবে রান্না করে এর আগে জানা ছিল না। তবে আপনার রান্না দেখে শিখে নিয়েছি। এবার আমিও বাসায় নিজে নিজে রান্না করে খেয়ে ফেলতে পারবো। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য।
এবার আরো সুন্দর করে রান্না করে আমাদের মাঝে উপহার দেবেন ।সাথে আমাকে দাওয়াতও দেবেন।
টাকি মাছ আমি খুব একটা তরকারিতে খাই না। ভর্তা হিসেবে বেশি মজা লাগে। তবে আপনার সিঁদল কুমড়ো বড়া দিয়ে টাকি মাছ ভুনা রেসিপি দেখে অনেক খেতে মন চাচ্ছে। আপনি খুব সুন্দর ভাবে পরিবেশন করেছেন।
আমরা টাকি মাছ দিয়া অনেক রকম ভর্তা করে খাই। আবার এভাবে রান্না করে খাই। রান্নাটা অনেক প্রকার হয়ে থাকে ।সময় এবং রুচি বিবেচনা করে ভর্তা বা রান্না করা হয়ে থাকে।
চামুচ হবে না চামচ হবে, বানান টা একটু ঠিক করে নিয়েন।ভালো ছিলো।ধন্যবাদ
অসঙ্গতি টুকু তড়িঘড়ি ধরিয়ে দেওয়ার জন্য, আপনাকে জানাই অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আপনার রেসিপিটি দেখে খুবই ভালো লাগছে ভাই। তবে কখনোই শীতল কিংবা কুমড়ো বড়ি খাওয়া হয়নি। তবে শুনেছি এগুলো খেতে নাকি খুবই মজার। আর টাকি তেমন একটা খাওয়া হয় না তবে আপনার রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে যে এটা খেতে খুবই মজা হবে।
এবার রান্না করলে আপনারে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে আসব। নয়তবা এসএমএস এ পাঠিয়ে দিব।
আপনি খুবই চমৎকার ভাবে আমাদের মাঝে সিদল কুমড়ো বড়া দিয়ে টাকি মাছের ঝোল রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার এই রেসিপিটি আমার কাছে একদম ইউনিক লেগেছে। আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে টাকি মাছ অনেক বেশি ভালো লাগে এত মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আমরাও খাই। তবে আজকাল আগের মত আর খাওয়া হয়না। ভালো তো লাগবেই।
আপনি একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া কুষ্টিয়ার বাজার গুলোতে এই ধরনের জিনিস খুব বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়।সিঁদল কুমড়ো বড়া দিয়ে টাকি মাছ ভুনা রেসিপি আসলে অনেক সুন্দর ভাবে আপনি তৈরি করেছেন। এই রেসিপিটি আমার খুবই প্রিয় তাই আপনার রেসিপিটি দেখার পরে আমার অনেক লোভ লেগে যাচ্ছে।
কুমড়ো বড়ি বা সিদল দুইটার একটাও এখন পর্যন্ত খাওয়া হয়নি। তাই এর স্বাদ কেমন হয় জানিনা। তবে আপনি খুবই দারুণ করে টাকি মাছ ভুনার এই রেসিপিটি বানিয়েছেন। অনেক ভালো হয়েছে আপনার এই ইউনিক রেসিপি। শুভেচ্ছা নিয়েন ভাই।
এগুলো হলো না স্বাদের মুখরোচক খাবার ।পাওয়া সাপেক্ষে খেয়ে দেখবেন ভালো লাগে।