"কে এস আর এম" কোম্পানি তে আমার পাঠানো "বাংলাদেশ নিয়ে অহংকারের গল্প"
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা
আসসালামু আলাইকুম
প্রীতি ও শুভেচ্ছা
- আশা করি সবাই ভাল আছেন ।আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। কিছুদিন আগে আপনারা হয়তো দেখেছেন আমি কে এস আর এম কোম্পানি থেকে কিছু গিফট পেয়েছিলাম। কিন্তু এই গিফট গুলো পাওয়ার উদ্দেশ্য ছিল আমি সেখানে যে গল্পটি পাঠিয়েছি তা থেকে নির্বাচিত হয়ে অর্থাৎ বিজয়ী হওয়ার পর এই গিফট গুলো পেয়েছি। ওই পোস্টে আমি বলেছিলাম ,তাদের কাছে ইমেইলে যেই গল্পটি আমি পাঠিয়েছি তা একদিন আপনাদের সাথে শেয়ার করব। তাই আজ ভাবলাম আপনাদের মাঝে গল্পটি শেয়ার করি আশা করি আপনাদেরও পছন্দ হবে।
গল্পঃ বাংলাদেশ আমার অহংকার
- বাবার কথায় কখনোই গুরুত্ব দেইনি।এখন কিভাবে গিয়ে বাবাকে বলবো, আমি ভুল করেছি। এমনটাই ভাবছে ক্যাম্পাসের এক কোণে বসে থাকা নাদিয়া।এমন সময় পিছন থেকে ডাক দিয়ে চমকে দিল রাফান।আচ্ছা তাহলে চল বাসায় যাই। আমি একটু পরে যাব রাফান তুমি যাও। আরে চলত। একথা বলেই নাদিয়ার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল রাফান।নাদিয়া বাসায় গেলে করিম চাচা বলে নাদিয়া মামনি আসছো! তোমার বাজান কহন থেইকা তোমারে ফোন দিতাছে তুমি নাকি ফোন ধরতাছো না। বাবা কোথায়? অফিসে যাওনেরলাই রেডি হইতাছে। বাবা তুমি এখনো অফিসে যাওনি? নারে মা তুই এখনো বাসায় ফিরিসনি আমি কিভাবে অফিসে যাব ফোনটা ধরছিস না।সরি বাবা ফোনটা সাইলেন্ট ছিল।তাই দেখতে পাইনি।নাদিয়া মন খারাপ করে বাবার পাশে গিয়ে বাবার হাতটা ধরে বলল বাবা আমি আসলে সবকিছু নিয়ে সরি এতদিন আমি তোমাকে,,,,,, ঠিক আছে মা পরে সব কথা শুনব।অনেক জার্নি করে এসেছিস। আগে ফ্রেশ হ। আমি অফিস থেকে একটু ঘুরে আসি। আচ্ছা বাবা যাও পরে কথা হবে।কথা শেষ হতে নাহতেই রাফানের ফোন। নাদিয়া বলে বাসায় আয়। হকেন আজকে ফ্লাইট নাকি তোমার?
- নাদিয়া রাগ করে ফোন রেখে দিল। বিকেলে কলিং বেল বাজল। নাদিয়া বললো, করিম চাচা দেখতো কে এলো? নাদিয়া মামনি রাফান ভাইজান আইছে। কি ব্যাপার নাদিয়া তুমি এখনো ঘুমোচ্ছো তোমার না আজ ফ্লাইট চলো তোমাকে দিয়ে আসি। কিছুক্ষণ চুপ থেকে,,,আচ্ছা রাফান তুমি কক্সবাজার ছাড়া বাংলাদেশের আর কোথায় কোথায় ঘুরেছ? কেন হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন কক্সবাজার ঘুরতে গিয়ে মন খুব খারাপ হয়ে গেল না? আমি আসলে তোমাদের সাথে এমনটা করা উচিত হয়নি। এমন সময় বাবা এসে পরল বাসায়। আসসালামুয়ালাইকুম আঙ্কেল। আরে রাফান তুমি কখন এলে?এইতো আঙ্কেল কিছুক্ষণ হলো।তোমরা বস আমি নিজ হাতে কফি বানিয়ে নিয়ে আসছি তারপর আড্ডা দেবো। দুজনের হাতে কফি দিতে দিতে বাবা বলল কিরে মা থাইল্যান্ড যাবি? বাবা জিজ্ঞেস করলে না আমার কক্সবাজার ভ্রমণ কেমন হলো?আমি সবই জানি।কিভাবে বাবা?তোকে আজ একটি গল্প বলি আমি আজ ১৭ বছরেও কাউকে বলিনি।তোর মাকে আমি ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম। (কল্পনা),,,,,,,বাঙালি হলেও তোর মা ছোটবেলা থেকেই থাইল্যান্ড। আমি যখন চাকরিতে জয়েন দিই,থাইল্যান্ড থেকে কিছু লোক আমাদের কোম্পানির সাথে ব্যবসার কাজে এসেছিল। সেই থেকে তোর মায়ের সাথে আমার পরিচয়। সেদিন তোর মা কথা দিয়েছিলো আমাকে আর আমার দেশকে ছেড়ে কোথাও যাবে না। তারপর আমাদের বিয়ে হয়।
- আমার কোল আলো করে তুই আসলি কিন্তু তোর মা হঠাৎ করেই আবার থাইল্যান্ড চলে যেতে চায় এমনকি আমাকে নিয়ে। আমি রাজি না হওয়ার এক পর্যায়ে তোর মা আমাকে ছেলে চলে যায়। তখন তোর বয়স ছিল ৩ বছর। তুই আমাকে ছেড়ে যেতে চাস নি। সেদিন তোর মাকে আমি বলেছিলাম আমার মেয়ে হবে দেশ প্রেমি। এই দেশ, মাটি, মানুষ ছেড়ে কখনও কোথাও যাবে না। কিন্তু এই দেশের প্রতি তোর অনীহা আমার মনে ভীতি তৈরি করে। এবার রাফান বলে নাদিয়া তাইতো আংকেল আর আমি প্ল্যান করে তোমাকে কক্সবাজার ট্যুরে পাঠাই। আর সেখানে যাওয়ার পর প্রতিনিয়ত কি ঘটছে আঙ্কেলকে ফোনে জানাই। বাবা তুমি আমাকে পুরো। দেশটা ঘুরে দেখাবে। তাহলে বাবা আমি আর রাফান একটি সংগঠন তৈরি করবো যার নাম হবে ''বাংলাদেশ আমার অহংকার"। আমরা বর্তমান প্রজন্মের যুবকদের মাঝে বাংলাদেশের অহংকার, গর্ব করার বিষয় গুলো তুলে ধরব। যাতে করে নতুন প্রজন্ম জানতে পারে আমার দেশের গৌরব। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যুবকদের কাজে আনবো যারা আমাদের সাথে কাজ করতে আগ্রহী। তবে বাবা তুমি আমাকে বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য এবং স্বাধীনতা সম্পর্কে বিস্তারিত বলবে কেননা আমি এগুলো খুব বেশী জানিনা।কিছুদিনের মধ্যেই নাদিয়া সংগঠনটি তৈরি করতে সক্ষম হয়। সেখানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কক্সবাজার ট্যুরে গিয়ে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা নাদিয়া বলে।" বাসে আমার পাশের সিটে বসেছিল এক বিদেশি নারী। আমি যখন আমার বন্ধুদের বললাম ধুর বাংলাদেশে কি এমন আছে যে ঘুরে দেখবো। আমার পাশের সিটে বসে থাকা বিদেশি
মহিলা বলে আমি বাংলাদেশের ঘুরতে এসেছি কিন্তু এখন আমার ইচ্ছে করছে বাংলাদেশে থেকে যেতে। ওই বিদেশির মুখে বাংলা কথা শুনে আমি বিস্মিত হয়ে যাই এবং দেশকে নিয়ে ভাবার অনুপ্রেরণা পাই। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন , 71 সালে স্বাধীনতা সংগ্রাম, করে বাংলাদেশ নামক এই ভূখণ্ডকে পৃথিবীর বুকে এক বিশাল মর্যাদার অধীনে আনে। এমন সংগ্রাম পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও ঘটেনি।সকল অর্জনের মাঝেও একটি হারানোর যন্ত্রণা হলো যে ব্যক্তি স্বাধীনতার ডাকে মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে সে শেষ পর্যন্ত নিজের জীবনকে কিছু নরপিচাশ এর হাতে হারিয়েছে।
তবুও আমরাতাকে নিয়ে গর্ববোধ করি। বাংলাদেশের উন্নয়নমূলক কাজ গুলো জননেত্রী শেখ হাসিনা করে যাচ্ছে। দারিদ্র্যের হার কমেছে, গ্রামেগঞ্জে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে, উন্নত বিশ্বের সাথে অর্থনৈতিক লেনদেন বাড়িয়েছ, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট তৈরি করেছে , স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে । ভ্রমণের জায়গাগুলো কে উন্নত করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকরা বাংলাদেশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আসছে।বাংলাদেশের মাটি এতটাই উর্বর যেকোনো ফসল সহজেই উৎপাদন করা সম্ভব। এদেশ বিশ্বের বুকে আজ মাথা উঁচু করে দাড়িয়েছে তাই এদেশকে নিয়ে গর্ব করা সমীচীন।
এদেশ আমার আপনার তাই এদেশকে নিয়ে ভাবুন এবং এদেশকে এগিয়ে নিতে হবে আমাদেরকেই।নাদিয়া এইসব বক্তব্য শেষ করেই রাফানকে নিয়ে শুরু করে তার তৈরি করা স্বপ্ন।
🌺 আশা করি আমার লেখা গল্প টি আপনাদের ভালো লাগবে।ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। 🌺 |
---|
🌺 ধন্যবাদ সবাইকে আমার পোস্টটি দেখার জন্য ও পড়ার জন্য🌺 |
---|
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
বেশ লেগেছে আপনার গল্পের নাদিয়া চরিত্রটি। দিনে দিনে আপনি জিল শিল্পী পোস্ট করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এভাবে সুন্দর সুন্দর পোস্ট হয়ে এগিয়ে যান।
আপু নাদিয়া চরিত্রটি এখানে হচ্ছে মূল বিষয়।নাদিয়া কে নিয়ে আমার সম্পূর্ণ গল্পটি লেখা। আমি চেষ্টা করেছি আমার সম্পূর্ণ আবেগ দিয়ে এই গল্পটি লেখার তাই হয়তো বিজয়ী হতে পেরেছি।
আপনার আগের দুইটি পোস্ট ও আমি পড়ে ছিলাম আপু। ভাগ্য ক্রমে আজকের পোস্টটিও সামনে এসে গেলো। কোম্পানির নাম শুনেই চিনে ফেলেছি। আপনি গিফট এর পোস্ট ও করেছিলেন। গল্পটি সত্যি দারুণ ছিলো। আপনি উপহার ডিজার্ব করেন। খুবই সুন্দর লিখন। শুভেচ্ছা রইলো আপু।
বাহ ভাইয়া আপনি আমার আগের দুটো পোস্ট পড়েছেন এখনো আবার এই পোস্টটি পেয়েছেন তাই সম্পূর্ণ কাহিনী আপনি ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছেন। যেহেতু আমি এর আগে দুইটা পোস্ট করেছি তাই ভাবলাম যে গল্পটির কারণে আমি এতগুলো গিফট পেয়েছি সেই গল্পটি যদি শেয়ার না করি কেমন লাগে তাই তো গল্পটি শেয়ার করে ফেললাম।।
আপু আমি এতদিন অপেক্ষায় ছিলাম কখন আপনি আপনার গল্পটি শেয়ার করবেন। আপনার সম্পূর্ণ গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। এই গল্পে নাদিয়া চরিত্রটি মুখ্য বিষয়। গল্পের মূল বিষয়বস্তু বুঝতে পেরেছি যে নাদিয়া একসময় দেশের প্রতি অবহেলা ছিল। কিন্তু একটা সময় সে বাংলাদেশের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার ভ্রমণ করতে গিয়ে বাংলাদেশের সৌন্দর্য অবলোকন করতে পারল। যার ফলে সে নিজের ভুল বুঝতে পেরে তার বাবার কাছে ক্ষমা চাইলেও এবং এই দেশের যুবসমাজকে নিয়ে ভালো কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছিল। আসলেই বাংলাদেশ আমাদের জন্য অহংকার।
এটি জেনে খুবই ভালো লাগলো যে আপনি অপেক্ষায় ছিলেন আমার গল্পটি কখন শেয়ার করবো। আসলে আপু আমি এই গল্পটি শেয়ার করব আগের পোস্ট এ বলে দিয়েছিলাম। বাংলাদেশের সুন্দর্য বিমোহিত হয়ে নাদিয়া চরিত্রটি অহংকারে গর্ববোধ করছিল। এমনই একটি মূলভাব তুলে ধরেছিলাম আমার এই গল্পে। আশা করি আমার এই গল্পটি আপনার ভালো লেগেছে ।সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।