জেনারেল রাইটিং-দুর্ঘটনা||

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার


আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজকে আমি ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। আজকে সকাল থেকেই মনটা ভীষণ খারাপ। সকালে যখন আমি ঘুমের মধ্যে ছিলাম তখন বাসা থেকে ফোন এসেছে। এত সকালে বাসা থেকে ফোন আসতে দেখে হৃদয়টা চমকে উঠেছিল। ফোনটা রিসিভ করতেও কেন জানি ভয় লাগছিল। কারণ এত সকালে যখন ফোন আসে কিংবা হঠাৎ করে রাতে যখন ফোন আসে তখন অজানা ভয় ঘিরে ধরে। মনে হয় যেন কোন সমস্যা হয়েছে। আজকে সেই বিষয়টাই আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি।


দুর্ঘটনা:

people-g1641c3d6f_1280.jpg

Source


কথায় আছে দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। সত্যি কথা বলতে দুর্ঘটনাগুলো হঠাৎ করেই ঘটে। আমি যখন সকালে ঘুমাচ্ছিলাম তখন হঠাৎ করেই ফোনটা বেজে উঠলো। বাসা থেকে ফোন করা হয়েছে দেখেই অনেকটা ভয় লাগছিল। ভয় ভয় চোখ নিয়ে ফোনটা রিসিভ করলাম। এরপর দেখি আমার ছোট্ট চাচাতো ভাই ফোন করেছে। সে বলল আপু কাল রাতে বড় আব্বু এক্সিডেন্ট করেছে। অর্থাৎ আমার বাবা মোটরসাইকেল এক্সিডেন্ট করেছেন। বাবা বুকে প্রচণ্ড ব্যথা পেয়েছেন। কথাটা শোনা মাত্রই আমার জন্য গলা দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছিল না। ক্ষণিকের জন্য নিস্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।


হঠাৎ করে যদি প্রিয় মানুষের দুর্ঘটনার কথা শোনা হয় তাহলে হৃদয়টা কেঁপে ওঠে। হয়তো মাঝে মাঝে কথা বলার শক্তি আমরা হারিয়ে ফেলি। আমি তখন কি বলবো বুঝতেই পারছিলাম না। আসলে কি করা উচিত সেটাও বুঝতে পারছিলাম না। অন্যদিকে আপনারা হয়তো সবাই জানেন আমি এখনোও সুস্থ হয়নি। সকালের দিকে ব্যথাটা অনেক বেড়ে যায়। তাই তো খুব সাবধানে ধীরে ধীরে ওঠার চেষ্টা করছিলাম। ওঠার পর দেখি আরো ব্যথা করছে। এরপর কোন কিছু না ভেবেই বেরিয়ে পড়েছি বাসার উদ্দেশ্যে। আসলে দুর্ঘটনাগুলো এভাবেই হয়তো হঠাৎ করেই ঘটে যায়।


সেই সময়টাতে বিভিন্ন রকমের দুশ্চিন্তা আমার মস্তিষ্কে বাসা বেধে ছিল। বুঝতে পারছিলাম না কি করা উচিত। বাবাকে ফোন দেওয়ার পর তিনি খুব একটা কথাই বললেন না। এরপর মায়ের কাছে জানতে পারলাম বাবা অনেক ব্যথা পেয়েছেন বুকে। রাতে আমাকে জানায়নি কারন আমি নিজেই অসুস্থ। হয়তো টেনশন করবো তাই তো কোন কিছুই আমাকে জানতে দেননি। আসলে আমাদের প্রিয় মানুষগুলো কিংবা আপন মানুষগুলো রাস্তাঘাটে সব সময় চলাফেরা করে। কখন যে দুর্ঘটনা ঘটে যায় আমরা বুঝতেই পারি না। যখন বাবা-মায়ের বয়স হয়ে যায় তখন চিন্তাটা আরো বেড়ে যায়। বাবা মাথার উপরে আছে বলেই এখনো নিশ্চিন্তে বেঁচে আছি।


মনের কল্পনাতে অনেক কিছুই ভেবে ফেলেছিলাম। বারবার ভাবছিলাম সেই দুর্ঘটনায় যদি আরও বড় ধরনের কিছু ঘটে যেত তাহলে আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াতাম। ছোট বোনগুলো কোথায় গিয়ে দাঁড়াতো। আসলে আমার ভাই নেই আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন। আমি সবার বড়। আমার মত একজন মানুষের পক্ষে তো আর পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া সম্ভব নয়। এই কথাগুলো ভাবতেই কেন জানি কান্না পাচ্ছিল। হয়তো বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে সেটা সামাল দেওয়ার মতো ক্ষমতা আমার ছিল না। তবে সৃষ্টিকর্তা উনাকে অনেক বড় ক্ষতির হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। হয়তো অনেকটা আঘাত পেয়েছেন।


হঠাৎ করে এই দুর্ঘটনার কথা শুনে আমার হৃদয়ে এখনো ব্যাথার সৃষ্টি করছে। মনে হলেই কেন জানি কান্না পাচ্ছে। বারবার মনে হচ্ছে বাবা না জানি কতটা কষ্ট পাচ্ছেন😭। আসলে আমরা হয়তো বাবা-মায়ের প্রতি ভালোবাসা কখনো প্রকাশ করতে পারি না। কিন্তু হৃদয়ের ভিতরে জমা ভালোবাসাগুলো সব সময় চিৎকার করে প্রকাশ করতে ইচ্ছে করে। তাদের কোন কিছু হয়ে গেলে আমরা কখনোই মেনে নিতে পারি না। তেমনি আজকেও কেন জানি এই পোস্ট লিখতে গিয়ে বার বার চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছিল। আর বেশি কিছু লিখতে পারছি না। কেন জানি দুপাশের গলা চেপে আসছিল আর কান্না করতে ইচ্ছে করছিল। তবুও আমরা চাইবো আমাদের সবার আপন মানুষগুলো যেন দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় এবং হাজার বছর বেঁচে থাকে। সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন যেন তিনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং বড় ধরনের কোন ক্ষতি না হয়।


❤️ধন্যবাদ সকলকে।❤️

Sort:  
 last year 

বিশ্বাস করেন আপু আমিও প্রতিনিয়ত বেশ চিন্তুায় থাকি এই দুর্ঘটনা নিয়ে। কখন যে কি হয়। সারাটাক্ষন ভয়ে ভয়ে কাটাতে হয়। আর এরকম আচমকা বাসা হতে ফোন আসলে নিজের বুকের বিথরটা কেপেঁ উঠে। আপনার কথা শুনে আমিও ভয় পেয়ে গিয়ে ছিলাম। তবে শান্তির বিষয় হলো বড় কোন ক্ষতি হয় নাই। দোয়া রইল আঙ্কেলের প্রতি। আর আপনাকে বলছি বেশী টেনশন করবেন না।

 last year 

আমাদের প্রিয় মানুষগুলো যখন বাহিরে থাকে তখন আমরা সব সময় চিন্তায় থাকি। আসলে হঠাৎ করে এরকম কোন কিছু শুনলে সত্যিই খারাপ লাগে। ধন্যবাদ আপু পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

বর্তমান সময়ে দুর্ঘটনা যেন একটা স্বাভাবিক বিষয় হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। যেকোনো জায়গায় যে কোন অবস্থাতে দুর্ঘটনা সম্মুখীন হচ্ছে মানুষ। আর একটা দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। আপু আপনি অসুস্থ হলে হয়তো আপনার পিতা আপনাকে জানায়নি। যা তবুও দুর্ঘটনা বড় মারাত্মক নয়। যদি এর বিপরীত কিছু হতো তাহলে আপনাদের পরিবারটা যেন ভেসে যেত। সবই উপর আল্লার ইচ্ছা তিনি চাইলে অনেক কিছুই সম্ভব। আপনার বাবা সুস্থতা কামনা করছি।

 last year 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। দুর্ঘটনা হঠাৎ করেই ঘটে। তবুও আমাদের সবাইকে সাবধান হতে হবে এবং নিজের আপন মানুষদেরকে সাবধানে রাখতে হবে। ভাইয়া আপনার মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

 last year 

আসলেই এমন কিছু কিছু দুর্ঘটনা আছে যা মানুষের জন্য অনেক ক্ষতি হয়ে দাঁড়ায়। যদি বড় ধরনের দুর্ঘটনা হয় তাহলে তো একটি পরিবারের সারা জীবনের কান্না। সৃষ্টিকর্তা অনেক রহমত করেছেন বলেই বড় দুর্ঘটনা হাত থেকে বেঁচে গেল আঙ্কেল। তবে আঙ্কেলের জন্য অনেক দোয়া করি খুব তাড়াতাড়ি যেন সুস্থ হয়ে ওঠেন। টেনশন করবেন না আপু আল্লাহ যা করেন তা মঙ্গলের জন্য করেন। দোয়া করি আঙ্কেলের জন্য এবং আপনার জন্য অসুস্থ হয়ে ওঠেন সে কামনা করি।

 last year 

একটি দুর্ঘটনা পুরো পরিবারটাকে শেষ করে দিতে পারে। সৃষ্টিকর্তার রহমত ছিল বলেই অনেক বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছেন। বাবার জন্য দোয়া করবেন আপু। ধন্যবাদ আপনাকে মতামতের জন্য।

 last year 

প্রথমে আঙ্কেলের সুস্থতা কামনা করছি। আল্লাহ উনাকে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দেয় এবং নেক হায়াত দান করে। সকাল ভোরে বা গভীর রাতে হঠাৎ মোবাইল বেজে উঠলে আমি ওখুব আতঙ্কে থাকি। কোথাও কারো কিছু হলো নাকি। আর তা যদি নিজের প্রিয় মানুষ হয় তাহলে তো কথাই। তবে এটা জেনে ভালো লাগলো যে বড় ধরনের বিপদ থেকে আল্লাহ পাক উনাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।

 last year 

আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন আপু। আপনাদের দোয়া পাশে থাকলে বাবা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন। অনেক বড় বিপদের হাত থেকে আমরা সবাই বেঁচে গেছি। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু মতামতের জন্য।

 last year 

আসলে রাস্তাঘাটে চলাচল করার সময় আমাদের সবার উচিত সাবধানে চলাচল করা। কারণ যে কোন সময় যেকোনো বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্মুখীন আমরা হতে পারি। আপনার আব্বুর এক্সিডেন্টের কথা শুনে আমার কাছেও খুব খারাপ লেগেছে আপু। আপনি অসুস্থ এর মধ্যে যদি আপনার আব্বুর কিছু একটা হয়েছে তো তাহলে কি হতো এটা ভাবতেই আমার অন্যরকম লাগছে। আল্লাহ তায়ালা যেন এরকম কিছুই না করে এটাই কামনা করি। আপনার আব্বু যেন খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে পড়ে সেই দোয়া করি আপু।

 last year 

অনেক সময় সাবধানে চলাচল করলেও দুর্ঘটনা হঠাৎ করেই ঘটে যায়। আসলে দুর্ঘটনা কখন ঘটবে আমরা কেউ জানি না। তাই সবাইকে আরো সচেতন হতে হবে ভাইয়া। আপনার মতামত পড়ে ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

বর্তমান বাংলাদেশের যে পরিস্থিতি, এই পরিস্থিতিতে পথে ঘাটে চলা বড়ই কঠিন। বিশেষ করে হাইরোড গুলোতে রাস্তা পারাপার হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেক মানুষ গাড়ি চালানোর সঠিক নিয়ম মেনে চলে না। তাই বেপরোয়া চলাচলের জন্য ভোগান্তির শিকার হতে হয় জনসাধারণের।

 last year 

বর্তমান পরিস্থিতিতে দুর্ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে। তাই তো সবাইকে আরো সচেতন হতে হবে। অনেক সময় সঠিক নিয়মকানুন মেনে চললেও অপর প্রান্তের কেউ যদি সঠিক নিয়ম মেনে না চলে তাহলে আমাদের বিপদ ঘটে যেতে পারে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 66599.39
ETH 3336.69
USDT 1.00
SBD 2.70