জেনারেল রাইটিং-সরকারি দপ্তরে কাজ মানেই ভোগান্তি||
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজকে আমি ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। আজকে আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে কিছু কথা আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আজ সারাদিন অনেক ব্যস্ততার মধ্যে কেটেছে। সরকারি দপ্তরে একটি কাজে গিয়ে আটকা পড়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত কাজটিও শেষ করতে পারিনি। হয়তো আবারো যেতে হবে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই কিছু কথা আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে চলে এসেছি।
সরকারি দপ্তরে কাজ মানেই ভোগান্তি:
Source
আমাদের দেশের সরকারি দপ্তর গুলোতে কাজের ঝামেলা সবাই জানেন। যখনই সরকারি দপ্তর গুলোতে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে তখনই সবাই বিরক্ত হয়ে যায়। আসলে সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীগুলোর ব্যবহার দেখলে মনে হয় তারা মনে হয় এমনি এমনি আমাদেরকে কাজ করে দিচ্ছেন। বেশ কয়েকদিন থেকে আমাদের জেলায় দুটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চলছে। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির অনেক উন্নতি হয়েছে। এই যুগে এসেও যদি মানুষকে এরকম ভোগান্তির মাধ্যমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে অ্যাপ্লিকেশন করতে হয় তাহলে সত্যিই অনেক ঝামেলার ব্যাপার। আমি তো প্রথমে ভেবেছিলাম অ্যাপ্লিকেশন করবই না। কারণ এর আগে একবার অ্যাপ্লিকেশন করতে গিয়ে দম বেরিয়ে গিয়েছিল। ব্যাংক ড্রাফ করা, এরপর সব সার্টিফিকেট সত্যায়িত করা এসব করতে গিয়ে মনে হয়েছিল যেন আর জীবনেও এপ্লাই করবো না। কিন্তু কি আর করার আমরা তো মধ্যবিত্ত মানুষ। তাই তো সবকিছুই মেনে নিয়ে এগিয়ে যেতে হয়।
যখন ব্যাংক ড্রাফ করতে গেলাম তখন গিয়ে দেখি ব্যাংকের ভেতরে স্টুডেন্টদের ছড়াছড়ি। সবাই যে যার মতো করে ব্যাংক ড্রাফ করার চেষ্টা করছে। কেউ ভালোভাবে কিছুই জানে না। আর ব্যাংকের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের কিছু জিজ্ঞাসা করলে তারাও কোন উত্তর দিচ্ছে না। তাইতো যারা আগে এপ্লাই করেছিল তারা নিজেদের মতো করেই লেখার চেষ্টা করছে। এরপর যখন সেটা জমা দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়াচ্ছে তখন আরও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। বাধ্য হয়ে শেষ পর্যন্ত আমিও লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লাম। এরপর শুরু হয়ে গেল আরেক বিপত্তি। কয়েকজনের টাকা জমা নেওয়ার পর উনি জানালে উনি লাঞ্চে যাবেন। আর আড়াই ঘন্টা পর ফিরবেন। এতগুলো মানুষ সকাল থেকে এই কাজের জন্য অপেক্ষা করছে এটা উনাদের দেখার বিষয় নয়। উনাদের লাঞ্চের টাইম হয়ে গিয়েছে এটাই তাদের কাছে বড় বিষয়।
সবকিছু বন্ধ রেখে ব্যাংকের অফিসার চলে গেলেন নিজের কাজে। কখন ফিরবেন কেউ জানেন না। হয়তো ঘন্টা তিনেক সময় লাগবে। এদিকে কতগুলো মানুষ অপেক্ষায় আছে। তাতে সেই অফিসারের কোন কিছুই যায় আসে না। তিনি হয়তো খাওয়া দাওয়া করে বিশ্রাম করবেন এরপর ফিরবেন। কখন ফিরবে সেটাও কেউ বলতে পারছে না। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে যখন বিরক্তি চলে এসেছে তখন আমিও চলে এসেছি। আসলে অপেক্ষা করাটা অনেক বেশি কঠিন। আর এসব কাজে অপেক্ষা করা আরও বেশি কষ্টের। হয়তো সেই লোকটি যদি সবার সমস্যা বোঝার চেষ্টা করতেন তাহলে একটু দ্রুত আসার চেষ্টা করতেন। কিংবা ভালো ভাবে সবার সমস্যা বোঝার চেষ্টা করতেন। কিন্তু উনার মাঝে শুধু বিরক্ত ছাড়া কিছুই দেখতে পেলাম না। মনে হচ্ছে যেন আমরা উনার কাছে ভিক্ষা চাইতে এসেছি।😔😔
যারা সরকারি দপ্তর গুলোতে চাকরি করে তাদের ব্যবহার দেখলে মনে হয় সাধারণ জনগণ তাদের কাছে ভিক্ষা চাইতে গিয়েছে। সরকার যে ওনাদেরকে বেতন দিয়ে রেখেছেন এটা কখনোই তারা মনে রাখেনা। জনগণের সেবা করার মানসিকতা তাদের মাঝে একদমই লক্ষ্য করা যায় না তাদের কোন কিছু জিজ্ঞাসা করতে গেলেও তারা বিরক্ত হয়ে যায়। আসলে আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে যারা অনেক বিষয়ে অজ্ঞ। আর সেসব মানুষগুলোকে সাহায্য করা উনাদের দায়িত্ব। কিন্তু উনারা উল্টো তাদেরকে ফিরিয়ে দিচ্ছেন এবং বলছেন সব কাগজপত্র ঠিক করে নিয়ে আসুন। সব ঠিক করে এরপর আসবেন। আসলে সে যদি নিজের ভুলটা জানতো তাহলে তো সে সেখানে ভুল নিয়ে আসতো না। হয়তো তাকে সাহায্য করার মত কেউ ছিল না বলেই সে সেখানে এসেছিলেন। কি আর বলব সেসব মানুষের কথা। তারা জনগণকে এতটাই তুচ্ছ মনে করে যেটা বলে প্রকাশ করার মতো নয়।
এসব দেখে কিছুই করার নেই আমাদের। শুধু চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া। কি আর করব আমরা। সাধারণ জনগণরা যেখানেই যাব সেখানেই কষ্ট পাব। অপমান, লাঞ্ছনা কিংবা মানুষের কথার আঘাত সহ্য করেও আমাদেরকে বাঁচতে হবে। এগিয়ে যেতে হবে জীবনের বাকিটা পথ। হয়তো কোন একদিন ঘুরে দাঁড়ানোর সময় আসবে। হয়তো কোন একদিন সম্মান পাওয়ার সময় আসবে। জানি না সেটা সবার জীবনে হবে কিনা। তবে আমি এতটুকুই প্রত্যাশা করি সেসব সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারীদের ব্যবহারের পরিবর্তন হোক। তারা মানুষকে মূল্যায়ন করতে শিখুক। সেই সাথে মানুষের সমস্যাগুলো বুঝতে শিখুক। আমার মনে হয় আমার মত অনেকেই এই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন। যারা যারা এই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন তারা অবশ্যই মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন।
আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।
সরকারি দপ্তরগুলোতে যারা কাজ করে মনে হয় যেন তারা আকাশের চাঁদ পেয়ে গেছে আর এই আকাশের চাঁদ অন্যকে দিতে গিয়ে একটু ভয় পায়। ঠিক এজন্য বিরক্ত বোধ করতে হয় আমাদের মত জনসাধারণ মানুষের। তবে একটা কথা ঠিক বলেছেন ফ্রি ফ্রি তো কাজ করায় না তাদের দিয়ে কিন্তু তাদের যে এমন এতটা দেমাগ সৃষ্টি হয় সত্যি বাংলাদেশ বলে কথা।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া তাদের ব্যবহার অনেক খারাপ হয়ে যাচ্ছে। মনে হয় ফ্রীতে কাজ করছে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।
বর্তমান সময়ে সরকারি দপ্তরের যেকোনো ধরনের কর্মকর্তা বা কর্মচারী তাদের দায়িত্বে কেমন যেন স্বেচ্ছাচারিতা চলে এসেছে। এটা সত্যি খুবই দুঃখজনক যে তারা সাধারণ মানুষকে একেবারেই অবজ্ঞা করে। কিন্তু সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা তো সাধারণ মানুষেরই সেবক হিসেবে নিযুক্ত। তাই তাদের এরকম আচরণ কারো কাম্য নয়।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া বর্তমান সময়ে তাদের কাজে বেশ গাফিলতি চলে এসেছে। এটা সাধারণ মানুষের জন্য অনেক দুঃখজনক ব্যাপার। তারা সাধারণ মানুষের সেবা করার জন্য নিযুক্ত। অথচ তারা এমন ভাব দেখায় যে সাধারণ মানুষরা তাদের কাছে বিরক্তিকর।
সত্যি বলেছেন আপু সরকারি দপ্তরগুলোতে ভোগান্তির কোন শেষ নেই। আপু আমাদের সরকারী দপ্তরের লোক গুলো ভাবে তাদের কাছে সবাই ঠেকা।আর কিছু কিছু লোকের ব্যবহার সব জায়গায় খারাপ। আর আমাদের মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজনের এদের কাছে না গিয়ে উপায় কি।আসলে সরকারি অধিদপ্তরের লোকজনের এমন আচারন আমাদের কার্ম্য নয়।
জ্বী আপু আমার মত সবাই এই বিরক্তিকর পরিচিতির মধ্যে পড়েছে। তাদের ব্যবহার দেখলে সত্যিই অনেক খারাপ লাগে। তবে কিছু করার নেই। হয়তো প্রয়োজনে আবারো যেতে হবে।
বিশ্বের কোনো দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের লাঞ্চ বিরতি ৩ ঘন্টা নেই। সব দেশে লাঞ্চ বিরতি এক ঘন্টার। আমাদের দেশে তো সব সম্ভব আপু। আবার উনারা সরকারি কর্মকর্তা, উনাদের ভাব দেখলে মারতে মন চায় সত্যি সত্যি। কয়েকদিন আগে ভূমি অফিসে গিয়ে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর রাগারাগি করে তারপর কাজ করিয়েছি। ঝগড়া না করলে বসিয়ে রাখে ঘন্টার পর ঘন্টা। আমরা যে মানুষ উনারা সেটা ভাবেই না। প্রতিটি সরকারি সেক্টরে কোনো কাজে গেলে সারাদিন নষ্ট হয়ে যায়। চারিদিকে শুধু উন্নয়ন আর উন্নয়ন,হায়রে বাংলাদেশ। যাইহোক অবশেষে ব্যাংক ড্রাফট না করে বাসায় ফিরে গিয়েছেন,জেনে সত্যিই খারাপ লাগলো আপু। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার এতটাই বিরক্ত লাগছিল যে শেষ পর্যন্ত চলে এসেছি। তারা ভাবে তাদের সময়ের মূল্য আছে আমাদের সময়ের মূল্য নেই। তাই ভাবলাম সকাল সকাল গিয়ে করে আসবো আবার।
অপেক্ষা জিনিসটা মৃত্যুর চেয়েও শ্রেয়! এতোক্ষণ আপনাদের দাড়ঁ করিয়ে রাখলো! আসলে সরকারি দপ্তরগুলাতে এমন পরিস্থিতির শিকার আমিও হয়েছি আপু। কিছু বলারও নেই আসলে তাদের। একটু ভালো করে বুঝিয়েও দেয় না। আপনার যে আজকে কষ্ট হয়েছে বুঝা যাচ্ছে
ঠিক বলেছেন ভাইয়া এসব কাজে গেলে মাথাটাই নষ্ট হয়ে যায়। তাদের ব্যবহার সত্যিই অনেক খারাপ। তবে কি আর করার তবুও যেতে হবে।
আপনার এমন খারাপ অভিজ্ঞতা শুনে আমারও খারাপ লাগলো আপু। তবে সকল জায়গায়ই যে এমন হাল তা নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আসলেই সেবা পাওয়া যায়। তবে আপনার মতোন অভিজ্ঞতা হওয়ার ঘটনাই বেশি। এর একটি বড় কারণ হচ্ছে জবাবদিহিতা না থাকা, নির্দিষ্ট KPI না থাকা বা সেবার মান যাছাই- বাছাই এর অভাব। তবে এমন পরিস্থিতিতে কেউ না পড়ুক, সবাই সঠিক সেবা পাক, এটিই কাম্য।