শৈশবের পুজোর স্মৃতি||আমার বাংলা ব্লগ [10% shy-fox]

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার


আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজ আমি "আমার বাংলা ব্লগ" সম্প্রদায়ে একটি ব্লগ তৈরি করতে যাচ্ছি। আমি প্রথমেই সবাইকে জানাচ্ছি পুজোর শুভেচ্ছা। ধর্ম যার যার উৎসব আমাদের সবার। তাইতো শৈশব কাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত আমরা যেকোনো উৎসবে অনেক আনন্দে মেতে থাকি। পুজো নিয়ে শৈশবের অনেক মজার মজার স্মৃতি রয়েছে। যে স্মৃতিগুলো মাঝে মাঝে মনে পড়ে। তেমনি আজকে কিছু মজার স্মৃতি সকলের মাঝে তুলে ধরতে যাচ্ছি।


শৈশবের পুজোর স্মৃতি:

pooja-gcf1127b97_1920.jpg

Source


শৈশব মানেই অনেক মধুর স্মৃতি। তেমনি শৈশবের পুজোর স্মৃতিগুলো আজও মনে পড়ে। ছোটবেলায় যখন দলবেঁধে পুজো মন্ডপে যেতাম সত্যি অনেক ভালো লাগতো। আসলে আমরা আলাদা ধর্মের। কিন্তু তখন সেই ধর্মের বৈষম্য গুলো থাকত না। আমার অনেক বন্ধু বান্ধবী ছিল যারা পুজোর দাওয়াত দিত আমাদেরকে। আমরা সবাই মিলে অনেক আনন্দ নিয়ে তাদের বাড়িতে যেতাম। পুজোতে তাদের বাসায় বিভিন্ন রকমের খাবার তৈরি করা হতো। সত্যি কথা বলতে সেই খাবারগুলো খেতে সত্যি অনেক ভালো লাগতো। আমার এখনো সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যখন স্কুল থেকে সবাই আমাদের বন্ধু বা বান্ধবীর বাড়িতে নাড়ু খেতে যেতাম। আসলে কি যে আনন্দ ছিল সেই দিনগুলোতে তা বলে বোঝানোর মত নয়। যখন আরো ছোট ছিলাম তখন দাদুর কাছে বায়না করতাম মেলায় যাওয়ার জন্য। দাদু আমাকে নিয়ে মেলায় যেতেন। বিভিন্ন রকমের খেলনা কিনে দিতেন,পুতুল কিনে দিতেন, যেগুলো পেয়ে আমি ভীষণ খুশি হতাম। দাদু আজ আমাদের থেকে অনেক দূরে। কিন্তু সেই মধুর স্মৃতিগুলো পুজো এলেই বেশি বেশি মনে পড়ে।


আমার গ্রামের বাসার কাছেই পুজো মন্ডপ আছে। সেখানে বিভিন্ন রকমের দোকান বসে। বিশেষ করে মজা মজার আচারের দোকানগুলো থেকে আচার কিনে খেতে আমার খুবই ভালো লাগে। ছোটবেলায় যখন পুজো দেখতে যেতাম তখন আলাদা রকমের এক আনন্দ হতো। বিভিন্ন রকমের মাটির খেলনা গুলো কিনতে খুবই ভালো লাগতো। আমার এখনো মনে পড়ে সেই দিনটির কথা যেদিন আমি এক টাকা দিয়ে লটারি খেলেছিলাম। আর সেই লটারি থেকে একটি বন্দুক পেয়েছিলাম। আসলে এক টাকা দিয়ে বন্দুক পেয়ে আমি যে কি পরিমানে খুশি হয়েছিলাম তা বলে বোঝাতে পারবো না। সেদিনের সেই স্মৃতিগুলো মনে পড়লে এখনো মাঝে মাঝে হাসি পায়। সত্যি আমাদের ছোটবেলার স্মৃতিগুলো কতই না মধুর ছিল। আমরা অল্পতেই অত বেশি খুশি থাকতাম।


যখন পূজোমন্ডবে যেতাম তখন মূর্তিগুলো দেখে আমার খুবই ভালো লাগতো। কি সুন্দর ভাবে সাজানো মূর্তিগুলো। দেখতে কতই না সুন্দর লাগতো। বিশেষ করে দুর্গা মায়ের পরনের শাড়িগুলো ও গয়না গুলো বেশ আকর্ষণীয় লাগতো। আর মাথার চুল গুলো দেখতে খুব সুন্দর লাগতো। মনে হতো যেন জীবন্ত কোন মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। পুজো মানেই হচ্ছে আলাদা রকমের অনুভূতি। আমরা যেমন আমাদের ধর্মীয় উৎসবে আনন্দ করি তেমনি পুজোর সময় এলেও সবাই মিলে আনন্দ করি। মনে হয় যেন আমরাও এই উৎসবে শামিল হয়েছি। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি পুজোর সময় সব ধর্মের লোক আনন্দ করছে এবং ছোট ছোট বাচ্চাদেরকে নিয়ে ঘুরতে যাচ্ছে। আমার কাছে যতটুকু মনে হয় পুজোর সবচেয়ে প্রধান আকর্ষণ ছিল মজার মজার খাবার খাওয়া। বিভিন্ন রকমের তেলে ভাজার দোকানগুলো দেখেই খেতে ইচ্ছে করত। এছাড়া মিষ্টি তো আছেই। পুজোর সময় বিভিন্ন রকমের মিষ্টির দোকান বসত। যেই মিষ্টি গুলো খেতে খুবই ভালো লাগতো। আর আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগতো মেলা থেকে বিভিন্ন প্রকারের খাবার কিনে বাসায় নিয়ে যেতে।


আজও মনে পড়ে সেই স্মৃতিগুলো। যে স্মৃতিগুলো এখনো হৃদয়ে আনন্দ তৈরি করে। মনে হয় মাঝে মাঝে যদি সেই দিনগুলোর মাঝে ফিরে যেতে পারতাম তাহলে খুবই ভালো হতো। হয়তো এখন খুব একটা মেলায় যাওয়া হয় না তবে ছোটবেলায় অনেক যেতাম। অপেক্ষায় থাকতাম কখন পুজোর ছুটি হবে। স্কুল ছুটি মানেই হচ্ছে আলাদা রকম আনন্দ। একদিকে স্কুল বন্ধ অন্যদিকে পুজোর উৎসব সবকিছু মিলে যেন প্রত্যেকটি মুহূর্ত দারুন কাটতো। পুজো শেষ হলে অপেক্ষায় থাকতাম কবে স্কুল খুলবে। কারণ হিন্দু ধর্মাবলম্বী যারা ছিল ক্লাসে তারা সবাই বাসা থেকে নারিকেলের নাড়ু, তিলের নাড়ু, চিড়ার নাড়ু এগুলো নিয়ে আসত আমাদেরকে খাওয়ানোর জন্য। তারা আগে থেকেই সেগুলো আলাদা করে রাখত। কারণ তারা জানতো আমরা সবাই খেতে চাইবো। হয়তো ভাগে এক পিসও পড়তো না কিন্তু সবার সাথে ভাগাভাগি করে খেতে খুবই ভালো লাগতো।


কিছু কিছু স্মৃতি আছে যেগুলো সারা জীবন মনে থাকে। তেমনি শৈশবের পুজো উৎসবের বিভিন্ন স্মৃতি গুলো এখনো মনে পড়ে। তাইতো আজকে আমি এই স্মৃতিগুলো আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম।


❤️ধন্যবাদ সকলকে।❤️

Sort:  
 2 years ago 

আপনারা আগে দলবেঁধে পুজো মন্ডপে যেতেন।আর সত্যি খাবার গুলো দারুন হয় পুজোর। জেতার আনন্দ সত্যি বলে বোঝানো যায় না আপু ছোটবেলার। আপনি ১ টাকার বন্দুক পেয়ে যেমন খুশি হয়েছেন।আর মূর্তিগুলো দেখতে ভীষণ ভালো লাগে লাল শাড়ি, গয়না পরিহিত।আর হিন্দু সম্প্রদায়ের বান্ধবীরা পুজোর পর নাড়ু নিয়ে আসতো। দিনগুলো অনেক মধুর ছিল আসলেই। ধন্যবাদ আপনাকে আপু শৈশবের স্মৃতিগুলো শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

সবাই মিলে দল বেঁধে পুজো মন্ডপে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। আসলে সেই দিনগুলো হারিয়ে গেছে। তাই তো এখন সবকিছুই স্মৃতি হয়ে আছে। এক টাকা দিয়ে লটারি কেটে বন্দুক পেয়ে সত্যি অনেক ভালো লেগেছিল।

 2 years ago 

ছোটোবেলা মানেই নস্টালজিয়া! সত্যিই সেসব ভাবতেও মন ভালো হয়ে যায়।

 2 years ago 

সত্যি ভাইয়া ছোটবেলা মানেই নস্টালজিয়া। সারা জীবন সেই স্মৃতিগুলো রঙিন হয়ে থাকবে। সেই স্মৃতিগুলো মনে হলেই নিমিষেই মন ভালো হয়ে যায়।

 2 years ago 

ছোট বেলায় বন্ধুদের বাড়িয়ে যেয়ে পুজোর সময় নাড়ু খাওয়ার মজাই আলাদা। এমনকি আমার এক বন্ধুকে আমি এবার ও বলে রেখেছি আমার জন্য নাড়ু নিয়ে আসতে। আপনি তো দেখি অনেক রকম এর নাড়ু খেয়েছেন। তবে আমার ভাগ্যে শুধু নারিকেল এর নাড়ু জুটেছে এখন পর্যন্ত।

 2 years ago 

ছোটবেলায় বন্ধুদের বাড়িতে ঘুরতে গিয়ে নাড়ু খাওয়া সত্যিই আলাদা আনন্দের। বিশেষ করে যখন অল্প খাবার সবাই মিলে ভাগাভাগি করে খাওয়া হয় তখন খেতে কেমন ভালো লাগে তেমনি অনেক আনন্দ হয়। আমি আসলে একবার আমার এক বান্ধবীর বাসায় গিয়ে বিভিন্ন রকমের নাড়ু খেয়েছিলাম।

 2 years ago 

ছোটবেলায় বন্ধু-বান্ধবদেরকে নিয়ে পূজামণ্ডপে যাওয়ার মজাই আলাদা এবং সেই পুজোয় গিয়ে, পুজোর যে বিভিন্ন রকমের শুকনা জাতীয় খাবার সেগুলো অনেক টেস্টি খাবার। সেইগুলোর কথা মনে পড়লে অনেক ভালো লাগে অনেক বান্ধবীরা পুজোয় গেলে ব্যাগে করে উঠিয়ে দিতোবাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য। আসলে আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে সেই স্মৃতিময় দিন গুলোর কথা মনে পড়ে গেল ধন্যবাদ আপু আপনাকে।

 2 years ago 

ছোটবেলার প্রত্যেকটি স্মৃতি অনেক মধুর। বিশেষ করে বন্ধু বান্ধবী সবাই মিলে কোথাও ঘুরতে গেলে অনেক ভালো লাগে। আর পুজো মানেই উৎসব। মেলাতে ঘুরতে গেলে সত্যিই খুবই ভালো লাগে।

 2 years ago 

একদম ঠিক বলেছেন আপু পুজো নিয়ে শৈশবে অনেক মজার মজার স্মৃতি রয়েছে। যা এখনো আমার অনেক মনে পড়ে। ছোট বেলায় আমিও বাবা ও বোনেদের সাথে পুজোর মন্ডব দেখতে যেতাম। সত্যি অনেক ভালো লাগতো আজকের আপনার পোস্ট পড়ে। ধন্যবাদ আপনাকে

 2 years ago 

প্রত্যেকের জীবনে পুজো নিয়ে শৈশবের অনেক মজার স্মৃতি রয়েছে। পুজো মানেই হচ্ছে মধুর মধুর স্মৃতি। তাইতো আমি আমার ছোটবেলার স্মৃতি গুলো শেয়ার করেছি।

 2 years ago 

আপু প্রথমে আপনাকে জানাই শারদীয় দুর্গা পুজোর প্রান ঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন ৷
আপনি ছোট্ট বেলার পুজো তে কাটানো সৃতি গুলো নিয়ে লিখেছেন ৷ ঠিক বলেছেন আপু যে কোনো জিনিস ছোট বেলার মতো আনন্দ হয় না ৷ শৈশব কালের মতো আনন্দ আর চাইলেও পাবো না ৷ আর হ্যাঁ আমরাও ছোট থাকতে পাড়ার সবাই মিলে হাফ প্যান্ট পরে নাচতে নাচতে সত্যি আজ শুধু চোখের পাতায় ভাসছে ৷
যা হোক আপু ভালো লাগলো আপনার পোষ্ট টি পড়ে৷

 2 years ago 

আপনাকেও শারদীয় দুর্গাপুজোর শুভেচ্ছা জানাচ্ছি ভাইয়া। পুজো মানেই হচ্ছে উৎসব। তাই তো আপনাদের উৎসবে শামিল হওয়ার জন্য নিজের অনুভূতিগুলো তুলে ধরেছি।

 2 years ago 

আসলেই আপু আমি ও তাই মনে করি, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমাদের যেরকম ঈদ আনন্দ অনেক বেশি খুশি। তেমনি পুজোর আনন্দটাও কিন্তু কম নয়। আমি আবার একদম সরাসরি পুজো কখনো দেখিনি। আর যদি বলি মূর্তি সেটা আমি সামনাসামনি দেখেছি গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার সময়। কিন্তু আপনার মত এরকমভাবে দেখার সৌভাগ্য হয়নি। আর হ্যাঁ ছোটবেলায় একটা টাকার বন্দুক হলেও সেটা অনেক বেশি আনন্দের ছিল। আর পূজোর খাবার গুলো সত্যি ই অনেক দারুন হয়।

 2 years ago 

আমাদের আশেপাশে বিভিন্ন ধর্মের লোক বাস করে। তাইতো সবাই নিজেদের ধর্মগুলো পালন করে এবং আমরা সকলেই প্রতিটি ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করার চেষ্টা করি। ছোটবেলার সেই স্মৃতিগুলো তুলে ধরতে পেরে আমার খুবই ভালো লেগেছে।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56477.82
ETH 2390.38
USDT 1.00
SBD 2.33