জেনারেল রাইটিং-অনেক কাছ থেকে মৃত্যুকে দেখলাম||
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজকে আমি ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। সব সময় নতুন কিছু শেয়ার করি। কিন্তু আজকে আমি যেই অভিজ্ঞতাটা শেয়ার করবো সেটা সত্যিই অনেক খারাপ অভিজ্ঞতা ছিল। হয়তো আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের একটি মুহূর্ত ছিল।
অনেক কাছ থেকে মৃত্যুকে দেখলাম:
Source
তখন রাত দুইটা দশ বাজে। হঠাৎ করে ঘুমের মধ্যে অনুভব করলাম কেমন জানি অস্থির লাগছে। উঠে বসে পড়লাম। এরপর ভাবলাম একটু ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসি। তাহলে হয়তো ভালো লাগবে। ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে যখন রুমে প্রবেশ করলাম তখন অস্থিরতা অনেক বেড়ে গেল। শরীরের উপর ব্যালেন্স পাচ্ছিলাম না। যেমন জানি অস্বস্তি লাগছে। বুঝতে পারছিলাম না কি করবো। অল্প একটু জায়গাতেও যেন পা ফেলতে পারছিলাম না। বিছানার খুব কাছাকাছি গিয়েও আর বিছানায় পৌঁছাতে পারছিলাম না।
এরপর আমি অনুভব করলাম আমি শ্বাস নিতে পারছি না। আমার শরীরের কোন কিছুই কাজ করছে না। শুধু বুঝতে পারছি যে আমি নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ একেবারে হারিয়ে ফেলছি। নিজেকে এই মুহূর্তে কতটা অসহায় মনে হয়েছে সেটা বলে বোঝাতে পারবো না। আমি বুঝতে পারছিলাম আমার অক্সিজেন লেভেল অনেকটাই কমে গেছে। ভেতর থেকে কোন রেসপন্স হচ্ছে না। শ্বাস নিয়ে কোন কাজ হচ্ছে না। ক্ষণিকের জন্য যেন জীবনটা থেমে গেছে আমার।
এবার দ্বিতীয় ধাক্কাটা তখনই খেলাম যখন দেখি আমি চোখে দেখছি না। রুমে লাইট অন করা ছিল অথচ আমি কিছু দেখতে পাচ্ছি না। সবকিছুই অন্ধকার দেখছি। যখন আমি অন্ধকার দেখতে শুরু করলাম তখনই আমি নিচে বসে পড়েছি। আমি কোন দিকে যাবো সেটাই বুঝতে পারছিলাম না। এই সময় আমার হাজব্যান্ড ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছিল। সে কখনো ঘুমায়নি। তাই হয়তো খেয়াল করেছিল। আমি অনেকটা সময় কিছু দেখতে পাইনি। তখনও শরীরের উপর কোন ব্যালেন্স ছিল না। অক্সিজেন লেভেল খুবই কম ছিল। আমি তো ভেবেছিলাম নতুন ভোরের আলো দেখতে পাবো না।😭😭
কিন্তু কোন কিছুতেই চোখের দৃষ্টি পাচ্ছিলাম না। অনেকটা সময় সেরকম ছিল। এরপর স্যালাইন খাওয়ার পর ধীরে ধীরে চোখের দৃষ্টিটা কিছুটা ফিরে এসেছিল। তবুও অনেকটা সময় আমি ঝাপসা দেখেছি। ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম। সেই মুহূর্তটা যে কতটা কষ্টের ছিল সেটা বলে বোঝানোর মত নয়। মনে হয়েছে আজকে আমার জীবনের শেষ দিন। বারবার শুধু মা বাবার কথা মনে পড়ছিল। মনে হচ্ছিল শেষবারের মতো তাদের সাথে আর দেখা হলো না। এরপর দেখতে দেখতে প্রায় দুই ঘন্টা কেটে গেল। ধীরে ধীরে একটু স্বাভাবিক হয়েছিলাম। কিন্তু ঘুমাতে পারছিলাম না। ভীষণ কান্না পাচ্ছিল।
মৃত্যুর মুখ থেকে যেন আমি ফিরে এসেছি। নতুন একটি জীবন পেয়েছি। আসলে এতটা কাছ থেকে এই বিষয়গুলো অনুভব করেছিলাম যে ভুলতেই পারছি না। এখনো আমার কান্না পাচ্ছে। আমাদের এই খনিকের জীবনে আমরা ভালো থাকার জন্য কতই লড়াই করি। কিন্তু হঠাৎ করে একদিন সব লড়াই শেষ হয়ে যাবে। হঠাৎ একদিন সব ব্যস্ততা শেষ হয়ে যাবে। আর নিভে যাবে জীবন প্রদীপ। আমি আমার জীবনের এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা কখনো ভুলবোনা। যদিও শরীরটা এখনো খুবই খারাপ। সবাই দোয়া করবেন।
আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।
https://x.com/Monira93732137/status/1841722758130262427?t=Kf7fjMcaXwpxxb-W5gOFug&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
প্রথমেই আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।আপনি আজকে যে অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন এটা আসলেই অনেক ভয়ংকর এক অভিজ্ঞতা।আমারও মাঝে মাঝে এমন হয় কিন্তু চোখে আমি অন্ধকার দেখি না একটু একটু ঝাপসা দেখি।এ সময় নিজেকে একদম অসহায় মনে হয়।নিজেকে মনে হয় আমি একজন মৃত পথযাত্রী।আপনার এমনটা হয়েছে হয়তো দুর্বলতা থেকে।একটু ভালো ভাবে রেস্ট নেন,একটু দুধ,ডিম এবং নানান রকমের পুষ্টিকর খাবার খান।ইনশাল্লাহ খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
আমার মনে হয় একদিকে কাজের চাপ আর অন্যদিকে টেনশন থেকে এমনটা হয়েছে। বেশ ভালো করেছেন আপনি স্যালাইন খেয়ে। আপু একজন ভালো ডাক্তার দেখানতো। শুনেই তো বেশ খারাপ লাগলো। যাই হোক আল্লাহ্ আপনাকে সুস্থ্যতা দান করুন। সাবধানে থাকবেন।
আসলেই আপু ক্ষনিকের জীবনে আমরা কতই না কিছু করতেছে।আমরা কেউ ভাবিনি যে একদিন চলে যেতে হবে।হয়তো আপনি কিছুক্ষণের জন্য মৃত্যুর বিষয় টি বুঝতে পারছেন। আমাদের ২-৪ সেকেন্ড নিঃশ্বাস বন্ধ থাকলে তখন সব কিছু এলোমেলো লাগে।যাইহোক আপনি সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট শেয়ার করছেন। আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।