নাটক রিভিউ-অপেক্ষার দশ বছর|
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি@monira999। আমি একজন বাংলাদেশী। আজকে আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে একটি নাটক রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। যদিও অনেকদিন থেকে নাটক রিভিউ শেয়ার করা হয় না। তাই আজকে ভাবলাম একটি নাটক রিভিউ সবার মাঝে শেয়ার করবো। আশা করছি সবার কাছে ভালো লাগবে।
নাম | অপেক্ষার দশ বছর |
---|---|
পরিচালনা | সোহেল আরমান |
সম্পাদনা | এস স্বপ্ন |
অভিনয়ে | জিয়াউল ফারুক অপূর্ব,তানজিন তিশা ও আরো অনেকে |
দৈর্ঘ্য | ৩৯ মিনিট |
মুক্তির তারিখ | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ |
ধরন | ড্রামা |
ভাষা | বাংলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
চরিত্রেঃ
- জিয়াউল ফারুক অপূর্ব-সুজন
- তানজিন তিশা-রেহেনুমা
নাটকের শুরুতেই দেখতে পাই দুজন পুলিশ নিজেদের মধ্যে কথা বলছে। আর একজন আসামি সম্পর্কে বলছে। তিনি তার মুখে সম্পূর্ণ ঘটনাটি বর্ণনা করছে। এই নাটকের প্রথমে একটি ছেলেকে দেখা যায়। সে চিলেকোঠার ঘরে ভাড়া উঠেছে। আর ঘরের তালা খুলতে পারছে না। তাই ছেলেটি বাড়িওয়ালাকে গালাগালি করছে নরমাল তালা চাবি দেওয়ার কারণে। তখন একটি মেয়ে সেখানে আসে আর তারাটা খুলে দেয়। এরপর ছেলেটি তাকে ধন্যবাদ দেয়। তখন ছেলেটি বলে তার নাম সুজন এবং সে এই চিলেকোঠার ঘরে থাকবে। এবার মেয়েটি জানায় তার নাম রেহেনুমা এবং সে বাড়িওয়ালার মেয়ে। এবার এই কথা শুনে ছেলেটি অর্থাৎ সুজন অবাক হয়ে যায়। কারণ এর আগেই সুজন বাড়িওয়ালার নামে অনেক কথা বলে ফেলেছে।
সুজন রেহেনুমার বাবার বন্ধুর ছেলে। তাইতো তিনি সুজনকে চিলেকোঠার ঘরে ভাড়া দিয়েছেন। অন্যদিকে চিলেকোঠার ঘরে সুজন থাকার কারণে সমস্যা হয়ে গেছে। কারণ রেহেনুমা তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে ছাদে দেখা করতো। আর সেই চিলেকোঠার ঘরটি ছিল ছাদের একপাশে। এবার রেহেনুমা চিন্তায় পড়ে গেল আর তার বয়ফ্রেন্ডকে বলল সে যেন ছাদে না আসে। অন্যদিকে রেহেনুমার বাবা-মা সুজনের প্রশংসা করতে লাগলো। আর রেহেনুমার ছোট বোনকে পড়াতে বলল। সুজন প্রথমে রাজি হচ্ছিল না। এরপর রেহেনুমার ছোট বোনকে পড়াতে রাজি হয়ে গেল। সুজন যখন রেহেনুমার ছোট বোনকে পড়াতো তখন রেহেনুমা মাঝে মাঝে ছাদে গিয়ে বসে থাকতো। আর বিভিন্ন রকমের দুষ্টুমি করত। সুজন মনে মনে রেহেনুমাকে পছন্দ করতে লাগলো। রেহেনুমাকে সুজনের ভীষণ ভালো লাগতো।
একদিন হঠাৎ করে রেহেনুমা এসে সুজনের সামনে দাঁড়ালো আর বলল সে তাকে একটি কথা বলতে চায়। সুজন বুঝতে পারছিল রেহেনুমা তাকে কি বলবে। এরপর সুজন কে বলল সে একটি ছেলেকে ভালোবাসে। আর তারা মাঝে মাঝেই এই ছাদে দেখা করে। সুজন যদি তাকে হেল্প করে তাহলে ভীষণ উপকার হবে। এই কথা শুনে সুজনের ভীষণ খারাপ লেগেছিল। তারপরও সে রেহেনুমাকে সাহায্য করতে রাজি হয়েছিল। এরপর রেহেনুমা তার প্রেমিকের সাথে মাঝে মাঝে দেখা করতো। একদিন হঠাৎ করে রেহেনুমা সুজনকে জানালো তারা বিয়ে করতে চলেছে। আর তার প্রেমিক কাজী নিয়ে এই চিলেকোঠার ঘরে আসবে। আর সেদিন যেন সুজন বাহিরে থাকে এই অনুরোধ করে। সুজন প্রথমে রাজি হচ্ছিল না। এরপর রেহেনুমার অনুরোধে রাজি হয়ে যায়।
সুজন রেহেনুমাকে হেল্প করার জন্য বাসা থেকে দূরে গিয়ে থাকে। এরপর যখন সে বাসায় ফিরে আসে তখন দরজা খুলে দেখে তার ঘরে একটি লাশ পড়ে আছে। সেই লাশটি হল রেহেনুমার প্রেমিকের। এরপর সে পুলিশে কল করে আর পুলিশ এসে সুজনকে ধরে নিয়ে যায়। সুজন বলে সে এই মার্ডারের ব্যাপারে কিছুই জানে না। এরপর সুজনকে আটকে রাখা হয়। তখন রেহেনুমা থানায় গিয়ে নিজের অপরাধ স্বীকার করে। আর বলে সে নিজেকে বাঁচানোর জন্য খুন করে ফেলেছে। আসলে তার প্রেমিক তাকে বিয়ে করতে চায়নি। শুধু তার সাথে অবৈধ সম্পর্ক করতে চেয়েছিল। তাই তো নিজেকে রক্ষা করার জন্য তার প্রেমিককে ধাক্কা দিয়েছিল। আর সে আঘাত পেয়েছিল এবং সেখানেই মারা যায়।
যখন রেহেনুমা তার নিজের সব অপরাধ স্বীকার করে নেয় তখন তার দশ বছরের জেল হয়ে যায়। অন্যদিকে পুলিশ অফিসারটি সেই গল্পটি বলছিলেন আর সুজনকে ফোন করছিলেন যে আজকে রেহেনুমা মুক্তি পাবে। সুজন নিজ হাতে ফুলের মালা গেঁথেছে রেহেনুমার জন্য। রেহেনুমাকে অনেক ভালোবাসে সুজন। ১০ বছর অপেক্ষার পর রেহেনুমা জেল থেকে বের হবে। সুজন রেহেনুমাকে নেওয়ার জন্য আসছিল। কিন্তু রেহেনুমা ১ ঘন্টা আগেই জেল থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। কোথায় যাবে কেউ কিছু জানে না। এরপর যখন রেহেনুমা বাসে উঠছিল তখন হঠাৎ করে সুজন পেছন থেকে তার হাত টেনে ধরে। সুজনকে দেখে রেহেনুমা অবাক হয়ে যায়। এবার সুজন বলে সে তাকে অনেক ভালোবাসে। আর তার জন্য নিজ হাতে ফুলের মালা গেঁথেছে। ১০ বছর তার জন্য অপেক্ষা করেছে। সুজনের এই কথাগুলো শুনে রেহেনুমার চোখে জল চলে আসে। এরপর তাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পায়। আর নাটকটি শেষ হয়ে যায়।
এই নাটকটি একেবারে ভিন্ন রকমের ছিল। একটি ছেলে তার প্রিয় মানুষটির জন্য ১০টি বছর অপেক্ষা করেছে। হয়তো দশটি বছরে তার প্রিয় মানুষটির জন্য ভালোবাসা আরো অনেক বেড়ে গিয়েছিল। সে তার ভালোবাসার মানুষটিকে হয়তো কখনো মুখ ফোটে বলতে পারেনি ভালোবাসার কথা। কিন্তু অবশেষে তাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পেয়েছে দেখে অনেক ভালো লেগেছে। সবমিলিয়ে নাটকটি বেশ ভালো লেগেছে।
আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।
আসলে ভালোবাসা এটাই যার জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করা যায় ৷ আর আজকের নাটকে সেটাই প্রকাশ পেয়েছে ৷ আবার বলতে কিছু ভালোবাসা অসৎ আর ভুল যার যা জীবনের জন্য ভয়ংকর ৷ ঠিক যেমন রেহেুনুমার হয়েছে ৷ যা হোক দিনশেষে জয় ভভালোবাসার ৷
আসলে মাঝে মধ্যে নাটক আমিও দেখি ভালো লাগে ৷ আর অপূর্ব তিসা এদের নাটক ভালো লাগে ৷ অসংখ্য ধন্যবাদ আপু যে এতো চমৎকার করে নাটকের রিভিউ দিয়েছেন ৷
ধন্যবাদ আপু
ঠিক বলেছেন ভাইয়া ভালোবাসার জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করা যায়। আর এই নাটকটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছিল। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।
অপেক্ষার ১০ বছর নাটকটার রিভিউ আমার কাছে সত্যি খুবই ভালো লেগেছে পড়তে। ছেলেটা প্রায় দশ বছর ভালোবাসার মানুষটার জন্য অপেক্ষায় ছিল দেখছি। আসলে এরকম ভালোবাসা গুলো আরো বেশি সুন্দর লাগে দেখতে। শেষ পর্যায়ে এসে ছেলেটার অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়েছে। অর্থাৎ ১০ বছর পর সে নিজের ভালোবাসাকে ফিরে পেয়েছে, এবং কি তাদের ভালবাসার পূর্ণতা পেয়েছে দেখে অনেক ভালো লেগেছে। এই নাটকটার রিভিউ পোস্ট আমার অনেক বেশি পছন্দ হয়েছে। আমি সময় পেলে অবশ্যই নাটকটা দেখার চেষ্টা করব।
আমার শেয়ার করা নাটক রিভিউ পড়ে আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক ভালো লাগলো। সত্যি আপু শেষ পর্যন্ত তাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পেয়েছে।
অপেক্ষার দশ বছর নাটকটি আমি এখনো দেখিনি৷ তবে অবশ্যই এই নাটকটি অনেক সুন্দর হবে বলে আমি মনে করি৷ আজকে যেভাবে আপনি এই নাটকের রিভিউ এর মাধ্যমে নাটকের সবগুলো বিষয়ে সম্পর্কে আমাদের মাঝে ধারণা দিয়েছেন, এই ধারণাগুলো থেকে আমি এই নাটকটি অবশ্যই দেখে নেওয়ার চেষ্টা করব৷ অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য৷
ভাই আপনি সময় পেলে নাটকটি দেখতে পারেন। আশা করছি ভালো লাগবে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
নাটক দেখতে আমি অনেক পছন্দ করি৷ তবে সময় স্বল্পতার কারনে দেখা হয় না৷ অবশ্যই চেষ্টা করব এটি দেখে নেওয়ার।
বাহ আজকে দারুন একটি নাটকের রিভিউ দিয়েছেন। সত্যিই ভালো লাগলো কারণ নাটক দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি। মুভি থেকে নাটক বেশি দেখা হয়ে থাকে। এই নাটকটি এখনো দেখা হয়নি। অপূর্ব তানজিন তিশা অনেক নাটক করেছে তাদের নাটকগুলো খুবই ভালো লাগে। সুন্দর রিভিউ এর মাধ্যমে নাটকের বিষয়বস্তু তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।
আমার শেয়ার করা নাটক রিভিউ আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে অনেক ভালো লাগলো। সময় পেলে নাটকটি দেখবেন ভাইয়া।
১০ বছর পর্যন্ত নায়ক নিজের ভালোবাসার জন্য অপেক্ষায় ছিল। অনেক বছর পরে সেই মানুষটা নিজের ভালোবাসাকে পেয়েছিল দেখেই তো আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। এবং কি শেষ পর্যায়ে দুজনেরই মিল হয়েছিল, আর ভালোবাসা পূর্ণতা পেয়েছিল দেখে ভালো লেগেছে আমার কাছে। আসলে ভালোবাসার অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চায় না। কিন্তু অপেক্ষার প্রহর শেষ হওয়ার পর যদি সেই ভালোবাসার মানুষটাকে পাওয়া হয়, তাহলে তার থেকে বেশি আনন্দ আর কিছুতেই হয় না। পুরোটা আমার অনেক বেশি পছন্দ হয়েছে নাটকের রিভিউ।
সত্যি ভাইয়া দশটি বছর ভালোবাসার মানুষের জন্য অপেক্ষায় ছিল এটা ভাবতেই অনেক ভালো লেগেছে। নাটকটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে।
নাটকটি তো দেখা হয়নি। তবে আপনার রিভিউ পরে ব্যাটার আইডিয়া পেলাম। সময় করে নাটকটি দেখব আপু।
এই নাটকটি দেখেননি তাই সময় পেলে দেখবেন ভাইয়া। আশা করছি ভালো লাগবে। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।