নাটক রিভিউ || রিভার্স
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। নাটকের নাম হচ্ছে রিভার্স। এই নাটকটি চার মাস আগে রিলিজ হয়েছে। এই নাটকটি বেশ ভালোই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। যাইহোক এই নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছে মুশফিক আর ফারহান এবং কেয়া পায়েল। এই নাটকটি মূলত একটি ফানি নাটক, তবে বেশ শিক্ষনীয় একটি নাটক,তাই দেখতে খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে। মাঝে মধ্যে সময় পেলে আমি বাংলা নাটক দেখি। একসময় হিন্দি মুভি অনেক দেখা হতো, তবে এখন এতোটা সময় নিয়ে মুভি দেখার সময় হয়ে উঠে না। তাই বিনোদনের জন্য অল্প সময়ে বাংলা নাটক দেখা হয়। যাইহোক আপনাদের সাথে এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
নাটক | রিভার্স |
---|---|
রচনা ও পরিচালনা | মেহেদী হাসান হৃদয় |
অভিনয়ে | মুশফিক আর ফারহান, কেয়া পায়েল,শেহজাদ ওমর,সাজ্জাদ চৌধুরী, আহমেদ ইশতিয়াক,জান্নাত আফরিন,আহসান হাবীব অঙ্কন,হাসিব কাদরী,জাহিদ ইসলাম এবং আরও অনেকে |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা ভাষা |
প্রচার | ২২ই মে ২০২৪ |
দৈর্ঘ্য | ৪২ মিনিট |
প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
নাটকের সংক্ষিপ্ত কাহিনী নিম্নরুপঃ
নাটকের নায়ক মুশফিক আর ফারহান এবং নায়িকা কেয়া পায়েল হচ্ছে স্বামী স্ত্রী। ফারহান অফিসে জব করে এবং কেয়া পায়েল হচ্ছে গৃহিণী। তো অফিসে যাওয়ার সময় ফারহান কেয়া পায়েলকে বলে তাড়াতাড়ি নাস্তা দিতে। কেয়া পায়েল একটু দেরি করলেই এটা সেটা বলতে থাকে। আবার কেয়া পায়েল ফারহানকে বলে অফিস থেকে বাসায় ফেরার সময় বাসার জন্য এটা সেটা আনতে, কিন্তু ফারহান অফিসের কাজের চাপে সবকিছু ভুলে যায়। তারপর তাদের বিবাহ বার্ষিকীর দিন অনেক রাত করে ফারহান বাসায় ফিরে। কিন্তু কেয়া পায়েল তার জন্য সেজেগুজে বসে থাকে। তো এগুলো নিয়েই তাদের মধ্যে খুনসুটি চলতেই থাকে। এরপর একজন আরেকজনকে বলতে থাকে, তোমার কাজ খুবই সহজ,তাই এমনিতেই করা যাবে। অর্থাৎ ফারহান কেয়া পায়েলকে বলে বাসার কাজ করা একেবারেই সহজ। কারণ বাসায় তো তেমন কাজ ই থাকে না। কেয়া পায়েল নাকি সারাক্ষণ আরাম করে এবং ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে বাসায় সময় কাটায়। আবার কেয়া পায়েল ফারহানকে বলে,ফারহান নাকি অফিসে তেমন কোনো কাজ ই করে না।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
অর্থাৎ কেয়া পায়েল বলে যে ফারহান নাকি অফিসে গিয়ে এসি অন করে পায়ের উপর পা তুলে বসে থাকে। তো তারা সিদ্ধান্ত নেয় তাদের কাজের অদলবদল করবে। অর্থাৎ কেয়া পায়েল অফিসে গিয়ে ফারহানের কাজ করবে এবং ফারহান শুধুমাত্র বাসায় কাজ করবে। পরের দিন সকালে ফারহান নাস্তা বানিয়ে দেয় কেয়া পায়েলকে। কেয়া পায়েল নাস্তা করে অফিসে যায় ঠিকই, কিন্তু অনেক দেরি করে যায়। তো অফিসে গিয়ে বসের কাছ থেকে অনেক বকাঝকা শুনে কেয়া পায়েল। তারপর অফিসের কাজ করার সময় প্রচুর ভুল করে এবং এতে করে প্রায় সারাক্ষণই অফিসের বসের কাছ থেকে বকা খায়। এদিকে ফারহানও বাসার কাজ করতে করতে একেবারে হাঁপিয়ে উঠে। এরপর তারা দু'জন বুঝতে পারে যে কারো কাজ ই সহজ না এবং দুজনেই উপলব্ধি করে কাজের অদলবদল করাটা ভুল হয়েছে। কিন্তু তারা দু'জন এটা একে অপরের কাছে স্বীকার করে না। কারণ স্বীকার করলে তো একে অপরের কাছে ছোট হয়ে যাবে। তারপর ফারহান নতুন বুদ্ধি বের করে, যাতে করে কেয়া পায়েল বাধ্য হয়ে ফারহানকে অফিসের কাজ করতে পাঠায় এবং কেয়া পায়েল বাসার কাজ করে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
তাদের পাশের ফ্ল্যাটে ওমর এবং তার ওয়াইফ থাকতো। তো ফারহান ওমরকে যখন দেখতো,তখনই তাকে আকার ইঙ্গিতে অন্য কিছু বুঝানোর চেষ্টা করতো। অর্থাৎ ফারহান বুঝাতো যে, সে ওমরকে অনেক পছন্দ করে। অর্থাৎ একজন ছেলে হয়ে আরেকজন ছেলেকে পছন্দ করে এবং ভালোবাসে 😂। তারপর ওমর একদিন কেয়া পায়েলকে সবকিছু খুলে বলে। কিন্তু কেয়া পায়েল সেটা বিশ্বাস করে না। কারণ কেয়া পায়েল তো জানে ফারহান ম্যানলি অর্থাৎ ফারহানের মধ্যে মেয়েলি কোনো স্বভাব নেই। অর্থাৎ ফারহান কখনোই একটা ছেলেকে পছন্দ করতে বা ভালোবাসতে পারে না। তো ওমর এক পর্যায়ে গুন্ডা ভাড়া করে ফারহানকে শায়েস্তা করার জন্য। কিন্তু গুন্ডাদের সাথেও ফারহান এমন অঙ্গভঙ্গি করে। মানে ফারহান পুরোপুরি মেয়েদের মতো আচার-আচরণ করে গুন্ডাদের সাথেও। তারপর গুন্ডারা ভয়ে পালিয়ে যায়। তো ফারহান একদিন ওমরকে বলে যে,ওমর যাতে তার ওয়াইফকে ডিভোর্স দেয় এবং ফারহানকে বিয়ে করে 😂। এটা যখন ওমর তার ওয়াইফের কাছে বলে,তখন তো ওমরের ওয়াইফ চিৎকার চেচামেচি করে পুরো বিল্ডিং মাথায় তুলে ফেলে😂। যাইহোক এরপর কি হলো সেটা জানতে হলে আপনাদেরকে অবশ্যই নাটকটি দেখতে হবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের লিংক👇👇
ব্যক্তিগত মতামত
আসলে নাটকের কাহিনী কাল্পনিক হলেও বেশ শিক্ষণীয়। নাটকের মধ্যে যেটা দেখানো হলো,কেয়া পায়েল অফিসে গিয়ে ফারহানের কাজ করছে, এটা একেবারেই বাস্তবসম্মত নয়। কারণ বাস্তবে এই ধরনের ঘটনা একেবারেই দেখা যায় না। তবে নাটকটি দেখে আমার হাসতে হাসতে পেট ব্যথা হয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে ফারহান যে ওমরের সাথে কাহিনী গুলো করলো,সেগুলো দেখে অনেক হাসি পেয়েছে। অনেক দিন পর এমন হাসির নাটক দেখলাম। তবে এটা ঠিক যে,যার যার কাজ সে-ই বুঝে করাটা কতো কষ্ট। মেয়েরা যে বাসার কাজ করে অর্থাৎ সংসার সামলিয়ে থাকে,এটা কিন্তু খুবই কঠিন একটি কাজ। তাছাড়া ছেলেরা যে অফিসে কাজ করে কিংবা অন্য যেকোনো পেশায় নিযুক্ত থেকে টাকা ইনকাম করে, এটাও কিন্তু খুব কঠিন কাজ। তাই প্রতিটি হাসবেন্ড ওয়াইফের উচিত একে অপরের কাজের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। তাহলে একে অপরের প্রতি ভালোবাসা বাড়বে এবং সংসারে সুখ শান্তি বজায় থাকবে। সবমিলিয়ে নাটকটি দারুণ লেগেছে আমার কাছে।
আমার রেটিং
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | নাটক রিভিউ |
---|---|
স্ক্রিনশট ক্রেডিট | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy S9 Plus |
তারিখ | ৩০.৯.২০২৪ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
X-promotion
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অনেক সুন্দর একটি নাটক রিভিউ করেছেন আপনি। ফারহানের নাটক আমার কাছে বেশ ভালো লাগে। তাই মাঝেমধ্যে চেষ্টা করে থাকি এদের নাটক গুলো দেখার জন্য। অসাধারণ ছিল নাটক রিভিউটা। এ জাতীয় নাটক সত্যি ভালো লাগে।
আপনার মতো আমারও ফারহানের নাটক দেখতে খুব ভালো লাগে। যাইহোক এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
দারুন একটি নাটক রিভিউ করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাই। নাটক আমি খুবই পছন্দ করে থাকি। তাই মাঝেমধ্যে ছোট ছোট নাটকগুলো দেখার চেষ্টা করি। তবে বড় এক পর্ব নিয়ে লেগেছি এই জন্য এ সমস্ত নাটকগুলো রিভিউ করা হয় না। যাই হোক অনেক ভালো লাগলো ফারহানের নাটক দেখে।
মাঝেমধ্যে নাটক দেখতে আসলেই খুব ভালো লাগে। যাইহোক এভাবে সাপোর্ট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
রিভার্স নাটকটা সত্যি খুব সুন্দর ছিল। নাটকের মূল কাহিনীটা আমার অনেক ভালো লেগেছে। এই নাটকটা অনেক শিক্ষনীয় ছিল। আসলে মানুষ একে অন্যের কাজকে কষ্টের বলে মনে করে না। শুধু মনে করে সে যা করছে শুধু ওইটাই কষ্টের। আসলে প্রত্যেকটা কাজই কষ্ট দায়ক। একটা সংসারে স্বামী স্ত্রীর অবশ্যই একে অপরের প্রতি সম্মান থাকা লাগবে। এই নাটকটা আমি সময় পেলে দেখবো।